গ্রেটা থুনবার্গসহ ১৬৫ জন অভিযাত্রীকে গ্রিসে পাঠাচ্ছে ইসরায়েল
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৩:২৫ পিএম, ০৬ অক্টোবর ২০২৫

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার জন্য মানবিক সহায়তা নিয়ে যাত্রা শুরু করা ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ অভিযানে অংশ নেওয়া সুইডিশ পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গসহ ১৬৫ জন অভিযাত্রীকে গ্রিসে ফেরত পাঠাচ্ছে ইসরায়েল। শনিবার ইসরায়েলি টেলিভিশন চ্যানেল আই টুয়েন্টিফোর নিউজ এই তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আটক অভিযাত্রীদের মধ্যে যারা গ্রিসের নাগরিক এবং যারা গ্রেটা থুনবার্গসহ নির্দিষ্ট তালিকায় রয়েছেন, তাদের একটি স্পেশাল ফ্লাইটে করে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।
গত ৩১ আগস্ট স্পেনের একটি বন্দর থেকে গাজার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছিল খাদ্য ও ওষুধবাহী ৪৩টি নৌযান। এই হিউম্যানিটারিয়ান মিশন পরিচালনা করছিল ফিলিস্তিনকেন্দ্রিক চারটি আন্তর্জাতিক সংগঠনের জোট ‘ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন’। সংগঠনগুলো হলো ফ্রিডম ফ্লোটিলা ফাউন্ডেশন, গ্লোবাল মুভমেন্ট টু গাজা, মাগরেব সুমুদ ফ্লোটিলা এবং সুমুদ নুসানতারা।
এই অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন বিশ্বের ৪৪টি দেশের প্রায় ৫০০ জন নাগরিক। তাদের মধ্যে ছিলেন পার্লামেন্ট মেম্বার, লইয়ার, পলিটিকাল অ্যাক্টিভিস্ট এবং বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ভলান্টিয়ার। এই দলে ছিলেন সুইডেনের পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ এবং দক্ষিণ আফ্রিকার অবিসংবাদিত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি ও রাজনীতিক মান্ডলা ম্যান্ডেলাও।
গত বুধবার রাতে প্রথমে ১৩টি নৌযান আটক করে ইসরায়েলের নেভাল ফোর্স; কিন্তু এরপর বাকি ৩০টি জাহাজ গাজার দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে ছিল পোল্যান্ডের জাহাজ ‘ম্যারিনেত্তি’। তবে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার একে একে সব নৌযান আটক করা হয় এবং অভিযাত্রীদের ইসরায়েলের আশদোদ বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়।
আই টুয়েন্টিফোর নিউজ-এর বরাতে জানা যায়, আটক অভিযাত্রীদের মধ্যে কিছু সংখ্যককে দেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তবে বাকিদের বিরুদ্ধে লিগ্যাল অ্যাকশন নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের।
অন্যদিকে, গ্রেটা থুনবার্গের আটক অবস্থার অভিজ্ঞতা নিয়ে ব্রিটিশ মিডিয়া দ্য গার্ডিয়ান জানায়, তাকে ইসরায়েলে থাকা অবস্থায় সুইডিশ এম্ব্যাসির কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়েছিল। গ্রেটা জানিয়েছেন, তাকে একটি ছারপোকায় ভর্তি ডিটেনশন সেল-এ রাখা হয়েছে এবং পর্যাপ্ত খাবার ও পানি দেওয়া হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, “আমাকে জোর করে ইসরায়েলি পতাকায় চুমু খেতে বাধ্য করা হয়েছে এবং সেই পতাকা হাতে ছবি তুলতে বলা হয়েছে।”
অভিযাত্রী দলের আরেক সদস্য, ইতালীয় সাংবাদিক লরেঞ্জো দি’ আগুস্টিনো গার্ডিয়ান-কে বলেন, “আমাদের সবার সামনেই গ্রেটাকে হামাগুড়ি দিয়ে চলতে, ইসরায়েলের পতাকাকে চুমু খেতে এবং পতাকা গায়ে জড়িয়ে হাঁটতে বাধ্য করা হয়েছে।”
এই ঘটনা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হিউম্যান রাইটস ভায়োলেশন-এর অভিযোগ উঠেছে।
সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি