বাংলাদেশের জন্য দুঃসংবাদ, শান্তি রক্ষা মিশনের এক-চতুর্থাংশ ছাঁটাই করছে জাতিসংঘ
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৪:২৯ পিএম, ০৯ অক্টোবর ২০২৫

বিশ্বজুড়ে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বড় ধরনের সংকোচনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই শান্তিরক্ষা মিশনের অন্তত এক চতুর্থাংশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হবে। ভবিষ্যতে মার্কিন তহবিল অনিশ্চিত হয়ে পড়া এবং বর্তমান অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় ব্যয় সাশ্রয়ের অংশ হিসেবেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা।
বুধবার (৮ অক্টোবর) নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা জানান, “বিশ্বজুড়ে নয়টি মিশনে শান্তিরক্ষা ও পুলিশ সদস্যদের মধ্যে প্রায় ২৫ শতাংশকে তাদের সরঞ্জামসহ নিজ নিজ দেশে ফিরিয়ে নেওয়া হবে।” তিনি আরও জানান, এই সিদ্ধান্তের প্রভাব পড়বে বিপুল সংখ্যক বেসামরিক কর্মীর ওপরও, যারা এসব মিশনে দায়িত্ব পালন করছেন।
তার হিসাব অনুযায়ী, মোট ১৩ থেকে ১৪ হাজার শান্তিরক্ষী ও পুলিশ সদস্য কমে যাবে এই সিদ্ধান্তের ফলে।
যে নয়টি মিশন থেকে সদস্য কমানো হবে সেগুলো হলো—দক্ষিণ সুদান, কঙ্গো গণপ্রজাতন্ত্র, লেবানন, কসোভো, সাইপ্রাস, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, পশ্চিম সাহারা, ইসরায়েল-সিরিয়ার গোলান মালভূমির নিরস্ত্রীকৃত অঞ্চল এবং দক্ষিণ সুদান-সুদানের যৌথ প্রশাসিত এলাকা আবইয়েই।
জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা তহবিলে সবচেয়ে বড় অর্থদাতা দেশ হলো যুক্তরাষ্ট্র, যা মোট বাজেটের ২৬ শতাংশেরও বেশি বহন করে। চীন দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রায় ২৪ শতাংশ অবদান নিয়ে। তবে এই অর্থপ্রদান বাধ্যতামূলক নয়, ফলে যুক্তরাষ্ট্রের অনিশ্চয়তা সরাসরি প্রভাব ফেলছে জাতিসংঘের কর্মকাণ্ডে।
সংস্থার এক কর্মকর্তা জানান, নতুন অর্থবছর শুরু হওয়ার আগে যুক্তরাষ্ট্রের বকেয়া ছিল প্রায় দেড়শ কোটি ডলার, যা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮০ কোটি ডলারের বেশি। জাতিসংঘ জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র শিগগিরই ৬৮ কোটি ডলার পরিশোধ করতে পারে, যদিও মার্কিন মিশন এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
এর আগে, গত আগস্টে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একতরফাভাবে ২০২৪ ও ২০২৫ সালের জন্য বরাদ্দ ৮০ কোটি ডলারের শান্তিরক্ষা তহবিল বাতিল করেন। তাছাড়া, মালি, লেবানন ও কঙ্গোতে মিশনের ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করে হোয়াইট হাউসের বাজেট অফিস ২০২৬ সাল থেকে পুরো শান্তিরক্ষা বাজেট বাতিলের প্রস্তাব দিয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সংস্থার ৮০ বছর পূর্তিতে কার্যকারিতা বৃদ্ধি ও ব্যয় নিয়ন্ত্রণের নতুন কৌশল খুঁজছেন।
তথ্যসূত্র: রয়টার্স