তাইওয়ান দখল করতে চায় না চীন: ট্রাম্পের দাবি
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০১:০৫ পিএম, ২১ অক্টোবর ২০২৫

চীনকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানে যখন উত্তেজনা তুঙ্গে, ঠিক তখনই দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানালেন, বেইজিংয়ের আমন্ত্রণে আগামী বছরের শুরুতে তিনি চীন সফরে যাচ্ছেন। একইসঙ্গে তিনি দাবি করেছেন, তাইওয়ান দখলের কোনো ইচ্ছা নেই চীনের।
সোমবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, "আমাকে চীন সফরের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে এবং আমি আগামী বছরের প্রথম দিকেই সেখানে যাচ্ছি। বিষয়টি মোটামুটি ঠিক হয়ে গেছে।" তার এই মন্তব্য আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর।
চলতি মাসের শেষদিকে দক্ষিণ কোরিয়ায় চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকেও মিলিত হবেন বলে জানান ট্রাম্প। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই বৈঠকে একটি "ন্যায়সঙ্গত" বাণিজ্য চুক্তি সই হতে পারে।
চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনার কেন্দ্রে রয়েছে শুল্ক ও বাণিজ্য নিয়ে বিবাদ। এক সপ্তাহ আগেই বাণিজ্যযুদ্ধ ফের শুরু হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়, যখন চীন বিরল খনিজ রপ্তানিতে নতুন সীমাবদ্ধতা আরোপ করে। জবাবে ট্রাম্প পাল্টা হুঁশিয়ারি দেন, চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক ১০০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে। তবে সোমবার তিনি কিছুটা শান্ত কণ্ঠে বলেন, দুই দেশকে একসঙ্গে এগোতে হবে।
ট্রাম্প আরও জানান, বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য-পশ্চিমাঞ্চলের কৃষকেরা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তিনি বলেন, চীন যেন যুক্তরাষ্ট্রের সয়াবিন কেনে, এতে কৃষকেরা উপকৃত হবেন। তার বক্তব্যের পরপরই শিকাগো বোর্ড অব ট্রেডে সয়াবিনের দাম এক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে যায়।
তাইওয়ান ইস্যুতে ট্রাম্পের মন্তব্য কিছুটা ব্যতিক্রমী। এর আগে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ দাবি করেছিল, ২০২৭ সালের মধ্যে তাইওয়ান দখলের পরিকল্পনা রয়েছে বেইজিংয়ের। তবে ট্রাম্প বলেন, "চীনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ভালো থাকবে। তারা এটা (তাইওয়ান দখল) করতে চায় না।" অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজের সঙ্গে বৈঠকের সময় তিনি এ মন্তব্য করেন।
তবে ট্রাম্প স্বীকার করেন, তাইওয়ান নিয়ে চীনের আগ্রহ রয়েছে। তিনি তাইওয়ানকে শি জিনপিংয়ের "চোখের মণি" বলেও উল্লেখ করেন। তবুও তিনি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেন, চীন জানে যুক্তরাষ্ট্রই বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক শক্তি, আর সেই কারণে তারা সামরিক পদক্ষেপে যাবে না। "আমাদের সব ক্ষেত্রেই শ্রেষ্ঠত্ব আছে, কেউ এটা নিয়ে খেলতে পারবে না," বলেন ট্রাম্প।
তবে এ ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় পূর্বেও কড়া অবস্থান নিয়েছে। গত জুনে সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত ‘শ্যাংরি-লা ডায়ালগ’ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ চীনকে এই অঞ্চলের জন্য ‘হুমকি’ হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন। জবাবে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, যুক্তরাষ্ট্র যেন তাইওয়ানকে তাদের বিরুদ্ধে কৌশলগত হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার না করে এবং "আগুন নিয়ে খেলা" না করে।
সূত্র: আল জাজিরা