ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে মধ্যস্থতার ভূমিকায় আছে রাশিয়া: পুতিন
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৫:০৭ পিএম, ১০ অক্টোবর ২০২৫

মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘদিন ধরে উত্তপ্ত সম্পর্কের মধ্যে থাকা ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে এখন শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টায় সক্রিয় ভূমিকা নিচ্ছে রাশিয়া। দেশ দুটির মধ্যকার উত্তেজনা নিরসনে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করছে মস্কো।
বৃহস্পতিবার তাজিকিস্তানের রাজধানী দুশানবেতে আয়োজিত রাশিয়া-সেন্ট্রাল এশিয়া সম্মেলনে এমনটি জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি রাশিয়ার কূটনৈতিক প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেন।
পুতিন বলেন, “আমরা ইসরায়েলের সঙ্গে আমাদের আস্থাভিত্তিক যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি। ইসরায়েলের নেতারা আমাদের জানিয়েছেন যে তারা তেহরানের কাছে একটি বার্তা পাঠাতে চান; আর সেটি হলো তারা ইরানের সঙ্গে উত্তেজনা আরও হ্রাস করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং ভবিষ্যতে আর কোনো সংঘাতে জড়াতে আগ্রহী নন। ইসরায়েলি নেতারা আমাদের অনুরোধ করেছেন, আমরা যেন আমাদের ইরানি বন্ধুদের কাছে এই বার্তা পৌঁছে দি।”
তিনি স্পষ্ট করে জানান, “এই মুহূর্তে আমরা ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় আছি।”
রুশ প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে যেসব উদ্বেগ তৈরি হয়েছে, সেগুলো প্রশমনে কূটনীতির মাধ্যমে সমাধান খোঁজার পক্ষেই অবস্থান নিয়েছে রাশিয়া। “কারণ আমরা বিশ্বাস করি, ইরানের পরমাণু প্রকল্প নিয়ে যে উদ্বেগ-উত্তেজনা দেখা দিয়েছে তা নিরসনের একমাত্র উপায় হলো কূটনীতি”, বলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ৬ জুন জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (IAEA) জানায়, ইরান এমন মাত্রায় উচ্চমাত্রার সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুত করেছে যা দিয়ে অনায়াসে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করা সম্ভব। এই প্রতিবেদন প্রকাশের মাত্র এক সপ্তাহ পর, ১৩ জুন রাতেই ইরানের বিভিন্ন স্থাপনায় বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ওই রাতেই এক ভিডিও বার্তায় বলেন, “আইএইএ-এর বিবৃতিকে আমলে নিয়েই এই অভিযান শুরু করা হয়েছে।”
এ হামলায় ইরানের সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল বাঘেরি এবং শীর্ষ কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তা ও অন্তত ১২ জন জ্যেষ্ঠ পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হন। একই সঙ্গে ব্যাপক ক্ষতি হয় ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পরমাণু স্থাপনাগুলোরও।
এই অভিযানের পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরান। টানা ১২ দিন দুই দেশের মধ্যে চলা সংঘাতের পর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় একটি যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছায় তারা।
প্রথম থেকেই এই সংঘাত বন্ধে সক্রিয় ছিলেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। গত সপ্তাহে নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনে আলাপও করেন তিনি, যেখানে গাজা পরিস্থিতি এবং যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়।
সূত্র: আরটি