১৩৫ ফিলিস্তিনির বিকৃত মরদেহ ফেরত দিল ইসরায়েল
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৯:১৭ এম, ২১ অক্টোবর ২০২৫

চুক্তি মোতাবেক গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলে অন্তত ১৩৫ জন ফিলিস্তিনির বিকৃত মরদেহ ফেরত দিয়েছে ইসরায়েল।
হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে সংবাদপত্র দ্য গার্ডিয়ান মঙ্গলবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, মরদেহগুলো নেগেভ মরুভূমিতে অবস্থিত কুখ্যাত দে তেইমান সামরিক ঘাঁটি থেকে এসেছে, যেখানে দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিনি বন্দিদের ওপর নির্যাতন, হত্যা ও চিকিৎসা অবহেলার অভিযোগ রয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক ড. মুনির আল-বারশ নিশ্চিত করেছেন, প্রতিটি মরদেহব্যাগের ট্যাগে হিব্রু ভাষায় দে তেইমান ঘাঁটির কথা লেখা আছে।
খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মরদেহগুলোর বেশিরভাগের হাত বাঁধা ছিল, অনেকের শরীরে কাছ থেকে গুলির দাগ ও নির্যাতনের স্পষ্ট চিহ্ন দেখা গেছে।
কিছু মরদেহ পুড়ে গেছে, কিছু ট্যাংকের নিচে পিষ্ট হওয়ার দাগ বহন করছে।
দ্য গার্ডিয়ান প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, কয়েকজন নিহত ফিলিস্তিনির চোখ বাঁধা ও হাত পেছনে বাঁধা অবস্থায় ছিল; এমনকি এক মরদেহের গলায় দড়ি প্যাঁচানো দেখা গেছে। চিকিৎসকদের মতে, এসব প্রমাণ করে যে বন্দিদের সংক্ষিপ্ত বিচারেই হত্যা করা হয়েছে।
মানবাধিকার সংস্থা ফিজিশিয়ানস ফর হিউম্যান রাইটস ইসরায়েল (পিএইচআর) এক বিবৃতিতে বলেছে, “ফিলিস্তিনিদের মরদেহে পাওয়া নির্যাতনের চিহ্ন ভয়াবহ, তবে তা আশ্চর্যের নয়। দে তেইমান শিবিরে পদ্ধতিগত নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের প্রমাণ আমরা দুই বছর ধরে নথিভুক্ত করছি।”
সংস্থাটি ঘটনার স্বাধীন আন্তর্জাতিক তদন্ত দাবি করেছে।
এদিকে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ জানিয়েছে, অভিযোগগুলো তদন্তের জন্য তারা ইসরায়েল প্রিজন সার্ভিসকে অনুরোধ জানিয়েছে, তবে দে তেইমান ঘাঁটি থেকে মরদেহ আসার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
জাতিসংঘের হিসাবে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর থেকে ইসরায়েলি কারাগারে অন্তত ৭৫ জন ফিলিস্তিনি বন্দি মারা গেছেন। গাজার চিকিৎসক ও মানবাধিকারকর্মীদের ভাষায়, ফেরত আসা এসব মরদেহ ইসরায়েলের বন্দিশিবিরগুলোর ভেতরকার নৃশংস বাস্তবতার ভয়াবহ প্রমাণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান