অভ্যুত্থানের নায়করা নতুন দলের মঞ্চে
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৫:৪২ পিএম, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

‘নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের’ প্রতিশ্রুতি নিয়ে নতুন রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’র (এনসিপি) আত্মপ্রকাশের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে ধর্মগ্রন্থ পাঠের মধ্য দিয়ে।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকাল সোয়া ৪টার দিকে ঢাকার মানিক মিয়া এভিনিউয়ে কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে এ অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এরপর একে একে পাঠ করা হয় গীতা, ত্রিপিটক ও বাইবেল থেকে। এরপর পরিবেশন করা হয় জাতীয় সংগীত।
এর মধ্যে সমাবেশস্থল ও আশপাশের এলাকা সমর্থকদের অংশগ্রহণে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। সমাবেশের নির্ধারিত অংশের বাইরে দক্ষিণ প্লাজার সামনের অংশে খামারবাড়ি পর্যন্ত প্রায় পুরো সড়কেই অবস্থান রয়েছে মানুষের।
জাতীয় সংগীতের পর চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন এবং প্রত্যেকের ধর্ম অনুযায়ী প্রার্থনা করা হয়।
বক্তৃতা পর্বের শুরুতে জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল্লাহ হায়দার বলেন, ‘এই তরুণদের নেতৃত্বে আগামীর বাংলাদেশ গত ৫৩ বছরে মানুষের যে অধিকার প্রতিষ্ঠা করা যায় নাই, সে অধিকার প্রতিষ্ঠা করার সংগ্রাম প্রতিষ্ঠা করা হবে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহিন সরকার বলেন, ‘নাগরিক পার্টি মনে করে, শহীদ ও আহতদের স্পিরিট ধারণ করে কীভাবে দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকতে পারে, কিন্তু দেশের স্বার্থে আমরা এক থাকব।’
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পক্ষে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহরিয়ার হাসনাত অপু বক্তব্য দেন।
এরপর মঞ্চের ডাকা হয় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের নায়কদের। একে একে মঞ্চে আসেন নাহিদ ইসলাম ও আখতার হোসেনসহ নেতারা। তারপর দেখানো হয় জুলাই অভ্যুত্থানের ওপর নির্মিত আরেকটি ডকুমেন্টারি।
দুপুরে জুমার নামাজের পর থেকেই ছোট ছোট মিছিল নিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে জড়ো হতে দেখা যায় ছাত্র-জনতাকে। এ সময় মঞ্চের মাইক থেকে ঘোষণা দেওয়া হচ্ছিল- কোন কোন এলাকা থেকে কার নেতৃত্বে মিছিল আসছে।
মঞ্চের সামনেই রাজনৈতিক নেতা, কূটনীতিক ও আমন্ত্রিত অতিথিদের আসন সাজানো রয়েছে। এরপরেই শহীদ পরিবার, জুলাই যোদ্ধা পরিবারের জন্য আসন।
অনুষ্ঠান শুরু হলেও বিভিন্ন স্থান থেকে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে ছাত্র-জনতাকে সমাবেশস্থলে মিলিত হতে দেখা গেছে।
সহযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণা দিতে অনুষ্ঠাস্থলে এসেছেন আন্দোলনে আহতরা। গত ৪ অগাস্টে ইব্রাহিমপুরে আহত হয়েছিলেন আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘দেশের দূর্নীতিগুলো যেন দূর করা হয়, ইদানীং দেশে ছিনতাই-সন্ত্রাস বেড়েছে- তারা যেন এগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, এই প্রত্যাশা নতুন দলের প্রতি।’
সড়কের ওপর মঞ্চ তৈরি করায় মিরপুর সড়কের আড়ং থেকে খামারবাড়িমুখী রাস্তা বন্ধ রয়েছে। বিকাল ৩টার পর থেকে অপরপাশে খামারবাড়ি থেকে আড়ংমুখী সড়কেও যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ জন্য ‘সাময়িক অসুবিধার’ জন্য এনসিপির পক্ষ থেকে ‘দুঃখ প্রকাশ’ করে বিবৃতি দেওয়া হয়।
দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে দলটির নেতা কর্মীদের পাশাপাশি জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ পরিবারের সদস্য ও আহতরা অংশ নিয়েছেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অংশ নিয়েছেন।