বাংলাদেশকে হারিয়ে হোয়াইটওয়াশ এড়াল পাকিস্তান


বাংলাদেশকে হারিয়ে হোয়াইটওয়াশ এড়াল পাকিস্তান

বাংলাদেশের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশের শঙ্কা কাটিয়ে শেষ ম্যাচে ঘুরে দাঁড়াল পাকিস্তান। সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টিতে দাপুটে পারফরম্যান্সে ৭৪ রানের বড় জয় তুলে নিয়ে লজ্জার পরিণতি এড়াল সফরকারীরা। তবে সিরিজ জিতে নিয়েছে লিটন দাসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ দল, ফল দাঁড়িয়েছে ২-১ ব্যবধানে।

মিরপুরে অনুষ্ঠিত তিন ম্যাচ সিরিজের তৃতীয় ও শেষ খেলায় ব্যাটিং ব্যর্থতার এক চিত্রই দেখা যায় বাংলাদেশ দলের। টপ অর্ডার থেকে শুরু করে মিডল অর্ডার—সবাই একে একে ফিরে গেছেন ব্যর্থতার ছাপ রেখে। এমন পরিস্থিতিতে এক সময় টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সর্বনিম্ন সংগ্রহ (৭০ রান, ২০১৬) ভাঙার আশঙ্কাও জেগে ওঠে। তবে লোয়ার অর্ডার সেই লজ্জা সামাল দিলেও হার এড়ানো যায়নি।

পাকিস্তানের দেওয়া ১৭৮ রানের জবাবে বাংলাদেশ থামে মাত্র ১০৪ রানে। ম্যাচের শুরুতেই ধাক্কা খায় টাইগাররা। ইনিংস ওপেন করতে নামা তানজিদ হাসান রান করতে ব্যর্থ হন। তিন নম্বরে নেমে অধিনায়ক লিটন দাস সংগ্রহ করেন মাত্র ৮ রান। এরপর একে একে ফিরে যান মেহেদী হাসান মিরাজ (৯), জাকের আলী, মেহেদী হাসান ও শামীম হোসেন, যাদের কেউই দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পারেননি।

মাত্র ২৫ রানের মধ্যে পাঁচ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। ওপেনার নাঈম শেখ ১৭ বলে করেন মাত্র ১০ রান, দলীয় ৪১ রানের মাথায় তিনিও বিদায় নেন।

পাকিস্তানি বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল ছিলেন সালমান মির্জা। তিনি চার ওভার বল করে মাত্র ১৯ রানে নেন তিন উইকেট। ফাহিম আশরাফের শিকার হয় দুটি উইকেট। আগা সালমানের নেতৃত্বে সাত বোলারই ছিলেন কার্যকর; কেবল সাইম আইয়ুব উইকেটশূন্য ছিলেন, তবে তিনি এক ওভারে দেন মাত্র দুই রান।

বাংলাদেশের ইনিংসে কিছুটা প্রতিরোধ গড়েন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও শরিফুল ইসলাম। সাইফউদ্দিন ৩৪ বলে অপরাজিত ৩৫ রান করে হারের ব্যবধান কিছুটা কমান। শরিফুল ১৬.৪ ওভারে আউট হলে পাকিস্তানের জয় নিশ্চিত হয়। তাকে ফিরিয়ে দেন মোহাম্মদ নওয়াজ।

এর আগে টস জিতে পাঁচটি পরিবর্তন এনে বোলিং বেছে নেয় বাংলাদেশ। শুরুতেই আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ম্যাচের রঙ পাল্টে দেয় পাকিস্তান। ইনিংসের প্রথম ও শেষ অংশে ছিল আগুনঝরা ব্যাটিং, যদিও মাঝের সময়টায় বাংলাদেশের বোলাররা কিছুটা নিয়ন্ত্রণ আনেন।

হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর লড়াইয়ে পাকিস্তানের হয়ে ৪১ বলে ৬৩ রানের ইনিংস খেলেন ওপেনার ফারহান। তার সঙ্গী সাইম আইয়ুব করেন ২১ রান। তিন নম্বরে নামা মোহাম্মদ হারিস ছিলেন ব্যর্থ। তবে হাসান নওয়াজ ঝড় তোলেন ১৭ বলে ৩৩ রান করে। এই জুটিতেই পাকিস্তান তিন অঙ্ক ছুঁয়ে যায় এবং স্কোর এগোয় দেড়শর কাছাকাছি।

শেষ দিকে অধিনায়ক আগা সালমান ও মোহাম্মদ নওয়াজ ইনিংসে গতি বাড়ান। নওয়াজ ১৬ বলে ২টি চার ও ২টি ছক্কায় ২৭ রান করে ফিরলেও সালমান অপরাজিত থাকেন ১২ রানে।

বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে সবচেয়ে সফল ছিলেন তাসকিন আহমেদ, যিনি তিনটি উইকেট নেন। নাসুম আহমেদ দুইটি এবং সাইফউদ্দিন ও শরিফুল একটি করে উইকেট শিকার করেন।

সিরিজের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানকে ৭ উইকেটে হারায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচেও ৮ রানে জয় তুলে সিরিজ নিশ্চিত করে টাইগাররা। তবে শেষ ম্যাচে ধবলধোলাইয়ের ইতিহাস গড়ার দিনে দেখা মেলে এক হতাশাজনক পরাজয়ের।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×