ক্ষমতায় গেলে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক হবে পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতে: ডা. শফিকুর রহমান
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ১২:৩৮ এম, ২৪ অক্টোবর ২০২৫

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, তার দল যদি দেশ পরিচালনার সুযোগ পায়, তাহলে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক হবে পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতে। তিনি বলেন, “মানুষ নিজের জায়গা বদলাতে পারে, কিন্তু প্রতিবেশী বদলাতে পারে না। আমরা আমাদের প্রতিবেশীকে সম্মান করতে চাই এবং একইভাবে প্রতিবেশীর কাছ থেকেও সম্মান প্রত্যাশা করি।”
বুধবার (২২ অক্টোবর) স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্র সফরের প্রথম দিনে নিউইয়র্কে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “বাংলাদেশের চেয়ে ভারত আয়তনে ২৬ গুণ বড় দেশ। তাদের সম্পদ ও জনশক্তি আমাদের চেয়ে অনেক বেশি। আমরা তাদের অবস্থানকে সম্মান করি। তবে আমাদের ছোট ভূখণ্ড ও প্রায় ১৮ কোটি মানুষের অস্তিত্বকেও তাদের সম্মান করতে হবে—দিস ইজ আওয়ার ডিমান্ড।” তিনি আরও বলেন, “এভাবে পারস্পরিক সম্মান বজায় থাকলে দুই প্রতিবেশী শুধু ভালোই থাকবে না, বরং একে অপরের কারণে বিশ্ব দরবারে আরও সম্মানিত হবে।”
বিভিন্ন ধর্মের মানুষের অধিকার সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে জামায়াত আমির বলেন, “গত দেড় বছরে আমাদের কার্যক্রমের মাধ্যমেই আমরা এ প্রশ্নের জবাব দিয়েছি। একটি বিষয় পরিষ্কার করতে চাই—গত ৫৪ বছরে বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষ দেশ ত্যাগ করেছে, মুসলমানও করেছে। আমরা জোর করে কাউকে থামানোর পক্ষে নই, আবার কাউকে দেশ ছাড়তেও বাধ্য করার পক্ষে নই।”
তিনি বলেন, “আমরা মেজোরিটি-মাইনরিটি ধারণায় বিশ্বাস করি না। আমরা বলি, ‘উই নিড ইউনিটি’। মেজোরিটি-মাইনরিটি বলা মানেই বিভাজন তৈরি করা, যা একদলকে অন্য দলের মুখোমুখি দাঁড় করায়। গত ৫৪ বছরে আমরা এর ভয়াবহতা দেখেছি—আর দেখতে চাই না।”
জাতিগত ঐক্যের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমাদের কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও সভ্যতার ভিত্তিতে যুগের পর যুগ আমরা মিলেমিশে বসবাসের যে ঐতিহ্য গড়ে তুলেছি, সেটিকেই পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চাই। যে কালো দাগগুলো পড়েছে, সেগুলো মুছে ফেলব ইনশাআল্লাহ, যাতে দল ও ধর্মের বিভাজনে জাতি আর বিভক্ত না হয়।”
সম্পত্তি দখল নিয়ে প্রশ্নে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “আমরা মনে করি, গত ৫৪ বছরে কেউ যদি কারও সম্পত্তি অবৈধভাবে দখল করে থাকে এবং তার প্রমাণ থাকে, তবে আমরা সেই সম্পত্তি ফিরিয়ে দেওয়ার পক্ষে—এটাই আমাদের অবস্থান।”
যুক্তরাষ্ট্র সফরে তিনি দেশটির কোনো শীর্ষ রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে বৈঠক করবেন কি না—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “এই প্রশ্নের উত্তর বৃহত্তর স্বার্থে আপাতত এড়িয়ে যাচ্ছি।”
নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত ওই সভায় প্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিকরাও উপস্থিত ছিলেন। জামায়াতের কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগের মুজিবুল আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।