সাত গোলের থ্রিলারে বার্সেলোনাকে হারিয়ে ফাইনালে ইন্টার

সান সিরোতে রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালের ফিরতি লেগে ইতিহাস গড়ল ইন্টার মিলান। বার্সেলোনার বিপক্ষে ৪-৩ গোলের রোমাঞ্চকর জয় তুলে নিয়ে দুই লেগ মিলিয়ে ৭-৬ ব্যবধানে ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করেছে ইতালিয়ান জায়ান্টরা। নাটকীয় এই ম্যাচে একাধিকবার পাল্টেছে ম্যাচের মোড়, আর শেষ হাসি হেসেছে স্বাগতিক ইন্টার। প্রথম লেগে বার্সার মাঠে ৩-৩ গোলে ড্র করেছিল ইন্টার। ফিরতি লেগে ঘরের মাঠে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিল তারা। ২১তম মিনিটে লাউতারো মার্তিনেজের গোলে এগিয়ে যায় ইন্টার। এরপর ৪৫তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে হাকান কালহানোগলু ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে অফসাইডের কারণে তৃতীয় গোল বাতিল হয় ইন্টারের। তবে এরপরই শুরু হয় বার্সার প্রত্যাবর্তন। ৫৪ ও ৬১ মিনিটে গার্সিয়া এবং দানি ওলমোর গোলে সমতায় ফেরে তারা। শেষ সময়ে রাফিনহার গোলে ৩-২-এ এগিয়েও যায় কাতালানরা। তবে ইনজুরি টাইমে আকারবির গোলে ৩-৩ সমতায় ফেরে ইন্টার। অতিরিক্ত সময়ের ৯৯ মিনিটে ডেভিড ফ্রাত্তেসির গোলে জয় নিশ্চিত করে স্বাগতিকরা। ম্যাচজুড়ে বল দখল ও শটের দিক থেকে এগিয়ে ছিল বার্সা। ৭১ শতাংশ বল দখলে রেখে ২২টি শট নেয় তারা, যার ১০টি ছিল লক্ষ্যে। তবে ইন্টারের গোলরক্ষক ইয়ান সমারের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে গোলবঞ্চিত হয় বার্সা। সাতটি সেভ করে ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন তিনি। ম্যাচ শেষে সমার বলেন, 'আমরা অসাধারণ ম্যাচ খেলেছি। ইয়ামালের শেষ শটটা বাঁচানো সবচেয়ে মনে রাখার মতো। অনেক দল ৩-২ তে পিছিয়ে পড়ে হাল ছেড়ে দিত, কিন্তু আমরা ফিরে এসেছি।' ইন্টার উইঙ্গার ডেনজেল ডুমফ্রাইস বলেন, 'আবারও অবিশ্বাস্য ম্যাচ। সাত গোল, সত্যিই অবিশ্বাস্য। আমরা ফাইনালে, আমি গর্বিত।'

চলে গেলেন আর্জেন্টিনার ১৯৭৮ বিশ্বকাপজয়ী দলের গালভান

আর্জেন্টিনার ১৯৭৮ সালের বিশ্বকাপজয়ী দলের অন্যতম সদস্য, কিংবদন্তি ডিফেন্ডার লুইস আদোলফো গালভান আর নেই। সোমবার (৫ মে) কোর্দোবা শহরের রেইনা ফাবিওলা ক্লিনিকে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৭৭ বছর বয়সে তিনি শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। ১৯৭৮ সালের বিশ্বকাপে গালভান ছিলেন আর্জেন্টিনার রক্ষণভাগের অপরিহার্য অংশ। ক্যাপ্টেন দানিয়েল পাসারেলার সঙ্গে জুটি বেঁধে তিনি প্রতিটি ম্যাচে মাঠে নামেন, যার মধ্যে ছিল বুয়েনস আইরেসের মনুমেন্তাল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনাল, যেখানে আর্জেন্টিনা অতিরিক্ত সময়ে নেদারল্যান্ডসকে ৩-১ গোলে পরাজিত করে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জিতে নেয় । জাতীয় দলের হয়ে ১৯৭৫ থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত তিনি ৩৪টি ম্যাচ খেলেন এবং ১৯৮২ সালের বিশ্বকাপেও অংশগ্রহণ করেন । গালভান তার ক্লাব ক্যারিয়ারের অধিকাংশ সময় কাটিয়েছেন তালিয়েরেস দে কোর্দোবা ক্লাবে, যেখানে তিনি ১৭ মৌসুমে ৫০৩টি ম্যাচে অংশগ্রহণ করেন, যা ক্লাবটির ইতিহাসে সর্বোচ্চ। তার ক্লাব ক্যারিয়ারে তিনি আরও খেলেছেন লোমা নেগ্রা, বেলগ্রানো, সেন্ট্রাল নর্তে এবং বলিভিয়ার ক্লাব বলিভারে। গালভান গত কয়েক সপ্তাহ ধরে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। এর আগে মার্চ মাসে তিনি কিডনি সমস্যার কারণে হাসপাতালে ভর্তি হন। আর্জেন্টাইন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এএফএ) এক বিবৃতিতে গালভানের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে এবং তাঁর পরিবার ও বন্ধুদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে । গালভানের ক্লাব তালিয়েরেস দে কোর্দোবা সামাজিক মাধ্যমে লিখেছে, “আমরা গভীর দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, আমাদের ক্লাবের প্রতীক এবং ১৯৭৮ সালের বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য লুইস আদোলফো গালভান আমাদের মাঝে আর নেই। আমরা তাঁর আত্মার চিরন্তন শান্তি কামনা করি এবং তাঁর পরিবার ও প্রিয়জনদের প্রতি সমবেদনা জানাই” ।

ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের অবনতি

আইসিসির বাৎসরিক র‌্যাঙ্কিংয়ের হালনাগাদে দুঃসংবাদ পেল বাংলাদেশ। ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের নিচে নেমে গেছে তারা। এক ধাপ পিছিয়ে এখন ১০ নম্বরে আছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্তা সংস্থা র‌্যাঙ্কিংয়ের হালনাগাদ প্রকাশ করেছে সোমবার। ওয়ানডেতে ৪ রেটিং পয়েন্ট হারিয়েছে বাংলাদেশ। ৭৬ পয়েন্ট নিয়ে দশম স্থানে আছে তারা। টেস্ট ও টি-টোয়েন্টিতে আগের মতোই নবম স্থানে আছে বাংলাদেশ।

এবার আইপিএলের সম্প্রচার বন্ধ করল পাকিস্তান

কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারতের পক্ষ থেকে সরাসরি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ তোলা হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা চরমে উঠেছে, যার প্রভাব পড়েছে ক্রীড়াঙ্গনে, বিশেষ করে ক্রিকেটে। ভারত সরকার শুরুতে পাকিস্তানের সম্প্রচার চ্যানেল বন্ধ করে দিয়ে থাকেন, এরপর পাকিস্তানি তারকা ক্রিকেটার ও সেলিব্রেটিদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্লক করে রাখে ভারতে। এবার পাকিস্তান সরকার দেশজুড়ে ভারতীয় প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) ২০২৫ সরাসরি সম্প্রচার ও স্ট্রিমিংয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এই পদক্ষেপটি এসেছে ভারত কর্তৃক পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) সম্প্রচার বন্ধ করার পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে। সম্প্রতি ফ্যানকোড নামক ভারতীয় স্পোর্টস স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম পিএসএলের সম্প্রচার হঠাৎ করে বন্ধ করে দেয়। প্ল্যাটফর্মটি পিএসএলের সব ধরনের ভিডিও কনটেন্ট, হাইলাইটস এবং লাইভ সম্প্রচার তুলে নেয়। এর আগে সনি স্পোর্টস নেটওয়ার্ক এবং ক্রিকবাজসহ অন্যান্য ভারতীয় মিডিয়া প্রতিষ্ঠানও পিএসএল কভারেজ থেকে নিজেদের গুটিয়ে নেয়। এর জবাবে পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ এখন আইপিএলের সম্প্রচার নিষিদ্ধ করেছে, যার ফলে পাকিস্তানি দর্শকরা আর স্থানীয় টিভি চ্যানেল বা ডিজিটাল অ্যাপের মাধ্যমে আইপিএল দেখতে পারবেন না। এখন পর্যন্ত পাকিস্তানে আইপিএল বিভিন্ন স্যাটেলাইট চ্যানেল এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মে দেখা যেত। এই নিষেধাজ্ঞা দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক উত্তেজনার ইঙ্গিত দেয়, যার পেছনে সাম্প্রতিক পাহালগামে ঘটনার বড় ভূমিকা রয়েছে। এর ফলে শুধু দ্বিপাক্ষিক ক্রিকেট সম্পর্কই নয়, গোটা অঞ্চলের ক্রিকেটীয় পরিবেশ অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। এমনকি আসন্ন এশিয়া কাপ ২০২৫ নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছে।

এক ম্যাচেই পাঁচ রেকর্ড গড়লেন কোহলি

রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে বিরাট কোহলির রেকর্ডের কমতি নেই। চলতি আইপিএলে দারুণ ফর্মে আছেন তিনি। মাঠে নামলেই রান আর রেকর্ড, দুটোই যেন অনায়াসে করে যাচ্ছেন এই তারকা ব্যাটার। গতরাতে বেঙ্গালুরুতে চেন্নাইয়ের বিপক্ষে ৩৩ বলে ৬২ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেছেন তিনি। আর তার এই ইনিংসে একসঙ্গে গড়েছেন পাঁচটি রেকর্ড। একইসঙ্গে চলতি আইপিএলে সর্বোচ্চ ৫০৫ রান করে আবারও নিজের দখলে নিয়েছেন অরেঞ্জ ক্যাপ। এক দলের হয়ে ৩০০ ছক্কা-আইপিএলে আরসিবির হয়ে ৩০০ ছক্কা হাঁকানোর কীর্তি গড়েছেন কোহলি। একটি দলের হয়ে এত ছক্কা আর কেউ মারেননি। তার পেছনে রয়েছেন ক্রিস গেইল (২৬৩), রোহিত শর্মা (২৬২), পোলার্ড (২৫৮) ও ধোনি (২৫৭)। এক মাঠে সবচেয়ে বেশি ছক্কা- বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে কোহলির ছক্কার সংখ্যা এখন ১৫৪টি। এই মাঠেই ক্রিস গেইলের ছক্কা সংখ্যা ১৫১। টি-টোয়েন্টিতে একটি মাঠে সবচেয়ে বেশি ছক্কা মারার রেকর্ড এখন কোহলির। চেন্নাইয়ের বিপক্ষে সবচেয়ে বেশি ফিফটি- চেন্নাইয়ের বিপক্ষে কোহলির ফিফটি এখন ১০টি। আইপিএলে কোনো ব্যাটারের এতো বেশি ফিফটি চেন্নাইয়ের বিপক্ষে নেই। এর আগে শিখর ধাওয়ান, ওয়ার্নার ও রোহিত শর্মার ফিফটি ছিল ৯টি করে। এক প্রতিপক্ষের বিপক্ষে সর্বোচ্চ রান- চেন্নাইয়ের বিপক্ষে কোহলির মোট রান এখন ১,১৪৬। আইপিএলের ইতিহাসে একটি দলের বিপক্ষে এত রান আর কেউ করতে পারেননি। এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছেন ওয়ার্নার, যিনি পাঞ্জাবের বিপক্ষে করেছেন ১,১৩৪ রান। এক মৌসুমে ৫০০+ রান সবচেয়ে বেশি বার- এই নিয়ে ৮ বার এক আইপিএল মৌসুমে ৫০০ রানের বেশি করলেন কোহলি। ডেভিড ওয়ার্নার (৭ বার) ও লোকেশ রাহুল (৬ বার) রয়েছেন তার পরেই।

মেসি-সুয়ারেজের নৈপুণ্যে বড় জয় পেল মায়ামি

জয়ের আনন্দটা আরও বেশি হতে পারতো ইন্টার মায়ামির। দিন তিনেক আগে তারা ঘরের মাঠে হেরে কনকাকাফের সেমিফাইনাল থেকে ছিটকে গিয়েছিল। তখনই মায়ামির কোচ হাভিয়ের মাশ্চেরানো মেজর লিগ সকারে (এমএলএস) মনোযোগ দেওয়ার কথা বলেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ এই প্রতিযোগিতায় খেলতে নেমে লিওনেল মেসি ও লুইস সুয়ারেজদের গোলে বড় জয়ই পেল ফ্লোরিডার ক্লাবটি। ঘরের মাঠ চেজ স্টেডিয়ামে আজ (রোববার) ভোরে মায়ামি মুখোমুখি হয় নিউইয়র্ক রেড বুলসের। ম্যাচের প্রথমার্ধেই স্বাগতিকরা তিন দফা এগিয়ে যাওয়ার পর বিরতির আগমুহূর্তে ব্যবধান কমায় নিউইয়র্ক। পরে মেসি স্কোরশিটে নাম তোলার পাশাপাশি মায়ামির ৪-১ গোলে বড় জয়ও নিশ্চিত করেন। আর্জেন্টাইন অধিনায়ক ও সুয়ারেজ ছাড়াও মায়ামির পক্ষে একটি করে গোল করেন ফাফা পিকোল্ট এবং মার্সেলো ওয়েগান্ডট। নিউইয়র্কের ব্যবধান কমানো গোলটি আসে বায়ার্ন মিউনিখের সাবেক ফরোয়ার্ড ম্যাক্সিম চুপো-মোটিংয়ের পা থেকে। যদিও আরও কয়েকটি সুযোগ পেয়ে কাজে লাগাতে পারেননি চুপো-মোটিংসহ তার সতীর্থরা। সুয়ারেজের বাড়ানো পাস ধরে নবম মিনিটেই মায়ামিকে লিড এনে দেন ফিকোল্ট। ৩০ মিনিটেই সেই ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মার্সেলো। প্রথম গোলের যোগান দেওয়া উরুগুইয়ান তারকা নাম তোলেন ৩৯ মিনিটে। বিরতির আগেই তিন দফা গোল হজম করে ব্যাকফুটে চলে যায় নিউইয়র্ক রেড বুলস। তবে প্রধমার্ধ শেষ হওয়ার আগমুহূর্তে তাদের ব্যবধান কমে চুপো মোটিংয়ের অবদানে। দ্বিতীয়ার্ধে মেসির গোলটি আসে ৬৭ মিনিটে। সতীর্থের সঙ্গে পাস চালাচালি করে বক্সে ঢুকে এক ডিফেন্ডারকে ডজ দিয়ে ভাসানো বলে শট নেন আর্জেন্টাইন তারকা। স্বল্প দূরত্বের সেই জোরালো শট ঠেকানোর সুযোগ ছিল না রেড বুলস গোলরক্ষকের পক্ষে। এটি আর্জেন্টাইন মহাতারকার ক্যারিয়ারে ৮৫৯তম গোল। এরপর দুই দলই চেষ্টা অব্যাহত রাখলেও, আর কেউই গোল পায়নি। বড় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ইন্টার মায়ামি। এই জয়ে এমএলএসের ইস্টার্ন কনফারেন্সে ১০ ম্যাচে ২১ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চারে মায়ামি। এক ম্যাচ বেশি খেলা কলম্বাস ক্রু ২৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে। এ ছাড়া সমান ২২ পয়েন্ট নিয়ে দুই-তিনে যথাক্রমে ফিলাডেলফিয়া ইউনিয়ন ও এফসি সিনসিনাতি।

বিসিবির দায়িত্বে যোগ্য ব্যক্তিদের চান তামিম ইকবাল

চলতি বছরেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের আগেই দেশের ক্রিকেট নিয়ে নিজের ভাবনা প্রকাশ করেছেন সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল। যোগ্য ব্যক্তি নির্বাচনের পক্ষে তিনি। তামিম বিশেষ করে স্ব স্ব জেলা ও বিভাগীয় ক্রিকেটের উন্নতি পারবেন এমন ব্যক্তিদের বিসিবির দায়িত্বে দেখতে চান। জেলা এবং বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক অ্যাসোসিয়েশনের একটি অনুষ্ঠানে আজ (শনিবার) উপস্থিত হয়েছিলেন তামিম। এ সময় তিনি বলেন, ‘আমি ছোট হয়ে আপনাদের একটা জিনিস অনুরোধ করব, যারা ক্রিকেটকে প্রতিনিধিত্ব করার জন্য যোগ্য, জেলা থেকে হোক বা বিভাগ থেকে হোক... যাদের বেসিক ক্রিকেটিং আইডিয়া আছে, যাদের একটা স্বপ্ন আছে যে— আমি বাংলাদেশ ক্রিকেটকে এই জায়গায় নিয়ে যেতে চাই। আমি এটাই অনুরোধ করব যে তাদেরকেই সিলেক্ট করা হোক।’ অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে তামিম আরও বলেন, ‘অতীতে আমি অনেকবার দেখেছি কেউ যখন জেলা বা বিভাগ থেকে আসেন ক্রিকেট বোর্ডে। পরবর্তীতে ওনারা ক্রিকেট বোর্ডের ডিরেক্টর হয়ে যান, জেলা-বিভাগকে ভুলে যান।’ ‘এমন অনেক জেলায় গিয়েছি আমি কয়েকদিন আগে, বরিশালেও গিয়েছি... এসব জায়গায় স্ট্যান্ডার্ড মানের একটা ক্রিকেট লিগও হয় না। ক্রিকেটকে আমরা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় খেলা মনে করি’, আরও যোগ করেন বাংলাদেশের সাবেক এই অধিনায়ক। ক্রিকেট বোর্ডের দায়িত্ব নিতে যাওয়া সংগঠকদের উদ্দেশ্যে তামিমের স্পষ্ট বার্তা, ‘সবচেয়ে বড় খেলায় যদি এমনটা হয়, কেউ যদি নিজের জেলা-বিভাগে ক্রিকেটে উন্নতি না করে তাহলে তার বোর্ডে আসার প্রয়োজন নেই।’

টি-টোয়েন্টিতে র‌্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে গেলো বাংলাদেশের মেয়েরা

টানা ব্যর্থতায় টি-টোয়েন্টি র‌্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা। সর্বশেষ ৯ ম্যাচে জয়হীন বাংলাদেশ আয়ারল্যান্ডের নিচে নেমে গেছে। উইমেন’স টি-টোয়েন্টি র‌্যাঙ্কিংয়ের বার্ষিক হালনাগাদের পর অবস্থানে এই বদল এসেছে। শুক্রবার মেয়েদের টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বার্ষিক হালনাগাদকৃত দলীয় র্যাঙ্কিং প্রকাশ করেছে আইসিসি। যেখানে শীর্ষ আটে থাকা দলগুলোর অবস্থানে কোন পরিবর্তন হয়নি। সেখানে যথাক্রমে অবস্থান করছে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, ভারত, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তান। তবে শীর্ষ দশের শেষ দুটি অবস্থানে পরিবর্তন হয়েছে। নবম স্থানে থাকা বাংলাদেশ এক ধাপ পিছিয়ে ১০ নম্বরে এবং তাদের স্থলাভিষিক্ত হয়েছে আয়ারল্যান্ড। এবারের হালনাগাদে ২০২২ সালের মে মাস থেকে ২০২৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত পারফরম্যান্সক বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে ৫০ ভাগ। প্রসঙ্গত, উইমেন’স ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ের বার্ষিক হালনাগাদ প্রকাশ করা হবে শ্রীলঙ্কায় চলতি ত্রিদেশীয় সিরিজের পর। ত্রিদেশি সিরিজে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে খেলছে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা। উইমেন’স ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ৮ নম্বরে।

কাশ্মীরে হামলার ঘটনায় পকিস্তান থেকে সরে গেল টুর্নামেন্ট

ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পর্যটনকেন্দ্র পহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় পর্যটকসহ ২৬ জন নিহতের ঘটনায় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা অব্যাহত রয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা চরমে উঠেছে, যার প্রভাব পড়েছে ক্রীড়াঙ্গনে। সেই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে পাকিস্তানে আয়োজিত সেন্ট্রাল এশিয়ান ভলিবল চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে নাম প্রত্যাহার করে থাকে ভারত। দুই দেশের ভিতর কূটনৈতিক উত্তেজনার প্রভাবে খেলোয়াড়দের নিরপত্তা ইস্যু ভেবে এবারের সেন্ট্রাল এশিয়া ভলিবল অ্যাসোসিয়েশনের (সিএভিএ) পুরুষ নেশনস লিগ স্থানান্তর করা হয়েছে। নির্ধারিত আয়োজক দেশ পাকিস্তানের বদলে এবারের প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে উজবেকিস্তানে। প্রথমে ২৯ মে থেকে ৪ জুন পর্যন্ত ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও, অংশগ্রহণকারী কয়েকটি দেশের নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণে স্থান পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিএভিএের বার্ষিক সাধারণ সভা ২৫ এপ্রিল নেপালে অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে সদস্য দেশগুলো পাকিস্তান-ভারতের উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্ককে কেন্দ্র করে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করে। পরবর্তীতে সর্বসম্মতভাবে টুর্নামেন্টটি উজবেকিস্তানে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পাকিস্তান ভলিবল ফেডারেশনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা চৌধুরী মোহাম্মদ ইয়াকুব বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, 'ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের কারণে কিছু দেশ অংশগ্রহণে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছিল। তাই আয়োজক দেশ পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।' উল্লেখ্য, প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবে পাকিস্তান, ইরান, তুর্কমেনিস্তান, কিরগিজস্তান, তাজিকিস্তান এবং ভারত। শুধু ভলিবল নয়, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের টানাপড়েনের প্রভাব পড়তে পারে হকি ও ক্রিকেটেও। ভারত-পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক সিরিজ ভবিষ্যতে আর দেখা যাবে না বলেই মনে করছেন ক্রীড়াঙ্গনের সাবেকরা! এমনকি আসন্ন নারী ক্রিকেট বিশ্বকাপে দুই দলকে এক গ্রুপে না রাখার অনুরোধ জানিয়ে আইসিসিকে চিঠি দিচ্ছে বিসিসিআ!

রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে ভারতের বাংলাদেশ সফর নিয়ে উদ্বেগ দেখছে না বিসিবি

সাবেক এক বাংলাদেশি সেনা কর্মকর্তা ভারত নিয়ে মন্তব্য করার পর দুই দেশের মধ্যে সীমান্তে উত্তেজনা বেড়েছে। এর প্রভাব ভারতীয় ক্রিকেট দলের আসন্ন বাংলাদেশ সফরে পড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড শুক্রবার এনিয়ে উদ্বেগ নাকচ করে দিয়েছে। টাইমস অব ইন্ডিয়া এদিন এক প্রতিবেদনে জানায়, আগস্টে ছয় ম্যাচের সাদা বলের সিরিজ খেলতে বাংলাদেশে আসার কথা ভারতের। কিন্তু অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল এ এল এম ফজলুর রহমানের করা সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের কারণে তা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। এক ফেসবুক পোস্টে ফজলুর রহমান বলেন, ‘ভারত পাকিস্তান আক্রমণ করলে বাংলাদেশের উচিত হবে উত্তর-পূর্ব ভারতের সাত রাজ্য দখল করে নেওয়া। এ ব্যাপারে চীনের সঙ্গে যৌথ সামরিক ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা শুরু করা প্রয়োজন বলে মনে করি।’ ভারতীয় গণমাধ্যমের অনিশ্চয়তা প্রকাশের পর এনিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ক্রিকেট অপারেশন্স চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদীন ফাহিম। কোনও ধরনের উদ্বেগের অবকাশ তিনি দেখছেন না। দুই দেশের বোর্ডের মধ্যে সম্পর্ক আগের মতোই শক্তিশালী বলে জানান তিনি। ফাহিম একটি জাতীয় ইংরেজি দৈনিককে বলেছেন, ‘বিসিসিআই ও বিসিবির মধ্যে দারুণ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। আমি নিশ্চিত পরিকল্পনা অনুযায়ী সিরিজ হবে।’ বিসিসিআই অবশ্য এই সফর নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও নীরব। দুই দেশের ক্রিকেট বোর্ডও কোনও বিতর্কিত বক্তব্য এড়িয়ে গেছে। আগামী আগস্টে আইসিসির ভবিষ্যৎ সফর কর্মসূচি অনুযায়ী এই সিরিজ হবে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরের পর এটি হবে ভারতের প্রথম বাংলাদেশ সফর।

তিন লাল কার্ডের ম্যাচে আবাহনীকে হারালো বসুন্ধরা কিংস

ফেডারেশন কাপের ফাইনালে ১০ জনের বসুন্ধরা কিংসকে হারাতে পারেনি আবাহনী লিমিটেড। আজ শুক্রবার প্রিমিয়ার লিগে ফিরতি পর্বেও হেরেছে মারুফুল হকের দল। ফয়সাল আহমেদ ফাহিমের জোড়া গোলে কিংস ২-০ ব্যবধানে হারিয়েছে আবাহনীকে। প্রথম পর্বের দেখায় সুমন রেজার একমাত্র গোলে জিতেছিল আবাহনী। সে হারের মধুর প্রতিশোধও ফিরতি লেগের দেখায় নিয়ে নিলো কিংস। মোহামেডান ১৩ ম্যাচে ৩৪ পয়েন্ট নিয়ে শিরোপার পথে আরও এগিয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা আবাহনী (২৭) এই হারে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে পিছিয়ে পড়েছে ৭ পয়েন্টের ব্যবধানে। কিংস তৃতীয় স্থানে আছে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে। আক্রমণ-প্রতিআক্রমণ নির্ভর ম্যাচ হয়েছে। ১১ মিনিটে কিংসের একাধিক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে একাই গোল দেওয়ার চেষ্টা করেন রিমন হোসেন, বল চলে যায় পোস্টের অনেক বাইরে দিয়ে। পাঁচ মিনিট পর রাকিবের কাছ থেকে ফিরতি পাস ধরে নিখুঁত শটে জাল খুঁজে নেন ফাহিম। নিজের সাবেক ক্লাব আবাহনীর বিপক্ষে গোলের উদযাপন তিনি সারেন আকাশি-নীল সমর্থকদের উদ্দেশ্যে করজোড়ে ক্ষমা চাওয়ার ভঙ্গিতে। ২৬ মিনিটে সতীর্থের ক্রসে সুমনের হেড অল্পের জন্য যায় পোস্টের বাইরে। তাতে বিরতির আগে প্রথম ভালো সুযোগটি নষ্ট হয় আবাহনীর। একটু পর ভালো জায়গায় বল পেয়েও মোহাম্মদ হৃদয়ের চ্যালেঞ্জে তালগোল পাকিয়ে জনি বল হারালে কিংসের ব্যবধান দ্বিগুণের সুযোগ নষ্ট হয়। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ব্যবধান হয় দ্বিগুণ। রাকিবের পাস ধরে দারুণ কোনাকুনি শটে জাল খুঁজে নেন ফাহিম। গোলরক্ষক মিতুল মারমা ঝাঁপিয়ে বলের নাগাল পাননি। এরপর কিংসের খেলায় গতি কমে। ৮১মিনিটে বাইলাইনের উপর থেকে ফাহিমের পাস ধরে উড়িয়ে মেরে সুবর্ণ সুযোগ নষ্টের হতাশায় মুখ ঢাকেন ইনসান আলি। এর ছয় মিনিট পর ইভান্স ইত্তির প্লেসিং শট পোস্টে প্রতিহত হলে ব্যবধান আর বাড়িয়ে নিতে পারেনি কিংস। দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে গোলমুখ থেকে আরমান ফয়সাল আকাশ গোলকিপারকে একা পেয়েও তাড়াহুড়ো করে উড়িয়ে মারলে ব্যবধান কমানো গোলের দেখাও পায়নি আবাহনী। শেষ সময়ে সোহেল রানা ও আসাদুল মোল্লার মধ্যে বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে হওয়া সংঘর্ষের উত্তাপে হাতাহাতি, ধাক্কাধাক্কিতে জড়ায় দুই পক্ষ। রেফারি দ্রুত এসে শান্ত করেন পরিস্থিতি। ওই ঘটনায় কিংসের সোহেল, সাদউদ্দিন ও আবাহনীর শাহিন আহমেদকে দেখান লাল কার্ড। মিনিট পাচেঁক পর খেলা শুরুর পরপরই শেষের বাঁশি বাজান রেফারি। এরপর ডাগ আউটে দুই দলের সবাই ফের হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন।

গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে বড় তারকাকে হারাল বার্সেলোনা

ক্লাব ফুটবলে মৌসুমের চূড়ান্ত সময়ের খেলা চলছে। এক মাসের মধ্যেই শিরোপার নিষ্পত্তি হতে চলেছে প্রায় সব প্রতিযোগিতার। স্প্যানিশ জায়ান্ট বার্সেলোনার সামনেও কোপা দেল রের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর এখন শিরোপার ট্রেবল জেতার সুযোগ হাতছানি দিচ্ছে। হ্যান্সি ফ্লিকের দলটি লা লিগায় শীর্ষে আছে ৪ পয়েন্টে এগিয়ে থেকে। এদিকে, চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ওঠার আগে আরেকটি ম্যাচ বাকি বার্সার, তার আগেই কাতালানরা দুঃসংবাদ পেল।গত বুধবার রাতে ইউসিএল সেমিফাইনালের প্রথম লেগে ইন্টার মিলানের সঙ্গে ঘরের মাঠে ৩-৩ গোলে ড্র করেছিল বার্সা। ফলে এই সেমিফাইনালের বাকি রোমাঞ্চ তোলা রইল সান সিরোর সেকেন্ড লেগের জন্য। যেখানে জয়ী দলই উঠবে ইউরোপীয় ক্লাব ফুটবলের সবচেয়ে বড় প্রতিযোগিতার শিরোপা নির্ধারণী মঞ্চে। দারুণ ফর্মে ছিলেন বার্সার ফরাসি তারকা জুলস কুন্দে। বাঁ পায়ের হ্যামস্ট্রিংয়ে চোটে তিনি কয়েক সপ্তাহের জন্য ছিটকে গেছেন।স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট সারাতে অন্তত তিন সপ্তাহ মাঠের বাইরে থাকতে হবে কুন্দেকে। সে হিসেবে আগামী মঙ্গলবার ইন্টারের বিপক্ষে ইউসিএলের দ্বিতীয় লেগ এবং ১১ মে লা লিগায় রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে ফিরতি ক্লাসিকোয় নিশ্চিতভাবেই তিনি খেলতে পারবেন না। কুন্দেকে পাওয়া যেতে লা লিগার শেষ দুই রাউন্ড এবং সম্ভাব্য চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে।এই সময়ে দলের সঙ্গে থাকতে না পারায় কুন্দে নিজেও হতাশা প্রকাশ করেছেন। নিজের ইনস্টাগ্রাম পোস্টে তিনি লেখেন, ‘মৌসুমের এই সময়ে ইনজুরিতে পড়া খুবই হতাশাজনক। যখন সব সুযোগের সামনে দাঁড়িয়ে…কিন্তু কখনও কখনও নিজেকে অনেক বেশি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়। যাই ঘটুক এই দল মাঠে তার সর্বোচ্চটা দিয়ে নিজেদের কাজ সম্পন্ন করবে বলে বিশ্বাস আছে। আমাকে সমর্থনের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ, এটি অনেক বড় কিছু।’ এর আগে ইন্টার মিলানের বিপক্ষে প্রথম লেগের ৪২তম মিনিটে মাঠ ছাড়েন কুন্দে। তখনই তাকে হারিয়ে ফেলার শঙ্কায় ছিল কাতালানরা। শেষ পর্যন্ত সেটাই সত্যি হওয়ার কথা জানানো হয় বিবৃতিতে। বার্সেলোনা কর্তৃপক্ষ বলছে, পরীক্ষায় ২৬ বছর বয়সী কুন্দের বাঁ পায়ের হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট ধরা পড়েছে। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দলের নির্ভরযোগ্য এই ডিফেন্ডারকে না পাওয়া ফ্লিকের জন্য বড় ক্ষতি।কেবল রক্ষণেই ফরাসি তারকা কুন্দে নিজের সামর্থ্য দেখান না, পাশাপাশি গোল করা এবং করানোয়ও তার দক্ষতা বেশ পরিচিত। কোপা দেল রের ফাইনালেও রিয়ালকে ৩-২ গোলে হারানোর পথে সর্বশেষ স্কোরটি আসে তার কাছ থেকে। এই মৌসুমে এখন পর্যন্ত কুন্দে চারটি গোল করেছেন। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এখন পর্যন্ত বার্সেলোনার ৫৪ ম্যাচের ৫৩টিতেই খেলেছেন তিনি। বোঝাই যাচ্ছে, হান্সি ফ্লিকের পরিকল্পনা ও দলীয় সাফল্যের পথে তিনি কতটা গুরুত্বপূর্ণ।

আইপিএল থেকে ছিটকে গেলেন ম্যাক্সওয়েল

এবারের মতো আইপিএল যাত্রা শেষ হয়ে গেছে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের। পাঞ্জাব কিংসের এই তারকা অলরাউন্ডার আসরের বাকি অংশ থেকে ছিটকে গেছেন। অস্ট্রেলিয়ান অলরাউন্ডারের ডান হাতের আঙুল ভেঙে গেছে। গতকাল বুধবার চেন্নাই সুপার কিংসের (সিএসকে) বিপক্ষে একাদশে ছিলেন না ম্যাক্সওয়েল। ওই ম্যাচের টসের সময় অসি তারকার বিষয়ে কথা বলেছেন পাঞ্জাবের অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার। আইয়ার বলেন, ‘এটি খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে তার আঙুল ভেঙে গেছে। সত্যি বলতে, আমরা এখনো বিকল্প খেলোয়াড় নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিইনি। তবে আমাদের দলের মানসিকতা শক্তিশালী এবং যারা আমাদের মূল একাদশের বাইরে রয়েছেন, তাদের নিয়েও আমরা আত্মবিশ্বাসী। আমাদের দলে এমন অনেক খেলোয়াড় আছেন, যারা ম্যাচ জেতাতে পারেন। তাই আমরা সেসব বিকল্পের ওপরই নির্ভর করবো।’ পাঞ্জাবের আরেক অসি তারকা মার্কাস স্টয়নিস বলেন, ‘ম্যাক্সওয়েল স্ক্যান করিয়েছেন এবং ফলাফল ভালো আসেনি। সে ভেবেছিল ব্যাপারটা তেমন গুরুতর না, কিন্তু পরে সেটা খারাপের দিকে গেছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে ম্যাক্সির সম্ভবত পুরো টুর্নামেন্ট থেকেই ছিটকে গেছে।’ ব্যাট হাতে এবারের টুর্নামেন্টে ম্যাক্সওয়েল খুব একটা ভালো করতে পারেননি। ৬ ইনিংসে মাত্র ৪৮ রান করেন। এর মধ্যে শেষ চার ম্যাচে এক অঙ্কেই বন্দি ছিলেন। তবে অফস্পিনে ৪ উইকেট নেন ম্যাক্সওয়েল। সর্বশেষ মেগা নিলামে তাকে ৪.২ কোটি ভারতীয় রুপিতে দলে নিয়েছিল পাঞ্জাব। ম্যাক্সওয়েলের আগে পাঞ্জাব স্কোয়াড থেকে ছিটকে গিয়েছিলেন পেসার লকি ফার্গুসন। তার বদলিও এখনো কাউকে ঘোষণা করা হয়নি। যদিও প্রধান কোচ রিকি পন্টিং জানিয়েছেন, শিগগিরই সেটা ঠিক করা হবে। পন্টিং বলেন, ‘আমরা কিছু বিকল্প খেলোয়াড় সই করাবো। আমাদের ১২তম ম্যাচ পর্যন্ত সময় আছে খেলোয়াড় পরিবর্তনের। মানে, এখনো কয়েকটি ম্যাচ বাকি। আমাদের স্কোয়াডেই বেশিরভাগ পজিশন কাভার করা হয়েছে। আজমাতুল্লাহ ওমরজাই, অ্যারন হার্ডি—সে এখনো খেলেনি; জেভিয়ার বার্টলেট আজ খেলেনি। এটা কন্ডিশনের ওপর নির্ভর করছে। যখন আমরা ধর্মশালায় যাব, তখন সেখানে বল হয়তো একটু বেশি সুইং ও বাউন্স করবে, তখন ওদের বিবেচনায় আনা হবে।’ ‘আমরা একটু ধৈর্য ধরছি। ম্যাক্সির (ম্যাক্সওয়েল) চোট হয়েছে মাত্র দু'দিন আগে, আর লকির প্রায় দুই-তিন সপ্তাহ আগে। একই সময়ে পিএসএল চলায় বাজারে খুব বেশি উচ্চমানের বিকল্প পাওয়া যাচ্ছে না। তাই আমরা অপেক্ষা করছি। ভারতীয় প্রতিভার দিকেও নজর দিচ্ছি এবং ভাবছি কীভাবে কিছু তরুণ ভারতীয় খেলোয়াড় দিয়ে নির্দিষ্ট ভূমিকা পূরণ করা যায়। আমরা কয়েকজনকে ধর্মশালায় নিয়ে যাচ্ছি, যাঁরা গতকাল আমাদের সঙ্গে অনুশীলন করেছেন এবং তাঁরা আমাদের সঙ্গে ভ্রমণ করবেন। ওখানেই আমরা তাদের আরও ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করব এবং সম্ভবত তাদের কেউ একজন পাঞ্জাবের চুক্তিও পেতে পারেন। এই সপ্তাহেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে, ১২ ম্যাচের আগেই সবকিছু চূড়ান্ত করতে হবে। তাই অপেক্ষা করুন।’ বর্তমানে পয়েন্ট টেবিলে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে পাঞ্জাব। তাদের ওপরে কেবল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। এদিকে প্লে-অফের দৌড় থেকে একমাত্র ছিটকে যাওয়া দল এখন পর্যন্ত চেন্নাই সুপার কিংস।

মেসি গোল পাননি, চ্যাম্পিয়ন্স কাপ থেকে ইন্টার মিয়ামির বিদায়

ইন্টার মায়ামির ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ম্যাচে লিওনেল মেসিদের কোনো অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া গেল না। বুধবার (বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার সকাল) চেজ স্টেডিয়ামে ভ্যাঙ্কুভার হোয়াইটক্যাপসের কাছে ৩-১ গোলে হেরে কনকাকাফ চ্যাম্পিয়ন্স কাপ থেকে বিদায় নিয়েছে লিওনেল মেসির দল। মাঠে ছিলেন বিশ্বকাপজয়ী মেসি, তবুও রাতটা ছিল সেবাস্টিয়ান বারহাল্টারের। এক গোল ও দুই অ্যাসিস্ট করে ম্যাচের নায়ক এই মিডফিল্ডারই। শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে ভ্যাঙ্কুভার বুঝিয়ে দেয়, তারা এসেছে পরিকল্পনা নিয়ে এবং সেটাই নিখুঁতভাবে বাস্তবায়ন করেছে। ম্যাচের শুরুটা অবশ্য মায়ামির পক্ষেই ছিল। মাত্র ৯ মিনিটেই জর্দি আলবা গোল করে হেরনদের এগিয়ে দেন। তখন মনে হচ্ছিল কোয়ার্টার ফাইনালে এলএএফসি’র বিপক্ষে দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনের মতোই কিছু একটা হতে পারে। কিন্তু এরপরই গতি বদলায়। প্রথমার্ধ শেষ হয় ১-০ ব্যবধানে মায়ামির পক্ষে, তবে বিরতির পর একদম ভিন্ন চেহারায় মাঠে নামে ভ্যাঙ্কুভার। কোচ জেসপার সোরেনসেন ট্যাকটিকসে পরিবর্তন এনে খেলায় ফেরান দলকে। দ্বিতীয়ার্ধে মাত্র দুই মিনিটের ব্যবধানে ব্রায়ান হোয়াইট ও পেদ্রো ভিটের গোল করান বারহাল্টার। তখনই মায়ামির কয়েকজন খেলোয়াড়ের শরীরী ভাষা বলে দিচ্ছিল এই ম্যাচে আর ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব নয়, এমনকি মেসিকেও নিয়েও না। এরপর ৭১ মিনিটে বারহাল্টার নিজেই গোল করে স্কোরলাইন ৩-১ করেন, যা পুরোপুরি গুঁড়িয়ে দেয় মায়ামির প্রতিরোধ। সাম্প্রতিক সময়ে মেসিদের যে কিছু দুর্বলতা ধরা পড়ছিল, এবার সেগুলো স্পষ্টভাবে দেখা গেল ম্যাচে। এই মৌসুমে মেসি দারুণ খেলছেন, সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে করেছেন ৮ গোল ও ২ অ্যাসিস্ট। কিন্তু লুইস সুয়ারেজের গোলখরা ছুঁয়েছে আট ম্যাচে। তাডেও অলেন্দেও যেন গোল ভুলে গেছেন, আর ডিফেন্সের অবস্থা আরও করুণ। লিওনার্দো ক্যাম্পানা, রবার্ট টেইলর ও জুলিয়ান গ্রেসেলের মতো অভিজ্ঞদের ছাড়ার পর দল গঠনে বড় প্রশ্ন উঠে এসেছে কোচ হাভিয়ের মাচেরানোর সামনে। আগামীতে ক্লাব বিশ্বকাপ খেলবে ইন্টার মায়ামি, তবে এপ্রিলের শেষভাগের পারফরম্যান্স যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নেওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

জিম্বাবুয়েকে ইনিংস ব্যবধানে হারিয়ে প্রতিশোধ বাংলাদেশের

সিলেটে প্রথম টেস্টে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর জিম্বাবুয়ের কাছে ৩ উইকেটে হেরে গিয়েছিল বাংলাদেশ। যে হার নিয়ে হয়েছে প্রবল সমালোচনা। তবে দ্বিতীয় টেস্টেই স্বরূপে ফিরেছে টাইগাররা। জিম্বাবুয়ের কাছে সাড়ে ছয় বছর পর টেস্ট হারের প্রতিশোধ তারা নিয়েছে এবার ইনিংস ব্যবধানে জিতে। চট্টগ্রাম টেস্টে সফরকারী দলকে এক ইনিংস এবং ১০৬ রানে হারিয়েছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। এতে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ টাইগাররা শেষ করেছে ১-১ সমতায়। প্রথম ইনিংসে ৪৪৪ রান তুলে ২১৭ রানের বড় লিড পায় বাংলাদেশ। এরপর দ্বিতীয় ইনিংস খেলতে নামা জিম্বাবুয়ে শিবিরে শুরুতেই আঘাত হানেন তাইজুল ইসলাম। জিম্বাবুয়ের ইনিংসের সপ্তম ওভারের প্রথম বলেই ওপেনার ব্রায়ান বেনেটকে সেকেন্ড স্লিপে সাদমান ইসলামের ক্যাচ বানান বাঁহাতি স্পিনার। ওই ওভারের তৃতীয় বলে নতুন ব্যাটার নিকোলাস ওয়েলচকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন তাইজুল। এতে দলীয় ৮ রানে ২ উইকেট হারিয়ে শুরুতেই চাপে পড়ে জিম্বাবুয়ে। এরপর শন উইলিয়ামস (৭) দ্বিতীয় স্লিপে সাদমানের হাতে ধরা পড়েন নাঈম হাসানের বলে। চতুর্থ উইকেটে ১১১ বলে ৪৭ রানের প্রতিরোধগড়া জুটি গড়েন ক্রেইগ আরভিন আর বেন কারেন। অবশেষে এক ওভারে জোড়া শিকার করে জিম্বাবুয়েকে আবারও বিপদে ফেলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ৩০তম ওভারের প্রথম বলে মিরাজ বোল্ড করেন ক্রেইগ আরভিনকে (২৫), শেষ বলে এলবিডব্লিউ হন ওয়েসলে মাদভেরে (০)। নিজের পরের ওভারে আরও এক শিকার মিরাজের। এবার তার ঘূর্ণিতে শর্ট লেগে এনামুল বিজয়ের ক্যাচ তাফাজওয়া টিসিগা (০)। ৭৩ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে জিম্বাবুয়ে। মিরাজ এখানেই থেমে থাকেননি। ওয়েলিংটন মাসাকাদজাকে ১০ রানে এবং জিম্বাবুয়ের শেষ ভরসা বেন কারেনকে দুর্দান্ত টার্নে উইকেটরক্ষক জাকের আলীর ক্যাচ বানান এই অফস্পিনার। লড়াকু কারেন ১০৩ বলে করেন ৪৬ রান। চট্টগ্রাম টেস্টে এর আগে সাদমান ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজের সেঞ্চুরিতে প্রথম ইনিংসে ১২৯.২ ওভারে ৪৪৪ রান করে বাংলাদেশ। আর জিম্বাবুয়ে প্রথম ইনিংসে অলআউট হয়েছিল ২২৭ রানে। আজ বুধবার চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে ৭ উইকেটে ২৯১ রান নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করে বাংলাদেশ। মাত্র ২.৪ ওভার খেলা হতেই বৃষ্টি নামে। ফলে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন ক্রিকেটাররা। ভক্তদের জন্য সুসংবাদ- গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ১৫-১৬ মিনিটের বৃষ্টির পর ফের খেলা শুরু হয়েছে। বৃষ্টি থামার পর যথারীতি ব্যাটিংয়ে নামেন বাংলাদেশ দলের দুই অপরাজিত ব্যাটার মিরাজ ও তাইজুল ইসলাম। অষ্টম উইকেটে ৬৩ রানের জুটি করেন মিরাজ ও তাইজুল। টাইগারদের এই জুটি ভাঙেন জিম্বাবুয়ের অভিষিক্ত স্পিনার ভিনসেন্ট মাসেকেসা। তাইজুলকে উইকেটরক্ষক তাফাদজওয়া সিগার হাতের ক্যাচ বানান তিনি। ৩৪২ রানে ৮ উইকেট হারায় বাংলাদেশের। ৪৫ বলে ২০ রান করে সাজঘরে ফেরেন তাইজুল। নিজেদের দিন বলে কথা। সে কারণে নবম উইকেটেও দারুণ এক জুটি হয়ে গেল বাংলাদেশের। মিরাজ ও তানজিম হাসান সাকিবের ৯৬ রানের এই জুটিতে বড় সংগ্রহের আভাসই দিচ্ছিলো স্বাগতিকরা। যদিও ততক্ষণেই দলীয় সংগ্রহ ৪০০ পেরিয়ে গেছে। ৮০ বলে ৪১ রানের দারুণ ও কার্যকর ইনিংস খেলে আউট হন তানজিম সাকিব। ওয়েসলি মাধভেরের বলে নিকোলাস ওয়েলচের হাতে ক্যাচ হন সাকিব। নতুন ও সর্বশেষ ব্যাটার হাসান মাহমুদকে নিয়ে খুব বেশি এগোতে পারেননি মিরাজ। তবে টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরিটা করে ফেলেছেন ঠিকই। মিরাজ যখন ৯৯ রানে অপরাজিত, হাসান মাহমুদ তখন স্ট্রাইপ্রান্তে। তবে জিম্বাবুইয়ান স্পিনার মাসেকেসাকে কোনোমতে ঠেকিয়ে রাখেন হাসান। পরে স্ট্রাইকে গিয়ে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন মিরাজ। মিরাজ লাল বলের ক্যারিয়ারে প্রথম সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। সেই শতকটাও তিনি করেছিলেন চট্টগ্রামে। চার বছর পর আজ বুধবার দ্বিতীয়বার তিন অংকের ম্যাজিক সংখ্যা স্পর্শ করেছেন মিরাজ। ভেন্যুও সেই একই, চট্টগ্রাম। ১৬২ বলে ১০৪ রান করে মাসেকাসের বলে স্টাম্পড হন মিরাজ। জিম্বাবুইয়ান স্পিনারকে সামনে এসে উড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন টাইগার ব্যাটার। তবে ব্যাটে-বলে সংযোগ না ঘটায় বল চলে যায় উইকেটরক্ষক তাফাদজওয়া সিগার হাতে। মিরাজকে ফেরাতে বাকি কাজটা তিনিই সারেন। ১৬ বল খেলেও ০ রানে অপরাজিত থাকেন হাসান মাহমুদ। এর আগে ১২০ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন ওপেনার সাদমান ইসলাম। জিম্বাবুয়ের হয়ে ১১৫ রানে ৫ উইকেট শিকার করেন ভিনসেন্ট মাসেকেসা। ব্লেসিং মুজারাবানি, ওয়েলিংটন মাসাকাদজা, ব্রায়ান বেনেট ও ওয়েসলি মাধভেরে ১টি উইকেট নেন।

স্বাগতিক আর্সেনালকে স্তব্ধ করে ফাইনালে এক পা পিএসজির!

ইউরোপীয় প্রতিযোগিতায় কখনোই আর্সেনালকে হারাতে পারেনি প্যারিসিয়ান সেইন্ট জার্মেই (পিএসজি)। সেই ফরাসিরাই প্রথম বার মিকেল আর্তেতার দলটিকে হারালো তাদেরই মাঠে। উসমান দেম্বেলের একমাত্র গোলে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সেমিফাইনালের প্রথম লেগ থেকে জয় নিয়ে ফিরছে পিএসজি। ১-০ গোলের জয়ে লুইস এনরিকের দল ফাইনালের পথে এক ধাপ এগিয়ে গেল। ঘরের মাঠ এমিরেটস স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) পিএসজিকে আতিথ্য দিয়েছে আর্সেনাল। ফুটবলবিষয়ক ইতিহাসবিদ ম্যাট বার্টজের মতে, ১৯৯৫ সালের পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এটি দু'দল মিলিয়ে সবচেয়ে তরুণ-নির্ভর সেমিফাইনাল। এ ছাড়া এ নিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ৫৮৩৮ দিন পর স্বাগতিকরা প্রথম সেমিফাইনাল খেলতে নামলো। যেখানে মাত্র চতুর্থ মিনিটেই গোল দিয়ে স্বাগতিক শিবিরকে ভড়কে দেন উসমান দেম্বেলে। যদিও দারুণ এক দলীয় আক্রমণে আসে এই গোল। জর্জিয়ান উইঙ্গার কাভারৎস্খেলিয়ার বক্সে বাড়ানো পাস এক স্পর্শের শটে জালে জড়ান এই ফরাসি তারকা। তার বাঁ পায়ের শট প্রতিপক্ষের কয়েকজনের মাঝখান দিয়ে কোণাকুণি জালে জড়িয়ে যায়। ৩১ মিনিটে দেম্বেলের ভালো একটি শট ঠেকিয়ে দেন আর্সেনাল গোলরক্ষক ডেভিড রায়া। প্রথমার্ধে বলতে গেলে একপেশে দাপট দেখিয়েছে সফরকারী পিএসজি। বিপরীতে স্বাগতিক আর্সেনালের পায়ে বল দখল থেকে শুরু করে কয়েকটি আক্রমণ দেখা যায় শেষ ১০-১৫ মিনিটে। এর বাইরে পারফরম্যান্সে মিকেল আর্তেতার দল পিএসজির ধারেকাছেও ছিল না। তাদের সবচেয়ে বড় সুযোগটা আসে ৩৭ মিনিটে। তাদের আক্রমণ ঠেকাতে দোন্নারুমা একপাশে এগিয়ে পড়ে গেলেও ফাঁকা বারে গোল দিতে ব্যর্থ মিকেল মেরিনো । বিরতির আগমুহূর্তে যোগ করা সময়ে সেই আক্ষেপ ঘোচানোর দ্বিতীয় সুযোগ পায় গানাররা। তবে তাদের ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেল্লির শট ঠেকিয়ে দেন জিয়ানলুইজি দোন্নারুমা। ফলে পিএসজির বিপক্ষে ১-০ গোলে পিছিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় আর্সেনাল। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই সমতায় ফিরেছিল আর্সেনাল। ৪৭তম মিনিটে ডেকলান রাইসের বাঁকানো ফ্রি-কিকে হেড দিয়ে পিএসজির জালে বল জড়ান মিকেল মেরিনো। কিন্তু ভিএআর দেখে সেটিকে অফসাইড ঘোষণা করেন রেফারি। এই স্প্যানিশ মিডফিল্ডার নিজেই অফসাইড সীমানায় ছিলেন। মুহূর্তেই স্বাগতিক দল ও দর্শকদের উদযাপন রূপ নেয় হতাশায়। ৫৫তম মিনিটে দারুণ আরেকটি সুযোগ এসেছিল আর্সেনালের সামনে। বাঁ প্রান্ত ধরে দৌড়ে বক্সে ঢুকে লিয়েন্দ্রো ট্রোসার্ড জোরালো শট নেন, কিন্তু হাতের স্পর্শে সেটিকে বাইরে পাঠান দোন্নারুমা। প্রায় ৬৫ মিনিট পর্যন্ত এভাবে আক্রমণ শাণিয়ে পিএসজিকে তটস্থ করে রাখে লাল-সাদা জার্সিধারীরা। এরপর উভয় দল আক্রমণ পাল্টা-আক্রমণ চালালেও গোলের দেখা পায়নি। ৮০ মিনিটের পর টানা দুটি আক্রমণ ব্যর্থ হয়ে যায় ফরাসি ক্লাবটির। প্রথমে ব্র‍্যাডলি বারকোলা গোলরক্ষককে একা পেয়েও বাইরে মারেন। অপরটিতে গঞ্জালো রামোসের শট বারে লাগে। এ নিয়ে চলতি মৌসুমের ইউসিএলে চার ইংলিশ ক্লাবের সবকটিকেই হারাল পিএসজি। আর্সেনালের আগে তাদের কাছে হারের স্বাদ পেয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি, লিভারপুল ও অ্যাস্টন ভিলা। ভিলাকে হারিয়ে এ নিয়ে গত ৬ ইউসিএলের মধ্যে চতুর্থবার সেমিতে উঠে মার্কিনিয়োস-ফ্যাবিয়ান রুইজরা। বিপরীতে ওডেগার্ড-সাকাদের আর্সেনাল ২০০৯ সালের পর সেমিতে খেলতে নেমে প্রথম লেগে হোঁচট খেলো। দ্বিতীয় লেগে তারা আগামী সপ্তাহে নামবে পিএসজির মাঠে

মিরপুরে সমর্থকের দিকে তেড়ে গেলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ

মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে আজ (মঙ্গলবার) ছিল অঘোষিত ফাইনাল। আবাহনী-মোহামেডান এই অঘোষিত ফাইনালে মুখোমুখি। জিতলেই চ্যাম্পিয়ন- এমন একটি সমীকরণ নিয়ে মুখোমুখি দুই দল। কিন্তু মাঠের খেলায় আবাহনীর সামনে দাঁড়াতেই পারেনি মোহামেডানের ক্রিকেটাররা। প্রথমে ব্যাট করে ২৪০ রান সংগ্রহ করেছিলো মোহামেডান। জবাবে ৬১ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটের ব্যবধানে সাদাকালো শিবিরকে হারিয়ে আবারও চ্যাম্পিয়ন হলো আবাহনী। ম্যাচ শেষে মোহামেডানের খেলোয়াড়রা যখন মাঠ থেকে ফিরছিল, তখন ড্রেসিং রুমের ওপর গ্যালারি তথা ভিআইপি স্ট্যান্ডে বসা মোহামেডানের কোনো এক সমর্থক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদদের নিয়ে বিদ্রুপ করেন। কোনো উত্তেজনাপূর্ণ কথা বলেছিলেন হয়তো। যেটা সহ্য হয়নি সিনিয়র ও অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের। ভিডিওতে দেখা গেছে, তাৎক্ষণিক তিনি তেড়ে যান গ্যালারিতে। সেখানে গিয়েই সেই সমর্থকের কলার চেপে ধরেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এ সময় মোহামেডানে তার সতীর্থ এবং কর্মকর্তারা গিয়ে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে ছাড়িয়ে আনেন। আবাহনীর বিপক্ষে উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচটিতে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৬২ বল খেলে করেছিলেন ৫০ রান। তার সঙ্গে আরিফুল ইসলামও ৫০ রান করেন। যে কারণে ২৪০ রান তুলতে সক্ষম হয় মোহামেডান। কিন্তু সেই রানকে রক্ষা করতে পারেননি মোহামেডানের বোলাররা। ৩৯.৫ ওভারেই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় আবাহনী। অর্থাৎ আবাহনীর সঙ্গে ন্যুনতম লড়াইও করতে পারেনি মোহামেডানের খেলোয়াড়রা। যার ফলে নিজ ক্লাবের খেলোয়াড়দের ওপরই ক্ষুব্ধ ছিলেন মোহামেডানের সমর্থকরা।

ডিপিএলের হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন আবাহনী

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের (ডিপিএল) মৌসুমের শিরোপা লড়াইয়ে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবকে ৬ উইকেটে হারিয়ে টানা হ্যাটট্রিক শিরোপা ঘরে তুলল আবাহনী লিমিটেড। সুপার লিগের শেষ রাউন্ডে এই ম্যাচটি পরিণত হয়েছিল অলিখিত ‘ফাইনালে’। যেখানে জয় মানেই শিরোপা, সেই সমীকরণে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করল মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের দল। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত রোমাঞ্চকর এই ম্যাচে মোহামেডান প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে তোলে ২৪০ রান। নিষেধাজ্ঞার কারণে অধিনায়ক তাওহীদ হৃদয়ের অনুপস্থিতিতে নেতৃত্বের দায়িত্ব পান রনি তালুকদার। জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় আবাহনী। শাহরিয়ার কমল ও এসএম মেহেরব দ্রুত আউট হলেও তিনে নামা জিশান আলম দৃঢ়তা দেখিয়ে করেন ৫৫ রান। পারভেজ ইমন ২৮ রান করে ফিরলেও শুরুতে ভিত্তি তৈরি করেন দুজনে। পরে অভিজ্ঞ মোহাম্মদ মিঠুন ৬৬ রানে অপরাজিত এবং অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ৭৮ রানে অপারাজিত দুর্দান্ত জুটি গড়ে দলকে লক্ষ্যে পৌঁছে দেন ৯.২ ওভার হাতে রেখেই। এই জয়ের ফলে ১৬ ম্যাচে ১৪ জয় নিয়ে ২৮ পয়েন্টে পৌঁছে ডিপিএলের লিস্ট ‘এ’ আসরের ২৪তম শিরোপা জিতে নেয় আবাহনী। টানা তৃতীয়বার চ্যাম্পিয়ন হয়ে গড়েছে হ্যাটট্রিকের কীর্তি। এর আগে টস জিতে মোহামেডানকে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানায় আবাহনী। শুরুতে ভালো সূচনা এনে দেন ওপেনার রনি তালুকদার ও তৌফিক খান তুষার। তাদের জুটিতে আসে ৫০ রান। এরপর দ্রুত ফিরে যান দুই ওপেনারই। রনি তালুকদার ৪৫ রান করে বিদায় নেন রিপন মণ্ডলের বলে, আর মৃত্যুঞ্জয়ের শিকারে পরিণত হন তৌফিক। দলীয় শত রান হওয়ার আগেই আরও এক উইকেট হারায় মোহামেডান, আনিসুল ইসলাম ফিরে যান মাত্র ১৩ রানে। কিছুটা প্রতিরোধ গড়েছিলেন ফরহাদ হোসেন, তবে তিনিও থেমে যান ৪২ রানে। এরপর দলের হাল ধরেন দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও আরিফুল ইসলাম। ধৈর্যশীল ব্যাটিংয়ে গড়েন ১১৪ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি। তবে দুজনই কাটায় কাটায় ৫০ রান করে ফিরে গেলে শেষ দিকে বড় স্কোর তোলার সুযোগ হাতছাড়া হয় মোহামেডানের। শেষ পাঁচ ওভারে আসে মাত্র ২৬ রান। শেষ পর্যন্ত তাদের ইনিংস থামে ২৪০ রানে। আবাহনীর হয়ে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী নেন দুটি করে উইকেট।

চার বছর পর সাদমানের সেঞ্চুরি

সাদমান ইসলামের দারুণ ব্যাটিংয়ে প্রায় আড়াই বছর পর কোনো ওপেনারের কাছ থেকে তিন অঙ্কের ইনিংস পেল বাংলাদেশ। রিচার্ড এনগারাভার অফ স্টাম্পের বাইরে ফুল লেংথ ডেলিভারি চমৎকার কাভার ড্রাইভ করলেন সাদমান ইসলাম। দুই ফিল্ডারের মাঝ দিয়ে বল চলে গেল সীমানায়। সাদমান পৌঁছে গেলেন বহু প্রতীক্ষিত ঠিকানায়। বাংলাদেশ ক্রিকেটের দূর হলো প্রায় আড়াই বছরের অপেক্ষা। গত দেড়-দুই বছর ধরেই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা হতাশার পর হতাশা দিয়ে চলেছেন বাংলাদেশকে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ বাঁচানোর অভিযানে একটু স্বস্তি বয়ে আনলেন সাদমান। ইতিবাচক ব্যাটিংয়ে করলেন দারুণ সেঞ্চুরি। চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ফ্লা. লে. মতিউর রহমান ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার শুরু থেকে সাবলীল ব্যাটিংয়ে ১৪২ বলে তিন অঙ্ক স্পর্শ করেন সাদমান। বাউন্ডারিচার মেরে শতক ছোঁয়ার পথে মোট ১৬টি বাউন্ডারি মারেন বাঁহাতি ওপেনার। তপ্ত রোদের মাঝেও সাগরিকার গ্যালারিতে আছে শ'দুয়েক দর্শকের উপস্থিতি। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতেই হয়তো সেঞ্চুরি পূর্ণ করে প্রথমে গ্যালারির দিকেই ব্যাট উঁচিয়ে ধরেন সাদমান। পরে ড্রেসিং রুমের দিকে ব্যাট তোলেন তিনি। প্রায় সাত বছরের টেস্ট ক্যারিয়ারে সাদমানের এটি দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। ২০২১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই হারারে টেস্টে ১১৫ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। সেটি ছাড়িয়ে ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসটি বাড়িয়ে নিচ্ছেন বাঁহাতি ওপেনার। গত অগাস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে শতরানের সুবাস পেয়েও হারিয়ে ফেলেন সাত রান দূরে মোহাম্মদ আলির বলে বোল্ড হয়ে। সাদমানের সেঞ্চুরিতে ঘুচল বাংলাদেশের প্রায় আড়াই বছরের অপেক্ষা। ২০২২ সালের পর ডিসেম্বরের পর তিন অঙ্কের দেখা পেলেন বাংলাদেশের ওপেনার। সবশেষ চট্টগ্রামেই ভারতের বিপক্ষে ১০০ রানের ইনিংস খেলেছিলেন অভিষিক্ত জাকির হাসান। টেস্টে একাধিক সেঞ্চুরি করা বাংলাদেশের তৃতীয় ওপেনার সাদমান। ওপেনারদের কাছ থেকে মোট ২০টি সেঞ্চুরি পেয়েছে বাংলাদেশ। এর ১০টিই করেছেন তামিম ইকবাল। এছাড়া একের বেশি সেঞ্চুরি আছে ইমরুল কায়েসের (২)। তিন অঙ্ক ছোঁয়ার পথে এনামুল হকের সঙ্গে উদ্বোধনী জুটিতে ১১৮ রান যোগ করেন সাদমান। প্রায় আড়াই বছর ও ৩৩ ইনিংস পর শুরুর জুটিতে শতরান পায় বাংলাদেশ। সবশেষ ভারতের বিপক্ষে সেঞ্চুরির ইনিংসে নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে ১২৪ রান যোগ করেছিলেন জাকির। দীর্ঘ অপেক্ষা ঘোচানোর ইনিংসে শুরু থেকেই সাবলীল ছিলেন সাদমান। জিম্বাবুয়ের বোলাররা প্রায় প্রতি ওভারেই দিয়েছেন আলগা বল। সেগুলোর প্রাপ্য সাজা দেন বাঁহাতি ওপেনার। ৭ চারে ৭৮ বলে পঞ্চাশ ছোঁয়ার পর ৬৬ রানে অপরাজিত থেকে লাঞ্চে যান সাদমান। পরে একই ছন্দে ছুটতে থাকেন তিন অঙ্কের দিকে। মাঝে এনামুল আউট হলেও থামেননি সাদমান। আরও ৯টি বাউন্ডারি মেরে তিনি পৌঁছে যান সেঞ্চুরিতে। প্রায় চার বছরের অপেক্ষা ঘোচানোর পর ব্রায়ান বেনেটের শর্ট বলে পুল করে ছক্কা মারেন সাদমান। ৪২ ইনিংসের ক্যারিয়ারে এটি তার দ্বিতীয় ছক্কা। গত বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে কিংসটাউনে প্রথম ছক্কাটি মারেন তিনি। ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসটিকে বেশি দূর আর নিতে পারেননি সাদমান। ব্রায়ান ব্রেনেটের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে যান ১৬ চার ও ১ ছক্কায় ১৮১ বলে ১২০ রান করে। নিজেকে অবশ্য খানিকটা দুর্ভাগা তিনি ভাবতে পারেন। বলটি লেগ স্টাম্পে স্পর্শ করছিল কোনোরকমে।

আবাহনীর দুই ফাইনাল আজ

ঘরোয়া ক্রীড়াঙ্গনে আজ গুরুত্বপূর্ণ এক দিন। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ ক্রিকেট ও ফেডারেশন কাপ ফুটবল দুই প্রতিযোগিতার শিরোপা নিষ্পত্তি হবে আজ। দেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী ক্লাব ঢাকা আবাহনী আজ ফুটবল ও ক্রিকেট উভয়ে শিরোপার জন্য লড়বে। গত মঙ্গলবার ময়মনসিংহে ফেডারেশন কাপ ফাইনাল ঝড় ও আলো স্বল্পতায় সমাপ্ত হয়নি। অতিরিক্ত সময়ের ১৫ মিনিট খেলা আজ বিকেলে অনুষ্ঠিত হবে। গত ম্যাচ যেখানে শেষ হয়েছিল সেখান থেকেই পুনরায় শুরু হবে। বসুন্ধরা কিংস ১০ জন নিয়ে খেললেও আবাহনী পূর্ণাঙ্গ ১১ জন নিয়েই মাঠে নামবে। ফলে আবাহনী খানিকটা এগিয়ে থাকবে। ফুটবলে আবাহনীর প্রতিপক্ষ বসুন্ধরা কিংস হলেও ক্রিকেটে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডান। ফুটবলের মতো ক্রিকেটেও খানিকটা সুবিধাজনক অবস্থানে আবাহনী। আজ ঢাকা লিগের শেষ ম্যাচে হার এড়াতে পারলেই চ্যাম্পিয়ন হান্নান সরকারের দল। বৃষ্টি বা প্রাকৃতিক কারণে পরিত্যক্ত হলে আবাহনী চ্যাম্পিয়ন হবে। বিপরীতে মোহামেডানকে চ্যাম্পিয়ন হতে হলে জিততেই হবে। মোহামেডান জিতলে দুই দলের পয়েন্ট সমান হবে। সেক্ষেত্রে হেড টু হেড লড়াইয়ে মোহামেডান চ্যাম্পিয়ন হবে। ক্রিকেট লিগে আনুষ্ঠানিক ফাইনাল ম্যাচ নেই। লিগের শেষ ম্যাচে শিরোপা নিষ্পত্তি হচ্ছে। টেবিলের দুই শীর্ষ দলই লীগের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হওয়ায় অলিখিত ফাইনালে পরিণত হয়েছে।

দিনের প্রথম বলেই অলআউট জিম্বাবুয়ে

চট্টগ্রামে প্রথম টেস্টের প্রথম দিন দুই সেশনে দারুণ লড়াইয়ে বড় সংগ্রহের সম্ভাবনা জাগিয়েছিল জিম্বাবুয়ে। যার পেছনে ছিলেন নিক ওয়েলচ (৫৪) ও শন উইলিয়ামস (৬৭)। হাফসেঞ্চুরি পেয়েছিলেন দুজনেই। চায়ের বিরতির পর ওয়েলচ রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে ফিরতেই মোমেন্টাম বদলে দেন নাঈম হাসান ও তাইজুল ইসলাম। শেষ সেশনে তাদের ঘূর্ণি জাদুতে নামে ব্যাটিং ধস। ৭ উইকেট হারিয়ে ম্যাচের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ নেয় তারা। ৯ উইকেটে ২২৭ রানে প্রথম দিন শেষ করা জিম্বাবুয়েকে দ্বিতীয় দিন আর দাঁড়াতে দেয়নি বাংলাদেশ। প্রথম বলেই তাইজুল ইসলামের শিকারে পরিণত হন ব্লেসিং মুজারাবানি (২)। তাতে ২২৭ রানে থেমেছে জিম্বাবুয়ের প্রথম ইনিংস। জিম্বাবুয়ে ইনিংসে ধস নামানোর মঞ্চটা গড়ে দেন নাঈম। ক্রেইগ আরভিন (৫) ও শন উইলিয়ামসকে (৬৭) ফিরিয়ে মোমেন্টাম পাইয়ে দেন তিনি। তার পর জিম্বাবুয়ের ব্যাটিংয়ের লেজ উন্মুক্ত করে দেন তাইজুল। শেষ পর্যন্ত ৬০ রানে ৬ উইকেট নিয়েছেন। ৪২ রানে দুটি নিয়েছেন নাইম। একটি নিয়েছেন তানজিম হাসান সাকিব।

পাপনের দুর্নীতি ও অর্থপাচার: ২৭ ধরনের নথি চেয়ে বিসিবিতে দুদুকের চিঠি

সাবেক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সাবেক সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানে ২৭ ধরনের নথিপত্র চেয়ে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সোমবার (২৮ এপ্রিল) অভিযোগ অনুসন্ধানে বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর চিঠি পাঠিয়েছে বলে জানা গেছে। দুদকের উপপরিচালক সাইদুজ্জামানকে দলনেতা করে তিন সদস্যের অনুসন্ধান দল গঠন করা হয়েছে। দলের অন্য সদস্যরা হলেন সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম এবং উপসহকারী পরিচালক সুবিমল চাকমা। পাপন কিশোরগঞ্জ-৬ আসনের সাবেক এমপি এবং বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালকও ছিলেন। তার বিরুদ্ধে মূলত অভিযোগ, তিনি বিসিবি ও সরকারি অর্থের অপব্যবহার করে নিজ এবং পরিবারের সদস্যদের নামে দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন এবং বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের কর্মকর্তাদের যোগসাজশে হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে অর্থ পাচার করেছেন। দুদকের পাঠানো চিঠিতে আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে চাওয়া তথ্য ও নথিপত্র সরবরাহ করতে বলা হয়েছে। যেসব রেকর্ডপত্র চাওয়া হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে, পূর্বাচলে স্টেডিয়াম নির্মাণের জন্য পরামর্শক নিয়োগের প্রক্রিয়ায় পত্রিকায় প্রকাশিত ইওআই বিজ্ঞাপনের কপি, ইওআই ডকুমেন্ট অনুমোদনের চিঠি, ইওআই বিজ্ঞাপন, ইওআই’র সব মূল্যায়ন প্রতিবেদন, পরামর্শকদের ইওআই জমাদানের রেকর্ড, ইওআইয়ের ফলাফল প্রকাশ পর্যন্ত যাবতীয় নথিপত্র, কারিগরি ও আর্থিক প্রস্তাব (টেকনিক্যাল ও ফাইন্যানশিয়াল প্রপোজাল), ইওআইতে যোগ্য ঘোষিত প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকা, প্রস্তাব ডকুমেন্ট অনুমোদনের কপি, মূল্যায়ন মানদণ্ড, কারিগরি ও আর্থিক মূল্যায়ন প্রতিবেদন, এলওআই বা কার্যাদেশের কপি, পরামর্শক নিয়োগের ক্ষেত্রে কোন নথি ও পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে তার রেকর্ড, পরামর্শক নিয়োগের গোপন ব্যয় নিরূপণ সংক্রান্ত নথি এবং সম্পাদিত চুক্তিপত্রসহ সব রেকর্ডপত্রের সত্যায়িত অনুলিপি। পূর্বাচল স্টেডিয়াম নির্মাণের জন্য কোন পদ্ধতিতে ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে তা উল্লেখসহ পদ্ধতি অনুমোদনের কপি, অনুমোদিত দরপত্র ডকুমেন্ট, অনুমোদিত দরপত্র বিজ্ঞপ্তির কপি, পত্রিকায় প্রকাশিত দরপত্র বিজ্ঞপ্তির কপি, জমাকৃত সব দরপত্রের কপি, কারিগরি ও আর্থিক মূল্যায়ন প্রতিবেদন, দরপত্র অনুমোদনের চিঠি, কার্যাদেশ (এনওএ) এবং চুক্তিপত্রের কপি, ভূমি উন্নয়ন কাজের বিল পরিশোধ সংক্রান্ত যাবতীয় নথিপত্র (প্রী-সেকশন ও পোস্ট সেকশনের কপিসহ), বিল পরিশোধের কার্যাদেশের পরিমাণের সঙ্গে সম্পন্নকৃত কাজের যদি কোনো পার্থক্য থাকে তার অনুমোদন কপি, অনুমোদিত মূল ব্যয় নিরূপণ ও (যদি থাকে) সংশোধিত অনুমোদিত ব্যয় নিরূপণ কপি, প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) কপি, প্রকল্প অনুমোদন পত্র, বিদেশ থেকে আমদানিকৃত মালামালের আমদানির নথি এবং স্টেডিয়াম নির্মাণের জমি ক্রয় বা অধিগ্রহণ সংক্রান্ত রেকর্ডপত্রের সত্যায়িত অনুলিপি চাওয়া হয়েছে। নাজমুল হাসান পাপনের দায়িত্ব পালনকালে বিসিবির আয়-ব্যয় সংক্রান্ত অডিট প্রতিবেদন; আইসিসি এবং এসিসির লভ্যাংশ প্রদানসংক্রান্ত নীতিমালার সত্যায়িত ফটোকপি, লজিস্টিকস্ অ্যান্ড প্রটোকল বাবদ খরচের বিবরণ ও এ সংক্রান্ত রেকর্ডপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি, বিপিএল বাবদ খরচের বিবরণ, এ সংক্রান্ত রেকর্ডপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি, বিদেশি কোচ নিয়োগের দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তাগণের নাম ও ঠিকানা এবং বিদেশি কোচ নিয়োগের নীতিমালা ও তাদের সম্মানী বা বেতন-ভাতা পরিশোধের প্রমাণপত্রের সত্যায়িত কপি। নাজমুল হাসান পাপনের দায়িত্ব পালনকালে বিসিবির অর্থ বিভাগ, লজিস্টিকস্ আর বিপিএল দেখার দায়িত্ব কোন কোন কর্মকর্তার উপর ন্যস্ত ছিলো তাদের বিস্তারিত ঠিকানা (ব্যক্তিগত যাবতীয় তথ্যাদিসহ), ক্রিকেট সেলিব্রেট মুজিব ১০০ নামে ব্যয়িত অর্থের রেকর্ডপত্র ও নোটশিট এর সত্যায়িত ফটোকপি, ভারতীয় সংগীত ব্যক্তিত্ব এ. আর রহমানের কনসার্ট আয়োজন সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র ও নোটশিটের সত্যায়িত ফটোকপি, ২০১৯ সালে বঙ্গবন্ধু বিপিএল নামে ব্যয়িত অর্থের বিষয়ে রেকর্ডপত্র ও নোটশিটের সত্যায়িত ফটোকপি। দায়িত্ব পালনকালে কোন কোন অডিট ফার্ম দ্বারা অডিট করানো হয়েছে তাদের বিস্তারিত তালিকা ও বিল প্রদানের বিষয়ে রেকর্ডপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি। নাজমুল হাসান পাপনের দায়িত্ব পালনকালে নিম্নোক্ত ছক মোতাবেক বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড হতে যেসব কাজের বিপরীতে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে তার বিস্তারিত তালিকা- ক্র. নং অর্থ বছর প্রকল্পের নাম, আইডি নম্বর ও কার্যাদেশ নম্বর বরাদ্দকৃত অর্থ পরিশোধিত অর্থ কার্যাদেশ প্রাপ্ত ঠিকাদারের নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর প্রকল্প পরিচালক, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নাম ও ঠিকানা, বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম)-এ খরচের বিষয়ে রেকর্ডপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি। এছাড়া পাপনের দায়িত্ব পালনকালে ক্রিকেটের তৃতীয় বিভাগ বাছাইয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তা ও ক্লাবসমূহের বিস্তারিত তালিকা এবং উক্ত বাছাই কমিটিসহ সংশ্লিষ্ট সত্যায়িত ফটোকপি, বিসিবি পরিচালনা পরিষদের কতগুলো সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং উক্ত সভাসমূহের খাতভিত্তিক খরচের তালিকা (২০১২-২০১৩ থেকে ২০২২-২০২৩ পর্যন্ত অডিট রিপোর্টের সত্যায়িত ফটোকপিসহ) নাজমুল হাসান পাপনের দায়িত্ব পালনকালে ক্রিকেটের তৃতীয় বিভাগ বাছাইয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তাগণ ও ক্লাব সমূহের বিস্তারিত তালিকা এবং উক্ত বাছাই কমিটির টিওআরসহ সংশ্লিষ্ট সত্যায়িত ফটোকপি। নাজমুল হাসান পাপনের দায়িত্ব পালনকালে যে সব কর্মকর্তা/কর্মচারী বিসিবির অর্থায়নে বিদেশে ভ্রমণ করেছেন তাদের বিস্তারিত তালিকা; তাদের ব্যয় বিবরণী ও তৎসংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র এবং বিসিবির বিদেশ ভ্রমণসংক্রান্ত নীতিমালার সত্যায়িত ফটোকপি, ক্রিকেট ম্যাচ দর্শনে হেলিকপ্টার ব্যবহারের খরচাদির রেকর্ডপত্র ও বিসিবির সভাপতি হিসেবে হেলিকপ্টার ব্যবহার করা সংক্রান্ত নীতিমালাসহ এ সংক্রান্ত রেকর্ডপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি। নাজমুল হাসান পাপনের দায়িত্ব পালনকালে স্টেডিয়াম নির্মাণ, সংস্কার এবং শোভাবর্ধনসহ যাবতীয় উন্নয়ন কাজের তালিকা এবং টেন্ডার ডকুমেন্টস ও তৎসংশ্লিষ্ট যাবতীয় রেকর্ডপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি (নোটিশ আহ্বান থেকে শুরু করে বিল প্রদান পর্যন্ত)। বিসিবির আয়ের খাতসমূহ হতে নাজমুল হাসান পাপনের দায়িত্ব পালনকালে কত কোটি বিসিবির হিসাবে জমা হয়েছে, জমাকারী প্রতিষ্ঠানের (বিজ্ঞাপন ও অন্যান্য খাতসহ) তালিকা, হিসাব বিবরণী এবং উক্ত খাতসমূহ হতে বিসিবির হিসাবে জমাকৃত অর্থ কোন খাতে ব্যয় করা হয়েছে তার সত্যায়িত ফটোকপি। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদ্‌যাপনে বিপিএল আয়োজন ও এ সংক্রান্ত অন্যান্য খরচ, আয়-ব্যয়ের রেকর্ডপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি। নাজমুল হাসান পাপনের দায়িত্ব পালনকালে ক্রিকেট বল আমদানির যাবতীয় দলিলাদির সত্যায়িত ফটোকপি। নাজমুল হাসান পাপনের দায়িত্ব পালনকালে ২০১৭ সাল থেকে ২০২৩ পর্যন্ত আইসিসি'র মেগা আসরসমূহের খরচের যাবতীয় রেকর্ডপত্রাদির সত্যায়িত ফটোকপি। আয়ারল্যান্ড সফরে সিকিউরিটিজ প্রোভাইডার এবং সংসদীয় ক্রিকেট দলের ইংল্যান্ড সফরকারীদের তালিকা, খরচাদির বিবরণ ও নীতিমালার সত্যায়িত ফটোকপি। নাজমুল হাসান পাপনের দায়িত্ব পালনকালে গাজী টিভি, ইমপ্রেস-মাত্রা কনসোর্টিয়ামসহ কোন কোন মিডিয়া, ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছে মিডিয়া রাইটস বিক্রি করা হয়েছে, উক্ত মিডিয়া বা ব্যক্তিবর্গের তালিকা, চুক্তিসমূহ এবং নীতিমালা ও আয়-ব্যয়ের বিবরণীর সত্যায়িত ফটোকপি। নাজমুল হাসান পাপনের দায়িত্বকালীন সব পরিচালকদের নাম, ঠিকানা, এনআইডি ইত্যাদির রেকর্ডপত্র/তথ্যাদি। পাপনের দায়িত্বকালীন বিসিবিতে সংঘটিত বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনিয়ম সংক্রান্তে কোন বিভাগীয় তদন্ত হয়ে থাকলে উক্ত তদন্ত প্রতিবেদনসহ সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র। এর আগে গত ১৮ মার্চ দুদক আনুষ্ঠানিকভাবে নাজমুল হাসান পাপনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করার ঘোষণা দেয়। দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন জানান, বিসিবির সভাপতি থাকাকালে নাজমুল হাসানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর ১৬ মার্চ আদালতের নির্দেশে নাজমুল হাসান, তার স্ত্রী রোকসানা হাসান, মেয়ে সুনেহরা রহমান, রুশমিলা রহমান এবং ছেলে রাফসান হাসানের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

চট্টগ্রামে শক্ত অবস্থানে জিম্বাবুয়ে, চাপে বাংলাদেশ

চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিন সোমবার (২৮ এপ্রিল) শুরুটা মন্থর হলেও দৃঢ় পদক্ষেপে এগিয়ে চলেছে জিম্বাবুয়ে। টস জিতে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় সেশন শেষে ৫৬ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ১৬১ রান করেছে সফরকারীরা। সেশন শেষে বাংলাদেশ স্পষ্টভাবে চাপে পড়েছে। দ্বিতীয় সেশনে কোনো উইকেট তুলতে পারেনি স্বাগতিকরা। বিশেষ করে নিক ওয়েলচ (৫৪*) ও শন উইলিয়ামস (৫৫*) দুর্দান্ত ধৈর্য ও দৃঢ়তা দেখিয়ে জিম্বাবুয়েকে শক্ত ভিত উপহার দিয়েছেন। বাংলাদেশের বোলাররা মাঝেমধ্যে রান আটকে রাখতে পারলেও কাঙ্ক্ষিত শিকারের দেখা মেলেনি। হাসান মাহমুদ, মেহেদী হাসান মিরাজ ও নাইম হাসান কিছুটা আঁটসাঁট বোলিং করলেও সাফল্য পাননি। তাইজুল ইসলাম এবং তানজিম হাসান সাকিব অবশ্য একটি করে উইকেট পেয়েছেন, তবে উইকেটশূন্য দ্বিতীয় সেশন বাংলাদেশের জন্য বড় হতাশা। ওয়েলচ অবশ্য সেশনের শেষ দিকে বাঁহাতের সামান্য চোটে ভোগেন, তবে চা-বিরতিতে যাওয়ার আগে তিনি ও উইলিয়ামস মিলে বাংলাদেশকে উইকেটবিহীন দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় রাখেন। মধ্যাহ্নভোজের পর থেকে দুইজন মিলে ৮৯/২ স্কোরকে টেনে নিয়ে যান ১৬১/২ পর্যন্ত। বিশেষ করে ড্রিঙ্কস বিরতির পর উইলিয়ামস কিছুটা দ্রুত রান তুলতে চেষ্টা করেন, যাতে জিম্বাবুয়ের ইনিংস থমকে না যায়। এর আগে, ব্রায়ান বেনেট (২১) ও বেন কারান (২১) আউট হয়ে ফিরে যান। বেনেটকে ক্যাচ আউট করেন তানজিম সাকিব, আর তাইজুল ইসলাম বোল্ড করেন কারানকে। বাংলাদেশের জন্য এখন সামনে বড় চ্যালেঞ্জ শেষ সেশনে দ্রুত উইকেট তুলে নেওয়া। নইলে প্রথম ইনিংসে বড় সংগ্রহ গড়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিতে পারে জিম্বাবুয়ে। বর্তমান স্কোর: জিম্বাবুয়ে: ১৬১/২ (৫৬ ওভার) ওয়েলচ ৫৪*, উইলিয়ামস ৫৫* বাংলাদেশের বোলিং: তানজিম হাসান সাকিব: ৯-০-৪৭-১ তাইজুল ইসলাম: ১৭-২-৪০-১

সিরিজ বাঁচানোর ম্যাচে বোলিংয়ে বাংলাদেশ

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে টসে হেরে ফিল্ডিংয়ে নেমেছে বাংলাদেশ। সিরিজে টিকে থাকতে এই ম্যাচে জয়ের কোনো বিকল্প নেই টাইগারদের সামনে। এদিকে এই ম্যাচ দিয়ে দেশের ১০৭তম ক্রিকেটার হিসেবে টেস্ট অভিষেক হলো তরুণ পেসার তানজিম হাসান সাকিবের। ম্যাচ শুরুর আগে তাকে সাদা জার্সির স্বপ্ন পূরণে শুভেচ্ছা জানান দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম। মুশফিক নিজ হাতে তানজিমকে টেস্ট ক্যাপ পরিয়ে দেন। সতীর্থদের কাছ থেকেও পেয়েছেন উষ্ণ অভিনন্দন। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন তানজিম। ১০ ওয়ানডে ও ১৮টি টি-টোয়েন্টি খেলা এই ডানহাতি পেসারের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে রয়েছে ১৬ ম্যাচে ২৫ উইকেট। সিরিজের প্রথম ম্যাচে সিলেটে বৃষ্টির দাপটে বিঘ্ন ঘটলেও, এই টেস্টে এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। সকাল থেকেই ঝলমলে রোদ দেখা যাচ্ছে, এবং আগামী চার দিনেও বড় ধরনের বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। সিলেটে তিন উইকেটে হেরে সিরিজে পিছিয়ে আছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। তাই ঘরের মাঠে সিরিজ সমতায় ফিরিয়ে আনতে মরিয়া সাকিব-মুশফিকরা। বাংলাদেশ একাদশ: নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), মেহেদী হাসান মিরাজ, সাদমান ইসলাম, এনামুল হক বিজয়, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, জাকের আলী অনিক, তাইজুল ইসলাম, তানজিম হাসান সাকিব, হাসান মাহমুদ ও নাঈম হাসান। জিম্বাবুয়ে একাদশ: ব্রায়ান বেনেট, বেন কারান, ক্রেইগ আরভিন (অধিনায়ক), ওয়েসলি মাধেভেরে, ওয়েলিংটন মাসাকাদজা, ভিনসেন্ট মাসেকেরা, ব্লেসিং মুজারাবানি, রিচার্ড এনগারাভা, তাফাদজোয়া টিসিগা, নিকোলাস রয় ওয়েলচ ও শন উইলিয়ামস।