পাকিস্তানে জামায়াত থেকে পদত্যাগ করলেন ফ্লোটিলার আলোচিত সেই মুশতাক


পাকিস্তানে জামায়াত থেকে পদত্যাগ করলেন ফ্লোটিলার আলোচিত সেই মুশতাক

পাকিস্তানের সাবেক সিনেটর মুশতাক আহমদ ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি জামায়াত-ই-ইসলামি থেকে পদত্যাগ করেছেন। তবে তার দাবি, এই সিদ্ধান্তের পেছনে দলের সঙ্গে কোনো ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব বা মনোমালিন্য নেই।

শুক্রবার (১০ অক্টোবর) প্রকাশিত দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন–এর এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।

ইসরায়েলের আটক থেকে মুক্তি পেয়ে দেশে ফেরার পর বৃহস্পতিবার এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে মুশতাক আহমদ বলেন, তিনি মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও সাংবিধানিক অধিকারের পক্ষে স্বাধীনভাবে কাজ করার জন্য নিজস্ব রাজনৈতিক পরিসর তৈরি করতে চান।

তিনি জানান, “আমি আনুষ্ঠানিকভাবে জামায়াত-ই-ইসলামি থেকে পদত্যাগ করেছি। ১৯ সেপ্টেম্বর গ্লোবাল সমুদ ফ্লোটিলায় যাত্রাকালে আমি আমার পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছিলাম।” যদিও দলটি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে তার পদত্যাগ গ্রহণ করেনি বলে জানান তিনি।

দলের মধ্যে নীতিনিষ্ঠ অবস্থান ও নাগরিক স্বাধীনতার বিষয়ে সরব ভূমিকার জন্য পরিচিত এই নেতা বলেন, পদত্যাগ তার জীবনের সবচেয়ে আবেগপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলোর একটি ছিল। “সেদিন রাতে আমি কেঁদেছিলাম, যেমন কেঁদেছিলাম আমার মা মারা যাওয়ার রাতে,” বলেন তিনি।

মুশতাক আহমদ আরও জানান, এখনই তিনি কোনো রাজনৈতিক দলে যোগ দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন না। তার ভাষায়, “রাজনৈতিক সংগঠনের কাঠামোর ভেতরে অনেক সীমাবদ্ধতা থাকে। কখনও কখনও স্বাধীনভাবে কাজ করাই বেশি প্রয়োজন।”

তিনি বলেন, “আমি মানবাধিকার, গণতন্ত্র, স্বাধীন গণমাধ্যম, ড. আফিয়া সিদ্দিকীর মুক্তি, ফিলিস্তিনের ন্যায়বিচার এবং পাকিস্তানের প্রদেশগুলোর সাংবিধানিক অধিকার নিয়ে কাজ চালিয়ে যেতে চাই।”

মুশতাক স্বীকার করেন, গত কয়েক বছরে জামায়াতের ভেতরে কিছু বিষয়ে মতপার্থক্য ছিল, তবে তা কখনো ব্যক্তিগত বিরোধে পরিণত হয়নি। “দলের ভেতরে কিছু বিষয়ে ভিন্নমত ছিল, কিন্তু আমার কারও সঙ্গে কোনো রাগ বা শত্রুতা নেই,” বলেন তিনি।

জামায়াতের আমির হাফিজ নাঈমুর রহমান সম্পর্কে মুশতাক আহমদ বলেন, “হাফিজ নাঈমুর রহমান একজন নেতা; তাঁর সঙ্গে আমার কোনো মতবিরোধ নেই। আমি চাই, আমার আর জামায়াতের মধ্যে কোনো সমস্যা না থাকুক, আর আমার কারণে দলটিরও কোনো অসুবিধা সৃষ্টি না হোক।”

এ ছাড়াও, তিনি নতুন এক জনআন্দোলন গঠনের পরিকল্পনা করছেন বলে জানান। তার ভাষায়, “আমি সারা পাকিস্তানে এক লাখ ফিলিস্তিন কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিচ্ছি, যাতে সাধারণ মানুষ ফিলিস্তিনের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হতে পারে।”

ইসরায়েলি বাহিনীকে “কাগুজে বাঘ” হিসেবে আখ্যা দিয়ে মুশতাক বলেন, গ্লোবাল সমুদ ফ্লোটিলায় অংশ নেওয়া ও পরবর্তীতে ইসরায়েলে আটক থাকা ছিল তার জীবনের এক কঠিন বিশ্বাস ও সহনশীলতার পরীক্ষা।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বিলম্বিত প্রতিক্রিয়ার সমালোচনা করে তিনি আরও বলেন, “গাজায় যুদ্ধবিরতি যদি দুই বছর আগেই হতো, সেটাই হতো প্রকৃত সাফল্য। এখনকার এই ফলাফলের কৃতিত্ব হামাসেরই, কারণ তাদের সংগ্রাম ছিল অদম্য।”

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×