বৈষম্যবিরোধী কমিটি গঠন নিয়ে যবিপ্রবিতে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, শিক্ষকসহ আহত পাঁচ

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে একটি চায়ের দোকানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের শিক্ষার্থীদের কথা-কাটাকাটির জেরে এই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত। এতে প্রক্টর ড. আমজাদ হোসেনসহ অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন। তারা সবাই যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনের ক্যাম্পাস কমিটি দেয়ার প্রস্তুতি চলছিল। তবে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ কমিটি চায়নি। এ নিয়ে গত দুদিন ধরে ক্যাম্পাসে এক ধরনের চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছিল। শুক্রবার রাতে প্রধান ফটকের সামনে উভয় পক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। পরে প্রক্টর অফিসে মীমাংসার জন্য গেলে সিএসই বিভাগের উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হয়। এ সময় উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে ও ক্যাম্পাসে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। প্রত্যক্ষদর্শী সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম ও বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা অনেক চেষ্টার পরও ব্যর্থ হন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আব্দুল মজিদ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাস্থলে আসলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় এখন পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। প্রসঙ্গত, এর আগে বৃহস্পতিবার (ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই আওয়ামীপন্থী শিক্ষক যথাক্রমে অনুজীব বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. ইকবাল কবির জাহিদ ও সিএসই বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গালিবকে সাময়িক বরখাস্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ড. গালিবের বরখাস্ত আদেশকে অবৈধ দাবি করে শুক্রবার জুমার নামাজের পর ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থীরা। রাতে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের পেছনে এ ঘটনারও সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে জানা গেছে।

ঢাবিতে ছাত্রশিবিরের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর র‍্যালি

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ৪৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) থেকে র‍্যালি বের করেছে সংগঠনটি। শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাবির কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে র‍্যালিটি বের হয়। র‍্যালিটি মৎস্য ভবন ও প্রেস ক্লাব হয়ে বায়তুল মোকাররমে গিয়ে শেষ হবে বলে জানা গেছে। র‍্যালিতে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা ‘নারূয়ে তাকবির—আল্লাহু আকবার’, ‘শুভ শুভ শুভ দিন—শিবিরের জন্মদিন’, ‘আল কোরআনের আলো—ঘরে ঘরে জ্বালো’ ‘দিল্লি না ঢাকা—ঢাকা ঢাকা’ ইত্যাদি স্লোগান দেন। র‌্যালিতে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম সাদ্দাম, অফিস সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ, প্রকাশনা সম্পাদক সাদিক কায়েমসহ কেন্দ্রীয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং মহানগর পর্যায়ের নেতাকর্মীরা অংশ নিয়েছেন।

১৫ দিনের মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের বাস স্ট্যান্ড সরানোর নির্দেশ

১৫ দিনের মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সামনে থেকে বাস ও লেগুনা স্ট্যান্ড সরানোর নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বাস ও লেগুনা স্ট্যান্ড সরানোর বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির প্রস্তাবনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে একটি গুরুত্বপূর্ণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে যানজট ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি উন্নয়নে বাস ও লেগুনা ব্যবস্থাপনার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক রেজাউল করিম, ট্রেজারার অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমীন, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মোঃ শেখ গিয়াস উদ্দিন, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোঃ রইছ উদ্দীন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিলাল হোসাইন, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক, ছাত্র কল্যাণ পরিচালক ড. কে এম রিফাত হোসেনসহ সহকারী প্রক্টরবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও, লালবাগ জোনের ডিসি (ট্রাফিক) মো. শফিকুল ইসলাম, আদালত পাড়ার দায়িত্বে এডিসি মাঈন উদ্দিন চৌধুরী, কোতয়ালী জোনের এসি মো. ফজলুল হকসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বিভিন্ন পরিবহন মালিক সমিতির প্রতিনিধিরা সভায় অংশগ্রহণ করেন। এই সিদ্ধান্তের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যাতায়াত ও নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে বলে আশা করা যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে যানজট ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত সমস্যা দ্রুত সমাধান হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে।

চবিতে শেখ হাসিনা হলের নামফলক ভাঙতে ছাত্রীদের বাধা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শেখ হাসিনা হলের নামফলক ভাঙতে যাওয়া শিক্ষার্থীদেরকে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে হলটির ছাত্রীদের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি ঢাকা মেইলের ক্যাম্পাস প্রতিনিধি রেদোয়ান আহমেদকে মারধর ও সমকালের ক্যাম্পাস প্রতিনিধি এসএম মাহফুজের ফোনও কেড়ে নেন তারা। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ১১টার দিকে শেখ হাসিনা হলের সামনে এই ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করে চবি সাংবাদিক সমিতির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়াজ মোহাম্মদ বলেন, ‘চবির শেখ হাসিনা হলের মেয়েরা পেশাগত দায়িত্বপালনরত অবস্থায় একজন সাংবাদিকের হাত থেকে ফোন ছিনিয়ে নেওয়া ও কয়েকজন সাংবাদিকের গায়ে হাত তোলার সাহস দেখালেন। এই ধরনের কাজ ছাত্রলীগ করতো। আপনাদের ভেতরে সেই ছাত্রলীগের ছায়া দেখতে পেলাম।’ ক্ষোভ প্রকাশ করে চবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আজহার বলেন, ‘অভ্যুত্থানের পরে নতুন করে কেবল ছেলেদের হলগুলোতেই অ্যালটমেন্ট দেওয়া হয়েছে। মেয়েদের হলগুলোতে শুধু আসন খালি থাকা সাপেক্ষে সামান্য কিছু নতুন শিক্ষার্থী উঠানো হয়। গতরাতে সাংবাদিকদের ওপর শেখ হাসিনা হলের মেয়েদের আক্রমণ, হেনস্তা এবং মোবাইল কেড়ে নেওয়ার ঘটনাই প্রমাণ করে যে, তারা পুরোনো বলয়ে এখনো হলে অবস্থান করছে। আমরা জড়িতদের ভিডিও ও ছবি সংগ্রহ করে পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা করছি।’ এ বিষয়ে সহকারী প্রক্টর নাজমুল হোসেন বলেন, ‘গত রাতের শেখ হাসিনা হলের ছাত্রী ও শিক্ষার্থীদের বাগবিতণ্ডা বিষয়ে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের সঙ্গে বসে যথাযথ সিন্ধান্ত নেব। আর সাংবাদিক মারধর ও ফোন কেড়ে নেওয়া স্বাধীন সাংবাদিকতা পেশার জন্য হুমকিস্বরূপ। ভুক্তভোগী সাংবাদিকরা লিখিত অভিযোগ দিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী জড়িতদের শাস্তি দেওয়া হবে।’ প্রসঙ্গত, ‘লং মার্চ টু ধানমন্ডি-৩২’ কর্মসূচির ঘোষণার পর সারাদেশে শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনার মুর‌্যাল-নামফলক ভাঙেন বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে চবির শিক্ষার্থীরা শেখ হাসিনা হলের নামফলক ও নৌকার স্থাপনা ভাঙতে গেলে হলের ছাত্রীদের বাধার সম্মুখীন হন। এ সময় এক সাংবাদিককে মারধর ও একজনের ফোন কেড়ে নেন হলটির ছাত্রীরা।

জাবিতে শেখ মুজিবের ম্যুরাল ও গ্রাফিতি মুছে দিল শিক্ষার্থীরা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ও গ্রাফিতি মুছে দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত সোয়া ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইন্সটিটিউটের দেয়ালে থাকা শেখ মুজিবুর রহমানের মুরাল এবং আল-বেরুনী হলের দেয়ালে থাকা গ্রাফিতি মুছে দেন তারা। এর আগে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে একটা মিছিল নিয়ে তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইন্সটিটিউটের সামনে যান শিক্ষার্থীরা। এ সময়- “মুজিববাদ, মুর্দাবাদ”; `আওয়ামী লীগের আস্তানা, ভেঙ্গে দাও গুড়িয়ে দাও” ইত্যাদি স্লোগান দেন তারা। এর পর সেখান থেকে গিয়ে “শেখ হাসিনা” হলের সামনে থাকা শেখ হাসিনার অবশিষ্ট নামফলক ভেঙে ফেলেন তারা। গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো বঙ্গবন্ধুর ৩২ নম্বরের বাড়িগুঁড়িয়ে দেওয়া হলো বঙ্গবন্ধুর ৩২ নম্বরের বাড়ি এ সময় জাহাঙ্গীরনগর সংস্কার আন্দোলনের আহ্বায়ক ইয়াহিয়া জিসান বলেন, `ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ভারতে বসে লাইভ করছে। এই ফ্যাসিস্ট দেশবাসীকে ম্যাসেজ দিতে চায় সে আবার ফিরে আসবে। ভারতে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে। কিন্তু আমরা এ ষড়যন্ত্র মেনে নেব না। আমদের চাই দ্রুত শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে গণহত্যার দায়ে বিচার করা এবং আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে আওয়ামিলীগ নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন জারি করা।' নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান বলেন, `যে মুজিবকে কেন্দ্র করে শেখ হাসিনা ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠেছে সে মুজিবের স্মৃতি চিহ্ন আমরা রাখতে চাই না। আমারা এর মাধ্যমে এই বার্তাও দিতে চাই যে, আর কেউ যদি হাসিনার মতো ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠে তাদেরও এই অবস্থা হবে।' শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান বলেন, `দীর্ঘদিন ধরে যেসব চিহ্ন ব্যবহার করে খুনি হাসিনা বাংলাদেশের মানুষের সব অধিকার হরণ করেছে আমরা সবাই তা চিরতরে মুছে দিচ্ছি। এখন দেশ থেকে পালিয়ে গিয়েও দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রের লিপ্ত রয়েছে তিনি। আমরা সরকারের নিকট দাবি জানাই দ্রুত সময়ের মধ্যে তাকে দেশে এনে সর্বসম্মুখে তার বিচার নিশ্চিত করতে হবে।'

ঢাবির হল থেকে মুছে দেওয়া হলো শেখ মুজিবের নাম

‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল’ থেকে শেখ মুজিবের নাম মুছে ফেলছে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল’ থেকে শেখ মুজিবের নাম মুছে ফেলছে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল পাড়ায় অবস্থিত ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল’ থেকে শেখ মুজিবের নাম মুছে ফেলেছে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাতে বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীদের একটি মিছিল শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে পৌঁছায়। পরবর্তীতে হলের প্রধান ফটক থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের নামটি খুলে ফেলে তারা। এ ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের অমর একুশে হলের উদ্বোধনের সময় লেখা শেখ হাসিনার নামও মুছে ফেলেছে শিক্ষার্থীরা। তার আগে এদিন রাত ৯টায় অনলাইনে শেখ হাসিনার বক্তব্যকে কেন্দ্র করে উত্তেজিত হয়ে ওঠে শিক্ষার্থীরা। তার পরিপ্রেক্ষিতেই প্রথমে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবের বাসভবন ভাঙচুর করা হয়। পরবর্তীতে সারা দেশে শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনার নাম সম্বলিত সব স্থাপনা ভাঙচুর করছে বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা বাতিল ঘোষণা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীর দাবির মুখে পোষ্য কোটা বাতিল ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন (জাবি)। সোমবার দিনগত রাত ১২টায় উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটির জরুরি সভা শেষে এ ঘোষণা দেন। এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান বলেন, ‘কয়েকদিন ধরে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করে আসছিল। আজকে প্রায় সাত ঘণ্টা যাবৎ তারা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করেছে। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে আমরা আজ কর্মকর্তা, কর্মচারীদের নেতাদের সাথে আলোচনা করি। আলোচনায় তারা শিক্ষার্থীদের অভিভাবকের ভূমিকা নিয়ে পোষ্য কোটা বাতিলের মত দেয়। এরপর আমরা কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটির জরুরি সভায় আলোচনা করে ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটা বাতিল করি’। এ ঘোষণা শুনে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থী নাহিদ হাসান বলেন, ‘পোষ্য কোটা বাতিল ঘোষণা করায় উপাচার্য স্যারকে ধন্যবাদ। আমরা দীর্ঘ সাত ঘণ্টা ধরে এখানে অবস্থান করার ফল আমরা পেয়েছি। এইজন্য আমরা আনন্দিত।’ উল্লেখ্য, রবিবার রাতে দুইদিন ধরে অনশনরত শিক্ষার্থীদের সংস্কারের আশ্বাস দিয়ে অনশন ভাঙান উপাচার্য। এদিকে, পোষ্যদের কোটা সুবিধা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে সোমবার সকলে আন্দোলন শুরু করে কর্মকর্তা–কর্মচারীরা। এসময় শিক্ষার্থীদের সাথে বাকবিতণ্ডা হলে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা।

বুয়েট থেকে আজীবন বহিষ্কার হলেন ছাত্রলীগের ৮ জন

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ছাত্রলীগের রাজনীতি ফেরাতে তৎপর থাকায় আট শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। এর পাশাপাশি আরও ১২ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার এবং ৪০ শিক্ষার্থীকে শাস্তি দেওয়া ও সতর্ক করা হয়েছে। রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকা বুয়েট ক্যাম্পাসে গত বছর মার্চে ছাত্রলীগের ছত্রছায়ায় রাজনীতি ফেরাতে তারা বেশ সরব ছিলেন। সে বিষয়টি তদন্ত করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক এ কে এম মাসুদ। তবে শাস্তি পাওয়া কারও নাম প্রকাশ করা হয়নি। গত মার্চ মাসে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য পুরকৌশল বিভাগের ইমতিয়াজ রাব্বি সংগঠনের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক ইনানকে নিয়ে বুয়েট ক্যাম্পাসে লোকসমাগম ঘটান। এ ঘটনা জানাজানি হলে বিক্ষোভে উত্তাল হয় ক্যাম্পাস। শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে তাদের বহিষ্কার দাবি করেন। তারা বলেন, রাজনৈতিক সমাগমের মূল সংগঠক ইমতিয়াজকে বুয়েট থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করতে হবে। তাঁর সঙ্গে জড়িত শিক্ষার্থী এ এস এম আনাস ফেরদৌস, হাসিন আরমান নিহাল, অনিরুদ্ধ মজুমদার, জাহিরুল ইসলাম, সায়েম মাহমুদকে বুয়েট ও হল থেকে বহিষ্কার এবং জড়িত অন্যদের অবিলম্বে শনাক্ত করে শাস্তি দিতে হবে। আন্দোলন চলার মধ্যেই ছাত্রলীগের একটি রিটে হাইকোর্ট বুয়েটে রাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্ত স্থগিত করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান ছাত্রলীগের তথ্যপ্রযুক্তি সম্পাদক হাসিন আজফার পান্থ, কেমিক্যাল অ্যান্ড ম্যাটারিয়ালস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আশিক আলম, সাগর বিশ্বাস, অরিত্র ঘোষ, ২১তম ব্যাচের অর্ঘ্য দাস এবং সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী তানভীর স্বপ্নীলসহ ১০-১২ জন। তারা গণমাধ্যমেও বক্তব্য দেন। এসব ঘটনায় প্রশাসন তদন্ত কমিটি গঠন করে ৪১টি সভা এবং ডিসিপ্লিনারি বোর্ডের ৭টি সভা করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানান অধ্যাপক মাসুদ। তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বুয়েট প্রশাসন তদন্ত কমিটি গঠন করে। অভিযোগ যাচাই করে দেখা যায়, অভিযুক্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ডিন্যান্সের ধারা লঙ্ঘন করেছেন। এ জন্য আট শিক্ষার্থীকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। আরও ১২ জনকে ৪ থেকে ৬ সেমিস্টার/টার্মের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। তাদের সাজা আজ থেকে কার্যকর হচ্ছে।’

পোষ্য কোটা ইস্যুতে উত্তাল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

পোষ্য কোটা ইস্যুতে উত্তাল হয়ে উঠেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি)। আগের মত কোটা বহালের দাবিতে কাল বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) থেকে লাগাতার কর্মবিরতি ঘোষণা দিয়েছে কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ। অন্যদিকে, পোষ্য কোটা সম্পূর্ণ বাতিলের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবস্থান নেন। এ ঘটনায় পরে পর দুপুর পৌনে ২টার শিক্ষার্থীরা বটতলা থেকে একটি মিছিল বের করে বিভিন্ন হল, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে শেষ হয়। দুপুর সোয়া ৩টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, কোটা বৈষম্য নিয়ে দেশে একটি গণঅভ্যুত্থান হয়ে গেছে। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটার মতো একটি অযৌক্তিক কোটা থাকতে পারে না। তবুও গতকাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পোষ্য কোটা সংস্কার করেছে। কিন্তু আজ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বৈষম্যের পক্ষে অবস্থা নিয়েছে। আমরা পোষ্য কোটার বাতিল চাই। অন্যদিকে কাল বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) থেকে লাগাতার কর্মবিরতি ঘোষণা দিয়েছে কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ। অফিসার সমিতির সভাপতি ও কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মো. আব্দুর রহমান বাবুল এবং কর্মচারী সমিতির সভাপতি ও কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব মো. রফিকুল ইসলাম বকশিসহ ছয় নেতৃবৃন্দের স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘পোষ্য কোটায় ভর্তি বিভাগীয় সব শর্ত বাতিল করে পূর্বের ন্যায় বহাল রাখার দাবিতে আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে লাগাতার কর্মবিরতি ঘোষণা করা হলো। শুধু জরুরি পরিষেবাগুলো আওতামুক্ত থাকবে তবে আন্দোলনের প্রয়োজনবোধে জরুরি সেবাসমূহ আওতাভুক্ত করা হবে।’ এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে পোষ্য কোটার সংস্কার করেছি। এ বিষয়ে আমরা একটা কমিটিও করেছি। এখানে সব পক্ষেরই দাবি আছে। আমরা ছাত্র শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারী সকলের বিষয় যেন যৌক্তিক পর্যায়ে আসে আমরা এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করব। আমরা সব পক্ষকে সহযোগী হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’ এর আগে সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পোষ্য কোটায় কিছু পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত নেয়। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এক শিক্ষাবর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগ মিলে সর্বোচ্চ ৪০ জন পোষ্য কোটা সুবিধা পাবেন। ভর্তির জন্য পাস নম্বর ৪০ শতাংশ (৩২ নম্বর) নির্ধারণ করা হয়েছে, যা দেশের কৃষক ও শ্রমিকের সন্তানসহ সকল শিক্ষার্থীর জন্য প্রযোজ্য। পূর্বে স্বামী-স্ত্রী, ভাই-বোন, সন্তান ও দত্তক নেওয়া সন্তানের ক্ষেত্রে এই সুবিধা প্রযোজ্য থাকলেও এখন শুধুমাত্র সন্তানরাই এই সুবিধা পাবেন। শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা তাদের চাকরি জীবনে একবারই এই সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন। যদি তাদের একাধিক সন্তান থাকে, তাহলে কেবল একজন এই সুবিধা পাবে। কোনো শিক্ষক, কর্মকর্তা বা কর্মচারী যে বিভাগে কর্মরত, সেই বিভাগে তার সন্তান ভর্তি হতে পারবে না।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে ছাত্রদল-শিবিরের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রদল ও শিবির কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কলেজ ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় কেউ আহত হননি। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক। পরবর্তীসময়ে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’ পুলিশ ও ক্যাম্পাস সূত্র জানায়, সকাল থেকেই ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ভর্তি কার্যক্রম চলছিল। তাদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়াকে কেন্দ্র করে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির কর্মীদের মধ্যে প্রথমে কথা-কাটাকাটি হয়। পরে হাতাহাতির একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ বিষয়ে ময়মনসিংহ মহানগর ছাত্রশিবিরের সভাপতি শরিফুল ইসলাম খালিদ বলেন, ‘কলেজের ঘটনার সঙ্গে ছাত্রশিবিরের কোনো কর্মী জড়িত না। এখানে ছাত্রদলের সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে।’ ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মাহবুবুর রহমান রানা বলেন, ‌‘ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ায় ছাত্রদল কর্মীরা ছিল কিনা আমার জানা নেই। তবে ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হবে।’ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাজমুল হাসান খান বলেন, ‘এমবিবিএস প্রথম বর্ষের ভর্তি হতে আসা শিক্ষার্থীদের ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে দুই দল শিক্ষার্থীর মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’

বাসের সিটে বসা নিয়ে দুই বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ

বাসের সিট ধরাকে কেন্দ্র করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) কুষ্টিয়ার দুই বিভাগের শিক্ষার্থীদের মাঝে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টার দিকে ক্যাম্পাসের অনুষদ ভবনের সামনে আইন ও আল-ফিকহ্ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। এতে উভয়পক্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থী, প্রক্টরিয়াল বডির সদস্য, নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও শিক্ষকরা আহত হয়েছেন। শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় কুষ্টিয়া শহর থেকে ক্যাম্পাসে ছেড়ে যাওয়া একটি ডাবল ডেকার বাসে আল-ফিকহ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের তিন শিক্ষার্থী তাদের বন্ধুদের জন্য সিটে ‘জ্যাকেট’ রেখে দুটি সিট ধরে রাখে। পরে আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের সুমন অভ্র বাসে উঠে জ্যাকেট সরিয়ে ওই সিটে বসেন। এ নিয়ে সুমনের সঙ্গে আল-ফিকহ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীদের বাকবিতণ্ডা হয়। পরে আল-ফিকহের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের সিহাব ও রাকিব কথা বলতে গেলে সুমন রাকিবের শার্টের কলার ধরেন। এতে তাদের মাঝে হাতাহাতি হয় ও সুমনের মুখে আঘাত পান। সুমন মুঠোফোনে ঘটনাটি প্রক্টরকে জানালে শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বাস ক্যাম্পাসে পৌঁছালে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা সেখানে উপস্থিত হন। সুমন বিষয়টি আইন বিভাগের শিক্ষার্থীদের জানালে তারা গিয়ে প্রধান ফটকে গাড়ি আটকায়। এ সময় তারা বাসের সামনের গ্লাস ভাঙচুর করে বলে জানান বাসের চালক। পরে আল-ফিকহ বিভাগের শিক্ষার্থীরাও সেখানে উপস্থিত হন। রাত ১০টার দিকে বিষয়টি সমাধানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডি উভয়পক্ষকের শিক্ষকদের নিয়ে অনুষদ ভবনের প্রক্টর অফিসে আলোচনায় বসেন। এ সময় দুই বিভাগের শিক্ষার্থীরা ভবনের সামনে অপেক্ষা করেন। আলোচনা শেষে রাত সাড়ে ১১টায় দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হলে প্রক্টর বিষয়টি শিক্ষার্থীদের জানায়। তারা চলে যাওয়ার সময় আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা আল-ফিকহ বিভাগের শিক্ষার্থীদের ‘সন্ত্রাসী’ বললে অনুষদ ভবনের সামনে উভয় বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাকবিতন্ডা শুরু হয়। এ সময় আইন বিভাগের এক শিক্ষার্থী প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহিনুজ্জামানকে ধাক্কা দেয়। আল-ফিকহ্ বিভাগের শিক্ষার্থীরা এর প্রতিবাদ করলে ঝাল চত্বরে উভয়পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় মারামারি হয়। এতে উভয়পক্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়। শিক্ষার্থীদের থামাতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এবং উপস্থিত অন্যান্য শিক্ষক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তারাও আহত হন। তাদের বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের টেন্টের পেছনে কিছু বাঁশের লাঠিসোঁটা জড়ো করে রাখে। শাহিনুজ্জামান বলেন, ‘রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) এ বিষয়ে আমরা আবারও বসবো। ছাত্র উপদেষ্টা ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা উভয়পক্ষকে নিয়ে বসে বিষয়টির সমাধান করা হবে।’

যুবদল নেতা তৌহিদুল হত্যার বিচারের দাবি ছাত্র ফ্রন্টের

বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধ ও যৌথবাহিনীর হাতে যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলাম হত্যার বিচারের দাবি জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট। শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ ও সাধারণ সম্পাদক রায়হান উদ্দিনের দেয়া বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়। বিবৃতিতে নেতারা বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যৌথবাহিনীর হাতে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়েছে। অতীতের ধারাবাহিকতায় বর্তমান সময়েও রাষ্ট্রীয় এই বাহিনী বিচারবহির্ভূত হত্যাসহ দমনপীড়ন বহাল রেখেছে। জুলাইয়ের ছাত্র-শ্রমিক, জনতার অভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন হলেও রাষ্ট্রীয় বাহিনীর নির্যাতন-নিপীড়ন বন্ধ হয়নি। আমরা দেখছি ন্যায্য দাবিতে শ্রমিক, শিক্ষক, ছাত্ররা আন্দোলনে নামলে পুরোনো কায়দায় সব আন্দোলনে হামলা করছে সরকারি বাহিনী। একইভাবে সেনাবাহিনী বিভিন্ন জায়গায় যথেষ্ট ক্ষমতার ব্যবহার করে জনগণের ওপর দমন পীড়ন নামিয়ে আনছে। তার সর্বশেষ নজির এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড। রাষ্ট্রীয় বাহিনীর এমন কাজ অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক। যা গণঅভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে গড়ে ওঠা জনগণের আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থি। বিবৃতিতে অবিলম্বে মো. তৌহিদুল ইসলামের হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত এবং বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানানো হয়।

বইমেলা উপলক্ষে ঢাবিতে যানবাহন নিয়ন্ত্রণের বিধিনিষেধ শিথিল

১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে অমর একুশে বইমেলা-২০২৫। এ উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এলাকায় যানবাহন নিয়ন্ত্রণের বিধিনিষেধ শিথিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানে হয়। এতে বলা হয়, অমর একুশে বইমেলা আমাদের প্রাণের মেলা। সারা দেশ থেকে বিভিন্ন বয়স ও শ্রেণিপেশার মানুষ এ বইমেলা উপভোগ করতে আসেন। বইমেলা উপভোগ করতে আশা ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর দিয়ে আসা-যাওয়া নির্বিঘ্ন করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশপথগুলোয় যানবাহন নিয়ন্ত্রণের যে বিধিনিষেধ থাকে তা অমর একুশে বইমেলা উপলক্ষ্যে শিথিল করা হলো। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যানবাহন নিয়ন্ত্রণের জন্য কোনো ব্যারিকেড রাখবে না। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে প্রক্টরিয়াল টিম ও স্বেচ্ছাসেবকরা সহায়তা করবে উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা মহানগর ট্রাফিক বিভাগ প্রবেশপথগুলোতে যানবাহন সুশৃঙ্খলভাবে প্রবেশ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে যানবাহনগুলো সুশৃঙ্খলভাবে পার্কিং করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বেচ্ছাসেবক দল এবং প্রক্টরিয়াল মোবাইল সিকিউরিটি টিমের সদস্যরা ট্রাফিক বিভাগকে এ ব্যাপারে সার্বিক সহায়তা করবে। বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ অমর একুশে বইমেলা ২০২৫ উপলক্ষ্যে যানবাহন চলাচল নির্বিঘ্ন করার জন্য ইতোমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছে।

সমন্বয়ক আখ্যা দিয়ে শিক্ষার্থীদের মেসে ঢুকে সন্ত্রাসীদের হামলা, আহত ৮

সমন্বয়ক আখ্যা দিয়ে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের মেসে প্রবেশ করে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে ৮ শিক্ষার্থীকে গুরুতর আহত করেছে। আহত শিক্ষার্থীদের গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) রাত ৯টার দিকে গোপালগঞ্জ শহরের নিকটস্থ পাচুরিয়ায় শিক্ষার্থীদের মেসে ঢুকে হামলা চালিয়ে ৮ জনকে আহত করার ঘটনা ঘটে। আহত শিক্ষার্থীরা জানান, ১০ থেকে ১৫ জন স্থানীয় সন্ত্রাসী হঠাৎ মেসে প্রবেশ করে। মেসে ঢুকে তাদেরকে সমন্বয়ক আখ্যা দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। গালিগালাজের একপর্যায়ে তাদেরকে পাইপ দিয়ে মারতে শুরু করে। এসময় সন্ত্রাসীরা তাদেরকে বলেন, ‘তোরা সমন্বয়ক তোরা আন্দোলন করেছিস’। হামলায় গুরুতর আহত শিক্ষার্থীরা হলেন- অ্যাপ্লাইড কেমিস্ট্রি অ্যান্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সেলিম রেজা, কৃষি বিভাগের ২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তাহমিদ ও ১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ইয়াজদানী। এছাড়াও আহত হয়েছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মুয়াজ বিল্লাহ, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ইমরান এবং স্থানীয় দুই শিক্ষার্থী আসাদুল্লাহ ও খালিদ। এই ঘটনায় কৃষি বিভাগের শিক্ষার্থী ইয়াজদানীর হাত ভাঙার খবর পাওয়া গেছে। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে ফার্মেসি বিভাগের ১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শাহীন বলেন, গোপালগঞ্জে বার বার শিক্ষার্থীদের ওপর বিভিন্ন ভাবে হামলা করা হচ্ছে। আমরা অতিবিলম্বে এসব হামলার বিচার চাই। যে সব সন্ত্রাসীরা হামলা চালাচ্ছে তাদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানায়। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়ে প্রশাসনের পদক্ষেপের দাবি জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আজ আমরা নিরাপত্তাহীনতায় আছি। এই সব ঘটনার বিচারের মাধ্যমে সন্ত্রাসীদের দমন করার দাবি জানাচ্ছি। এই ঘটনায় গোপালগঞ্জ সদর থানার ইনচার্জ সাজ্জাদুর রহমান জড়িত প্রধান আসামি ইফতির গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আমাদের সব টিম বাকিদের আটকের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। তাদেরকে আমরা দ্রুত আটক করে বিচারের মুখোমুখি করব।

আট ঘণ্টায়ও সড়ক ছাড়েনি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা, দুর্ভোগ

ঢাকা উত্তর সিটির মহাখালীল সরকারি তিতুমীর কলেজকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করাসহ সাত দফা দাবিতে সড়ক অবরোধ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে কলেজের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নেয় তারা। অবরোধ শুরুর পর প্রায় ৮ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও রাস্তা ছাড়েনি আন্দোলনকারীরা। সড়ক অবরোধের কারণে কলেজের সামনের সড়কের দুই পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন আমতলী থেকে গুলশান-১ এবং গুলশান-১ থেকে আমতলীমুখী যাত্রীরা। এদিকে, একই দাবিতে বুধবার (২৯ জানুয়ারি) আমরণ অনশনে বসেন কলেজটির কয়েকজন শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে তিনজন অসুস্থ হয়ে পড়লে উদ্ধার করে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তারা হলেন- গণিত বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের আমিনুল ইসলাম, বাংলা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের রানা আহমেদ লাকী এবং মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের রাশেদুল ইসলাম রাশেদ। আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম তিতুমীর ঐক্যের সাত দফা দাবিগুলো হল- তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ। তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠন করে ২৪-২৫ সেশনের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করা। শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ নতুবা অনতিবিলম্বে শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসিক খরচ বহন ও ২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ন্যূনতম দুটি বিষয় ল’ এবং জার্নালিজম সাবজেক্ট সংযোজন। এছাড়া, একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন পিএইচডিধারী শিক্ষক নিয়োগ শিক্ষার গুণগতমান শতভাগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে আসন সংখ্যা সীমিতকরণ ও আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাগার বিনির্মাণের লক্ষ্যে জমি ও আর্থিক বরাদ্দ নিশ্চিতকরণ।

"শাহবাগী গোসল কর" স্লোগান দিয়ে কুবিতে মিছিল

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে "শাহবাগী গোসল কর" স্লোগান দিয়ে মিছিল করা হয়েছে। নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ঘোষিত কর্মসূচির বিরুদ্ধে এভাবেই বিক্ষোভ মিছিল করেছেন সেখানকার শিক্ষার্থীরা। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। এরপর মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন সড়ক ঘুরে মূল ফটকে এসে শেষ হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা "ছাত্রলীগের ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না', 'সন্ত্রাসীদের ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না' 'গোলামি না আজাদি, আজাদি আজাদি, জ্বালোরে জ্বালো, আগুন জ্বালো, যুবলীগের বিরুদ্ধে লড়াই কর একসাথে, ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে লড়াই কর একসাথে, 'লড়াই লড়াই লড়াই চাই, লড়াই করে বাঁচতে চাই', আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আগুন জ্বালো একসাথে, একটা একটা লীগ ধর, ধরে ধরে জেলে ভর', শাহবাগী, গোসল কর, শাহবাগী - গোসল কর" স্লোগান দেন। বিক্ষোভ মিছিলের বিষয়ে কুবির সমন্বয়ক মোজাম্মেল হোসেন আবির বলেন, আমরা অনলাইনে দেখলাম যে আওয়ামী লীগ বা ঘৃণিত স্বৈরাচাররা ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে হরতাল ও আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। তাদের সঙ্গে ছাত্রলীগও সমর্থন জানিয়েছে। বাংলাদেশে যেখানে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ সংগঠন, সেখানে তারা রাজনীতি করার অধিকার রাখে না। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ যে গণহত্যা চালিয়েছে, তাতে তারা অনুতপ্ত না হয়ে অবৈধ কর্মসূচি দিয়ে যাচ্ছে। তারই প্রতিবাদে আজকে বাংলাদেশের প্রত্যেকটা ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে। তারই অংশ হিসেবে আজকে আমরা এই বিক্ষোভ মিছিল করেছি।

নারীসহ দুই শিক্ষার্থীকে মেরে হাসপাতালে পাঠালেন ছাত্রদল কর্মী

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জুতা পায়ে ওঠা নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে হামলার শিকার হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের দুই শিক্ষার্থী। হামলায় নেতৃত্ব দেন মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী অনিক কুমার দাশ। অনিক ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি কাজী জিয়া উদ্দিন বাসেতের একনিষ্ঠ কর্মী তিনি। আজ (বুধবার) সন্ধ্যার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে এ হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় রসায়ন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তামান্না তাবাসসুম ও আকাশ আলী আহত হন। ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে আহত শিক্ষার্থী আকাশ আলীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জুতা পায়ে এক মেয়ে ও ছেলে শহীদ মিনারে উঠলে প্রতিবাদ করেন আকাশ। এরপর তাদের মাঝে কথাকাটাকাটি শুরু হয়। এক পর্যায়ে জুতা পায়ে শহীদ মিনারে ওঠা মেয়েটির বন্ধু মাহী আকাশকে ধাক্কা দিতে গেলে আকাশ তার হাত সরিয়ে দেয়। এ সময় মাহী তার বিভাগের বন্ধু অনিককে ফোন করেন। এরপর অনিকের সঙ্গে ১৫ থেকে ২০ জন শিক্ষার্থী এসে আকাশকে পেটাতে শুরু করে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী রসায়ন বিভাগের শিক্ষক সহকারী অধ্যাপক আব্দুল আওয়াল বলেন, আমি হতবাক হয়ে গেছি। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এমন ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করতে পারে! আমার সামনেই আমার শিক্ষার্থীকে তিন দফা মেরেছে। ঘটনার বিষয়ে হামলার শিকার আকাশ বলেন, আমরা বিভাগের প্রোগামের জন্য স্টেজের কাজ করছিলাম। বিদ্যুৎ চলে গেলে চা খাওয়ার জন্য নিচে আসি। তখন একজন নারী শিক্ষার্থী ও তার সঙ্গে থাকা একজন ছেলেকে জুতা পায়ে শহিদ মিনারে ওঠেন। তাদের এ বিষয়ে বললে মেয়েটি বলেন, ‘আমার ইচ্ছা তাই জুতা পায়ে উঠেছি।’ একপর্যায়ে ছেলেটি আমার ওপর চড়াও হয়। এরপর আমি তাকে আঘাত করেছি, এটা বলে তার বন্ধু অনিককে ফোন করেন। তিনি আরও বলেন, তখন অনিক এসে আমার ওপর অতর্কিত হামলা করেন। এরপর তার সঙ্গে থাকা প্রায় ১৫ জনের বেশি ছেলে এসে আমার ওপর হামলা করেন। অনিকই আমার ওপর প্রথম হামলা শুরু করে। তারা কয়েক দফায় শহিদ মিনারের সামনে এবং গণিত বিভাগের সামনে হামলা করে। আমার বুকে কিল-ঘুষি ও পেটে লাথি মারে। শহীদ মিনারে থাকা একটি বাঁশ দিয়েও আমাকে আঘাত করে অনিক। আমাকে বাঁচাতে গিয়ে আমার বান্ধবী তামান্না ও বাসারও আহত হয়। এ বিষয়ে ছাত্রদল কর্মী অনিক বলেন, আমার বন্ধু মাহী আমাকে ফোন দিলে শহিদ মিনারে যাই। গিয়ে দেখি তার (মাহী) সঙ্গে একজনের (আকাশ) কথা কাটাকাটি চলছে। এ সময় আমি অসুস্থ থাকায় পেছনে ছিলাম, বাকিরা গিয়ে আকাশকে মেরেছে। এ বিষয়ে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, এটা বিভাগের শিক্ষার্থীদের একটা বিষয় বলে জেনেছি। ছাত্রদলের কেউ জড়িত কিনা খতিয়ে দেখব। এ বিষয়ে রসায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে এম লুৎফর রহমান বলেন, আমার বিভাগের একজন শিক্ষার্থীকে এভাবে আমার ডিপার্টমেন্টের শিক্ষকের সামনে মারছে এটা দুঃখজনক। প্রত্যেক শিক্ষার্থীই আমার সন্তান। সন্তানের শরীরে এমন আঘাত দেখলে যেকোনো পিতারই কষ্ট হবে। অব্যশই এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার বিচার চাই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অতি দ্রুতই ব্যবস্থা নেবে বলে আমাকে বলেছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, সন্ধ্যার দিকে শহীদ মিনার চত্বরে একটা মারামারির ঘটনা ঘটেছে শুনেছি। সহকারী প্রক্টর ফেরদৌস স্যার তাৎক্ষণিক উপস্থিত হয়েছেন। রসায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান আমাকে বিষয়টি অবগত করেছেন। লিখিত অভিযোগ পেলে আমরা তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।

তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে আমরণ অনশনে শিক্ষার্থীরা

সরকারি তিতুমীর কলেজকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করার দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছেন কলেজের একদল শিক্ষার্থী। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেল ৫টার পর থেকে কলেজটির মূল ফটকের সামনে ‘তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে আমরণ অনশন’ ব্যানারে তারা এ অনশন শুরু করেন। এসময় তারা সাত দফা দাবি জানান। তিতুমীর ঐক্যের দাবিগুলো হল- তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ, তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠন করে ২০২৪-২৫ সেশনের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করা, শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ বা অনতিবিলম্বে শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসিক খরচ বহন ও ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে আইন ও সাংবাদিকতা বিষয় চালু করতে হবে। তাছাড়া একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন পিএইচডিধারী শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে শিক্ষার গুণগতমান শতভাগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে আসনসংখ্যা সীমিতকরণ ও আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাগার নির্মাণের লক্ষ্যে জমি ও আর্থিক বরাদ্দ নিশ্চিতকরণ।। অনশনে অংশ নেওয়া কলেজের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী এফ রায়হান বলেন, ‘তিতুমীর ঐক্যের ডাকে তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে স্বেচ্ছায় সজ্ঞানে নিজ দায়িত্বে আমি আমরণ অনশনে যোগ দিয়েছি। তিতুমীর কলেজের ৩৫ হাজার শিক্ষার্থীর অধিকার নিশ্চিত করা ও ঢাকা উত্তরে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এ আন্দোলন আজ সময়ের দাবি।’

ইবিতে চলছে মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষণ কর্মশালা

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) কুষ্টিয়ায় নারীদের আত্মরক্ষা ও আত্মবিশ্বাসী করে তুলতে সাত দিনব্যাপী ‘ব্যাসিক মার্শাল আর্ট অ্যান্ড সেলফ ডিফেন্স’ ট্রেনিং কর্মশালা চলছে ৷ মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেশিয়ামে চতুর্থ দিনের মতো চলছে এই কর্মশালা৷ কর্মশালাটি শুরু হয়েছে গত শুক্রবার (২৫ জানুয়ারি)। চলবে আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। শতাধিক নারী শিক্ষার্থী এই কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেছেন ৷ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কারাতে ক্লাব ও শারীরিক শিক্ষা ও ক্রিড়া বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগীতায় কর্মশালায় প্রধান প্রশিক্ষক হিসেবে রয়েছেন বাংলাদেশ কারাতে কনফেডারেশনের কার্যকরী সদস্য রেজাউল করিম। আরও রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির কারাতে ক্লাবের সিনিয়র পুরুষ প্রশিক্ষক রাফি আহনাফ খান ও ক্লাবের প্রধান প্রশিক্ষক জান্নাতুল ফেরদৌস তানজিনা৷ প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়া ইংরেজি বিভাগের ছাত্রী রাদিয়া সুলতানা বলেন, ‘সেল্ফ ডিফেন্স ওয়ার্কশপে অংশ নিয়ে বুঝতে পারলাম, নিজের সুরক্ষার জন্য এই দক্ষতাগুলো শেখা কতটা জরুরি। প্রতিটি টেকনিক আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছে এবং প্রয়োজনের সময় সেগুলো কাজে লাগানোর সাহস দিচ্ছে। এই অভিজ্ঞতা থেকে রিয়ালাইজ করেছি, সেল্ফ ডিফেন্সের মতো স্কিল প্রতিটি মানুষের জীবনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ।’ কর্মশালার বিষয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস তানজিনা বলেন, ‘ইসলামিক ইউনিভার্সিটি কারাতে ক্লাব থেকে সাত দিনব্যাপী মেয়েদের জন্য একটি ওয়ার্কশপের আয়োজন করা হয়েছে। এই ওয়ার্কশপ আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে মেয়েদেরকে আত্মরক্ষার কৌশল শেখানোর পাশাপাশি তাদেরকে আত্নবিশ্বাসী করে গড়ে তোলা। বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন নিউজ পোর্টালের মাধ্যমে আমরা দেখতে পাচ্ছি, প্রতিনিয়ত আমাদের মতো মেয়েরা পারিবারিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে শারীরিক ও মানসিক নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। রাস্তাঘাটে চলাফেরা করতে গিয়ে সমবয়সী, কমবয়সী বা বয়োবৃদ্ধ পুরুষদের দ্বারাও বিভিন্ন ধরনের ইভটিজিং ও হ্যারেজমেন্টের শিকার হচ্ছে। এতে মানসিকভাবে তারা ভেঙে পড়ছে, চলাফেরায় ভয় আতঙ্কিত অনুভব করছে। মূলত এই ধরনের পরিস্থিতি যেন মেয়েদের পড়তে না হয় বা হলেও যেন তারা সহজে এগুলো সমাধান করে সুস্থ - স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারে- এই সকল কারণেই আমাদের এই আয়োজন।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে আমাদের সাহায্যের কথা বলা হলেও আদতে আমরা কোনো সাহায্য পাচ্ছি না৷ জিমনেসিয়ামে মেয়েদের কোন সুইটেবল টাইম নাই। যে টাইম আছে, ওই সময় ব্যায়াম করার জন্য পারফেক্ট না। এছাড়া, মেয়েদের জিম ইনস্ট্রুমেন্টও নাই। বার বার আমরা এসব নিয়ে কথা বললেও ইতিবাচক কোন সাড়া কতৃপক্ষ থেকে পাচ্ছি না। এই ছোট একটা কর্মশালা করতেও আমার অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে, যেগুলো কখনোই কাম্য নয়।’

ইবিতে বাস ভাংচুরের ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন

শিক্ষার্থীদের সাথে বাস স্টাফের অসদাচরণের অভিযোগে মধ্যরাতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) প্রধান ফটকে বাস আটকানো, শিক্ষার্থী আহত হওয়া ও বাস ভাঙচুরের ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) কৃষ্টিয়া কর্তৃপক্ষ। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তরের অফিস আদেশে এ কমিটি গঠন করা হয়। চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটিতে আইআইইআরের পরিচালক অধ্যাপক ড. ইকবাল হোসাইনকে আহ্বায়ক ও পরিবহন অফিসের উপ-রেজিস্ট্রার হাফিজুর রহমানকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। এছাড়া, কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. জালাল উদ্দিন ও সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. ফকরুল ইসলাম। কমিটিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে যাচাই-বাছাই পূর্বক তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। ইকবাল হোসাইন বলেন, ‘শুনেছি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। হাতে এখনও চিঠি না পাওয়া কিছু বলতে পারছি না। অন্যান্য সদস্যদের সাথে কথা বলে কাজ শুরু করবো।’ হাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমি চিঠি পেয়েছি। চারজনকে নিয়ে আগামী সপ্তাহে মিটিং ডাকা হয়েছে। কিভাবে কী করব তা মিটিং এ সিদ্ধান্ত নিয়ে সামনে আগাবো। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কাম্য।’ উল্লেখ্য, গত বুধবার (২২ জানুয়ারি) রাতে শিক্ষার্থীদের সাথে এসবি পরিবহনের একটি বাসের সুপারভাইজারের খারাপ ব্যবহারের অভিযোগে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে শিক্ষার্থীরা বাসটি আটক করে। ঘটনাস্থলে একজন শিক্ষার্থী আহত হন এবং কয়েকজন শিক্ষার্থী বাসে ভাঙচুর চালায়। এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা ভাঙচুরে বাধা দিলে ভাঙচুরকারীরা সমন্বয়কদের উপর চড়াও হয়।

লালমাই পাহাড় ধ্বংসের বিষয়ে তদন্ত ও ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ‘অধিকতর উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পে লালমাই পাহাড় কেটে অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। এতে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অনন্য প্রত্নতাত্তিক সম্পদসমৃদ্ধ লালমাই পাহাড় ধ্বংস করায় পরিকল্পনা কমিশন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগের সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠনপূর্বক এর দায়-দায়িত্ব নিরূপণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব দিল আফরোজ বেগম স্বাক্ষরিত পত্রের মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিবকে অনুরোধ করা হয়েছে। ২০১৮ সালের একনেক সভায় এই প্রকল্প অনুমোদনের সময় শর্ত দেওয়া হয়েছিল, অবকাঠামো নির্মাণে পাহাড় না কেটে ডিজাইন তৈরি করতে হবে। পরিবেশ অধিদপ্তরের শর্তেও বলা হয়েছিল, প্রকল্পে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি হয় এমন কোনো কাজ করা যাবে না। তবে এসব শর্ত ভঙ্গ করে কোনো পরিবেশগত ছাড়পত্র ছাড়াই পাহাড় কেটে অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি সরেজমিন পরিদর্শনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। উচ্চ শিক্ষার প্রতিষ্ঠান হিসেবে কুবির এ ধরনের কর্মকাণ্ড নেতিবাচক উদাহরণ তৈরি করেছে। এর ফলে সমাজে পাহাড় কেটে উন্নয়ন কাজ করার ভুল বার্তা পৌঁছাচ্ছে।

পাবিপ্রবিতে ‘অন্তপুরীর সাতকাহন’

ছাত্রীদের নাচ, গান, আবৃত্তি ও অভিনয়সহ বিভিন্ন আয়োজনের মধ্য দিয়ে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি) অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘অন্তপুরীর সাতকাহন’ শীর্ষক অনুষ্ঠান। রোববার (২৬ জানুয়ারি) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র ছাত্রী হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এসএম আব্দুল আওয়াল। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. শামীম আহসান। সভাপতিত্ব করেন হলের প্রাধ্যক্ষ ড. জিন্নাত রেহানা। অনুষ্ঠানে এসএম আব্দুল আওয়াল শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘যুগের সাথে তাল মিলিয়ে নিজেদের তৈরি করতে হবে। আমাদের দেশের মেয়েরা অনেক দায়িত্বশীল, জাতি গঠনে তাদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তোমাদের স্বপ্ন বড় করা, চিন্তার পরিধি বাড়ানো এবং মন ও মননে বিকশিত হতে হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোনো সমস্য আমরা দ্রুত সমাধান করার চেষ্টা করছি।’ মো. নজরুল ইসলাম ও মো. শামীম আহসান ছাত্রী হলের সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধানের কথা বলেন।অনুষ্ঠানে বিভিন্ন অনুষদের ডিন, প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টা, দপ্তর প্রধান, হলের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে নাচ, গান, আবৃত্তি, অভিনয়সহ বিভিন্ন আয়োজন ছিল। এ অনুষ্ঠানকে ‘হল ফেস্ট’ বলা হয়ে থাকে। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ইভেন্টে প্রতিযোগিতায় জয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিরা।

চবির মাস্টারদা সূর্যসেন হলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা উদ্বোধন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) মাস্টারদা সূর্যসেন হলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা উদ্বোধন হয়েছে। চবির উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার সোমবার (২৬ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯টায় বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে এ উৎসব উদ্বোধন করেন। তিনি বলেন, ‘জ্ঞানচর্চার উচ্চতর বিদ্যাপীঠ বিশ্ববিদ্যালয়ে জ্ঞান আহরণের পাশাপাশি খেলাধুলা ও শরীরচর্চার গুরুত্ব অনস্বীকার্য।’ এ লক্ষ্যে দেহ ও মনের পরিপূর্ণ বিকাশে খেলাধুলার ভূমিকাকে স্বরণ করে মাস্টারদা সূর্যসেন হল কতৃপক্ষ বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার যে আয়োজন করেছে, এ জন্য হল কর্তৃপক্ষকে উপাচার্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানান তিনি। উপাচার্য দৃবিশ্বাস করেন, লেখাপড়ায় সফলতা অর্জনের পাশাপাশি মাস্টারদা সূর্যসেন হলের শিক্ষার্থীরা খেলাধুলায় সাফল্য লাভ করার মাধ্যমে জীবনে নবতর অনুপ্রেরণা সৃষ্টি করবে। উপাচার্য সুন্দর পরিবেশে শিক্ষার্থীদের ক্রীড়া ও শরীরচর্চা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চবির উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান ও চবির বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আল-আমিন। সভাপতিত্ব করেন মাস্টারদা সূর্যসেন হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. সৈয়দ মুহাম্মদ শামসুল হুদা। অনুষ্ঠানে চবির শারীরিক শিক্ষা বিভাগের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) আনিসুল আলম উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে চবির উপাচার্য জাতীয় পতাকা, বিশেষ অতিথি ও আমন্ত্রিত অতিথিদ্বয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা, মাস্টারদা সূর্যসেন হলের প্রভোস্ট হল পতাকা ও শারীরিক শিক্ষা বিভাগের পরিচালক অলিম্পিক পতাকা উত্তোলন করেন। মশাল হাতে মাঠ প্রদক্ষিণ করেন হলের কৃতী ক্রীড়াবিদ অনামিকা চৌধুরী ও তাজিম ইবনে হাবিব। বিচারকদের পক্ষে প্রধান বিচারক চবির ইনস্টিটিউট অব ফরেস্ট্রি এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেসের প্রফেসর ড. জরিন আখতার ও প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন ও ক্রীড়াবিদদের পক্ষে হলের কৃতী ক্রীড়াবিদ ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ সিয়ামকে উপাচার্য শপথ বাক্য পাঠ করান। মাস্টারদা সূর্যসেন হলের আবাসিক শিক্ষক ও দলের টীম ম্যানেজার প্রফেসর ড. বায়েজীদ মাহমুদ খানের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত হয় ক্রীড়াবিদদের মার্চপাস্ট। প্রতিযোগিতায় দলনেতার দায়িত্বপালন করেন আল ইমরান এবং হলের পতাকা বহন করেন হলের কৃতী ক্রীড়াবিদ মো. সজিব হোসেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন চবির রেজিস্ট্রার দপ্তরের ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ হোসেন।

মেসে ঝুলছিল জবি ছাত্রীর নিথর দেহ

রাজধানীর পুরান ঢাকার কাঠেরপুলের তনুগঞ্জ লেনের একটি ছাত্রী মেস থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) এক ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তার নাম সাবরিনা রহমান শাম্মী। রোববার (২৬ জানুয়ারি) ভোর সাড়ে চারটার দিকে ওই শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। শাম্মী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তার গ্রামের বাড়ি যশোরে। তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। সূত্রাপুর থানার ওসি সাইফুল ইসলাম মরদেহ উদ্ধারের তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী সাবরিনা রহমান শাম্মী কাঠেরপুলের তনুগঞ্জ লেনের একটি ছাত্রী মেসে থাকতেন। মেসের একটি রুমে একাই থাকতেন তিনি। খবর পেয়ে ভোরে গিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় থাকা মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজধানীর মিডফোর্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, ভোরে ঘটনা শোনামাত্রই সূত্রাপুর থানায় যাই। বুয়েটের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ দ্রুত গ্রামের বাড়ি যশোরে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানান প্রক্টর।