
‘ধর্মীয় মূল্যবোধ পরিপন্থী কিছুই নতুন রাজনীতিতে জায়গা পাবে না’
ধর্মীয় মূল্যবোধ পরিপন্থী কোনোকিছুই নতুন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের কাছে জায়গা পাবে না বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম। শনিবার (০১ মার্চ) তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে তিনি এই আহ্বান জানান। ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেন, ‘রাজনীতির আগেও আমার পরিচয়- আমি একজন মুসলমান। আমি আমার এই পরিচয় ধারণ করি, সবসময় করেই যাবো। আমার বিশ্বাসকে কিংবা আমার দেশের মানুষের বিশ্বাসকে আঘাত করে কোনো রাজনীতি আমি কখনও করবো না। স্পষ্ট কণ্ঠে জানিয়ে দিতে চাই, ধর্মীয় মূল্যবোধের পরিপন্থী কিছুই আমার বা আমাদের রাজনীতিতে কখনও জায়গা পাবে না।’ তিনি আরও লিখেন, ‘যা হয়েছে, সেটা ছিলো একটি অনিচ্ছাকৃত ভুল। আমরা নির্ভুল নই। কোনো ভুল করলে আপনারা আমাদের নিজের ভাই মনে করে ভুল ধরিয়ে দেবেন এবং কোনো প্রকার 'যদি', ‘কিন্তু’, 'অথবা' ব্যাতিত আমরা আমাদের ভুল সংশোধন করে নিবো। এই সংশোধন করার মানসিকতা আমাদের সবসময় ছিলো, আছে, থাকবে ইনশাআল্লাহ।’ উল্লেখ্য, সদ্য আত্মপ্রকাশ পাওয়া রাজনৈতিক দল এনসিপিতে একজন সমকামিতা সমর্থক থাকার অভিযোগ উঠলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ সমালোচনা সৃষ্টি করে। এর প্রেক্ষিতে সারজিস আলম এই ফেসবুক বার্তা দিয়েছেন।

‘যদি’ ‘কিন্তু’ ‘অথবা’ ছাড়াই ভুল সংশোধন করে নেব: হাসনাত আবদুল্লাহ
অনেক জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে আত্মপ্রকাশ করেছে ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। গণঅভ্যুত্থান থেকে জন্ম নেওয়া দলটির নেতারা ঘোষণা করেছেন, তারা অন্য কোনো দেশ নয়, তারা হবেন বাংলাদেশপন্থি। দল গঠনের পরদিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে এনসিপির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, রাজনীতির আগেও আমার পরিচয় আমি একজন মুসলমান। আমি আমার এই পরিচয় ধারণ করি, সবসময় করেই যাবো। স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, আমার বিশ্বাস কিংবা আমার দেশের মানুষের বিশ্বাসে আঘাত করে কোনো রাজনীতি আমি কখনও করবো না। স্পষ্ট কণ্ঠে জানিয়ে দিতে চাই, ধর্মীয় মূল্যবোধের পরিপন্থি কিছুই আমার বা আমাদের রাজনীতিতে কখনও জায়গা পাবে না। নিজেদের ভুলের দায় স্বীকার করে তিনি আরও লেখেন, যা হয়েছে, সেটা ছিল একটি অনিচ্ছাকৃত ভুল। আমরা নির্ভুল নই। কোনও ভুল করলে আপনারা আমাদের নিজের ভাই মনে করে ভুল ধরিয়ে দেবেন, এবং ‘যদি’ কিন্তু’ ‘অথবা’ ব্যতীত আমরা আমাদের ভুল সংশোধন করে নেব। গতকাল শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ঘোষিত জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ১৭১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটিতে জুলাই আন্দোলনের নেতাদের মধ্যে ১০ জন এ দলের শীর্ষ পদে আছেন। কমিটি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, মধ্য, ডান, বাম, শিবির, কওমিপন্থি এবং আদিবাসী ও ১৫ নারী স্থান পেয়েছেন। শীর্ষ ১০ পদে রয়েছেন– আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন ও আরিফুল ইসলাম আদীব, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা ও নাহিদা সারওয়ার নিভা, প্রধান সমন্বয়কারী নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, যুগ্ম সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ ও মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম। এ ছাড়া কমিটিতে ১৬ যুগ্ম আহ্বায়ক, ৩২ যুগ্ম সদস্য সচিব, ১২ যুগ্ম মুখ্য সংগঠক, ৪৪ সংগঠক, ১৪ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক এবং ৪৩ সদস্য রয়েছেন।

ইসলামী যুব আন্দোলনের পল্টন থানা সম্মেলন অনুষ্ঠিত
ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওতাধীন পল্টন থানা শাখার ৫ম থানা যুব সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় পুরানা পল্টনস্থ খানা বাসমতী রেস্তোরাঁয় যুব সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় প্রবাসীকল্যাণ সম্পাদক এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মুহাম্মাদ ওয়ালিউল্লাহ তালুকদার। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ইসলামী যুব আন্দোলন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের দাওয়াহ্ ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক মুহাম্মাদ নাজমুল ইসলাম। সম্মেলনে যুব আন্দোলনের পল্টন থানার সভাপতি মুহাম্মাদ আল-আমিন বেপারীর সভাপতিত্বে এবং পল্টন থানার সাধারণ সম্পাদক হাফেজ মাওলানা আঃ রহিম শেখ এর সঞ্চালনায় ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুব উন্নয়ন ও কর্ম সংস্থান সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল্লাহ আল মামুন, অর্থ সম্পাদক মুহাম্মাদ হাসানুজ্জামান হিমেলসহ ইসলামী আন্দোলন, যুব আন্দোলন এবং ছাত্র আন্দোলন থানা ও মহানগরের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। সম্মেলনে শেষে ২০২৫- ২০২৬ সেশনের ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ পল্টন থানা শাখার নতুন কমিটির নাম ঘোষণা করা হয়। এতে সভাপতি মুহাম্মাদ আল-আমিন বেপারী, সহ-সভাপতি হাফেজ মাওঃ নুরে আলম ইলিয়াস এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে হাফেজ মাওঃ আঃ রহিম শেখ এর নাম ঘোষণা করা হয়।

ভোটে সরকার গঠন না হওয়া পর্যন্ত গণতন্ত্র ঝুঁকিমুক্ত নয়: তারেক রহমান
সব ধর্ম-বর্ণের মানুষের জন্য নিরাপদ গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়তে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ‘বিরাট সুযোগ’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, যতক্ষণ না জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে সংসদ ও সরকার গঠন না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত গণতন্ত্র ঝুঁকিমুক্ত নয়। শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রামে জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ বাংলাদেশের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী পর্বে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তারেক রহমান। খবর বাসসের। গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়তে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সমর্থন ও সহযোগিতা চেয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ৫ আগস্ট ‘কংসরূপী নৃশংস গণহত্যাকারী স্বৈরাচার’ বাংলাদেশ ছেড়ে পালিয়েছে। স্বৈরাচার পালালেও গণতন্ত্র কিন্তু এখনও শঙ্কামুক্ত নয়। অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র কিন্তু অব্যাহত রয়েছে। পলাতক স্বৈরাচারের যে দোসর, এরা নানা কৌশলে পুনরায় মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার অপচেষ্টায় প্রতিনিয়ত লিপ্ত। তিনি আরও বলেন, সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগুরু একটি দেশের জনসংখ্যার চরিত্র ও বৈশিষ্ট্য নির্ণয়ের জন্য একটি শব্দ মাত্র, এর চেয়ে বেশি কিছু নয়। এ বাংলাদেশে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে, বিশ্বাসী, অবিশ্বাসী কিংবা সংশয়বাদী, দেশের প্রতিটি নাগরিকের গর্বিত পরিচয়– আমরা বাংলাদেশি। ‘বাংলাদেশ সবার’ উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, সব নাগরিক সমঅধিকার ভোগ করবে– এটাই বিএনপির নীতি, এটাই বিএনপির রাজনীতি। আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি এবং বিএনপি বিশ্বাস করে দলমত, ধর্ম, দর্শন যার যার, রাষ্ট্র কিন্তু সবার। ধর্ম যার যার, নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকার সবার। সুতরাং একটি নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার জন্য আমাদের সবার সামনে আগামী জাতীয় নির্বাচন একটি বিরাট বড় সুযোগ। সনাতনী সম্প্রদায়ের উদ্দেশে তিনি বলেন, বিতাড়িত পলাতক স্বৈরাচারের সময় গত দেড় দশকে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় কিংবা তাদের ধর্মীয় স্থাপনা ও বসতবাড়িতে হামলার ঘটনাগুলো যদি আমরা পর্যালোচনা করি তাহলে দেখব, হাতেগোনা দু-একটি ঘটনা ছাড়া বাংলাদেশের সংখ্যালঘুকেন্দ্রিক অধিকাংশ হামলার ঘটনা কিন্তু কোনো ধর্মীয় কারণে হয়নি। ঘটনাগুলো যাচাই করলে দেখা যাবে, এসবের নেপথ্যে ছিল অবৈধ লোভ-লাভের জন্য দুর্বলের ওপর সবলের হামলা। কিংবা অসৎ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য। সে জন্যই আপনাদের প্রতি আহ্বান, আপনাদের ধর্মীয় পরিচয়কে ভবিষ্যতে আর যাতে কেউ হীন স্বার্থে ব্যবহার করতে না পারে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকবেন। একটি রাষ্ট্র ও সমাজে গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার, আইনের শাসন রয়েছে কিনা, সেটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, রাষ্ট্রে যদি আইনের শাসন না থাকে, কেউ নিরাপদ নই। সংখ্যালঘু, সংখ্যাগুরু, দলমত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তার জন্য রাষ্ট্রে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার কোনোই বিকল্প নেই। একমাত্র আইনের শাসনই যে কোনো মানুষের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে পারে। চট্টগ্রাম নগরীর জেএম সেন হল মাঠে আয়োজিত জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সম্মেলনের উদ্বোধনী পর্বে সভাপতিত্ব করেন প্রদীপ চক্রবর্তী। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সাবেক ও বর্তমান নেতারা এবং বিভিন্ন মঠ-মন্দিরের সাধু সন্ন্যাসী।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার উচিত সকালে ফাটাকেষ্ট মুভি দেখে বের হওয়া
বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে সকালে ফাটাকেষ্ট মুভি দেখে ঘর থেকে বের হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ইলিয়াস মাতুব্বর। একইসঙ্গে তিনি দেশের মানুষের শান্তির জন্য তড়িৎগতি ও কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধও জানিয়েছেন।আজ শুক্রবার বিকেলে ফরিদপুরে সংগঠনটির কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এমন মন্তব্য করেন তিনি। জেলা শহরের কবি জসিম উদ্দীন হল রুমে জেলা শাখার আয়োজনে প্রথমবারের মতো সংগঠনটির কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে অন্তর্বর্তী সরকারকে হুঁশিয়ারি জানিয়ে বিজেপি নেতা ইলিয়াস মাতুব্বর বলেন, আপনারা যারা সরকারে আছেন, ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে অর্ডার দিয়ে হবে না। আপনাদের বুঝতে হবে শেখ হাসিনার দোসররা লেগে আছে। তারা চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি যতটা পারবে ততটা করবে। সুতরাং আপনাদের উচিতমানুষকে শান্তি দেওয়া। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার উচিতসকালে ফাটাকেষ্ট মুভি দেখে ঘর থেকে বের হওয়া। কারণ, প্রশাসনেও কিন্তু ভারতের দোসররা বসে আছে। তিনি শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বৈরশাসক আখ্যা দিয়ে এবং তার কর্মকাণ্ড তুলে ধরে বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন দেশের সর্বপ্রথম স্বৈরাশাসক। তার রক্ত শেখ হাসিনার মধ্যে প্রবাহিত। শেখ হাসিনাকে ভারত সাইকো ট্রেনিং দিয়ে পাঠিয়েছে। তার বাবার হত্যার বিচারের জন্য সাইকো হয়ে উঠেছিলেন।বিজেপির এই নেতা ভারতকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আমি ভারতের দাদা বাবুদের বলে দিতে চাই, বাঙালি ভাতে-মাছে বাঙালি। দেশের সার্বভৌমত্বের বিষয়ে বাঙালি একচুলও ছাড় দেবে না, এক ইঞ্চি জমিও ছাড় দেবে না। প্রয়োজনে ১৮ কোটি মানুষ ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ করবে। দাদা বাবুদের দিন শেষ, শেখ হাসিনার মতো একজন সাইকো তৈরি করে এদেশ চুষেছেন; কিন্তু আর না। আমরা কিন্তু প্রাণ দিতে জানি।কর্মী সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির দক্ষিণবঙ্গের সমন্বয়ক ইকরাম আলী। এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য সৈয়দ রাকিবুল হোসেন, যুব বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন, জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার আহমেদ অভিসহ বিভিন্ন উপজেলা শাখার নেতৃবৃন্দ।

শেখ হাসিনাকে ৩১ বার ফাঁসি দিলেও বিচার শেষ হবে না: বরকত উল্লাহ বুলু
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেছেন, শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশের মানুষের সাথে বেঈমানি করেছে। তার মেয়ে শেখ হাসিনাও একইভাবে বাঙ্গালী জাতির সাথে দেশের সাথে বেঈমানি করেছে। এদেশের হাজার হাজার নিরীহ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করেছে, এদেশের রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে গুম করেছে। এদেশের ২৭ হাজার কোটি টাকা নিয়ে ভারতে পালিয়েছে। তার বিচার এই বাংলার মাটিতে হবে। হাসিনা যে পরিমাণ নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছে তাকে যদি ৩১ বারও ফাঁসি দেওয়া হয়; তাও তার বিচার শেষ হবে না। আজ শুক্রবার বিকেলে কুমিল্লার চান্দিনা ডা. ফিরোজা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ মাঠে উপজেলা ও পৌর বিএনপি’র দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।স্বাধীনতা সংগ্রামে জিয়াউর রহমানের অবদানের কথা উল্লেখ করে বুলু বলেন, শেখ মুজিব পাকিস্তানীদের কাছে জমাই আদরে আত্মসমর্পণ করে আত্মগোপন করেছিলেন। তখন এই বাঙ্গালী জাতিকে দিক নির্দেশনা দেওয়ার মতো কেউ ছিল না। ২৬ মার্চ চট্টগ্রামে শহীদ প্রেসিডেন্ট মেজর জিয়াউর রহমান সকল সেনা বাহিনীর সদস্যদের বলেছিলেন, আমরা আজ থেকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করলাম। আর এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়।বুলু চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, শেখ পরিবারের কেউ যদি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে থাকে এমন প্রমাণ যদি কেউ দিতে পারেন, তাহলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দিব।সম্মেলনে উপজেলা বিএনপি আহবায়ক মো. আতিকুল আলম শাওনকে সভাপতি, মো. কাজী আশরাদ কে সাধারণ সম্পাদক করে ১০১ সদস্য বিশিষ্ট চান্দিনা উপজেলা বিএনপি এবং পৌর বিএনপির আহবায়ক এবিএম সিরাজুল ইসলামকে সভাপতি ও সদস্য সচিব সাবেক পৌর মেয়র মো. আলমগীর খাঁনকে সাধারণ সম্পাদক করে ১০১ সদস্য বিশিষ্ট পৌর বিএনপি’র কমিটি গঠন করা হয়।চান্দিনা উপজেলা বিএনপি সভাপতি মো. আতিকুল আলম শাওন এর সভাপতিত্বে প্রধান বক্তার বক্তৃতা করেন বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটি সাংগঠনিক সম্পাদক (কুমিল্লা বিভাগ) অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া। বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন কেন্দ্রীয় বিএনপি সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (কুমিল্লা বিভাগ) হাজী মোস্তাক মিয়া, কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপি আহবায়ক মো. আক্তারুজ্জামান সরকার।অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন- উপজেলা বিএনপি সাবেক সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মফিজ উদ্দিন ভূঁইয়া, পৌর বিএনপি সভাপতি এবিএম সিরাজুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক শাহ্ মো. আলমগীর খাঁন, উপজেলা যুবদল আহবায়ক মাও. আবুল খায়ের। এসময় উপজেলা বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল সহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।এদিকে, প্রায় ৬ বছর পর চান্দিনা উপজেলা বিএনপি’র সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। প্রায় ১০ সহস্রাধিক নেতা-কর্মীর উপস্থিতিতে কানায় কানায় পূর্ণ ছিল চান্দিনা ডা. ফিরোজা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় খেলার মাঠসহ আশপাশের সড়কগুলো। এর আগে ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে অনানুষ্ঠানিক ভাবে গঠিত হয়েছিল চান্দিনা উপজেলা ও পৌর বিএনপি’র কমিটি।

আল্লাহর ওপর ভরসা ছাড়া অন্যকিছুতে নির্ভর করা চিন্তার ক্রটি: জামায়াত আমির
নিজেদের কাজ বুঝে নিয়ে দৃঢ়তার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে ইসলামী ছাত্রীসংস্থার সর্বস্তরের দায়িত্বশীলাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর আল ফালাহ মিলনায়তনে ইসলামী ছাত্রীসংস্থার ঢাকা মহানগরী অঞ্চলের সদস্যসহ থানা দায়িত্বশীলদের এক শিক্ষাশিবিরে তিনি এই আহ্বান জানান।ইসলামী ছাত্রীসংস্থার কেন্দ্রীয় সভানেত্রী মুনজিয়ার সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি জেনারেল উম্মে আরওয়ার পরিচালনায় অনুষ্ঠিত এই শিক্ষাশিবিরে প্রধান অতিথি ছিলেন জামায়াত আমির।ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ইসলামী ছাত্রীসংস্থার দায়িত্বশীলাদের নিজেদের কাজ বুঝে নিয়ে দৃঢ়তার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে। সব ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য সবসময় প্রস্তুত থাকতে হবে। সব ধরনের পরিস্থিতিতে আল্লাহর ওপরই ভরসা করতে হবে। আমরা যত বেশি তাওয়াক্কুল করব, তত বেশি আল্লাহর সাহায্য আসবে। আল্লাহর ওপর ভরসা না করে পারিপার্শ্বিক অন্য কিছুর ওপর নির্ভর করা চিন্তার ত্রুটি।শিক্ষাশিবিরে জামায়াত আমির মুসলিম-অমুসলিম সবার কাছে দাওয়াত পৌঁছানোর আহ্বান জানান এবং অনুকূল ও প্রতিকূল সর্বাবস্থায় দাওয়াতি কাজ অব্যাহত রাখতে বলেন।শিক্ষাশিবিরে বিষয়ভিত্তিক বক্তব্য দেন- জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল, ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মো. সেলিম উদ্দিন, ঢাকা মহানগরী জামায়াতের মহিলা বিভাগীয় সেক্রেটারি আয়শা সিদ্দিকা পারভিন, জামায়াতে ইসলামীর মহিলা বিভাগীয় কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ইরানি আক্তার।

জাতীয় নাগরিক পার্টির আংশিক কমিটি ঘোষণা
আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেছে নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে দলের আংশিক কমিটি ঘোষণা করেন দলের সদস্য সচিব হিসেবে হিসেবে দায়িত্ব পাওয়া আখতার হোসেন। এর আগে সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে এ দলের নাম ঘোষণা করেন শহীদ মো. ইসমাইল হাসান রাব্বির বোন মিম আক্তার। মিম আক্তার বলেন, ‘আপনাদের মনে আছে- গত ৫ আগস্ট দুই বোনের কাঁধে ভাইয়ের লাশ; সে দুই বোনের মধ্যে আমি একজন। ইতিহাসে এমন ঘটনা ঘটে নাই। ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর ছাত্র-জনতার নেতৃত্বে রাজনৈতিক দলের নাম জাতীয় নাগরিক পার্টি ঘোষণা করছি।’ এ সময় তিনি আহ্বায়ক হিসেবে নাহিদ ইসলাম ও সদস্য সচিব হিসেবে আখতার হোসেনের নাম ঘোষণা করেন। এরপর জাতীয় নাগরিক পার্টির আংশিক কমিটি ঘোষণা করেন আখতার হোসেন। এতে যারা রয়েছেন আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন ও আরিফুল ইসলাম আদীব, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা ও নাহিদা সারওয়ার নিবা, মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ (দক্ষিণাঞ্চল) ও সারজিস আলম (উত্তরাঞ্চল), মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ, যুগ্ম-আহ্বায়ক নুসরাত তাবাসসুম, মনিরা শারামিন, মাহবুব আলম, সারওয়ার তুষার, মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন, তুজরুবা জাবিন, সুলতান মুহাম্মদ জাকারিয়া, আতিক মুজাহিদ, আশরাফ উদ্দিন মাহদি, অর্পিতা শ্যামা দেব, তানজিল মাহমুদ, অনিক রায়, খালেদা সাইফুল্লাহ, জাবেদ রাসিম, এহতেশাম হক ও হাসান আলী। যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল আমিন, আারিফ সোহেল, রশিদুল ইসলাম রিফাত, মাহিন সরকার, মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন, আকরাম হোসাইন, এসএম সাইফ মুস্তাফিজ, সালেহ উদ্দিন সিফাত, (দফতরে সংযুক্ত), আলাউদ্দিন মুহাম্মদ, ফরিদ উদ্দীন, মোহাম্মদ ফারহাদ আলম ভুইয়া, মোহাম্মদ মিরাজ মিয়া, লুৎফর রহমান, মোহাম্মদ মইনুল ইসলাম তুহিন, মুশফিকুর সালেহিন, জাহিদুল ইসলাম, জহিরুল ইসলাম মুসা, হুমায়রা নুর, মুশফিকুর রহমান জুহান, মোল্লা মোহাম্মদ ফারুক এহসান, শাগুপ্তা বুশরা বিসমা, আহনাফ সাঈদ খান, আবু সাঈদ মাহাম্মদ সুজাউদ্দিন, মীর আরশাদুল হক, ফয়সাল মাহমুদ শান্ত, তারেক রেজা, মশিউর রহমান, জয়নাল আবেদিন শিশির, মোহাম্মদ মুনতাসির রহমান, গাজী সালাউদ্দিন তানভীর তামিম আহমেদ ও তাহসিন রিয়াজ। যুগ্ম মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) মোহাম্মদ আতাউল্লাহ, ডাক্তার মাহমুদা মিতু, মোল্লা রহমতুল্লাহ, এমএম শাহরিয়ার, জোবায়ের আরিফ, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সাইফুল্লাহ হায়দার, আলী নাসের খান, সাকিব মাহদি, আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, সাদিয়া ফারজানা দিনা, অলিক মৃ ও হানিফ খান সজিব।যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক মো. তারিকুল ইসলাম (যুগ উইং), আব্দুল আহাদ, দিলশানা পারুল, আবু হানিফ, আব্দুজ জাহের, মাজহারুল ইসলাম ফকির, গোলাম মোর্তজা সেলিম, আশিকিন আলম, জাহিদুল বারি, কৈলাশ চন্দ রেবুদাস, ডেভিড রাজু, শেখ মো. শাহ মইন উদ্দিন, মারজুক আহমেদ ও সাদ্দাম হোসনে

ভারত-পাকিস্তানপন্থির কোন ঠাঁই বাংলাদেশে হবে না: নাহিদ ইসলাম
বাংলাদেশে ভারত-পাকিস্তানপন্থির কোন ঠাঁই হবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে নতুন দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে নিজের বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘বাংলাদেশে ভারত ও পাকিস্তানপন্থী রাজনীতির ঠাঁই হবে হবে না। আমরা বাংলাদেশকে সামনে রেখে, বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থকে সামনে রেখে রাষ্ট্রকে বির্নিমাণ করব।’ নাহিদ ইসলাম জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকারী ছাত্র-জনতা, শহীদ পরিবারের সদস্য ও রাজনৈতিক দলের নেতাদের সংগ্রামী সালাম ও শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য শুরু করেন।’ তিনি বলেন, ‘আমরা সামনের কথা বলতে চাই। পেছনের ইতিহাস অতিক্রম করে সম্ভাবনার বাংলাদেশের কথা বলতে চাই। নাহিদ ইসলাম জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ‘তুমি কে, আমি কে, বিকল্প, বিকল্প’ স্লোগানটি তুলে ধরে বলেন, ‘বিকল্পের জায়গা থেকে এই নতুন দলের আত্মপ্রকাশ। আজকের মঞ্চ থেকে শপথ, বাংলাদেশকে বিভাজিত করা যাবে না।’ এরপর নাহিদ ইসলাম লিখিত বক্তব্য পাঠ করা শুরু করেন। জাতীয় নাগরিক কমিটি নাহিদের পাঠ করা ঘোষণাপত্রটি সাংবাদিকদের দিয়েছে। ঘোষণাপত্রটি হুবুহু তুলে ধরা হল– জুলাই ২০২৪ ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে বৈষম্য-বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে, আমরা বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা এই মর্মে ঘোষণা করছি- আমরা হাজার বছরের ঐতিহাসিক পরিক্রমায় বঙ্গীয় বদ্বীপের জনগোষ্ঠী হিসেবে এক সমৃদ্ধ ও স্বকীয় সংস্কৃতি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। প্রায় ২০০ বছরের ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে দীর্ঘ লড়াইয়ের পর ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্রের পত্তন ঘটে। তবে শোষণ ও বৈষম্য থেকে এ দেশের গণমানুষের মুক্তি মেলেনি। ফলে দীর্ঘ ২৩ বছরের সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম হয়। কিন্তু স্বাধীনতার পর দীর্ঘসময় ধরে বাংলাদেশের জনগণকে বারবার গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করতে হয়েছে। ১৯৯০ সালে ছাত্র-জনতা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে সামরিক স্বৈরাচারকে হটিয়েছে। তথাপি, স্বাধীনতার পাঁচ দশক পেরিয়েও আমরা গণতন্ত্র, সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে— এমন একটি রাজনৈতিক বন্দোবস্ত তৈরি করতে পারিনি। বরং বিগত ১৫ বছর দেশে একটি নিষ্ঠুর ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা কায়েম হয়েছিল, যেখানে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে ক্ষমতাসীন দলের স্বার্থে বেপরোয়া ব্যবহার করে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা হয়েছে। বিরোধী মতের কণ্ঠরোধ, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, সর্বগ্রাসী দুর্নীতি ও অর্থ পাচারকে একটি রাষ্ট্রীয় সংস্কৃতিতে পরিণত করা হয়েছে। জুলাই ২০২৪-এ ছাত্র-জনতা বিপুল আত্মত্যাগের মাধ্যমে এক অভূতপূর্ব অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ দেড় দশক ধরে জেঁকে বসা ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন ঘটিয়েছে। কিন্তু আমাদের স্মরণ রাখতে হবে, হাজারো শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত এই নতুন স্বাধীনতা কেবল একটি সরকার পতন করে আরেকটি সরকার বসানোর জন্যই ঘটেনি। জনগণ বরং রাষ্ট্রের আষ্টেপৃষ্ঠে জেঁকে বসা ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলোপের মাধ্যমে একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের আকাঙ্ক্ষা থেকে এই অভ্যুত্থানে সাড়া দিয়েছিল, যেন জনগণের অধিকারভিত্তিক একটি রাষ্ট্র পুনর্গঠিত হয়। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিচ্ছি। এটি হবে একটি গণতান্ত্রিক, সমতাভিত্তিক ও জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক দল। আমরা মনে করি, জুলাই ২০২৪ গণ-অভ্যুত্থান আমাদের সেকেন্ড রিপাবলিক প্রতিষ্ঠার লড়াই সূচনা করেছে। একটি গণতান্ত্রিক নতুন সংবিধান প্রণয়নের মাধ্যমে আমাদের সাংবিধানিক স্বৈরতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার সকল সম্ভাবনার অবসান ঘটাতে হবে। আমাদের সেকেন্ড রিপাবলিক প্রতিষ্ঠার জন্য গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে একটি নতুন সংবিধান প্রণয়ন আমাদের অন্যতম প্রাথমিক লক্ষ্য। আমাদের সেকেন্ড রিপাবলিকে জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষায় শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। ভেঙে পড়া রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলো পুনরায় গড়ে তোলা ও তাদের গণতান্ত্রিক চরিত্র রক্ষা করা হবে আমাদের রাজনীতির অগ্রাধিকার। এর মধ্য দিয়েই কেবল আমরা একটি পরিপূর্ণ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে আবির্ভূত হতে পারব। আমরা এমন একটি রাজনৈতিক সংস্কৃতির বিকাশ চাই যেখানে সমাজে ও রাষ্ট্রের সর্বস্তরে বিভেদের বদলে ঐক্য, প্রতিশোধের বদলে ন্যায়বিচার এবং পরিবারতন্ত্রের বদলে মেধা ও যোগ্যতার মানদণ্ড প্রতিষ্ঠিত হবে। আমাদের রাজনীতিতে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির কোনো স্থান হবে না। আমাদের সেকেন্ড রিপাবলিকে সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর কণ্ঠস্বরকে মূলধারায় তুলে আনা হবে। আমাদের রিপাবলিকে সাধারণ মানুষ, একমাত্র সাধারণ মানুষই হবে ক্ষমতার সর্বময় উৎস। তাদের সকল ধরনের গণতান্ত্রিক ও মৌলিক অধিকারের শক্তিশালী সুরক্ষাই হবে আমাদের রাজনীতির মূলমন্ত্র। আমরা রাষ্ট্রে বিদ্যমান জাতিগত, সামাজিক, লিঙ্গীয়, ধর্মীয় আর সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ ও বৈচিত্র্য রক্ষার মাধ্যমে একটি বহুত্বপূর্ণ ও সমৃদ্ধ সমাজ বিনির্মাণ করতে চাই। আমাদের রিপাবলিক সকল নাগরিককে দারিদ্র্য, বৈষম্য ও ক্ষমতার অপব্যবহার থেকে শক্তিশালী সুরক্ষা প্রদান করবে। আমাদের সেকেন্ড রিপাবলিকে বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর কোনো অংশকেই অপরায়ণ করা হবে না। বরং রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিককে সমান গুরুত্ব প্রদান ও সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। অর্থনীতিতে, আমরা কৃষি-সেবা-উৎপাদন খাতের যথাযথ সমন্বয়ের মাধ্যমে এমন একটি জাতীয় অর্থনীতি গড়ে তুলতে চাই যেটি হবে স্বনির্ভর, আয়-বৈষম্যহীন ও প্রাণ-প্রকৃতি-পরিবেশের প্রতি সংবেদনশীল। আমাদের অর্থনীতিতে সম্পদ একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর হাতে পুঞ্জীভূত হবে না, বরং সম্পদের সুষম পুনর্বণ্টন হবে আমাদের অর্থনীতির মূলমন্ত্র। আমরা বেসরকারি খাতের সিন্ডিকেট ও গোষ্ঠীস্বার্থ নিয়ন্ত্রণে দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে ভোক্তা ও জনস্বার্থ সংরক্ষণ করব। অর্থনৈতিক অগ্রগতির মাধ্যমে এই অঞ্চলের একটি শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে আমরা আঞ্চলিক সহযোগিতা ও আন্তর্জাতিক অংশীদারত্ব নিশ্চিত করব এবং বিজ্ঞান-প্রযুক্তি খাতে জোর দিয়ে উদ্ভাবনী সংস্কৃতি গড়ে তোলার মাধ্যমে একটি টেকসই, আধুনিক অর্থনীতি গড়ে তুলব। পরিশেষে, আমরা একটি ন্যায্যতা ও সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় আমাদের সংকল্প আবারও পুনর্ব্যক্ত করতে চাই। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, জুলাই ২০২৪ গণ-অভ্যুত্থান কেবল একটি ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধেই বিজয় নয়, এটি আমাদের ভবিষ্যৎ নির্মাণেরও শপথ। চলুন আমরা একসঙ্গে, হাতে হাত রেখে, এমন এক বাংলাদেশ গড়ে তুলি যেখানে প্রতিটি নাগরিকের কণ্ঠস্বর প্রতিধ্বনিত হবে, যেখানে ন্যায় প্রতিষ্ঠা, মানুষের অধিকারের সংগ্রামই হবে রাজনীতির অন্যতম লক্ষ্য। যেখানে সাম্য ও মানবিক মর্যাদা হবে রাষ্ট্রের ভিত্তি। এখনই সময়—নতুন স্বপ্ন দেখার, নতুন পথচলার, এবং একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার! ‘এই নতুন বাংলাদেশ গড়ায় আমরা সবাই প্রত্যেকে যার-যার অবস্থান থেকে শপথ করি। ঐক্যবদ্ধ হই এবং আমাদের কাঙ্ক্ষিত সেকেন্ড রিপাবলিক প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে দৃঢ় চিত্তে এগিয়ে যাই। আমাদের দেশ, আমাদের অধিকার, আমাদের ভবিষ্যৎ—আমাদের সেকেন্ড রিপাবলিক অধরা কোনো স্বপ্ন নয়, এটি আমাদের প্রতিজ্ঞা!’

একটি দল বেহেশতের টিকিট বিক্রি করছে, সতর্ক থাকতে হবে: তারেক রহমান
একটি দল বেহেশতের টিকিট বিক্রি করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাত ১১টায় দলটির সভায় সমাপনী ভাষণ দেওয়ার সময় তিনি এ মন্তব্য করেন বলে সভা সূত্রে জানা গেছে। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, বিএনপির বর্ধিত সভা বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় এ সভা শেষ হয়। সভায় সমাপনী ভাষণ দেন সভার সভাপতি তারেক রহমান। এর আগে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সমাপনী ভাষণে বিরাজমান পরিস্থিতিতে নেতা-কর্মীদের ঐক্যের তাগিদ দেন তারেক রহমান। নেতা-কর্মীদের ‘ইস্পাত কঠিন’ ঐক্য ধরে রাখার আহ্বান জানান তিনি। তারেক রহমান বলেছেন, ‘সাড়ে পাঁচ মাস আগে বলেছিলাম, নির্বাচনকে ঘিরে এক অদৃশ্য শক্তি ষড়যন্ত্র করবে। আজ সাড়ে পাঁচ মাস পর সেই অদৃশ্য শক্তির অনেক কর্মকাণ্ডই দৃশ্যমান হচ্ছে। এ বিষয়ে নেতা-কর্মীদের সতর্ক থাকতে হবে।’ জামায়াতে ইসলামীকে ইঙ্গিত করে সমাপনী ভাষণে তারেক রহমান বলেন, ‘একটি দল জনগণের কাছে বলছে যে, তারা বেহেশতের টিকিট বিক্রি করছে। এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। মিথ্যা দিয়ে যে দলের শুরু তারা অনেক কিছুই করতে পারে। দৃশ্যমান হোক অথবা অদৃশ্য হোক, এটাকে মোকাবিলা করতে হবে। এ বিষয়ে নেতা–কর্মীরাই তাদের করণীয় ঠিক করবে।’ ভারতকে ইঙ্গিত করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিভিন্ন ইস্যুতে ষড়যন্ত্র করতে প্রতিবেশী দেশ বসে থাকবে না। তারা নানা রকম ষড়যন্ত্র করবে। তাদের মোকাবিলা করতে হবে।’

গণভবনে কে যাবে নির্ধারণ করবে জনগণ, ভারত নয়: হাসনাত
গণভবন ও সংসদ ভবনে কে যাবে, তা নির্ধারণ করবে দেশের খেটে খাওয়া জনগণ বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক ও নতুন দলের মুখ্য দায়িত্ব নিতে যাওয়া হাসনাত আব্দুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘গণভবনে কে যাবে সেটি নির্ধারিত হবে বাংলাদেশ থেকে, ভারত থেকে সেটি নির্ধারিত হবে না। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, এই সংসদে কে যাবে, সেটি নির্ধারণ করবে বাংলাদেশের খেটে খাওয়া জনতা। এই সংসদে কে বসবে, সেটি নির্ধারণ করবে এই ভূখণ্ডের মানুষ।’ শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকালে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনের সড়কে তৈরি মঞ্চ থেকে নতুন দলের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। বিকাল সোয়া ৪টার দিকে অনুষ্ঠান শুরু হয়। একে একে দলের দায়িত্বশীল নেতারা বক্তব্য দেওয়া শুরু করেন। বক্তব্যদানকালে হাসনাত আরও বলেন, ‘আমরা দীর্ঘ দেড় দশকের আওয়ামী জাহেলিয়াতকে দূর করে আজকে আমরা মুক্ত বাংলাদেশে। যেই সংসদকে আমরা ফ্যাসিবাদ মুক্ত করেছি, সেই সংসদ ভবনে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যাওয়ার জন্য আজ আমরা মানিক মিয়া এভিনিউয়ে এসে দাঁড়িয়েছি।’

আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’
সব জল্পনা-কল্পনা শেষে তরুণদের আকাঙ্ক্ষা পূরণের ঘোষণা দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করেছে নতুন রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন এ দলের নাম ঘোষণা করা হয়। শুক্রবার বিকেল সোয়া ৪টার দিকে জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান শুরু হয়। শুরুতে পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত করা হয়। এরপর পবিত্র গীতা, ত্রিপিটক ও বাইবেল থেকে পাঠ করা হয়। ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠের পর জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। এরপর জুলাই আগস্টে নিহতদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় এবং নিজ নিজ ধর্মমতে তাদের জন্য দোয়া করা হয়। এর আগে স্লোগানে স্লোগানে মিছিল নিয়ে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে জড়ো হন বিপুলসংখ্যক ছাত্র-জনতা। জাতীয় নাগরিক পার্টির আত্মপ্রকাশ ঘিরে পতাকা হাতে মিছিল নিয়ে উচ্ছ্বাস করছেন তারা। দেশের বিভিন্ন জেলা, উপজেলা, মহানগর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে হাজির হন ছাত্র-জনতা। কানায় কানায় পূর্ণ মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ। জাতীয় নাগরিক পার্টির আত্মপ্রকাশের আয়োজনে সার্বিক নিরাপত্তায় দায়িত্বপালনে রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। সরেজমিনে দেখা গেছে, আজকের আয়োজনকে কেন্দ্র করে মেডিকেল টিম, অস্থায়ী ওয়াশ রুম, পুলিশ বুথ, নারীদের জন্য বুথ, ভিআইপি বুথ ও পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। সংবাদকর্মীদের উপস্থিতিও লক্ষ্য করা গেছে।

কোন এলিট গোষ্ঠীর দাসত্ব আর বাংলার জনগণ মানবে না: আরিফ সোহেল
কোন এলিট গোষ্ঠীর দাসত্ব আর বাংলার জনগণ মানবে না বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব আরিফ সোহেল। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ কোনোদিন মাথা নত করেনি। তারা বার বার জেগে উঠেছে। আবারও সাধারণ মানুষ জেগে উঠেছে। ১৯৪৭ সালে জেগে উঠেছিল, একাত্তরে জেগে উঠেছিল। প্রতিটি লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে আমাদের জাতীয় সত্তার বিকাশ ঘটেছে। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের জনগণ আর কারও দাসত্ব মেনে নিতে চায় না।’ শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। কোনো এলিট গোষ্ঠীর দাসত্ব আর বাংলার জনগণ মানবে না উল্লেখ করে আরিফ সোহেল বলেন, ‘এটাই আমাদের নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত। তার জন্য দরকার নতুন রাজনৈতিক শক্তি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে আমরা বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষের কাছে গিয়েছি। তাদের থেকে জানতে পেরেছি তারা কেন স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে উৎখাত করেছে। তাদের চাওয়া পাওয়ার ওপর ভিত্তি করেই আজকের এই রাজনৈতিক দলের উৎপত্তি হয়েছে। সেই লক্ষ্য পূরণে আমাদের দল কাজ করবে।’ নতুন এ রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। তাদের মধ্যে রয়েছেন, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, বাংলাদেশ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (বিএলডিপি) চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান শেখ ছালাউদ্দিন ছালু। এছাড়াও রয়েছেন, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজী, জনতার অধিকার পার্টির (পিআরপি) চেয়ারম্যান মো. তরিকুল ইসলাম, বিকল্পধারা বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক শাহ আহম্মেদ বাদল।

নাহিদকে ‘গণতন্ত্রের ইমাম’ বললেন হান্নান মাসউদ
মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ থেকে: ফ্যাসিবাদ পতনের আন্দোলনের নেতৃস্থানীয় মুখ মো. নাহিদ ইসলামকে ‘গণতন্ত্রের ইমাম’ বলে আখ্যা দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসউদ। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে নতুন রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’র (এনসিপি) আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি নাহিদকে এই অ্যাখ্যা দেন। আবদুল হান্নান মাসউদ বলেন, ‘নাহিদ গণতন্ত্রের ইমাম। যিনি নির্যাতনের মুখেও মাথা নত করেননি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আগামীর বাংলাদেশ হবে গণতন্ত্রের বাংলাদেশ। এটাই দেশবাসীর প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতি।’ শুক্রবার বিকেল ৪টার পর আনুষ্ঠানিকভাবে এ অনুষ্ঠান শুরু হয়। এতে দলটির নেতৃত্ব ঘোষণা করা হবে।

নতুন দলের সাথে জোট গঠন নিয়ে যা বললেন জামায়াতের সেক্রেটারি
গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের নতুন রাজনৈতিক দলকে স্বাগত জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। এ প্রসঙ্গে দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘নতুন দলের সঙ্গে যে কোনো বিষয়ে আলাপ-আলোচনার জন্য তাদের দরজা খোলা থাকবে।’ শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সংসদ ভবনের সামনে মানিক মিয়া এভিনিউয়ে দলটির আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিতি হলে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে ইতিমধ্যে যোগ দিয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। এদের মধ্যে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির আহমেদ আলী কাসেমী, বিকল্পধারার নেতা মেজর (অব.) আব্দুল মান্নান, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমেদ, লেবার পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ইসলামী ঐক্য জোটের সহসভাপতি জসিম উদ্দিন, বিএলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, বাংলাদেশ খেলাফত মসলিসের মহাসচিব আহমেদ আবদুল কাদের প্রমুখ। সম্প্রতি বিভিন্ন দলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছে জামায়াতে ইসলামী। নতুন দলের সঙ্গেও তারা আলাপ করবে কি না বা কোনো ধরনের জোটে যাবে কি না এই প্রশ্নের জবাবে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, আলাপ-আলোচনার পথ সবসময়ই খোলা থাকে। নতুন দলের ক্ষেত্রেও সেই সম্ভাবনা থাকবে।

অভ্যুত্থানের নায়করা নতুন দলের মঞ্চে
‘নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের’ প্রতিশ্রুতি নিয়ে নতুন রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’র (এনসিপি) আত্মপ্রকাশের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে ধর্মগ্রন্থ পাঠের মধ্য দিয়ে। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকাল সোয়া ৪টার দিকে ঢাকার মানিক মিয়া এভিনিউয়ে কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে এ অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এরপর একে একে পাঠ করা হয় গীতা, ত্রিপিটক ও বাইবেল থেকে। এরপর পরিবেশন করা হয় জাতীয় সংগীত। এর মধ্যে সমাবেশস্থল ও আশপাশের এলাকা সমর্থকদের অংশগ্রহণে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। সমাবেশের নির্ধারিত অংশের বাইরে দক্ষিণ প্লাজার সামনের অংশে খামারবাড়ি পর্যন্ত প্রায় পুরো সড়কেই অবস্থান রয়েছে মানুষের। জাতীয় সংগীতের পর চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন এবং প্রত্যেকের ধর্ম অনুযায়ী প্রার্থনা করা হয়। বক্তৃতা পর্বের শুরুতে জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল্লাহ হায়দার বলেন, ‘এই তরুণদের নেতৃত্বে আগামীর বাংলাদেশ গত ৫৩ বছরে মানুষের যে অধিকার প্রতিষ্ঠা করা যায় নাই, সে অধিকার প্রতিষ্ঠা করার সংগ্রাম প্রতিষ্ঠা করা হবে।’ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহিন সরকার বলেন, ‘নাগরিক পার্টি মনে করে, শহীদ ও আহতদের স্পিরিট ধারণ করে কীভাবে দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকতে পারে, কিন্তু দেশের স্বার্থে আমরা এক থাকব।’ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পক্ষে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহরিয়ার হাসনাত অপু বক্তব্য দেন। এরপর মঞ্চের ডাকা হয় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের নায়কদের। একে একে মঞ্চে আসেন নাহিদ ইসলাম ও আখতার হোসেনসহ নেতারা। তারপর দেখানো হয় জুলাই অভ্যুত্থানের ওপর নির্মিত আরেকটি ডকুমেন্টারি। দুপুরে জুমার নামাজের পর থেকেই ছোট ছোট মিছিল নিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে জড়ো হতে দেখা যায় ছাত্র-জনতাকে। এ সময় মঞ্চের মাইক থেকে ঘোষণা দেওয়া হচ্ছিল- কোন কোন এলাকা থেকে কার নেতৃত্বে মিছিল আসছে। মঞ্চের সামনেই রাজনৈতিক নেতা, কূটনীতিক ও আমন্ত্রিত অতিথিদের আসন সাজানো রয়েছে। এরপরেই শহীদ পরিবার, জুলাই যোদ্ধা পরিবারের জন্য আসন। অনুষ্ঠান শুরু হলেও বিভিন্ন স্থান থেকে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে ছাত্র-জনতাকে সমাবেশস্থলে মিলিত হতে দেখা গেছে। সহযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণা দিতে অনুষ্ঠাস্থলে এসেছেন আন্দোলনে আহতরা। গত ৪ অগাস্টে ইব্রাহিমপুরে আহত হয়েছিলেন আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আহমেদ। তিনি বলেন, ‘দেশের দূর্নীতিগুলো যেন দূর করা হয়, ইদানীং দেশে ছিনতাই-সন্ত্রাস বেড়েছে- তারা যেন এগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, এই প্রত্যাশা নতুন দলের প্রতি।’ সড়কের ওপর মঞ্চ তৈরি করায় মিরপুর সড়কের আড়ং থেকে খামারবাড়িমুখী রাস্তা বন্ধ রয়েছে। বিকাল ৩টার পর থেকে অপরপাশে খামারবাড়ি থেকে আড়ংমুখী সড়কেও যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ জন্য ‘সাময়িক অসুবিধার’ জন্য এনসিপির পক্ষ থেকে ‘দুঃখ প্রকাশ’ করে বিবৃতি দেওয়া হয়। দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে দলটির নেতা কর্মীদের পাশাপাশি জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ পরিবারের সদস্য ও আহতরা অংশ নিয়েছেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অংশ নিয়েছেন।

নতুন দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে হাসনাত-সারজিস
নতুন দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে নতুন দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানস্থলে এসেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে তারা মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে অনুষ্ঠানের মঞ্চে যোগ দেন। জানা গেছে, নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের সমন্বয়ক হিসেবে হাসনাত আবদুল্লাহ এবং উত্তরাঞ্চলের সমন্বয়ক হিসেবে সারজিস আলমের দায়িত্ব নেওয়ার কথা রয়েছে। জানা গেছে, নতুন রাজনৈতিক দলের নাম ঘোষণা করবে জুলাই আন্দোলনে শহীদ পরিবার। তবে ঠিক কোন শহীদের পারিবার এই রাজনৈতিক দলের নাম ঘোষণা করবে সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তারুণ্য নির্ভর নতুন এই রাজনৈতিক দলের নাম হবে ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’ (এনসিপি)। সূত্র জানিয়েছে, নতুন দলের নাম এবং এর শীর্ষ দুই পদ আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের নাম ঘোষণার পর নতুন দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম একে একে কেন্দ্রীয় কমিটির ১৪৯ জন সদস্যকে মঞ্চে ডেকে নেবেন। আরেক সূত্র জানিয়েছে, নতুন এই রাজনৈতিক দলটির আহ্বায়ক পদে নাহিদ ইসলাম ও সদস্য সচিব পদে আখতার হোসেনের নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে। এছাড়া জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, আরিফুল ইসলাম আদিব, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, প্রধান সমন্বয়কারী নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হিসেবে হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক পদে সারজিস আলম, দপ্তর সম্পাদক সালেহ উদ্দিন সিফাতের নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে।

জাতীয় নির্বাচনের গুরুত্ব অন্তর্বর্তী সরকার বুঝতে পারছে না: দুদু
দেশের সংকট নিরসনে জাতীয় নির্বাচনের গুরুত্ব অন্তর্বর্তী সরকার বুঝতে পারছে না বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জাতীয় নাগরিক অধিকার বাস্তবায়ন কমিটির দ্রুত নির্বাচনের দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে এ মন্তব্য করেন তিনি। সমাবেশে দুদু আরো বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিএনপি নেতাদের নামে যেসব মামলা হয়েছে, সরকার সেগুলো এখনো প্রত্যাহার করেনি।’ ইউনূস সরকারের প্রতি বিএনপির সমর্থন রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সরকারের কাছে দ্রুত জাতীয় নির্বাচন দেয়ার দাবি জানাই। এছাড়া আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে না পারলে অন্তর্বর্তী সরকার জনপ্রিয়তা হারাবে।’

তারুণ্যের ‘প্রত্যাশা পুরণে’ নতুন দলের অভিযাত্রা শুরু: আসিফ নজরুল
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ছাত্র-তারুণ্যের ‘প্রত্যাশা পুরণে’ নতুন রাজনৈতিক দলের অভিযাত্রা শুরু হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে আসতে চলা জাতীয় নাগরিক পার্টিকে (এনসিপি) নিয়ে আসিফ নজরুল ফেইসবুকে একটি দীর্ঘ পোস্ট দিয়েছেন। সেখানের শুভকমানা জানিয়ে আইন উপদেষ্টা লিখেছেন, ‘আজ নাহিদ আর আখতার শুরু করছে নতুন যাত্রা। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ছাত্র-তারুণ্যের প্রত্যাশা পুরণে শুরু হলো তাদের নতুন দলের অভিযাত্রা। জাতীয় নাগরিক পার্টির সবার জন্য অনেক দোয়া, শুভকামনা।’ সংসদ ভবনের সামনে মানিকমিয়া এভিনিউয়ের এক পাশে বানানো মঞ্চে এক সমাবেশের মাধ্যমে এ দলের আত্মপ্রকাশ হচ্ছে। দলের আহ্বায়ক পদে নাহিদ ইসলাম ও সদস্যসচিব পদে আখতার হোসেনকে রেখে দলের কমিটির শীর্ষ পদে আছেন ১১ জন। আসিফ নজরুল লিখেছেন, ‘দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর তিনি বিষন্নতায় ভুগতেন। এনসিপিতে সদস্যসচিব পদে আসতে চলা ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক ও আইন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী আখতারকে নিয়ে পোস্টে আসিফ নজরুল বলেন, “এমন পরিস্থিতিতে একদিন আখতার হোসেন ঢাকা ব্শ্বিবিদ্যালয়ের আইন বিভাগে আসেন। যাকে তিনি বাড়ি থেকে ঢাকায় আনিয়ে স্নাতকোত্তর শেষ করাতে রাজি করিয়েছিলেন। কিন্তু এরপরও আখতারের ক্যাম্পাস ছেড়ে যাওয়ার লক্ষণ ছিল না।’ ‘আমার গাড়ি থামিয়ে সে সালাম দিল। তারপর বেশ কিছুক্ষন কাঁচুঁমাচু করে দাড়িয়ে রইলো। আমি বিরক্ত হলাম। আরো বিরক্ত হলাম যখন সে বলল, নুর-রাশেদদের দল ত্যাগ করে নতুন সংগঠন করবে! আমি বললাম:আবার নতুন দল! আর কতবার মার খেতে চাও তুমি! সে মাথা নিচু করে মৃদু হাসতে থাকে। এই অদ্ভূত হাসির কোন মানে খুজে পেলাম না।’ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আখতার হোসেনের গড়া গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির নেতৃত্বে গঠিত একটি প্ল্যাটফর্ম। যে প্ল্যাটফর্মের নেতৃত্বে সরকারি চাকরির কোটা সংস্কারের আন্দোলন সরকার পতনের আন্দোলনের রূপ নিয়েছিল। আখতারের রাজনৈতিক দূরদর্শিতা নিয়ে আসিফ বলেন, ‘কয়েক দিন পর ছাত্রলীগের হাতে মার খেয়ে তার (আখতার) রক্তাক্ত ছবি দেখে দু:খ আর হতাশায় বুক বিদীর্ণ হল। সে কি বুঝতে পারছে না কিছু হবে না আর এসব করে! বুঝতে আমি-ই পারিনি।’ আখতারের নতুন সংগঠন কয়েক মাসের মাথায় ‘এক অসম্ভবকে সম্ভব করেছে’ মন্তব্য করে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘শেখ হাসিনার পতন হয়েছে; তার সংগঠনের নাহিদ হয়ে উঠেছে গণঅভ্যুত্থানের প্রধান নেতা।’ এনসিপির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব নিতে চলা তরুণ ছাত্রনেতা নাহিদ কয়েক দিন আগেই অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পদ ছেড়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করা নাহিদ ইসলাম ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক । নাহিদকে আইন উপদেষ্টা প্রশংসায় ভাসিয়েছেন তার পোস্টে। তিনি বলেন, ‘উত্তাল জুলাইয়ে আমার এবং আমার মত লক্ষ মানুষের নেতা! তারপর নাহিদের সাথে কাজ করলাম নতুন সরকারে। কত বার যে সে আমাকে বিস্মিত করল তার যোগ্যতা, বাকসংযম, ব্যক্তিত্ব আর অকল্পনীয় ম্যাচিউরিটি দিয়ে! নাহিদ থাকে আমার পাশের বাসায়। সে সরকার থেকে পদত্যাগ করার দিন, গভীর রাতে তার সবুজ লনের দিকে তাকিয়ে থাকলাম অনেকক্ষণ। মায়া বড় বিচিত্র বিষয়!’

বৈষম্যবিরোধীদের নতুন দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান শুরু
নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশের অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। এতে বিভিন্ন বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, রাজনৈতিক দলের নেতা ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত দিয়ে শুরু হয়েছে। কোরআন তেলাওয়াতের পর গীতা, বাইবেল ও ত্রিপিটক পাঠ করা হয়। এরপর জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়। অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নায়েবে আমির আহমেদ আলী কাসেমী, বিকল্পধারার নেতা আব্দুল মান্নান, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমেদ, লেবার পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ইসলামী ঐক্য জোটের সহ সভাপতি জসিম উদ্দিন, বিএলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমেদ আবদুল কাদের। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে কূটনৈতিকদের মধ্যে পাকিস্তানের হাইকমিশনারের পক্ষে একজন কাউন্সিল অংশ নিয়েছেন বলে মঞ্চ থেকে জানানো হয়। জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের তরুণদের নেতৃত্ব আনুষ্ঠানিকভাবে গঠিত হতে যাচ্ছে নতুন রাজনৈতিক দল। এ আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তাদের নেতৃত্বে জাতীয় নাগরিক কমিটি নামে আরেকটি সংগঠন গড়ে ওঠে। এখন সেই দুই সংগঠনের উদ্যোগে আত্মপ্রকাশ হতে যাচ্ছে নতুন রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’। তরুণদের নতুন এ দলের নামের ইংরেজি রূপ হবে ‘ন্যাশনাল সিটিজেনস পার্টি’ (এনসিপি)। নতুন এ দলের আহ্বায়কের দায়িত্ব নিতে গত মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করেন মো. নাহিদ ইসলাম। দলে সদস্য সচিবের পদ পাচ্ছেন আখতার হোসেন। তিনি জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। জানা গেছে, নতুন দলে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী প্রধান সমন্বয়কারী, সামান্তা শারমিন জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক, হাসনাত আব্দুল্লাহ দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক, সারজিস আলম উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক, আবদুল হান্নান মাসউদ যুগ্ম সমন্বয়ক ও সালেহ উদ্দিন সিফাত দপ্তর সম্পাদক হিসেবে থাকছেন। দলটির সূত্রে আরও জানা গেছে, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিবের দায়িত্ব একজন নারীকে রাখা হতে পারে। সেই বিবেচনায় এ পদ আসতে পারেন তাসনিম জারা, নাহিদা সারওয়ার (নিভা), মনিরা শারমিন ও নুসরাত তাবাসসুমের মধ্য থেকেও কেউ। তাদের মধ্যে তাসনিম জারা ও মনিরা জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও নাহিদা সারওয়ার কেন্দ্রীয় সদস্য। আর নুসরাত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নির্বাহী কমিটির সদস্য।

নতুন দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে গোলাম পরওয়ার-মান্না-সাকি
‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’র আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে বড় সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। এতে যোগ দিতে এরই মধ্যে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে হাজির হয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, লেবার পার্টির চেয়ারম্যানমোস্তাফিজুর রহমান ইরানসহ রাজনীতিকরা। বিএনপির পক্ষ থেকে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানিও অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন বলে দলটি থেকে জানা গেছে। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন রাজনৈতিক দলটি আত্মপ্রকাশ করবে। এরই মধ্যে এ দলের শীর্ষ কয়েকটি পদে নাম চূড়ান্ত হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, তরুণ নির্ভর নতুন এই দলের আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে ব্যাপক জনসমাগম হবে। মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে সমাবেশস্থলের আশপাশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। সমাবেশে আগতদের মেটাল ডিটেক্টর ও আর্চওয়ের তল্লাশি পার করে ভেতরে প্রবেশ করতে হচ্ছে।

নতুন দলের আত্মপ্রকাশ: কানায় কানায় পূর্ণ মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ, উচ্ছ্বসিত নেতাকর্মীরা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে নতুন দলের আত্মপ্রকাশ হতে যাচ্ছে আজ। এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠান ঘিরে অনুষ্ঠানস্থলে দলে দলে আসতে শুরু করেছে ছাত্র-জনতা। এরই মধ্যে নেতাকর্মীদের আগমনে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে উঠেছে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, রাজধানীর মিরপুর, শাহবাগ, উত্তরা, রমনাসহ বিভিন্ন এলাকা ও দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে উপস্থিত হয়েছেন। কথা হয় নওগাঁ থেকে আসা তবিবুর হাসানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘অনেক দিন পর একটি স্বাধীন ছাত্র সংগঠনে যুক্ত হয়েছি। কোনো জোর জবরদস্তি নেই। ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে যারা নেতৃত্ব ছিলেন, তাদের নেতৃত্বে রাজনীতি করাটা অনেক সৌভাগ্যের।’ ফেনী থেকে আগত আজিজুল হক বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন করে আজ আমরা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। আমাদের এই নতুন দল সবসময় দেশের বৈষম্য ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে থাকবে।’ জানা গেছে, নতুন রাজনৈতিক দলের নাম ঘোষণা করবে জুলাই আন্দোলনে শহীদ পরিবার। তবে ঠিক কোন শহীদের পারিবার এই রাজনৈতিক দলের নাম ঘোষণা করবে সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তারুণ্য নির্ভর নতুন এই রাজনৈতিক দলের নাম হবে ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’ (এনসিপি)। সূত্র জানিয়েছেন, নতুন দলের নাম এবং এর শীর্ষ দুই পদ আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের নাম ঘোষণার পর নতুন দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম একে একে কেন্দ্রীয় কমিটির ১৪৯ জন সদস্যকে মঞ্চে ডেকে নেবেন। আরেক সূত্র জানিয়েছে, নতুন এই রাজনৈতিক দলটির আহ্বায়ক পদে নাহিদ ইসলাম ও সদস্য সচিব পদে আখতার হোসেনের নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে। এছাড়া জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, আরিফুল ইসলাম আদিব, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, প্রধান সমন্বয়কারী নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হিসেবে হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক পদে সারজিস আলম, দপ্তর সম্পাদক সালেহ উদ্দিন সিফাতের নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে।

তরুণদের নতুন দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন বিএনপির দুই নেতা
জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী তরুণদের নেতৃত্ব গঠিত হতে যাওয়া নতুন রাজনৈতিক দলের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে অংশ নেবেন বিএনপির দুই নেতা। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদ ভবনের সামনের সড়কে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে নতুন দলের আত্মপ্রকাশ উপলক্ষ্যে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে অংশ নেবেন। বিএনপির মিডিয়া সেলের অন্যতম সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এবং যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী যোগ দেবেন। জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের তরুণদের নেতৃত্বে আনুষ্ঠানিকভাবে গঠিত হতে যাচ্ছে নতুন রাজনৈতিক দল। এই আন্দোলনে দীর্ঘ ১৫ বছরের বেশি সময় রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তরুণদের নেতৃত্বে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নামে দুটি সংগঠন গড়ে ওঠে। আর সেই দুই সংগঠনের উদ্যোগে আত্মপ্রকাশ হতে যাওয়া নতুন রাজনৈতিক দলের নাম ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’। তরুণদের নতুন এই দলের নামের ইংরেজি রূপ হবে ‘ন্যাশনাল সিটিজেনস পার্টি’ (এনসিপি)। নতুন এই দলের আহ্বায়কের দায়িত্ব নিতে গত মঙ্গলবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করেন মো. নাহিদ ইসলাম। দলে সদস্যসচিবের পদ পাচ্ছেন আখতার হোসেন। তিনি জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। নতুন দলে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীকে প্রধান সমন্বয়কারী, সামান্তা শারমিনকে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক, হাসনাত আবদুল্লাহকে দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক, সারজিস আলমকে উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক, আবদুল হান্নান মাসউদকে যুগ্ম সমন্বয়ক ও সালেহ উদ্দিন সিফাত দপ্তর সম্পাদক পদে থাকছেন। সূত্রে জানা গেছে, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিবের দায়িত্বে একজন নারীকে রাখা হতে পারে। সেই বিবেচনায় এই পদে আসতে পারেন তাসনিম জারা, নাহিদা সারওয়ার (নিভা), মনিরা শারমিন ও নুসরাত তাবাসসুম। তাদের মধ্যে তাসনিম জারা ও মনিরা জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও নাহিদা সারওয়ার কেন্দ্রীয় সদস্য। আর নুসরাত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নির্বাহী কমিটির সদস্য।

হাসিনার মত তারাও পালাতে বাধ্য হবে: মোমিন মেহেদী
রমজানের আগে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও হারুনসহ শতাধিক দুর্নীতিবাজকে গ্রেফতার ও আইনের যথাযথ প্রয়োগের মধ্য দিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন হয়েছে। ঢাকার তোপখানা রোডস্থ বিজয় মিলনায়তনে শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে অনুষ্ঠিত সংবাদ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন নতুনধারা বাংলাদেশের (এনডিবি) চেয়ারম্যান মোমিন মেহেদী। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘নির্মম হলেও সত্য যে, একাত্তরের মত জাতিকে মেধাশূন্য করার দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্র যেমন চলছে, তেমনি অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশ যেন আর মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে, সেই লক্ষ্যে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি-দুর্নীতি-খুন-গুম-মব-ধর্ষণসহ সব অপরাধকে পৃষ্টপোষকতা দিচ্ছে ছাত্রদের একটি অংশ, প্রশাসনের একটি অংশ এবং সরকারের একটি অংশ। সেই সাথে তারা পুলিশের সাবেক দুর্নীতিবাজ কর্তা হারুনসহ শত শত অপরাধীকে আশ্রয়-প্রশয় দিয়ে পালিয়ে থাকার সুযোগ করে দিচ্ছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা অনতিবিলম্বে ‘বাংলাদেশ বাঁচাও’ আন্দোলন নিয়ে রাজপথে নামবো। যাতে করে আমেরিকা-পাকিস্তান বা ভারত নয়, সব দেশের মোড়লীপনার হাত থেকে বাংলাদেশ ও এই দেশের মানুষ নিজেদেরকে রক্ষা করতে পারে।’ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন এনডিবির প্রেসিডিয়াম মেম্বার আল্লামা আবদুর রহমান, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান শান্তা ফারজানা, যুগ্ম মহাসচিব মনির জামান, সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়াজেদ রানা, সদস্য মনসুর গাজী। মোমিন মেহেদী আরো বলেন, ‘রমজানকে কেন্দ্র করে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি অর্থনীতিকে শক্তিশালীর করার লক্ষ্যে আইন-শৃঙ্খলার অবনতিরোধে পদক্ষেপ নিন; প্রয়োজনে সারাদেশে সেনা বাহিনীকে কঠোর হওয়ার নির্দেশ দিন। বাংলাদেশে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করে ফ্যাসিস্টকে বিদায় করলেও এখন নতুন করে আলোচনার মধ্য দিয়ে সমাধানের পথে না হেঁটে নব্য ফ্যাসিস্টদের জন্ম নিজেরাই দিচ্ছে মব, দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিয়ে। নতুন দল গঠন না করে দেশ ও দেশের মানুষকে শান্তির পথে এগিয়ে নেয়ার মত মহৎ কাজ রেখে কেন ক্ষমতার জন্য মরিয়া হয়ে উঠলেন? এই প্রশ্ন নিয়ে আমজনতা ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে। তারা কাউকে ক্ষমা করবে না, শেখ হাসিনার মত তারাও পালাতে বাধ্য হবে, যদি দেশের মানুষের কথা না ভেবে কেবল লোভের রাস্তায় ক্ষমতায় আসতে চায়।’