দেশ ও গণতন্ত্রের স্বার্থে ঐক্য ভাঙা যাবে না: দুদু
- নিউজ ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৩:৫০ পিএম, ২৩ অক্টোবর ২০২৫

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক নাগরিক সমাবেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, দেশ ও গণতন্ত্রের স্বার্থে যে রাজনৈতিক শক্তিগুলো নির্বাচনে অংশ নেবে, তাদের ঐক্য অটুট রাখতে হবে এবং সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “ঐক্য ভাঙা যাবে না।”
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার আন্দোলনের আয়োজনে এই নাগরিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ‘নির্বাচনে সমান প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র নিশ্চিত করা এবং প্রশাসনে লুকিয়ে থাকা আওয়ামী লীগের সহযোগীদের গ্রেপ্তার’ এই দাবিতেই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
সমাবেশে দুদু বলেন, “একটি কথা আমাদের সবাইকে মনে রাখতে হবে। গণহত্যাকারীরা পালিয়ে গেছে। ব্যাংক, বীমা, বাংলাদেশের যা কিছু অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান ছিল, সেগুলোকে ধ্বংস করে চূড়ান্তভাবে লুটপাট করে নিয়ে গেছে। এর মানে তারা আমাদের পঙ্গু করার চেষ্টা করেছে, বাংলাদেশকে ধ্বংস করার চেষ্টা করেছে। তারা একেবারে চলে গেছে, এটি যদি আমরা সত্যি ধরে নিই, তাহলে সেটাও ভুল হবে।”
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের দাবি দেশের সাধারণ মানুষেরই; কৃষক, শ্রমিক থেকে শুরু করে খেটে খাওয়া প্রতিটি শ্রেণির মানুষ ভোট দিতে ও নিজেদের অধিকার আদায় করতে চায়। “বিএনপি, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান গত ষোল বছর ধরে মানুষের সঙ্গে থেকে রাস্তায় আন্দোলন করেছেন,” বলেন দুদু। “আমাদের নেত্রীকে মিথ্যা মামলায় ১০ বছর সাজা দেওয়া হয়েছিল। তিনি দীর্ঘদিন আটক ছিলেন এবং পর্যাপ্ত চিকিৎসা পাননি; আল্লাহ তাকে রক্ষা করেছেন। আমাদের নেতা তারেক রহমানের বিরুদ্ধেও কেবল মামলা নয়, বিচারের নামে যাবজ্জীবনের মতো শাস্তি দেওয়া হয়েছে। অনেকেই বিশ্বাস করেন না যে তিনি দেশে ফিরলে নিরাপদ থাকবেন। তাই তিনি সময় নিচ্ছেন এবং দলও প্রস্তুতি নিচ্ছে।”
ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি দুদু সতর্ক করে বলেন, “আগামী দিন যদি আমরা প্রস্তুত না থাকি, আমাদের বিপদ আসতে পারে।” তিনি বলেন, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে এবং এমন একটি দলকে ক্ষমতায় আনতে হবে, যারা পরীক্ষিত ও জনগণের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। “আমার মনে হয় সেই দল হচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), যার প্রতীক ধানের শীষ এবং নেতা বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান,” বলেন তিনি।
দুদু আরও বলেন, “আমাদের আগামী দিনের শপথ হবে, যেন ফ্যাসিস্টরা, যারা হত্যাকারী ও গণহত্যাকারী; তারা আর কখনো ফিরে না আসতে পারে। এটিই আমাদের লক্ষ্য হতে হবে। আমি মনে করি, এর বাইরে কোনো পথ নেই।”
সবশেষে তিনি সবাইকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, “চলুন আমরা সুশৃঙ্খল, স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ হই। যারা আগের তিনটি নির্বাচনে অংশ নিয়ে লুটপাট করেছে বা অন্যায় করেছে, তারা যেন আর প্রশাসনে স্থান না পায়।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, সরকার ইতোমধ্যে জানিয়েছে, অতীতে এমন আচরণকারী ব্যক্তিদের ভবিষ্যতে দায়িত্বে রাখা হবে না।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি এম জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মো. রহমতুল্লাহ, শাহা নেচারুল হক, কৃষকদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহা আব্দুল্লাহ আল বাকি, পাঠাগার সম্পাদক আব্দুর রাজি, কৃষকদল নেতা শফিকুল ইসলাম সবুজ, রমিজ উদ্দিন রুমি, রবিউল ইসলাম তালুকদার রবি, আমির হোসেন দানেজ ও মো. মুসা ফরাজী প্রমুখ।