
তরুণদের নতুন দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন বিএনপির দুই নেতা
জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী তরুণদের নেতৃত্ব গঠিত হতে যাওয়া নতুন রাজনৈতিক দলের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে অংশ নেবেন বিএনপির দুই নেতা। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদ ভবনের সামনের সড়কে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে নতুন দলের আত্মপ্রকাশ উপলক্ষ্যে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে অংশ নেবেন। বিএনপির মিডিয়া সেলের অন্যতম সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এবং যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী যোগ দেবেন। জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের তরুণদের নেতৃত্বে আনুষ্ঠানিকভাবে গঠিত হতে যাচ্ছে নতুন রাজনৈতিক দল। এই আন্দোলনে দীর্ঘ ১৫ বছরের বেশি সময় রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তরুণদের নেতৃত্বে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নামে দুটি সংগঠন গড়ে ওঠে। আর সেই দুই সংগঠনের উদ্যোগে আত্মপ্রকাশ হতে যাওয়া নতুন রাজনৈতিক দলের নাম ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’। তরুণদের নতুন এই দলের নামের ইংরেজি রূপ হবে ‘ন্যাশনাল সিটিজেনস পার্টি’ (এনসিপি)। নতুন এই দলের আহ্বায়কের দায়িত্ব নিতে গত মঙ্গলবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করেন মো. নাহিদ ইসলাম। দলে সদস্যসচিবের পদ পাচ্ছেন আখতার হোসেন। তিনি জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। নতুন দলে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীকে প্রধান সমন্বয়কারী, সামান্তা শারমিনকে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক, হাসনাত আবদুল্লাহকে দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক, সারজিস আলমকে উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক, আবদুল হান্নান মাসউদকে যুগ্ম সমন্বয়ক ও সালেহ উদ্দিন সিফাত দপ্তর সম্পাদক পদে থাকছেন। সূত্রে জানা গেছে, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিবের দায়িত্বে একজন নারীকে রাখা হতে পারে। সেই বিবেচনায় এই পদে আসতে পারেন তাসনিম জারা, নাহিদা সারওয়ার (নিভা), মনিরা শারমিন ও নুসরাত তাবাসসুম। তাদের মধ্যে তাসনিম জারা ও মনিরা জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও নাহিদা সারওয়ার কেন্দ্রীয় সদস্য। আর নুসরাত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নির্বাহী কমিটির সদস্য।

হাসিনার মত তারাও পালাতে বাধ্য হবে: মোমিন মেহেদী
রমজানের আগে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও হারুনসহ শতাধিক দুর্নীতিবাজকে গ্রেফতার ও আইনের যথাযথ প্রয়োগের মধ্য দিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন হয়েছে। ঢাকার তোপখানা রোডস্থ বিজয় মিলনায়তনে শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে অনুষ্ঠিত সংবাদ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন নতুনধারা বাংলাদেশের (এনডিবি) চেয়ারম্যান মোমিন মেহেদী। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘নির্মম হলেও সত্য যে, একাত্তরের মত জাতিকে মেধাশূন্য করার দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্র যেমন চলছে, তেমনি অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশ যেন আর মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে, সেই লক্ষ্যে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি-দুর্নীতি-খুন-গুম-মব-ধর্ষণসহ সব অপরাধকে পৃষ্টপোষকতা দিচ্ছে ছাত্রদের একটি অংশ, প্রশাসনের একটি অংশ এবং সরকারের একটি অংশ। সেই সাথে তারা পুলিশের সাবেক দুর্নীতিবাজ কর্তা হারুনসহ শত শত অপরাধীকে আশ্রয়-প্রশয় দিয়ে পালিয়ে থাকার সুযোগ করে দিচ্ছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা অনতিবিলম্বে ‘বাংলাদেশ বাঁচাও’ আন্দোলন নিয়ে রাজপথে নামবো। যাতে করে আমেরিকা-পাকিস্তান বা ভারত নয়, সব দেশের মোড়লীপনার হাত থেকে বাংলাদেশ ও এই দেশের মানুষ নিজেদেরকে রক্ষা করতে পারে।’ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন এনডিবির প্রেসিডিয়াম মেম্বার আল্লামা আবদুর রহমান, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান শান্তা ফারজানা, যুগ্ম মহাসচিব মনির জামান, সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়াজেদ রানা, সদস্য মনসুর গাজী। মোমিন মেহেদী আরো বলেন, ‘রমজানকে কেন্দ্র করে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি অর্থনীতিকে শক্তিশালীর করার লক্ষ্যে আইন-শৃঙ্খলার অবনতিরোধে পদক্ষেপ নিন; প্রয়োজনে সারাদেশে সেনা বাহিনীকে কঠোর হওয়ার নির্দেশ দিন। বাংলাদেশে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করে ফ্যাসিস্টকে বিদায় করলেও এখন নতুন করে আলোচনার মধ্য দিয়ে সমাধানের পথে না হেঁটে নব্য ফ্যাসিস্টদের জন্ম নিজেরাই দিচ্ছে মব, দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিয়ে। নতুন দল গঠন না করে দেশ ও দেশের মানুষকে শান্তির পথে এগিয়ে নেয়ার মত মহৎ কাজ রেখে কেন ক্ষমতার জন্য মরিয়া হয়ে উঠলেন? এই প্রশ্ন নিয়ে আমজনতা ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে। তারা কাউকে ক্ষমা করবে না, শেখ হাসিনার মত তারাও পালাতে বাধ্য হবে, যদি দেশের মানুষের কথা না ভেবে কেবল লোভের রাস্তায় ক্ষমতায় আসতে চায়।’

নতুন দলের নাম ঘোষণা করবে জুলাই আন্দোলনে শহীদ পরিবার
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে আত্মপ্রকাশ ঘটতে যাওয়া নতুন রাজনৈতিক দলের নাম ঘোষণা করবে জুলাই আন্দোলনে শহীদ পরিবার। তবে ঠিক কোন শহীদের পারিবার এই রাজনৈতিক দলের নাম ঘোষণা করবে সেবিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। জাতীয় নাগরিক কমিটির একটি সূত্র বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। সূত্র জানিয়েছে, নতুন দলের নাম এবং এর শীর্ষ দুই পদ আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের নাম ঘোষণার পর নতুন দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম একে একে কেন্দ্রীয় কমিটির ১৪৯ জন সদস্যকে মঞ্চে ডেকে নেবেন। এদিকে, তারুণ্য নির্ভর নতুন এই রাজনৈতিক দলের নাম হবে ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’ (এনসিপি)। আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, নতুন এই রাজনৈতিক দলটির আহ্বায়ক পদে নাহিদ ইসলাম ও সদস্য সচিব পদে আখতার হোসেনের নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে। এছাড়া জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, আরিফুল ইসলাম আদিব, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, প্রধান সমন্বয়কারী নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হিসেবে হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক পদে সারজিস আলম, দপ্তর সম্পাদক সালেহ উদ্দিন সিফাতের নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে। এদিকে, নতুন দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। অনুষ্ঠানস্থলসহ আশপাশের এলাকায় পুলিশের বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখা গেছে।

উদ্দেশ্য ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হওয়া
তরুণদের রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’র আত্মপ্রকাশ হওয়া বাকি আর মাত্র কয়েক মিনিট। অনুষ্ঠানে অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছোট বড় দলে দলে আসছেন ছাত্র-জনতা। মানিক মিয়া এভিনিউয়ের মঞ্চের দিকে এগোচ্ছেন তারা। আগতরা বলছেন, ‘ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হতে এসেছি।’ এদিকে আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুত মঞ্চ। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টায় এই মঞ্চ থেকেই নতুন দলের যাত্রা শুরু হবে। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে নেতা কর্মীদের পাশাপাশি জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ পরিবারের সদস্য ও আহত যোদ্ধারা অংশ নেবেন। এ ছাড়া দেশের ৬৪ জেলা থেকেই মানুষ আসবে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, কূটনীতিক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অংশ নেবেন। ফলে আয়োজনটা অনেক বড় হবে। দেশের উত্তরের জেলা জয়পুরহাট থেকে ২০০ জনের একটি দল এসেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে। তাদের মধ্যে মঞ্জিল হাসান মুরাদ একজন। তিনি তার অনুভূতি জানিয়ে বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনে মাঠে ছিলাম। নিজের তাগিদ থেকেই তরুণদের নতুন দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে এসেছি। মূল লক্ষ্য এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হওয়া।’ রাজধানীর উত্তরা থেকে ৮ জন মিলে মানিক মিয়া এভিনিউয়ে এসেছেন বুলবুল ইসলাম। বুলবুল ইসলাম বলেন, ‘আজ আমাদের জন্য একটি স্মরণীয় দিন। আজ থেকে দেশের ইতিহাসে তরুণদের দলের নাম লেখা হবে। এটা সব শ্রেণিপেশা মানুষদের প্রত্যাশা, আকাঙ্ক্ষার একটি দল হতে যাচ্ছে। তাই এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হতেই অন্যদের মতো আমরা এখানে এসে উপস্থিত হয়েছি। আশা করা যাচ্ছে লাখ লাখ মানুষের সমাগম হবে আজ এখানে।’ সরেজমিনে দেখা গেছে, নতুন দলের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সংসদ ভবনের সামনের সড়ক ও ফুটপাতে চলছে শেষ সময়ের বিশাল কর্মযজ্ঞ। মঞ্চের পাশাপাশি ওয়াশরুম ও বিভিন্ন বুথ নির্মাণেরও কাজও শেষ। ছাত্রদের এই জমায়েতে মেডিকেল টিম, ওয়াশরুম, পুলিশ বুথ, পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। একইসঙ্গে মঞ্চের পেছনে নারীদের জন্য অন্য বুথের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি ভিআইপিদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এদিকে আয়োজনের নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সবমিলিয়ে লাখো মানুষের এই জমায়েত ঘিরে নিরাপত্তায় সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার জুয়েল রানা। তিনি বলেন, ‘গতকাল মঞ্চ প্রস্তুতের সময় থেকেই আমাদের এক প্লাটুন ফোর্স মোতায়েন রয়েছে। সার্বক্ষণিক আয়োজকদের সঙ্গে সমন্বয় করে তারা যেভাবে চাচ্ছে সেভাবেই নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’ জুয়েল রানা বলেন, ‘আজ আয়োজনস্থলে পর্যাপ্ত ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। পোশাকধারী ও অস্ত্রধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকের পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। আমাদের ট্রাফিক পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করতে যাওয়া এই নতুন দলের আয়োজন নির্বিঘ্ন করতে পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’ জাতীয় নাগরিক পার্টির পক্ষে মুশফিক উস সালেহীন জানিয়েছেন, দুপুর থেকে শুধু মানিক মিয়া এভিনিউয়ের পশ্চিম দিকের প্রবেশপথ (আড়ংয়ের দিকে) দিয়ে মঞ্চের সামনের সংরক্ষিত এলাকায় প্রবেশ করা যাবে। জাতীয় নাগরিক পার্টির পক্ষে মুশফিক উস সালেহীন জানিয়েছেন, দুপুর ১২টার পর শুধু মানিক মিয়া এভিনিউয়ের পশ্চিম দিকের প্রবেশপথ (আড়ংয়ের দিকে) দিয়ে মঞ্চের সামনের সংরক্ষিত এলাকায় প্রবেশ করা যাবে। এর আগে বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বাংলামোটরে জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যৌথ বৈঠক হয়। সেখানে অংশ নেওয়া জাতীয় নাগরিক কমিটির দায়িত্বশীল চারজন নেতা দলের নাম ও যেসব পদে নেতৃত্ব চূড়ান্ত হয়েছে, সেগুলো নিশ্চিত করেন। দলটির দক্ষিণের মুখ্য সংগঠক হিসেবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ এবং উত্তরের মুখ্য সংগঠক হিসেবে সারজিস আলমকে চূড়ান্ত করা হয়। এছাড়া মুখ্য সমন্বয়ক হিসেবে নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী এবং যুগ্ম সমন্বয়ক হিসেবে হান্নান মাসুদের নাম চূড়ান্ত করা হয়। নতুন কমিটি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত নেতৃত্ব দেবেন বলে জানা গেছে। এ জন্য দলের আহ্বায়ক কমিটির আকার বৃদ্ধি করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে কমিটির একটা খসড়া তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এতে জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সম্মুখযোদ্ধাদের স্থান দেওয়া হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে। এছাড়াও জুলাই আন্দোলনের আলোচিত নারী নেত্রীরা নতুন দলে জায়গা পাচ্ছেন বলে জানা গেছে।

জাতীয় নাগরিক পার্টির শীর্ষ ১০ পদে থাকছেন যারা
তরুণদের নেতৃত্বে নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টার দিকে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে নতুন এ রাজনৈতিক দলটির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হবে।সূত্র বলছে, জাতীয় নাগরিক পার্টির শীর্ষ ১০ পদের নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে। তারা হলেন আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন ও আরিফুল ইসলাম আদীব, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা ও নাহিদা সারওয়ার নিবা, মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ (দক্ষিণাঞ্চল) ও সারজিস আলম (উত্তরাঞ্চল), মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী এবং যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ।এদিকে, নতুন দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও উপদেষ্টাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গিয়ে সরকারপ্রধানের হাতে আমন্ত্রণপত্র তুলে দেন নতুন দলের উদ্যোক্তারা। নতুন এই রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন জুলাই আন্দোলনে আহত ও নিহত পরিবারের সদস্যরাও। আয়োজকরা জানিয়েছেন, অনুষ্ঠানে বড় জমায়েতের প্রচেষ্টা রয়েছে দলটির। এজন্য আগের সিদ্ধান্ত বদল করে গত বৃহস্পতিবার দলের উদ্যোক্তারা ঢাকার বাইরে থেকেও নেতাকর্মীদের অনুষ্ঠানে আসার নির্দেশনা দেন।আমন্ত্রণ পেয়েছেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের শরিক ৩৬ রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা। আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে ঢাকায় নিযুক্ত ৫১ দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার ও কূটনীতিকদের। তবে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের শরিক এবং জাতীয় পার্টিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি জাতীয় নাগরিক পার্টির এ আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে।

নতুন রাজনৈতিক শক্তির অভ্যুদয়: দলে দলে আসছেন ছাত্র-জনতা
আর কয়েক ঘণ্টা পরেই আত্মপ্রকাশ হবে দেশের তরুণ প্রজন্মের রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’। নতুন দলের আত্মপ্রকাশ উপলক্ষ্যে বিশাল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে মানিক এভিনিউয়েতে। আজ শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকেই অনুষ্ঠানে দলে দলে আসছে মানুষ। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে নানা যানবহনে করে এই নতুন দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান দেখতে আসছেন তারা। আগত মানুষের মধ্যেও অধিকাংশই তরুণ ও শিক্ষার্থী। নতুন রাজনৈতির দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে অংশ নিতে আসা তরুণরা বলেন, ‘বাংলাদেশে আজ নতুন এক সূর্যোদয় হবে। দেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত করার জন্য তরুণরা আজ নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের মধ্য দিয়ে শপথ গ্রহণ করবেন।’ উত্তরবঙ্গের জেলা জয়পুরহাট থেকে আসা শিক্ষার্থী মঞ্জিল হাসান মুরাদ বলেন, ‘আজ সকালে আমরা জয়পুরহাট থেকে এখানে এসেছি। আমরা প্রায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ২০০ জন এখানে এসেছি। এছাড়া আমাদের সিনিয়র বড় ভাইরাও এসেছে। আমরা চাই আজকে এই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মানুষের জন্য কাজ করবে এবং বাংলাদেশের উন্নতি করবে এমন একটি দলের আত্মপ্রকাশ হোক।’ অন্যদিকে বরিশাল থেকে আসা সিফাত ইসলাম নামে একজন বলেন, ‘আমরা দেশের রাজনীতির নামে অনেক হানাহানি মারামারি কাটাকাটি দেখেছি। দেশের জন্য আসলে কেউ কাজ করে না। তাই আজ তরুণ প্রজন্মের নতুন রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে। আমরা সেই ইতিহাসের সাক্ষী হতে এসেছি। এই দল সবসময় দেশের মানুষ এবং দেশের জন্য কাজ করবে বলে আমাদের বিশ্বাস।’ অন্যদিকে সবার আজকের দৃষ্টি জাতীয় সংসদ ভবনের সামনের মানিক মিয়া এভিনিউয়ে। জাতীয় নাগরিক পার্টির আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে বড় জমায়েত হওয়ার কথা রয়েছে। এ জন্য অনুষ্ঠানের মঞ্চ প্রায় প্রস্তুত। এখন চলছে শেষ সময়ের মঞ্চ গোছানোর কাজ। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে নেতাকর্মীদের পাশাপাশি জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ পরিবারের সদস্য ও আহত যোদ্ধারা অংশ নেবেন। এ ছাড়া দেশের ৬৪ জেলা থেকেই মানুষ আসবে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, কূটনীতিক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অংশ নেবেন। ফলে আয়োজনটা হবে অনেক বড়। শুক্রবার সকাল থেকে দেখা গেছে, নতুন দলের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সংসদ ভবনের সামনের সড়ক ও ফুটপাতে চলছে বিশাল কর্মযজ্ঞ। মঞ্চের পাশাপাশি ওয়াশরুম ও বিভিন্ন বুথ নির্মাণেরও কাজ প্রায় শেষ। ছাত্রদের এই জমায়েতে মেডিকেল টিম, ওয়াশরুম, পুলিশ বুথ, পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। একইসঙ্গে মঞ্চের পেছনে নারীদের জন্য অন্য বুথের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি ভিআইপিদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। জাতীয় নাগরিক পার্টির পক্ষে মুশফিক উস সালেহীন জানিয়েছেন, দুপুর ১২টার পর শুধু মানিক মিয়া এভিনিউয়ের পশ্চিম দিকের প্রবেশপথ (আড়ংয়ের দিকে) দিয়ে মঞ্চের সামনের সংরক্ষিত এলাকায় ঢোকা যাবে। এদিকে, আয়োজনের নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সবমিলিয়ে লাখো মানুষের এই জমায়েত ঘিরে নিরাপত্তায় সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার জুয়েল রানা। তিনি বলেন, ‘গতকাল মঞ্চ প্রস্তুতের সময় থেকেই আমাদের এক প্লাটুন ফোর্স মোতায়েন রয়েছে। সার্বক্ষণিক আয়োজকদের সঙ্গে সমন্বয় করে তারা যেভাবে চাচ্ছে সেভাবেই নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’ জুয়েল রানা বলেন, ‘আজ আয়োজনস্থলে পর্যাপ্ত ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। পোশাকধারী ও অস্ত্রধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকের পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। আমাদের ট্রাফিক পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করতে যাওয়া এই নতুন দলের আয়োজন নির্বিঘ্ন করতে পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’ এর আগে বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বাংলামোটরে জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যৌথ বৈঠক হয়। সেখানে অংশ নেওয়া জাতীয় নাগরিক কমিটির দায়িত্বশীল চারজন নেতা দলের নাম ও যেসব পদে নেতৃত্ব চূড়ান্ত হয়েছে, সেগুলো নিশ্চিত করেন। দলটির দক্ষিণের মুখ্য সংগঠক হিসেবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও উত্তরের মুখ্য সংগঠক হিসেবে সারজিস আলমকে চূড়ান্ত করা হয়। এছাড়া মুখ্য সমন্বয়ক হিসেবে নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী এবং যুগ্ম সমন্বয়ক হিসেবে হান্নান মাসুদের নাম চূড়ান্ত করা হয়। নতুন কমিটি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত নেতৃত্ব দেবেন বলে জানা গেছে। এ জন্য দলের আহ্বায়ক কমিটির আকার বৃদ্ধি করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে কমিটির একটা খসড়া তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এতে জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সম্মুখযোদ্ধাদের স্থান দেওয়া হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে। এছাড়াও জুলাই আন্দোলনের আলোচিত নারী নেত্রীরা নতুন দলে জায়গা পাচ্ছেন বলে জানা গেছে।

প্রস্তুতি শেষ, ভিড় বাড়ছে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে আজই আত্মপ্রকাশ ঘটতে যাচ্ছে নতুন রাজনৈতিক দলের। তারুণ্য নির্ভর নতুন এই রাজনৈতিক দলের নাম ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’ (এনসিপি)। নতুন দল ঘোষণার অনুষ্ঠানস্থলে আসতে শুরু করেছে ছাত্র-জনতা। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সাড়ে ১২টায় সরেজমিনে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে দেখা যায়, দল ঘোষণার জন্য বড় মঞ্চ প্রস্তুত করা হয়েছে। আছে ভিআইপি ব্যক্তিদের জন্য আসনের ব্যবস্থা। নতুন দল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সারা দেশ থেকে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা ও সমর্থকদের খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে আসতে দেখা গেছে। এসময় তাদেরকে আবু সাঈদ-মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ, ক্ষমতা না জনতা, জনতা-জনতা ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা গেছে। দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে আসা লোকজনের জন্য বিশুদ্ধু খাবার পানি এবং মোবাইল টয়লেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এলাকাজুড়ে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখা গেছে। খুলনা থেকে আসা আফনান হোসাইন বলেন, ‘ছাত্র-জনতার নতুন রাজনৈতিক দলকে আমরা স্বাগত জানাই। আমরা মনে করে আজ থেকে বাংলাদেশে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত তৈরি হবে। এখন থেকে সবাই বাংলাদেশের জন্য রাজনীতি করবেন। রাজনীতিকে অপব্যবহারের সুযোগ আর এদেশে তৈরি হবে না। আশা করি নতুন রাজনৈতিক দল এদেশের মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাবে।’ প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য জয়নাল আবেদীন শিশির বলেন, ‘আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। সারাদেশ থেকে ছাত্র-জনতা আসতে শুরু করেছেন। আমরা আশা করছি সফলভাবে অনুষ্ঠান শেষ করতে পারবো।’ জাতীয় নাগরিক কমিটির সূত্র জানিয়েছে, তারুণ্য নির্ভর নতুন এই রাজনৈতিক দলটির আহ্বায়ক পদে নাহিদ ইসলাম ও সদস্য সচিব পদে আখতার হোসেনের নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে। এছাড়া জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, আরিফুল ইসলাম আদিব, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, প্রধান সমন্বয়কারী নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হিসেবে হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক পদে সারজিস আলম, দপ্তর সম্পাদক সালেহ উদ্দিন সিফাতের নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে। নতুন এই রাজনৈতিক দলে সব মিলিয়ে প্রথমে ১৫১ জনের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা দেওয়া হবে। পরে পর্যায়ক্রমে কমিটির আকার বাড়ানো হবে।

সকলের দৃষ্টি মানিক মিয়া এভিনিউয়ে
সকলের আজকের দৃষ্টি জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে মানিক মিয়া এভিনিউয়ের দিকে। কারণ আজ শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টায় এখানেই জনমানুষের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে তরুণদের নতুন রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’। আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে বড় জমায়েতের লক্ষ্য রয়েছে তাদের। মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনের সড়কে নতুন দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানের জন্য মঞ্চ প্রায় প্রস্তুত। এখন চলছে শেষ সময়ের মঞ্চ গোছানোর কাজ। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে নেতা কর্মীদের পাশাপাশি জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ পরিবারের সদস্য ও আহত যোদ্ধারা অংশ নেবেন। এ ছাড়া দেশের ৬৪ জেলা থেকেই মানুষ আসবে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, কূটনীতিক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অংশ নেবেন। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে দেখা গেছে, নতুন দলের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সংসদ ভবনের সামনের সড়ক ও ফুটপাতে চলছে বিশাল কর্মযজ্ঞ। মঞ্চের পাশাপাশি ওয়াশরুম ও বিভিন্ন বুথ নির্মাণেরও কাজ প্রায় শেষ। পাশাপাশি ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হতে সকাল সকাল বিভিন্ন জেলা থেকে আসতে শুরু করেছেন নেতাকর্মীরা। আয়োজনের নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। ছাত্রদের এই জমায়েতে মেডিকেল টিম, ওয়াশরুম, পুলিশ বুথ, পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। একইসঙ্গে মঞ্চের পেছনে নারীদের জন্য অন্য বুথের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি ভিআইপিদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। জাতীয় নাগরিক পার্টির পক্ষে মুশফিক উস সালেহীন জানিয়েছেন, দুপুর ১২টার পর শুধু মানিক মিয়া এভিনিউয়ের পশ্চিম দিকের প্রবেশপথ (আড়ংয়ের দিকে) দিয়ে মঞ্চের সামনের সংরক্ষিত এলাকায় ঢোকা যাবে। জানা গেছে, অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেনের নেতৃত্বে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে নতুন এই রাজনৈতিক দল। এর আগে বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বাংলামোটরে জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যৌথ বৈঠক হয়। সেখানে অংশ নেওয়া জাতীয় নাগরিক কমিটির দায়িত্বশীল চারজন নেতা দলের নাম ও যেসব পদে নেতৃত্ব চূড়ান্ত হয় সেগুলো নিশ্চিত করেন। দলটির দক্ষিণের মুখ্য সংগঠক হিসেবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ এবং উত্তরের মুখ্য সংগঠক হিসেবে সারজিস আলমকে চূড়ান্ত করা হয়। এছাড়া মুখ্য সমন্বয়ক হিসেবে নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী এবং যুগ্ম সমন্বয়ক হিসেবে হান্নান মাসুদের নাম চূড়ান্ত করা হয়। নতুন কমিটি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত নেতৃত্ব দেবেন বলে জানা গেছে। এ জন্য দলের আহ্বায়ক কমিটির আকার বৃদ্ধি করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে কমিটির একটা খসড়া তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এতে জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সম্মুখযোদ্ধাদের স্থান দেওয়া হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে। এছাড়াও জুলাই আন্দোলনের আলোচিত নারী নেত্রীরা নতুন দলে জায়গা পাচ্ছেন বলে জানা গেছে।

তরুণদের দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ-জাপা বাদে সব দল আমন্ত্রিত
নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি (জাপা) বাদে সব দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদেরও যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টায় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে আনুষ্ঠানিকভাবে দলটির ঘোষণা দেওয়া হবে। প্রকাশ করা হতে পারে দলের লোগো-মনোগ্রাম-পতাকাও। নতুন এই রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন জুলাই আন্দোলনে আহত ও নিহত পরিবারের সদস্যরা। আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে বড় জমায়েতের প্রচেষ্টা রয়েছে দলটির। এজন্য আগের সিদ্ধান্ত বদল করে গতকাল বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দলের উদ্যোক্তারা ঢাকার বাইরে থেকেও নেতাকর্মীকে অনুষ্ঠানে আসার নির্দেশনা দেন। দলটির অন্যতম প্রধান নেতা ও উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি নামে আগামীকাল সারা বাংলাদেশ থেকে ব্যানার আসবে। এই নামে মুখরিত হোক বাংলাদেশ।’ অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও উপদেষ্টাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যমুনায় গিয়ে সরকারপ্রধানের হাতে আমন্ত্রণপত্র তুলে দেন এনসিপির নেতারা। এদিকে, গণঅভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের দল গঠনে সরকারের সহায়তার পাশাপাশি ছাত্রদের দলকে ‘কিংস পার্টি’ বলেও আখ্যা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে কিছু দলের। দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক উপদেষ্টা বিধায় সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তোলার সুযোগ পেয়েছেন কেউ কেউ। তাই বিতর্ক এড়াতে উপদেষ্টাদের কেউ আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে থাকবেন না বলে জানা গেছে। এমনকি দুই ছাত্র উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াও যাচ্ছেন না অনুষ্ঠানে। এদিকে, বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের শরিক ৩৬ রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে অনুষ্ঠানে। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদসহ জ্যেষ্ঠ নেতাদের আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে। আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে ঢাকায় নিযুক্ত ৫১ দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার ও কূটনীতিকদের। তবে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের শরিক এবং জাতীয় পার্টিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি জাতীয় নাগরিক পার্টির এ আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে।

তরুণদের দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’র আত্মপ্রকাশ আজ
জনমানুষের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে আজ শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) আত্মপ্রকাশ করছে তরুণদের নতুন রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’। বিকেল ৩টায় মানিক মিয়া এভিনিউতে দলটি আত্মপ্রকাশ করবে। অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেনের নেতৃত্বে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে নতুন এই রাজনৈতিক দল। এর আগে বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বাংলামোটরে জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যৌথ বৈঠক হয়। সেখাকে অংশ নেওয়া জাতীয় নাগরিক কমিটির দায়িত্বশীল চারজন নেতা দলের নাম ও যেসব পদে নেতৃত্ব চূড়ান্ত হয়েছে, সেগুলো নিশ্চিত করেন। দলটির দক্ষিণের মুখ্য সংগঠক হিসেবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ এবং উত্তরের মুখ্য সংগঠক হিসেবে সারজিস আলমকে চূড়ান্ত করা হয়েছে। এছাড়া মুখ্য সমন্বয়ক হিসেবে নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী ও যুগ্ম সমন্বয়ক হিসেবে হান্নান মাসুদের নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে। নতুন কমিটি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত নেতৃত্ব দেবেন বলে জানা গেছে। এ জন্য দলের আহ্বায়ক কমিটির আকার বৃদ্ধি করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে কমিটির একটা খসড়া তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এতে জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সম্মুখযোদ্ধাদের স্থান দেওয়া হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে। এছাড়াও জুলাই আন্দোলনের আলোচিত নারী নেত্রীরা নতুন দলে জায়গা পাচ্ছেন বলে জানা গেছে। এদিকে ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ করা হয়েছে।

জাতীয় নাগরিক পার্টির আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের জন্য চার নির্দেশনা
‘জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নামে নতুন রাজনৈতিক দল আজ শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে। বিকেল ৩টার দিকে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন এ রাজনৈতিক দলটির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হবে। এদিকে, নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানের সংবাদ সংগ্রহে গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য চার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব নির্দেশনা তুলে ধরা হয়।নির্দেশনাগুলো হল সকাল ১১ টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত মানিক মিয়া এভিনিউয়ের মূল মঞ্চের পেছনে গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য মিডিয়া পাস বিতরণ করা হবে; মঞ্চের সামনের সংরক্ষিত এলাকায় ঢুকতে মিডিয়া পাস দেখাতে হবে; দুপুর ১২টার পর শুধুমাত্র মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের পশ্চিম দিকের প্রবেশপথ (আড়ংয়ের দিকে) দিয়ে মঞ্চের সামনের সংরক্ষিত এলাকায় ঢোকা যাবে এবং দুপুর আড়াইটার মধ্যে মঞ্চের সামনের সংরক্ষিত এলাকায় প্রবেশ বন্ধ করে দেয়া হবে।রাজধানীর বাংলামোটরে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যৌথ বৈঠকে নতুন দলের নাম চূড়ান্ত হয়। এরপর বৈঠকে শীর্ষ পাঁচ পদও ভাগ করে দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে আহ্বায়ক পদে নাহিদ ইসলাম ও সদস্য সচিব পদে আখতার হোসেন, প্রধান সমন্বয়ক পদে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক পদে হাসনাত আবদুল্লাহ ও উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক পদে সারজিস আলমের নাম চূড়ান্ত করা হয়। বৈঠক সূত্র জানিয়েছে, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব পদে একাধিক প্রার্থী থাকায় এসব পদে নেতৃত্ব এখনো চূড়ান্ত হয়নি। এদিকে, নতুন রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব নিতেই অন্তর্বর্তী সরকার থেকে পদত্যাগ করেছেন নাহিদ ইসলাম। অন্য দিকে, গত বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) জুলাই অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে সাবেক সমন্বয়কদের নিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে নতুন ছাত্র সংগঠন ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ’। এই সংগঠনের আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার ও সদস্য সচিব জাহিদ আহসান।

নতুন দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পেলেন যারা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে নতুন রাজনৈতিক দল। দলের নাম রাখা হয়েছে ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’ (এনসিপি)। নতুন দলের আত্মপ্রকাশ ঘিরে বড় আয়োজনের কথা জানিয়েছেন নেতৃস্থানীয়রা। শুক্রবার জুমার নামাজের পরে সংসদ ভবনের সামনে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে জমায়েতের মাধ্যমে বহুল কাঙ্ক্ষিত ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’র আত্মপ্রকাশ ঘটবে। এদিন আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ সব উপদেষ্টাকে। পাশাপাশি বিএনপি-জামায়াত থেকে শুরু করে গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে থাকা প্রায় সব দলকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদসহ জ্যেষ্ঠ নেতাদের আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানসহ আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে ঢাকায় নিযুক্ত ৫১ দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার, কূটনীতিকদের। এদিকে বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় যমুনায় গিয়ে সরকারপ্রধানের হাতে আমন্ত্রণপত্র তুলে দেন এনসিপির নেতারা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদের নেতৃত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুম ও জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব এস এম সাইফ মুস্তাফিজ প্রধান। সেখান থেকে বেরিয়ে নেতারা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে ৩৬টি রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে নাগরিক কমিটি। তবে পতিত আওয়ামী লীগের সরকারের শরিক ১৪ দলের কাউকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, আমরা দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক দলগুলোকে আমন্ত্রণ জানানো শুরু করেছি। প্রধান উপদেষ্টা ও সব উপদেষ্টাকেও আমরা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে যারা অংশ নিয়েছে, সব রাজনৈতিক দলকেই আমন্ত্রণ জানানোর ইচ্ছে রয়েছে আমাদের। প্রসঙ্গত, অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের দল গঠনে সরকারের সহায়তা রয়েছে বলে বিএনপিসহ কয়েকটি দল অনেক দিন ধরেই অভিযোগ করছে। ছাত্রদের দলকে ‘কিংস পার্টি’ হিসেবেও আখ্যা দিচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকার নিরপেক্ষ কি না, এমন প্রশ্নও তোলা হচ্ছে। তাই বিতর্ক এড়াতে উপদেষ্টাদের কেউ অনুষ্ঠানে থাকবেন না বলে জানা গেছে। এদিকে দুই ছাত্র উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াও যাবেন না আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে।

আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে মারামারির ঘটনা তদন্তে কমিটি, রিফাত রশীদের পদত্যাগ
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে মারামারির ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। অন্যদিকে, নতুন এ সংগঠনটি থেকে পদত্যাগ করেছেন জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব রিফাত রশীদ। বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার। তিনি বলেন, তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটিতে তাহমীদ আল মুদাসসির চৌধুরী, তৌহিদ সিয়াম ও নাঈম রয়েছেন। সাত কর্মদিবসের মধ্যে এই তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দেবে। গতকালের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আবু বাকের মজুমদার বলেন, গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কমিটিতে রিফাত রশীদ নেই। তিনি পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের’ কেন্দ্রীয় পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। কমিটিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, বিইউপি, ইউল্যাব, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, সাত কলেজ, বিভিন্ন মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা পদ পেয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সদস্যসচিব মহির আলম, মুখপাত্র আশরেফা খাতুন, ঢাবি গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের আহ্বায়ক আব্দুল কাদের, সদস্যসচিব আল আমিন সরকার প্রমুখ।

নতুন দলের নাম ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’, নেতৃত্বে নাহিদ-আখতার
জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে গঠিত নতুন রাজনৈতিক দলের নাম ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’। দলটির আহ্বায়ক হচ্ছেন নাহিদ ইসলাম এবং সদস্যসচিব হচ্ছেন আখতার হোসেন। নতুন দলের মুখ্য সংগঠক হিসেবে থাকছেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। এ ছাড়া দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হিসেবে থাকছেন সারজিস আলম। আজ বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত রাজধানীর বাংলামোটরে জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যৌথ বৈঠক হয়। সেখানে এসব সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে অংশ নেওয়া জাতীয় নাগরিক কমিটির দায়িত্বশীল চারজন নেতা দলের নাম ও যেসব পদে নেতৃত্ব চূড়ান্ত হয়েছে, সেগুলো নিশ্চিত করেছেন।

দ্রুত নির্বাচনের আহ্বান খালেদা জিয়ার
রাষ্ট্র মেরামতের ন্যূনতম সংস্কার দ্রুত সম্পন্ন করে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্পন্ন করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে দলটির বর্ধিত সভায় লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই কথা বলেন। খালেদা জিয়া বলেন, ‘দেশ আজ সংকটময় সময় অতিক্রম করছে। আপনাদের এবং ছাত্রদের সমন্বিত আন্দোলনের ফলে ফ্যাসিস্ট শাসক বিদায় নিয়েছে। একটা অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে, তাদের কাছে জনগণের প্রত্যাশা, রাষ্ট্র মেরামতের ন্যূনতম সংস্কার দ্রুত সম্পন্ন করে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার জন্য সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্পন্ন করা।’ তিনি আরো বলন, ‘দীর্ঘ ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রামে যারা শহীদ হয়েছেন, সম্প্রতি জুলাই-আগস্টে ফ্যাসিবাদের ভয়াবহ দমননীতির কারণে গণহত্যায় যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। যারা আহত হয়েছেন তাদের প্রতি জানাচ্ছি আন্তরিক সমবেদনা। আমি চিকিৎসার কারণে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করলেও সবসময় আপনাদের পাশেই আছি।’ খালেদা জিয়া বলেন, ‘দীর্ঘ ১৫ বছর গণতন্ত্রের জন্য, আমার মুক্তির জন্য আপনারা যে নিরন্তর সংগ্রাম করেছেন এবং অসংখ্য নেতাকর্মী প্রাণ দিয়েছেন, গুম-নির্যাতনের স্বীকার হয়েছেন, সোয়া লাখ মামলায় জড়িয়ে ন্যায়বিচারের জন্য এখনো আদালতের বারান্দায় দৌড়াচ্ছেন, আপনাদের গণতন্ত্রের জন্য এই ত্যাগ শুধু দল নয়, জাতি চিরকাল স্মরণ রাখবে।’

সংস্কার-স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি করা হচ্ছে: তারেক রহমান
সংস্কার কিংবা স্থানীয় নির্বাচন ইস্যু নিয়ে জনগণের সামনে এক ধরনের ধূম্রজাল সৃষ্টি করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐক্য ও জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশ বিনষ্টের চক্রান্তের বিরুদ্ধে আমি দেশের কৃষক শ্রমিক জনতা আলেম ওলামা পীর মাশায়েখ তথা সকল শ্রেণি পেশার মানুষকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানাই। যারা বাংলাদেশকে তাবেদার রাষ্ট্র বানিয়ে রাখতে চেয়েছিল তাদের ষড়যন্ত্র কিন্তু এখনো থেমে নেই।’ বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হল সংলগ্ন মাঠে অনুষ্ঠিত বিএনপির বর্ধিত সভায় লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে উদ্বোধনী বক্তব্যে এসব কথা বলেন তারেক রহমান। ‘সুদৃঢ় ঐক্যই রুখে দিতে পারে সকল ষড়যন্ত্র’ স্লোগানে সাত বছর পর শুরু হয়েছে বিএনপির বর্ধিত সভা। তিনি আরো বলেন, ‘গণতন্ত্রকামী জনগণ মনে করে স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে সেটি হবে সারাদেশে পলাতক স্বৈরাচারের দোসরদের পুনর্বাসনের একটি প্রক্রিয়া যা সরাসরি গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাবিরোধী। গণহত্যাকারী টাকাপাচারকারী দুর্নীতিবাজ মাফিয়া চক্রকে পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার এই ফাঁদে বিএনপি পা দেবে না।’ তারেক রহমান আরও বলেন, ‘বিএনপি জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি জনরায়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে গণহত্যাকারী-মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি করবে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান- সারাদেশে গণহত্যাকারীদের দোসর মাফিয়াচক্রকে পুনর্বাসনের স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা থেকে সরে আসুন। অবিলম্বে অন্তর্বর্তী সরকারের আগামী দিনের সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনার রোডম্যাপ ঘোষণা করুন।সংস্কার একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া।’ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে সংস্কার একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। বিএনপির কাছে সংস্কারের ধারণা নতুন কিছু নয়। সরকারে কিংবা বিরোধী দলে বিএনপি যখন যে অবস্থানেই দায়িত্ব পালন করেছে জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে সব সময়েই রাষ্ট্র সরকার ও রাজনীতিতে প্রয়োজনীয় সংস্কার করেছে এবং করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।’ ‘তবে ষড়যন্ত্রের পথ ধরে পলাতক স্বৈরাচার রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলের পর সংস্কারের সব পথ বন্ধ করে দেয়া হয়। বাংলাদেশকে চিরতরে তাবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করে রাখতে গত দেড় দশকে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে প্রায় ধ্বংস করে দিয়েছিলো। দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে নাজুক করে তুলেছিল। টাকাপাচার আর লুটপাট চালিয়ে দেশের অর্থনীতি ভঙ্গুর করে দিয়েছিলো। অকার্যকর করে দেয়া হয়েছিল দেশের সব সাংবিধানিক এবং বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান। জনগণের ভোটের অধিকার হরণ করে জনগণকে রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতাহীন করে দিয়ে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করে তুলেছিল। এমন পরিস্থিতিতে রাষ্ট্র সরকার ও রাজনীতির গুণগত পরিবর্তনের লক্ষ্যে মাদার অফ ডেমোক্রেসি খালেদা জিয়া ২০১৭ সালে ভিশন ২০৩০ দিয়েছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২২ সালে বিএনপি ২৭ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করে। পরে গণতন্ত্রের পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মতবিনিময়ের পর ঘোষণা করা হয় ৩১ দফা কর্মসূচি। এই ৩১ দফা নিয়ে বর্তমানে বিএনপির উদ্যোগে সারাদেশে জনগণের সঙ্গে সংলাপ চলছে। রাষ্ট্র-সরকার-রাজনীতি এবং রাজনৈতিক দল মেরামতের জন্য দফা ৩১টি হলেও এর চূড়ান্ত লক্ষ্য একটি। সেটি হলো একটি নিরাপদ গণতান্ত্রিক মানবিক বাংলাদেশ বিনির্মাণ। ঠিক তেমনি উদ্দেশ্যও একটি। সেটি হলো রাষ্ট্র ও সমাজে জনগণের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা। এটি নিশ্চিত করা না গেলে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব-গণতন্ত্র-নিরাপত্তা-সমৃদ্ধি কোনোটিই টেকসই হবে না। রাষ্ট্রের স্বাধীনতা এবং নিরাপত্তার জন্য জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের কোনোই বিকল্প নেই। রাষ্ট্র এবং সমাজে জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার পূর্ব শর্ত হলো প্রতিটি নাগরিকের ভোট প্রয়োগের অধিকার বাস্তবায়ন। এবং এ লক্ষ্যেই একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি বারবার জনগণের ভোটে জনগণের কাছে দায়বদ্ধ সরকার প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যেই জাতীয় নির্বাচনের দাবি জানায়।’ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমি বিশ্বাস করি আজ এবং আগামী দিনের রাজনীতিতে বিএনপির এই ৩১ দফা হচ্ছে, একটি বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সনদ। তবে এই ৩১ দফাই শেষ কথা নয়। সময়ের প্রয়োজনে রাষ্ট্র, সরকার, রাজনীতি ও রাজনৈতিক দলের সংস্কারের জন্য এই ৩১ দফাতেও সংযোজন-বিযোজনের সুযোগ রয়েছে। এমনকি বিএনপির ৩১ দফার সঙ্গে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার প্রস্তাবনার খুব বেশি ইস্যুতে মৌলিক বিরোধ নেই।’ তারেক রহমান বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য জনমনে ইতিবাচক ধারণা সৃষ্টি করলেও কোনো কোনো উপদেষ্টার বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য মন্তব্য স্বাধীনতাপ্রিয় গণতন্ত্রকামী জনগণের জন্য হতাশার কারণ হয়ে উঠছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি বিএনপিসহ গণতন্ত্রের পক্ষের সব রাজনৈতিক দলের নিঃশর্ত সমর্থন থাকলেও সরকার এখনো তাদের কর্মপরিকল্পনায় অগ্রাধিকার নির্ধারণ করতে পারছে না।’ ‘সারাদেশে খুন, হত্যা, ধর্ষণ, চুরি, ছিনতাই, রাহাজানি বেড়েই চলেছে। বাজার সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণহীন। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখনো দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ওপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। সরকার যেখানে দেশের বাজার পরিস্থিতি কিংবা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাঙ্ক্ষিত সফলতা অর্জন করতে পারছে না সেখানে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের নামে কেন দেশের পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে করতে চাইছে এটি জনগণের কাছে বোধগম্য নয়।’ তারেক রহমান বলেন, ‘গণতন্ত্রকামী জনগণ মনে করে, স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে সেটি হবে সারাদেশে পলাতক স্বৈরাচারের দোসরদের পুনর্বাসনের একটি প্রক্রিয়া যা সরাসরি গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাবিরোধী। গণহত্যাকারী টাকাপাচারকারী দুর্নীতিবাজ মাফিয়া চক্রকে পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার এই ফাঁদে বিএনপি পা দেবে না। বিএনপি জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি জনরায়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে গণহত্যাকারী-মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি করবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান, সারা দেশে গণহত্যাকারীদের দোসর মাফিয়াচক্রকে পুনর্বাসনের স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা থেকে সরে আসুন। অবিলম্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আগামী দিনের সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনার রোডম্যাপ ঘোষণা করুন।’ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘মাফিয়া প্রধান হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর পর এ পর্যন্ত ১৬-১৭টি নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাসী বিএনপি সব নতুন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনকে স্বাগত জানায়। তবে নির্বাচনের মাধ্যমে গ্রহণ কিংবা বর্জনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে জনগণ। সুতরাং, প্রতিটি দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সবার আগে নির্বাচন কমিশনকে প্রস্তুত রাখতে হবে। দেশে একটি অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নিরপেক্ষতাই হচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সবচেয়ে বড় পুঁজি। কিন্তু সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে ইতোমধ্যেই জনমনে সন্দেহ সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে। নিজেদের নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে আমি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আরো সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানাই।’ বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, ‘দীর্ঘ দিন থেকে আমি আপনাদের কাছ থেকে শারীরিকভাবে দূরে থাকলেও যোগাযোগ এবং কর্ম পরিকল্পনার মাধ্যমে আমি কখনোই আপনাদের কাছ থেকে দূরত্ব অনুভব করিনি। আমার মনে হয়, এখানে উপস্থিত এমন একজনকেও পাওয়া যাবে না যার সঙ্গে আমার অন্তত একবার হলেও কথা হয়নি। কিংবা টেক্সট মেসেজ আদান প্রদান হয়নি। তবে আজ এখানে সবাইকে একত্রে পেয়েছি। আপনাদের অভিনন্দন। আমি বিশ্বাস করি যে দলে আপনাদের মতো ত্যাগী এবং সাহসী নেতাকর্মী রয়েছে সেই দলকে কোনো স্বৈরাচারই দমিয়ে রাখতে পারে না।’ তারেক রহমান বলেন, ‘আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়তে চাই যে দেশে মুসলমান হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান তথা দলমত ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবাই সমান অধিকার ভোগ করবেন। ৫৬ হাজার বর্গমাইলের এই বাংলাদেশ ভূখণ্ডে বসবাসকারী আমাদের সবার একটিই পরিচয় আমরা বাংলাদেশি। পররাষ্ট্র নীতির ক্ষেত্রেও বিএনপির দৃষ্টিভঙ্গি সুস্পষ্ট। বিএনপি মনে করে বর্তমান বিশ্বে স্থায়ী শত্রু মিত্র বলে কিছু নেই। বরং একটি দেশের সঙ্গে অপর দেশের সম্পর্ক হবে পারস্পরিক স্বার্থ রক্ষা, প্রয়োজন এবং ন্যায্যতার ভিত্তিতে। অন্য দেশের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষার ক্ষেত্রে আমাদের নীতি ‘সবার আগে বাংলাদেশ’। অর্থাৎ নিজ দেশ এবং জনগণের স্বার্থ রক্ষাই হতে হবে প্রথম ও প্রধান অগ্রাধিকার।’ ‘এই মুহূর্তে বিএনপিই দেশের সবচেয়ে বড় এবং জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল’ উল্লেখ করে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিএনপির কাছে জনগণের যেমন আশা ভরসা প্রত্যাশা রয়েছে। একইসঙ্গে বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীরাও থেমে নেই। সুতরাং, চক্রান্তকারীদের মোকাবেলা করে কিভাবে দলকে আরো শক্তিশালী এবং সুসংহত করা যায় আমি আশা করি, আপনাদের আলোচনায় সেই সম্পর্কেও সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা থাকবে।’ তারেক রহমান বলেন, ‘সারাদেশে তৃণমূল পর্যায়ের কৃষক-শ্রমিক দরিদ্র-মেহনতি-স্বল্প আয় কিংবা মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত-পাশাপাশি ছাত্র ছাত্রী তরুণ তরুণী তথা সব শ্রেণি-পেশার মানুষের স্বার্থ রক্ষা এবং জীবন মানোন্নয়নে আপনাদের নিজ নিজ এলাকাভিত্তিক কী ধরনের পদক্ষেপ নেয়া যায় আশা করি আপনাদের বক্তব্যে সেসব বিষয়ও থাকবে। দলের সাংগঠনিক কার্যক্রমের পক্ষে বিপক্ষে অবশ্যই আপনারা সুনির্দিষ্ট বক্তব্য তুলে ধরবেন। তবে একটি বিষয়ে আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই সেটি হলো বিএনপি একটি বৃহৎ পরিবার। এই পরিবারের নানাবিষয়ে আমাদের মতের অমিল থাকতেই পারে। সুতরাং বক্তব্য দেয়ার সময় ব্যক্তিগত পর্যায়ের বিরোধকে এড়িয়ে যাওয়া বাঞ্চনীয় বলেই আমি মনে করি।’ ‘আমরা সবাই আমাদের ঐক্যের শক্তির সক্ষমতা সম্পর্কে অবহিত। ঐক্যই আমাদেরকে বারবার বিজয় আর সফলতা এনে দিয়েছে। সুতরাং আমাদের খেয়াল রাখা জরুরি আলোচনা সমালোচনা যেন নিজেদের মধ্যকার ঐক্য বিনষ্টকারী কিংবা দলের ক্ষতির কারণ না হয়। আরো একটি বিষয়ে আমি আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। নেতানেত্রীদের সম্পর্কে আপনারা বক্তব্য দেয়ার সময় দয়া করে প্রশংসাসূচক শব্দ চয়নের ক্ষেত্রে আরো বেশি সতর্কতা, বুদ্ধিমত্তা এবং পরিমিতি বোধের পরিচয় দেবেন।’ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘গত দেড় দশকে সারাদেশে বিএনপিসহ গণতন্ত্রের পক্ষের ভিন্ন দল এবং মতের নেতাকর্মীদের অবর্ণনীয় নির্যাতন-নিপীড়ন সহ্য করতে হয়েছে। কেবল বিএনপিরই ৬০ লাখের বেশি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে দেড় লাখ রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা দেয়া হয়েছে।’ বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ইলিয়াস আলী, কমিশনার চৌধুরী আলমের মতো অনেক নেতাকর্মীর আজ পর্যন্ত খোঁজ মেলেনি। শুধু বিএনপি করার অপরাধে হাজার হাজার নেতাকর্মী ও সমর্থককে গুম খুন অপহরণ করা হয়েছে। তবু বিএনপির নেতাকর্মীরা কেউ দল ছেড়ে যাননি। স্বৈরাচারের সঙ্গে করেননি আপস।আচার-আচরণে হতে হবে আরো সতর্ক ও সংযত তারেক রহমান বলেন, ‘আপনাদের এই সৎসাহস এবং সততার কারণে বিএনপি আজ শুধু একটি সাধারণ রাজনৈতিক দলই নয়। দেশের গণতন্ত্রকামী স্বাধীনতাপ্রিয় জনগণ বিএনপিকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের ভ্যানগার্ড হিসেবে বিশ্বাস করে। এটি একজন রাজনৈতিক কর্মীর জন্য নিঃসন্দেহে একটি বড় প্রাপ্তি।’ ‘এ কারণেই দলের সর্বস্তরের প্রতিটি নেতাকর্মীকে আরো বেশি দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। আচার-আচরণে হতে হবে আরো সতর্ক ও সংযত। তবে দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কোটি কোটি নেতাকর্মী সমর্থকদের এই বৃহৎ এই রাজনৈতিক দলের কোনো কোনো নেতাকর্মী হয়তো নিজের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। তাই, আমি আপনাদের আবারো বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের একটি বার্তা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই।’

নির্বাচন নিয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা পাচ্ছি না: মির্জা ফখরুল
অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাচন নিয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা পাচ্ছেন না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হল প্রাঙ্গণে বিএনপির বর্ধিত সভার স্বাগত বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। এ সময় ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘দেশের মানুষ অনেক আশা-ভরসা নিয়ে আছেন ৫ আগস্ট পরিবর্তনের পরে, ফ্যাসিস্ট হাসিনা দেশ থেকে পলায়নের পরে দেশের অবস্থার পরিবর্তন হবে। অতি দ্রুত দেশের জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়া হবে, তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন এবং তাদের জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করতে পারবেন। কিন্তু আমরা দুঃখের সঙ্গে দেখছি, সে লক্ষ্যে আমরা সুস্পষ্ট নির্দেশনা পাচ্ছি না।’ তিনি আরো বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি বিএনপিকে গণতন্ত্রের জন্য, জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য কী পরিমাণ ত্যাগের মধ্যদিয়ে সংগ্রাম করতে হয়েছে।’ বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এরই মধ্যে দেশের অর্থনীতির অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। ক্রমান্বয়ে শিক্ষাঙ্গনগুলো বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার পরিবেশ থাকছে না।’ তিনি অভিযোগ করেন, অবিভক্ত বাংলায় যেসব বরেণ্য, বিজ্ঞানী, সাহিত্যিক, বিশেষ করে যাদের পূর্ব বাংলার ভূখণ্ডে জন্ম হয়েছিল, তাদের নামগুলো বাদ দিয়ে এখন কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকরণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’ ফখরুল বলেন, ‘আমরা ফ্যাসিবাদকে তাড়িয়েছি, শেখ হাসিনাকে তাড়িয়েছি। দেশের জনগণের যে আশা-আকাঙ্ক্ষা; আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের যে স্বপ্ন একটি আধুনিক-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ রূপান্তরিত করার, আমরা এখন সেই অপেক্ষায় আছি। সেই গণতন্ত্রকে বিঘ্নিত করার জন্য, বাধাগ্রস্ত করার জন্য একটি মহল বিভিন্নভাবে চক্রান্ত করার চেষ্টা করছে। বাইরে থেকেও চেষ্টা করা হচ্ছে। দেশের অভ্যন্তর থেকেও কিছু কিছু গোষ্ঠী ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।’ বিএনপির বর্ধিত সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়েছেন দলটির চেয়াপারসন খালেদা জিয়া।

একাধিক গণমাধ্যমে ‘নয়াদিল্লিতে শেখ হাসিনার মৃত্যুর’ দাবি! জানুন সত্যতা
সম্প্রতি, ‘পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লিতে আজ ইন্তেকাল করেছেন’ ও ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের নয়াদিল্লিতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন’ শীর্ষক শিরোনামে ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যম যমুনা টেলিভিশন ও চ্যানেল ২৪-এর ডিজাইন সম্বলিত দুইটি পৃথক পৃথক ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। এছাড়াও একই দাবিতে ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্থান টাইমসের ফটোকার্ড দাবিতেও একটি ছবি আলোচিত ফটোকার্ডগুলোর সঙ্গে প্রচার করা হয়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেজ থেকেও শেখ হাসিনার মৃত্যুর সংবাদ প্রচার করা হয়েছে- এমন দাবিতে একটি স্ক্রিনশটও ফেসবুকে ঘুরছে। স্ক্রিনশটটিতে দেখা যায়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পেজ থেকে শেখ হাসিনার ছবি ব্যবহার করে ‘শোক সংবাদ, দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, আমাদের প্রিয় নেত্রী, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যিনি স্বৈরাচার পরবর্তী বাংলাদেশের উন্নয়নে অমূল্য অবদান রেখেছেন, তিনি আর আমাদের মাঝে আর নেই। দলের বিশ্বস্ত সূত্রের মাধ্যমে এই শোক সংবাদ নিশ্চিত হয়েছে।’ শীর্ষক পোস্ট করা হয়েছে। তবে শেখ হাসিনার ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে মৃত্যুর দাবিটি সত্যি না। এ বিষয়ে বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক স্বীকৃত বাংলাদেশের ফ্যাক্ট চেকিং বা তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার। তাদের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে দেশীয় ও ভারতীয় একাধিক গণমাধ্যমের নকল ফটোকার্ড তৈরি ও আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজের নামে ভুয়া স্ক্রিনশট তৈরি করে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীনভাবে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। অনুসন্ধানে আলোচিত ফটোকার্ডগুলোতে উল্লিখিত দাবির সত্যতা যাচাইয়ে প্রাসঙ্গিক একাধিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করেও গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে শেখ হাসিনার মৃত্যুর দাবিটির সত্যতা পাওয়া যায়নি। পরবর্তী আলোচিত ফটোকার্ডগুলো পৃথকভাবে যাচাই করেছে রিউমর স্ক্যানার। ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের নয়াদিল্লিতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত ফটোকার্ডটিতে চ্যানেল ২৪-এর লোগো রয়েছে এবং এটি প্রকাশের তারিখ ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ উল্লেখ করা হয়েছে। পরবর্তী অনুসন্ধানে চ্যানেল ২৪-এর লোগো ও ফটোকার্ড প্রকাশের তারিখের সূত্র ধরে গণমাধ্যমটির ফেসবুক পেজে সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের নয়াদিল্লিতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন’ শীর্ষক শিরোনাম সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও, চ্যানেল ২৪-এর ওয়েবসাইট কিংবা ইউটিউব চ্যানেলে উক্ত দাবির পক্ষে কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে চ্যানেল ২৪-এর ফেসবুক পেজে ২৩ ফেব্রুয়ারি প্রচারিত আরেকটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। যেখানে ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের নয়াদিল্লিতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন’ শীর্ষক শিরোনামে চ্যানেল ২৪-এর নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটিকে ভুয়া বলে শনাক্ত করা হয়। এছাড়াও পাঠকদের বিভ্রান্তি এড়াতে চ্যানেল ২৪-এর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ ও অনলাইনের সাথে যুক্ত থাকার আহ্বানও জানানো হয় ফটোকার্ডটির মাধ্যমে। রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ‘পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লিতে আজ ইন্তেকাল করেছেন’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত ফটোকার্ডটিতে যমুনা টেলিভিশনের লোগো রয়েছে এবং এটি প্রকাশের তারিখ ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫। পরবর্তী অনুসন্ধানে যমুনা টেলিভিশনের লোগো ও ফটোকার্ড প্রকাশের তারিখের সূত্র ধরে গণমাধ্যমটির ফেসবুক পেজে সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে ‘পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লিতে আজ ইন্তেকাল করেছেন’ শীর্ষক শিরোনামে কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও, যমুনা টেলিভিশনের ওয়েবসাইট কিংবা ইউটিউব চ্যানেলে উক্ত দাবির পক্ষে কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি, যমুনা টিভির ফেসবুক পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলোর সাথে আলোচিত ফটোকার্ডটিতে ব্যবহৃত ফন্টের ডিজাইনেরও ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়। আলোচিত পোস্টগুলিতে ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্থান টাইমস-এর ওয়েবসাইটের ঠিকানা সম্বলিত ‘ফর্মার বাংলাদেশী প্রাইম মিন্টিার পাসেস অ্যাওয়ে ইন ইন্ডিয়া’ শীর্ষক ইংরেজি শিরোনামের আরেকটি ফটোকার্ড প্রচার করা হয়। তবে ওই ফটোকার্ডে এটি প্রকাশের কোনো তারিখ উল্লেখ নেই। ওয়েবসাইটের সূত্র ধরে হিন্দুস্থান টাইমসের ফেসবুক পেজ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত ফটোকার্ডটির সাথে হিন্দুস্থান টাইমসের ফটোকার্ডের ডিজাইনের পার্থক্য রয়েছে। দুটি ফটোকার্ডের ডিজাইন সম্পূর্ণরূপে ভিন্ন। এছাড়াও হিন্দুস্থান টাইমসের ওয়েবসাইটেও এমন দাবির পক্ষে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরবর্তী আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেজের পোস্টটির বিষয়ে অনুসন্ধানে তাদের ভেরিফাইড পেজটি পর্যালোচনা করে রিউমর স্ক্যানার এমন কোনো পোস্টের অস্তিত্ব খুঁজে পায়নি। এছাড়াও আলোচিত পোস্টটিতে আওয়ামী লীগের পেজে একটি প্রোফাইল পিকচার দেখতে পাওয়া যায়। কিন্তু বর্তমানে পেজটিতে কোনো প্রোফাইল পিকচার দেওয়া নেই। সুতরাং, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে মারা গিয়েছেন দাবিতে ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যম যমুনা টেলিভিশন, চ্যানেল ২৪ কিংবা হিন্দুস্থান টাইমসের নামে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো ভুয়া ও বানোয়াট।

দেশ আজ সংকটময় সময় অতিক্রম করছে: খালেদা জিয়া
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্য থাকলেও জনগণের পাশে আছি। আমার অবর্তমানে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, সিনিয়র নেতৃবৃন্দ আপনাদের সকলকে সঙ্গে নিয়ে নিরন্তর কাজ করে দলকে সুসংহত করেছেন।’ বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিএনপির বর্ধিত সভায় লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি। জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় এ সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন নিহত সব শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন খালেদা জিয়া। দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, আপনারা প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শে আরো উজ্জীবিত হয়ে আগামী নির্বাচনে সাফল্যের জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবেন। এমন কোনো কাজ করবেন না যাতে আমাদের এতদিনকার সংগ্রাম, আত্মত্যাগ বিফলে যায়। আমাদের সব সময় প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সেই উক্তি মনে রাখা দরকার- ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়।’ খালেদা জিয়া বলেন, ‘দীর্ঘ ৬ বছর পর আপনার আবারও ফ্যাসিস্ট মুক্ত বাংলাদেশে একত্রিত হতে পেরেছেন। আল্লাহর কাছে হাজার শুকরিয়া আদায় করছি। দীর্ঘ ফ্যাসিবাদের আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন এবং সম্প্রতি জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে শাসকদের নির্মম দমন-নীপড়নের কারণে গণহত্যায় শহীদ হয়েছেন তাদের প্রতি আমি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। আহতদের প্রতি জানাচ্ছি আন্তরিক সমবেদনা।’ চিকিৎসার কারণে যুক্তরাজ্যে থাকলে আমি সব সময় আপনাদের সঙ্গে আছি উল্লেখ করে খালেদ জিয়া বলেন, ‘দীর্ঘ ১৫ বছর যারা গণতন্ত্রের জন্য ও আমার মুক্তির জন্য আমাদের অসংখ্য সহকর্মী প্রাণ দিয়েছেন, জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এবং প্রায় সোয়া লক্ষ্য মিথ্যা মামলায় জর্জরিত হয়ে এখনও আদালতের বারান্দায় ন্যায় বিচারের জন্য ঘুরে বেড়াচ্ছেন, আপনাদের এ ত্যাগ শুধু দল নয়, জাতি চিরকাল স্মরণে রাখবে।’ দেশ আজ এক সংকটময় সময় অতিক্রম করছে বলে উল্লেখ করে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের ও ছাত্রদের সমন্বিত আন্দোলনের ফলে ফ্যাসিস্ট শাসকেরা বিদায় নিয়েছে। একটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। তাদের কাছে জনগণের প্রত্যাশা রাষ্ট্র মেরামতের ন্যূনতম সংস্কার দ্রুত সম্পন্ন করে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার জন্য সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা।’ খালেদা জিয়া আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষ, বিশেষ করে তরুণ সমাজ আজ এক ইতিবাচক গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সংকীর্ণতা ভুলে দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে আমাদের কাজ করতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এখনও ফ্যাসিস্টদের দোসররা ও বাংলাদেশের শত্রুরা গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্জনকে নস্যাৎ করার জন্য গভীর চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে। ইস্পাত-কঠিন ঐক্যের মাধ্যমে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এ চক্রান্তকে ব্যর্থ করে দিতে হবে। গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য আমাদের সকলকে এক যোগে কাজ করতে হবে।’ খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমি যুক্তরাজ্য থেকে অসুস্থ অবস্থায় আপনাদের আহ্বান জানাতে চাই- আসুন, জনগণকে সম্পৃক্ত করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলকে পূর্বের ন্যায় আন্দোলন, সংগ্রাম ও রাষ্ট্র পরিচালনায় নেতৃত্ব প্রদানে আরও ঐক্যবদ্ধ ও সুসংহতভাবে গড়ে তুলি।’ দেশবাসীর উদ্দেশ্য খালেদা জিয়া বলেন,‘ আসুন প্রতিহিংসা, প্রতিশোধ নয়, পারস্পরিক ভালোবাসা ও ভ্রাতৃত্বের মাধ্যমে আমরা সকলে মিলে আমাদের প্রিয় বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থেই একটি বাসযোগ্য, উন্নত ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করি।’

মাফিয়াচক্রকে পুনর্বাসনের স্থানীয় নির্বাচন থেকে সরে আসুন: তারেক রহমান
সংস্কার কিংবা স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে জনগণের সামনে এক ধরনের ধূম্রজাল সৃষ্টি করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান- সারাদেশে গণহত্যাকারীদের দোসর মাফিয়াচক্রকে পুনর্বাসনের স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা থেকে সরে আসুন। অবিলম্বে অন্তর্বর্তী সরকারের আগামী দিনের সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনার রোডম্যাপ ঘোষণা করুন।’ বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হল সংলগ্ন মাঠে অনুষ্ঠিত বিএনপির বর্ধিত সভায় লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে উদ্বোধনী বক্তব্যে এসব কথা বলেন তারেক রহমান। ‘সুদৃঢ় ঐক্যই রুখে দিতে পারে সব ষড়যন্ত্র’ স্লোগানে সাত বছর পর শুরু হয়েছে বিএনপির বর্ধিত সভা। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘গণতন্ত্রকামী জনগণ মনে করে স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে সেটি হবে সারাদেশে পলাতক স্বৈরাচারের দোসরদের পুনর্বাসনের একটি প্রক্রিয়া যা সরাসরি গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাবিরোধী। গণহত্যাকারী টাকাপাচারকারী দুর্নীতিবাজ মাফিয়া চক্রকে পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার এই ফাঁদে বিএনপি পা দেবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি জনরায়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে গণহত্যাকারী-মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি করবে।’

তরুণদের সম্ভাব্য নতুন দল ‘এসিপি’, গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকছেন নারীরাও
নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের আশা জাগিয়ে আত্মপ্রকাশ ঘটতে যাচ্ছে ছাত্র-জনতার নতুন রাজনৈতিক দলের। সেই দলের সম্ভাব্য নাম ‘অল সিটিজেনস পার্টি (এসিপি)’ চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে একাধিক সূত্র। জানা গেছে, শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে জাতীয় সংসদের সামনে বড় জমায়েতের মাধ্যমে বহুল কাঙ্ক্ষিত এ রাজনৈতিক শক্তির আত্মপ্রকাশ ঘটবে। তার জন্য মেট্রোপলিটন পুলিশকেও জানানো হয়েছে। এদিকে, দল গঠনকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগে চূড়ান্ত করা হয়েছে দলের নাম ও কেন্দ্রীয় কমিটি। তবে কেন্দ্রীয় কমিটির শীর্ষ দুই পদ ছাড়া বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদে নারীরা আসছেন বলে জানা গেছে।

বিএনপির বর্ধিত সভা শুরু, প্রধান অতিথি খালেদা জিয়া
‘সুদৃঢ় ঐক্যই রুখে দিতে পারে সকল ষড়যন্ত্র’-স্লোগানে বিএনপির বর্ধিত সভা শুরু হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। সভায় অংশ নিয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় থেকে তৃণমূলের সাড়ে ৩ হাজার নেতাকর্মী। বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হল সংলগ্ন মাঠে সকাল ১১টা ৫ মিনিটে পবিত্র কোরআন তেওয়ালাতের মধ্য দিয়ে সভা শুরু হয়। এতে লন্ডন থেকে ভার্চু্যয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সভার উদ্বোধন ও সমাপনী পর্বে বক্তব্য রাখবেন তিনি। বর্ধিত সভায় উপস্থিত আছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সালাহউদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান ও হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। এছাড়াও দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সদস্য, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সকল কর্মকর্তা ও সদস্য, সকল মহানগর, জেলা, থানা-উপজেলা-পৌর কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক অথবা আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবরা রয়েছেন। এর বাইরেও বিএনপির ১১টি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সদস্য সচিবরা উপস্থিত আছেন। দীর্ঘ সময় পর দলের এ আয়োজনে সারাদেশ থেকে নেতাকর্মীরা দলে দলে যোগ দিয়েছেন। দলের কাছে নিজেদের প্রত্যাশার কথা তুলে ধরে বক্তব্য দেবেন। সেগুলো আমলে নিয়ে কর্মকৌশল নির্ধারণ করবে বিএনপি। বর্ধিত সভা সফল করতে ছয়টি উপ-কমিটি করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে- ব্যবস্থাপনা কমিটি (আহ্বায়ক-শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি), অভ্যর্থনা কমিটি (আহ্বায়ক হাবিব উন-নবী খান সোহেল), আপ্যায়ন কমিটি (আহ্বায়ক এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত), শৃঙ্খলা কমিটি (আহ্বায়ক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু), মিডিয়া কমিটি (আহ্বায়ক মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল) এবং চিকিৎসা সেবা কমিটি (আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম)। সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ‘লো মেরিডিয়ানে’ বর্ধিত কমিটির সভা হয় যেখানে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বক্তব্য দেন। এর চার দিন পর ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় কারাবরণ করেন তিনি।

বিএনপির বর্ধিত সভা আজ, প্রাধান্য পাবে যেসব বিষয়
নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানামুখী আলোচনার মধ্যে অর্ধযুগেরও বেশি সময় পর বর্ধিত সভা করছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হল প্রাঙ্গণে এ সভা শুরু হবে। সভায় বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদ ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং মহানগর ও জেলার সব থানা, উপজেলা, পৌর কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক অথবা আহ্বায়ক ও সদস্যসচিবসহ প্রায় চার হাজার নেতাকর্মী অংশ নেবেন। এর বাইরে ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের চূড়ান্ত মনোনয়ন পাওয়া এবং মনোনয়নের জন্য প্রাথমিক চিঠি পাওয়া নেতারাও সভায় উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সভায় তৃণমূল নেতাদের বক্তব্য শুনবেন এবং নতুন বার্তা দেবেন। দলের পক্ষ থেকে এটিকে ‘বিশেষ বর্ধিত সভা’ হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে। তবে সভার সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা কী হতে পারে, সে সম্পর্কে খোদ দলের নেতাকর্মীরাই এখনো অন্ধকারে। গুঞ্জন রয়েছে, বর্ধিত সভা থেকে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সাংগঠনিক এবং আগামী নির্বাচনের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসতে পারে। এ সভার মধ্য দিয়ে বিএনপি নির্বাচনমুখী যাত্রা শুরু করবে বলেও মনে করছেন দলের নেতাকর্মীরা। জানা গেছে, বিএনপি এখন অনেকটাই নির্বাচনমুখী। দলটির সব মনোযোগ এখন নির্বাচন ঘিরে। দলটি মনে করছে, অতিপ্রয়োজনীয় ন্যূনতম সংস্কার শেষ করে যত দ্রুত সম্ভব দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হওয়া প্রয়োজন। এজন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে চাপেও রাখতে চায় তারা। বিএনপির নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, দলের নেতাকর্মীদের বিশেষ বর্ধিত সভার সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা সম্পর্কে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। তবে নেতাকর্মীদের অনুমান, চলমান পরিস্থিতিতে বিএনপির সপ্তম জাতীয় কাউন্সিল হয়তো না-ও হতে পারে। সেক্ষেত্রে দলের মহাসচিব, সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটিসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে রদবদলের সিদ্ধান্ত আসতে পারে বিশেষ বর্ধিত সভা থেকে। এছাড়া বর্ধিত সভা থেকে আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ২২০-২২৫টি আসনে ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সবুজ সংকেত দেওয়া হতে পারে। বাকি আসনগুলো বরাদ্দ রাখা হতে পারে জোটে বা যুগপৎ আন্দোলনে থাকা মিত্র দলগুলোর জন্য। সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ নতুন মুখ এবং ৮০ শতাংশ পুরোনো মুখ সবুজ সংকেত পেতে পারেন। এক্ষেত্রে ৫ শতাংশ আমলা, ৩০ শতাংশ ব্যবসায়ী ও বাকি ৬৫ শতাংশ থাকতে পারেন রাজনীতিবিদ। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘বর্ধিত সভায় বহু সংখ্যক দলীয় নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণের অদম্য ইচ্ছার প্রকাশ দেখে দল অভিভূত। তবে বর্ধিত সভায় পূর্ব নজির অনুযায়ী দলের তৃণমূল থেকে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত নির্ধারিত নেতৃবৃন্দকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সে কারণে নির্ধারিত নেতৃবৃন্দ ছাড়া অন্য কাউকে আমন্ত্রণ জানানো সম্ভব হচ্ছে না।’ দলের নেতাকর্মীদের জানানো যাচ্ছে যে, দলের যে সব নেতৃবৃন্দ, সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ীরা সভাস্থলে উপস্থিত থাকতে পারবেন না তাদের জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলের আশেপাশে অহেতুক ভিড় করে যানবাহনসহ মানুষের চলাচলে বিঘ্ন না করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।

চার পদ রেখে জাতীয় নাগরিক কমিটির সব সেল বিলুপ্ত ঘোষণা
রাজনৈতিক দল গঠনকে কেন্দ্র করে জাতীয় নাগরিক কমিটি (জানাক) নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক, সদস্য সচিব, মুখপাত্র, মুখ্য সংগঠক ছাড়া জাতীয় নাগরিক কমিটির অন্যসব অর্গানোগ্রাম, নির্বাহী কমিটি, সেল ও সার্চ কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ১১তম সাধারণ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তা জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, আহ্বায়ক, সদস্য সচিব, মুখপাত্র, মুখ্য সংগঠক ছাড়া জাতীয় নাগরিক কমিটির অবশিষ্ট অর্গানোগ্রাম, নির্বাহী কমিটি, সেল ও সার্চ কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। আসন্ন রাজনৈতিক দলে যোগদানকারী সব কেন্দ্রীয় সদস্যের সদস্যপদ আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি দল ঘোষণার পূর্ব পর্যন্ত বহাল থাকবে। রাজনৈতিক দলে অন্তর্ভুক্তির সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সদস্যের জানাক সদস্যপদ বাতিল হিসেবে গণ্য হবে। দলে যোগ দিচ্ছেন না এমন সদস্যদের সদস্যপদ বহাল থাকবে। এতে আরও বলা হয়, আহ্বায়ক, সদস্য সচিব, মুখপাত্র, মুখ্য সংগঠক আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে পরবর্তী ১৫ দিন অনানুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব পালন করবেন। তাদের উদ্যোগে জাতীয় নাগরিক কমিটির তিন জনের আনুষ্ঠানিক ফোরাম পরবর্তী অর্গানোগ্রাম নির্ধারণ করবেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতায় আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি নতুন দল আত্মপ্রকাশের মাধ্যমে জানাকের রাজনৈতিক দল গঠনের ঐতিহাসিক দায়িত্ব সম্পন্ন হয়েছে। দল গঠনের পর থেকে জানাক সিভিল-পলিটিক্যাল প্ল্যাটফর্ম হিসেবে থেকে যাবে। আর কোনো দল গঠনের উদ্যোগ নেবে না। এছাড়া, আগামী দিনে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং জনগণের স্বার্থে জাতীয় নাগরিক কমিটি সর্বদা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ও সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাবে।