‘ইমপোর্ট কুরিয়ার সেকশন থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে মনে হচ্ছে’: বেবিচক চেয়ারম্যান
- নিউজ ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৪:১৭ পিএম, ২১ অক্টোবর ২০২৫

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো টার্মিনালে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া অগ্নিকাণ্ডের সম্ভাব্য উৎপত্তি স্থল হিসেবে ‘ইমপোর্ট কুরিয়ার সেকশন’-এর দিকে ইঙ্গিত করেছেন বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকাল ১১টায় বেবিচকের সদর দপ্তরে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, “ইমপোর্ট কুরিয়ার সেকশন থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে মনে হচ্ছে। বিষয়টি আমরা নিশ্চিত নই। প্রাথমিকভাবে এমনটিই ধারণা করা হচ্ছে। অনেকগুলো সংস্থা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। তাদের তদন্ত শেষে আগুনের প্রকৃত ও সুনিশ্চিত কারণ জানা যাবে।”
ব্রিফিংয়ে বেবিচক চেয়ারম্যান জানান, আগুন লাগার সময় বিমানবন্দর এলাকায় ১৫টি ফ্লাইট পরিচালনার জন্য বিকল্প রুট ব্যবহার করা হয়। ফলে যাত্রীরা সাময়িকভাবে দুর্ভোগে পড়লেও, পরদিন বিকেল ৪টার মধ্যে সবাইকে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়েছে।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার সময়কার প্রতিক্রিয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে বিমানবন্দরের নিজস্ব ফায়ার ইউনিট ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের আরও দল যোগ দিলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।”
তিনি জানান, আগুন প্রথম ধরা পড়ে দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে, যখন টার্মিনাল টাওয়ার থেকে ধোঁয়া দেখা যায়। তাৎক্ষণিকভাবে প্রয়োজনীয় সব সংস্থা সক্রিয় হয়ে যায়।
চেয়ারম্যান আরও বলেন, “প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, আগুনের সূত্রপাত হয় ইমপোর্ট কুরিয়ার সেকশন থেকে। তবে এটি এখনো তদন্তাধীন বিষয়। একাধিক তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। সঠিক কারণ তারা বের করবেন। নির্ভরযোগ্য তথ্য ছাড়া কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না।”
তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, “আগুনের সময় উত্তর পাশে বিমানের হ্যাঙ্গার এবং দক্ষিণ পাশে মূল টার্মিনাল ভবন ছিল, কিন্তু আমাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টায় আগুন সেই অংশগুলোতে ছড়িয়ে পড়েনি। আল্লাহর রহমতে কোনো প্রাণহানি ঘটেনি।”
ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, ঘটনাস্থলে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সমন্বয়ে দ্রুত উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। বিমানবাহিনীর একে খন্দকার ঘাঁটি থেকে তিনটি এবং বাসার বিমানঘাঁটি থেকে দুটি ফায়ার ভেহিকল এসে ২০ মিনিটের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। সব মিলিয়ে ৪০টির বেশি ফায়ার ফাইটিং ভেহিকল অংশ নেয় দমকল অভিযানে।
চেয়ারম্যান বলেন, আগুন লাগার সময় টার্মিনালের ভেতরে থাকা কয়েকটি বিমানকে দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়, যাতে আগুন ছড়িয়ে পড়ার কোনো ঝুঁকি না থাকে। “উত্তর ও দক্ষিণ উভয় পাশেই কাট-অফ মেকানিজম ব্যবহার করে আমরা আগুন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হই,” তিনি বলেন। সকল বাহিনীর সমন্বিত প্রচেষ্টায় বড় ধরনের বিপর্যয় এড়ানো গেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।