গাজামুখী সুমুদ ফ্লোটিলায় ইসরায়েলি হানা, বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদের ঝড়
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০২:৫০ পিএম, ০২ অক্টোবর ২০২৫

আন্তর্জাতিক জলসীমায় গাজামুখী ত্রাণবাহী বহরের ওপর ইসরায়েলের হঠাৎ অভিযান ঘিরে সারা বিশ্বে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ফিলিস্তিনে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে যাত্রা শুরু করা 'গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা' নামের নৌবহরটি ইসরায়েলি বাধার মুখে পড়ে।
ঘটনাটি ঘটে বুধবার গভীর রাতে, স্থানীয় সময় অনুযায়ী। ইসরায়েলি নৌবাহিনী বহরের একাধিক জাহাজ থামিয়ে সেটিতে উঠে পড়ে। জাহাজে থাকা সরাসরি সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং মানবাধিকার কর্মীদের আটকে রাখা হয় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। আটককৃতদের মধ্যে সুইডেনের পরিবেশ আন্দোলনের নেত্রী গ্রেটা থুনবার্গও ছিলেন।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানায়, আটককৃতদের একটি ইসরায়েলি নৌ বন্দরে স্থানান্তর করা হচ্ছে।
গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা কর্তৃপক্ষ জানায়, অন্তত ১৩টি জাহাজ আটক করেছে ইসরায়েল, এবং এতে থাকা দুই শতাধিক স্বেচ্ছাসেবককে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এই অভিযানে প্রথমবারের মতো একজন বাংলাদেশি হিসেবে অংশ নিয়েছেন আলোকচিত্রী, শিল্পী ও সমাজকর্মী শহিদুল আলম। তিনি ঘটনার সময় ফেসবুক লাইভে ইসরায়েলি হস্তক্ষেপের বিস্তারিত তুলে ধরেন।
বিশ্বজুড়ে এ ঘটনার পরপরই শুরু হয় প্রতিবাদ ও নিন্দা। তুরস্ক ঘটনাটিকে সরাসরি “সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড” হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। ব্রিটেনের সাবেক লেবার পার্টি নেতা ও বর্তমান ইয়োর পার্টির প্রধান জেরেমি করবিন বলেন, “এটি আন্তর্জাতিক আইনের সরাসরি লঙ্ঘন।” অন্যদিকে, ফ্লোটিলা কর্তৃপক্ষ একে ‘অপহরণ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
ইতালির রোমে ঘটনার পরপরই হাজার হাজার মানুষ রাজপথে নেমে আসে। দেশটির সবচেয়ে বড় শ্রমিক ইউনিয়ন শুক্রবারের জন্য ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। তাছাড়া জার্মানি, তুরস্ক, গ্রিসসহ আরও কয়েকটি দেশে বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে।
উল্লেখ্য, ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ অভিযানে অংশ নিয়েছে ৪০টিরও বেশি বেসামরিক নৌযান। এতে প্রায় ৫০০ যাত্রী ছিলেন, যাদের মধ্যে রয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানবাধিকারকর্মী, সংসদ সদস্য ও সমাজকর্মীরা। তাদের লক্ষ্য ছিল অবরুদ্ধ গাজায় সরাসরি ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দেওয়া।