ট্রাইব্যুনাল পরিদর্শনে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক দুই রাষ্ট্রদূত

ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক দুই রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম বি মাইলাম ও জন ড্যানিলোভিজ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পরিদর্শন করেছেন। বুধবার (৫ মার্চ) বেলা ১১টার কিছুক্ষণ আগে তারা ট্রাইব্যুনালে আসেন। এ সময় তাদেরকে ট্রাইব্যুনালে স্বাগতম জানান চিফ প্রসিকিউটর মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম। পরে তারা তাজুল ইসলামের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় চিফ প্রসিকিউটরের বিশেষ পরামর্শক টবি ক্যাডম্যান উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে প্রায় সোয়া ১ ঘণ্টা পর দুপুর ১২টার দিকে মার্কিন সাবেক দুই রাষ্ট্রদূত ট্রাইব্যুনাল ত্যাগ করেন। প্রসঙ্গত, উইলিয়াম বি মাইলাম ১৯৯০ সালের আগস্ট থেকে ১৯৯৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ঢাকায় রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ওই সময় বিএনপি ক্ষমতায় ছিল। বাংলাদেশে কাজ শেষে ১৯৯৮-২০০১ পর্যন্ত তিনি পাকিস্তানেও দায়িত্ব পালন করেন। অন্যদিকে, জন ড্যানিলোভিজ ২০০৭ ও ২০০৮ সালে সামরিক-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক শাসনামলে ঢাকায় বাংলাদেশে মার্কিন দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অব মিশন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে দোয়া চাইলেন শাহজাহান খান

কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা ও আগামী জাতীয় নির্বাচনে যেন অংশ নিতে পারেন, এ জন্য দোয়া চেয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান। কারাগারে থেকে সন্ত্রাসীদের হাত থেকে নিরাপদে আছেন বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। বুধবার (৫ মার্চ) সকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর বিষয়ে শুনানির আগে আদালতে তোলার আগে এসব কথা বলেন শাজাহান খান। বুধবার সকাল ১০টা ৬ মিনিটে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হয় আনিসুল হক, শাজাহান খান, কামাল মজুমদার, আতিকুল ইসলাম ও সোলায়মান সেলিমসহ অন্য আসামিদের। এ সময় হেলমেট, বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও পেছনে হাত রেখে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে হাজতখানা থেকে বের করা হয় তাদের। হাজতখানা থেকে আদালতে নেওয়ার পথে শাজাহান খানের কাছে কেমন আছেন জানতে চান এক সাংবাদিক। উত্তরে তিনি বলেন, ‘আছি তোমাদের দোয়ায়। দোয়া করবা আমার জন্য।’ তখন ওই সাংবাদিক বলেন, ‘কী দোয়া করব?’ উত্তরে শাজাহান খান বলেন, ‘দোয়া করবা যেন তাড়াতাড়ি মুক্তি পেয়ে দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা কিভাবে ফিরিয়ে আনা এবং আগামী নির্বাচনে কিভাবে অংশগ্রহণ করতে পারি.. এ সমস্ত বিষয়ে দোয়া করবা।’ তখন ওই সাংবাদিক আবার বলেন, ‘সবাই বলছে, আপনারা দেশের বারোটা বাজিয়েছেন।’ তখন শাজাহান খান বলেন, ‘আমরা বারোটা বাজিয়েছি না কারা বাজিয়েছে এটা সামনে প্রমাণিত হবে।’ পরে তাদের কাঠগড়ায় ওঠানো হয়। এ সময় তাদের হাতে হ্যান্ডকাফ, মাথার হেলমেট খুলে দেওয়া হয়। সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে বিচারক এজলাসে উঠলে তাদের বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর শুনানি শুরু হয়। পরে আদালত এক এক করে তাদের গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন। এরপর তাদের আদালত থেকে নামিয়ে সিএমএম আদালতের হাজতখানার উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়। তখন আরেক সাংবাদিক জিজ্ঞাসা করেন, আপনি এত হাসেন কেন। তখন শাজাহান খান বলেন, ‘আমি সব সময় হাসি, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত হাসতে থাকব।’ কারাগারে কেমন আছেন জিজ্ঞাসা করলে বলেন, ‘খুব ভালো আছি। কারাগারে থেকে সন্ত্রাসীদের হাত থেকে নিরাপদে আছি।’ এরপর তাকে এজলাস থেকে অন্যান্য আসামির সঙ্গে হাজতখানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের ৩৯টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ

সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের ৩৯টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত। দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব বুধবার (৫ মার্চ) এ আদেশ দেন। আবেদনে বলা হয়, ‘সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। অনুসন্ধানকালে তিনি এসব অস্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর করতে পারেন। তাই ন্যায়বিচারের স্বার্থে তার এসব সম্পত্তি অবরুদ্ধের আদেশ দান একান্ত প্রয়োজন।’ এসব ব্যাংক হিসাবে ৫ কোটি ২৬ লাখ ৮৩ হাজার টাকা জমা রয়েছে বলেও তদন্তকারী কর্মকর্তা আবেদনে উল্লেখ করেছেন। এর আগে, গত ১২ আগস্ট সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ও তার স্ত্রী ইউসিবির চেয়ারম্যান রুকমিলা জামানের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের নির্দেশ দিয়েছিল বাংলাদেশ বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। সে সময় ব্যাংকগুলোকে এ নির্দেশনা পাঠিয়ে এ দম্পতির পাশাপাশি তাদের সন্তান এবং তাদের ব্যক্তি মালিকানাধীন কোম্পানির লেনদেন ৩০ দিনের জন্য স্থগিত করতে বলা হয়।

এস আলম পরিবারের ১২ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

চট্টগ্রামভিত্তিক বিতর্কিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের কর্ণধার মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার পরিবারের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ১১ ব্যক্তির বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিয়েছেন আদালত। দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (৪ মার্চ) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালত এ আদেশ দেন। নিষেধাজ্ঞা দেওয়া অন্যরা হলেন বেলাল আহমেদ, ফসিহল আলম, সাজেদা বেগম, মাহমুদুল আলম, মো. মোস্তান বিল্লাহ আদিল, আতিকুর জেনি, লুৎফুন নাহার, আলহাজ চেমন আরা বেগম, মায়মুনা খানম, বদরুননেসা আলম ও শারমিন ফাতেমা। দুদকের আদালতের প্রসিকিউশন বিভাগের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘দুদকের পক্ষে এ আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে আদালত আবেদনটি মঞ্জুর করেন।’ আবেদনে বলা হয়, ‘এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে সিঙ্গাপুর, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড, সাইপ্রাস ও অন্যান্য দেশে এক বিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে। অনুসন্ধানকালে জানা যায়, অভিযোগ-সংশ্লিষ্টরা যে কোনো সময় দেশ থেকে পালিয়ে বিদেশে অবস্থান নেবেন। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা না গেলে অভিযোগ প্রমাণ দুরূহ হয়ে পড়বে। এজন্য অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের বিদেশ গমন রহিত করা আবশ্যক।’

সাবেক বিচারপতি মানিক ফের রিমান্ডে

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ঢাকার গুলশান থানার হত্যা মামলায় সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বুধবার (৫ মার্চ) মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার ৭ দিনের রিমান্ড আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মনিরুল ইসলাম এ আদেশ দেন। মামলার সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১৯ জুলাই গুলশান থানাধীন প্রগতি সরণি এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন শিক্ষার্থী মো. আবু যর শেখ। পরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৭ জুলাই মারা যান তিনি। এ ঘটনায় তার মা মোসা. ছবি গত বছরের ১৬ নভেম্বর গুলশান থানায় হত্যা মামলা করেন। গত বছরের ২৪ আগস্ট সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার দনা সীমান্ত এলাকা থেকে ভারতে পালানোর সময় শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে গ্রেফতার করা হয়। পরে একাধিক হত্যা মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড হয় তার।

অব্যাহতি পেলেন তারেক রহমানের সাবেক পিএস অপু

২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে গুলশান থানার চাঁদাবাজির মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাবেক একান্ত সহকারী (পিএস) মিয়া নূরউদ্দিন অপু অব্যাহতি পেয়েছেন। মঙ্গলবার (৪ মার্চ) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত মেহেদী হাসান মামলাটির চার্জগঠন শুনানির পর্যায় থেকে আসামি অপুকে অব্যাহতি দেন। আদেশে আদালত বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ২৪১-এ ধারায় আসামি মিয়া নূরউদ্দিন অপুকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো। সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সূত্রে বিষয়টি জানা গেছে। মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০০৭ সালের ৮ মার্চ বিএনপির তৎকালীন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এবং বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং তার একান্ত সহকারী মিয়া নূরউদ্দিন অপুকে আসামি করে ১ কোটি টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা করেন। দ্রুত বিচার আইনে গুলশান থানায় এ মামলাটি করা হয়। পরে মামলাটির কার্যক্রম বাতিল চেয়ে ২০০৭ ও ২০০৮ সালে হাইকোর্টে পৃথক আবেদন করেন তারেক রহমান। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন। ২০২৪ সালের ২৩ অক্টোবর চাঁদাবাজির অভিযোগে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে গুলশান থানার এ মামলার কার্যক্রম বাতিল ঘোষণা করে হাইকোর্ট রায় দেন। পরে গত ৫ জানুয়ারি আপিল বিভাগ হাইকোর্টের এ রায় বহাল রাখেন। অন্যদিকে মামলাটিতে আসামি থাকা মিয়া নূরউদ্দিন অপুর বিরুদ্ধে চার্জগঠন না করে অব্যাহতি দেন আদালত।

সাদেক এগ্রোর ইমরান কারাগারে

১৩৩ কোটি টাকা পাচারে মোহাম্মদপুর থানার মানিলন্ডারিং আইনের মামলায় সাদেক এগ্রোর মালিক ইমরান হোসেনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (৪ মার্চ) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলামের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। এদিন ইমরান হোসেনকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক মো. ছায়েদুর রহমান কারাগারে রাখার আবেদন করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী জামিন চেয়ে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী জামিনের বিরোধিতা করে শুনানি করেন। শুনানি শেষে বিচারক জামি নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান। গতকাল ৩ মার্চ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও বিধি অনুযায়ী ১৩৩ কোটি টাকা মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে সাদিক এগ্রোর মালিক ইমরান হোসেন, তৌহিদুল আলম জেনিথ ও অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান সাদিক এগ্রোসহ অজ্ঞাতনামা ৫ থেকে ৭ জনের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের উপপরিদর্শক মো. জোনাঈদ হোসেন। এ মামলায় সোমবার (৩ মার্চ) তাকে গ্রেফতার করে ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি) পুলিশ। মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, ২০১৭ সালে ১২ জুলাই থেকে ২০২৪ সালের ১৮ আগস্ট পর্যন্ত ইমরান হোসেন, তৌহিদুল আলম জেনিথ ও অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান সাদিক এগ্রো লিমিটেড সংঘবদ্ধ অপরাধচক্রের মাধ্যমে চোরাচালান, প্রতারণা ও জালিয়াতি করে অনুমোদনহীন ব্রাহমা জাতের গরু আমদানি ও সরকারি বিধি লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে বিদেশে প্রায় ৮৬ লাখ টাকা পাচার করে। টেকনাফ ও উখিয়া, কক্সবাজার সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে থাইল্যান্ড ও মিয়ানমার হতে চোরাচালানের মাধ্যমে গরু ও মহিষ বাংলাদেশে নিয়ে এসে তা বিক্রয় এবং ভুটান ও নেপাল হতে চোরাচালানের মাধ্যমে আনা ছোট আকৃতির ভুট্টি গরু বাংলাদেশে নিয়ে এসে বিক্রি করে। প্রতারণার মাধ্যমে দেশীয় গরু/ছাগলকে বিদেশি ও বংশীয় গরু-ছাগল বলে প্রচার করে উচ্চমূল্যে তা কোরবানির পশুর হাটে বিক্রি করে অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ অভিযুক্ত ব্যক্তি ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে প্রায় ১২১ কোটি ৩২ লাখ ১৫ হাজার ১৪৪ টাকা হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করেছে। ঢাকার কাস্টমস হাউজ আটক করা এবং সাভারের কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামারে থাকা ১৫টি ব্রাহমা জাতের গরু সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক জবাই করে ন্যায্যমূল্যে মাংস বিক্রয়ের কথা থাকলেও জালিয়াতির মাধ্যমে কাগজপত্রে সেগুলো জবাই দেখিয়ে প্রতারণামূলকভাবে তা জবাই না করে কৌশলে তা হাতিয়ে নিয়ে অনুমোদনহীনভাবে জোরপূর্বক মোহাম্মদপুর থানাধীন বেড়িবাঁধ এলাকায় রামচন্দ্রপুর সরকারি খাল ভরাট ও জবর দখল করে। অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ তার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান জালালাবাদ মেটাল লিমিটেডের নামে এফডিআর খুলে ১১ কোটি ৩৬ লাখ ৯১ হাজার ২০০ টাকা বিনিয়োগ করে রূপান্তর করেছে। অর্থাৎ অভিযুক্তরাসহ অজ্ঞাতনামা ৫-৭ জন সংঘবদ্ধ অপরাধচক্রের মাধ্যমে চোরাচালান, প্রতারণা ও জালিয়াতি করে অনুমোদনহীন ব্রাহমা জাতের গরু আমদানি, কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়া, সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে থাইল্যান্ড ও মিয়ানমার থেকে চোরাচালানের মাধ্যমে গরু ও মহিষ এবং ভুটান ও নেপাল হতে চোরাচালানের মাধ্যমে আনা ছোট আকৃতির ভুট্টি গরু বাংলাদেশে নিয়ে এসে তা বিক্রয়, প্রতারণার মাধ্যমে দেশি গরু/ছাগল বিদেশি বলে প্রচার করে উচ্চমূল্যে কোরবানির পশু বিক্রয়, কাস্টমস হাউজ আটককৃত এবং কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামার, সাভার, ঢাকার হেফাজতে থাকা ১৫টি ব্রাহমা জাতের গরু সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক জবাই করে ন্যায্যমূল্যে মাংস বিক্রয়ের কথা থাকলেও জালিয়াতির মাধ্যমে কাগজপত্রে সেগুল্যে জবাই দেখিয়ে প্রতারণামূলকভাবে তা জবাই না করে কৌশলে হাতিয়ে নিয়ে। অনুমোদনহীনভাবে জোরপূর্বক মোহাম্মাদপুর থানাধীন বেড়িবাঁধ এলাকায় রামচন্দ্রপুর সরকারি খাল ভরাট ও জবরদখল করে এবং সরকারি বিধি লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে বিদেশে অর্থ পাচার করে ও অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ বিভিন্ন ব্যবসায় বিনিয়োগ করে সর্বমোট প্রায় ১৩৩ কোটি ৫৫ লাখ ৬ হাজার ৩৪৪ টাকা হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করেছে। গত বছর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য মতিউর রহমানের ছেলে মুশফিকুর রহমান ইফাতের কাছে ১৫ লাখ টাকার ছাগল বিক্রি নিয়ে বিতর্কের পর সাদিক অ্যাগ্রোর সমালোচনা শুরু হয়। পরে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ বেশ কয়েকটি সংস্থা সাদিক অ্যাগ্রোর বিরুদ্ধে সম্ভাব্য অনিয়মের তদন্ত শুরু করে।

আওয়ামী লীগের বিচার না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন হবে না: সারজিস

আওয়ামী লীগের বিচার না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন হবে না বলে মন্তব্য করেছেন নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। মঙ্গলবার (৪ মার্চ) রাজধানীর রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে চব্বিশের অভ্যুত্থানের শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদন ও কবর জিয়ারত শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের এই মুখ্য সংগঠক বলেন, শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিচার না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের কোনো মানুষ, কোনো রাজনৈতিক দল ভুল করেও যেন নির্বাচনের কথা না বলে। তিনি আরও বলেন, খুনি হাসিনাকে বাংলাদেশে নিয়ে আসতে হবে। সে বিচারের মঞ্চে দাঁড়াবে, ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়াবে। যে হাসিনার নির্দেশে এতগুলো হত্যা করা হলো সেই খুনের বিচার না দেখা পর্যন্ত কীভাবে এ দেশের মানুষ ভিন্ন কিছু চিন্তা করে? তিনি বলেন, যতদিন না আমরা খুনি হাসিনাকে ওই ফাঁসির মঞ্চে না দেখছি, এই বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হবে না। আমরা রাজপথে ছিলাম। আমার যে ভাইয়েরা রাজপথে জীবন দিয়েছে, আমাদের যে মায়েদের চোখ দিয়ে এখনও কান্না ঝরছে, পানি পড়ছে আমরা যেন মরার আগে অন্তত খুনি হাসিনার বিচারটা দেখে মরতে পারি। তিনি আরও বলেন, আমরা শুধু আপনাদের কাছে একটা অনুরোধ করতে পারি। আমরা আমাদের জায়গা থেকে মায়েদের পাশে থাকার সর্বোচ্চটুকু দিয়ে চেষ্টা করবো। এ সময় জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম ও সদস্যসচিব আখতার হোসেনসহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বিচার বিভাগের প্রতি আস্থা ফিরিয়ে আনতে প্রচেষ্টা চালাচ্ছি : প্রধান বিচারপতি

দেশের বিচার ব্যবস্থাকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখা এবং বিচার বিভাগের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে নিজের প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। সোমবার (৩ মার্চ) রাজধানীর একটি হোটেলে 'আপহোল্ডিং এনভায়রনমেন্টাল জাস্টিস : দ্য রুল অব জাজেজ ফর এ সাসটেইনেবল ফিউচার' শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। প্রধান বিচারপতি বলেন, আমরা কেবল মাত্র পরিবেশগত সংকটের দর্শক নই; বরং আমরা ন্যায়বিচারের প্রহরী। যাদের দায়িত্ব হচ্ছে এমন এক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা, যা পরিবেশ রক্ষার জন্য একটি শক্তিশালী রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য পরিচিত, কিন্তু বর্তমানে পরিবেশগত ঝুঁকির মুখোমুখি। নদী সুরক্ষা, বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণ এবং পরিবেশ আইন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আদালত অনেক গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছে, যা আমাদের প্রতিশ্রুতির সাক্ষ্য বহন করে। সুন্দরবনের প্রসঙ্গ তুলে প্রধান বিচারপতি বলেন, যদি আমরা এখনই কঠোর ব্যবস্থা না নেই, তবে অমূল্য এই সম্পদ হারিয়ে যেতে পারে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এটি সংরক্ষণ করা আমাদের নৈতিক ও আইনগত দায়িত্ব। সুতরাং, কঠোর আইনি কাঠামো, টেকসই নীতিমালা ও সক্রিয় বিচারিক তদারকি নিশ্চিত করতে হবে। সেমিনারে তিনি আরও বলেন, আমাদের সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ মূলত বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে এই অনুচ্ছেদ পরিবর্তন করা হয়, যা বিচার বিভাগের স্বায়ত্তশাসন সংকুচিত করে এবং পৃথক ক্ষমতার ভারসাম্য নষ্ট করে। আমি এই প্রেক্ষাপটে বিচার বিভাগের স্বায়ত্তশাসন পুনরুদ্ধারে কাজ করে যাচ্ছি। আমার প্রচেষ্টা হলো বিচার ব্যবস্থাকে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক প্রভাব থেকে মুক্ত রাখা এবং জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা। বিচার বিভাগের সংস্কার ও পরিবেশগত ন্যায়বিচার এই দুটি বিষয় একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত উল্লেখ করে সেমিনারে প্রধান বিচারপতি বলেন, বিচার বিভাগ শুধু আইন ব্যাখ্যা করবে না বরং পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য দৃঢ় অবস্থান নেবে। সূত্র- বাসস

সাবেক আইজিপি শহীদুলের আক্ষেপ- কী না করেছি পুলিশের জন্য!

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে রাজধানীর কাফরুল থানার আতিকুল ইসলাম হত্যা মামলায় পুলিশের সাবেক আইজি শহীদুল হককে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। সোমবার (৩ মার্চ) সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের দিকে প্রিজন ভ্যানে করে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। প্রথমে তাকে সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। পরে সকাল ১০টার দিকে অন্যান্য আসামির সঙ্গে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্রের আদালতে নেওয়া হয়। এসময় শহীদুল হক কাঠগড়ার এক পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাকে কিছুটা অস্থির দেখা যায়। বারবার আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন তিনি। তবে কাঠগড়ার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশ সদস্যরা তাকে কথা বলতে দেননি। তারা আদালতের অনুমতি নিয়ে কথা বলতে বলেন। এরপরও আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন শহীদুল হক। এরই মধ্যে ১০টা ৭ মিনিটের দিকে বিচারক এজলাসে ওঠেন। তিনি শহীদুলসহ ৬ আসামিকে আতিকুল ইসলাম হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন। ১০টা ১৬ মিনিটে বিচারক এজলাস ত্যাগ করেন। এরপর শহীদুল হক আবারও তার আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন। এ সময় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা তাকে বাধা দেন। তারা বলেন, ‘যার সঙ্গেই কথা বলেন না কেন আদালতের অনুমতি নিতে হবে। পরে শহীদুল হক আক্ষেপের সুরে বলেন- ‘কী না করেছি পুলিশের জন্য!’। এরপর তাকেসহ অন্যদের সিএমএম আদালতের হাজতখানায় নিয়ে যাওয়া হয়। মামলা সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ জুলাই বিকেলে রাজধানীর কাফরুল থানা এলাকার বিআরটিএ অফিসের পেছনের রাস্তায় গুলিবিদ্ধ হন আতিকুল ইসলাম। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর ব্যবসায়ী আহসান হাবীব রাজধানীর কাফরুল থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় শহীদুল হক ২৭ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি।

সাবেক মেয়র তাহসীন বাহারের জমি-ফ্ল্যাটসহ ৩ কোটি টাকা অবরুদ্ধের আদেশ

কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র তাহসীন বাহারের উত্তরা আবাসিক এলাকার ১টি জমিসহ ফ্ল্যাট জব্দ ও ৯টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের ৩ কোটি ৩ লাখ ২৫ হাজার ৬৩৫ টাকার অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার (৩ মার্চ) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ইব্রাহীম মিয়া দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। আদালত সূত্রে জানা গেছে, দুদকের পক্ষে তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. ফেরদৌস রহমান জব্দ ও অবরুদ্ধের আবেদন করেন। স্থাবর সম্পদ হলো- রাজধানীর উত্তরা আবাসিক এলাকার ১৪শ ৭৪ দশমিক ৫৪ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট। যার মূল্য ধরা হয়েছে ৩২ লাখ টাকা। দুদকের আবেদনে বলা হয়েছে, কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র তাহসীন বাহার কুমিল্লার মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে নিজ ক্ষমতার অপব্যবহারপূর্বক দুর্নীতির মাধ্যমে তার জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ৩ কোটি ৪ লাখ ৫০ হাজার ৭৭০ টাকা মূল্যর সম্পদের মালিকানায় অসাধু উপায়ে অর্জনপূর্বক দখলে রেখে এবং তার নামীয় ১৬টি ব্যাংক হিসাবে জাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ৪২ কোটি ৫৮ লাখ ৭৩ হাজার ১৯৩ টাকার অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক লেনদেনের মাধ্যমে অপরাধলব্ধ অবৈধ অর্থ জ্ঞাতসারে হস্তান্তর ও স্থানান্তর করে দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের ২৭(১) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা, তৎসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। তদন্তকালে আসামি তাহসীন বাহার অর্জিত সব সম্পদ সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করা যায়নি। তবে এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তার সম্পদ যাতে তিনি অন্যত্র হস্তান্তর ও স্থানান্তর করতে না পারেন, সে জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালা, ২০০৭ এর ১৮ বিধি এবং মানিলভারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ১৪ ধারা মোতাবেক নিম্নবর্ণিত স্থাবর সম্পদ ক্রোক ও ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা একান্ত প্রয়োজন।

সাড়ে ৬ হাজার শিক্ষক নিয়োগে বাধা নেই

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে চূড়ান্ত ফলাফলে উত্তীর্ণ ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগের কার্যক্রম বাতিল করে হাইকোর্টের রায়ের কার্যকারিতা এক মাসের জন্য স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। এ আদেশের ফলে তাদের নিয়োগ দিতে বাধা রইলো না। সোমবার (০৩ মার্চ) আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন। এর আগে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের ২১ জেলার পরীক্ষা হয়। লিখিত পরীক্ষার সংশোধিত ফল গত ২২ এপ্রিল প্রকাশিত হয়। এতে ৪৬ হাজার ১৯৯ জন প্রার্থীকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত করা হয়। আর এই লিখিত পরীক্ষা গত ২৯ মার্চ (শুক্রবার) সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত জেলা পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হয়। গত ৩১ অক্টোবর সন্ধ্যায় ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের ২১ জেলার ফলাফল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়। এতে উত্তীর্ণ হন ৬ হাজার ৫৩১ জন। এর মধ্যে কক্সবাজারে ১৮৫ জন, কুমিল্লায় ৬৪১ জন, চট্টগ্রামে ৮১২ জন, চাঁদপুরে ৩৫৮ জন, নোয়াখালীতে ৩২৮ জন, ফেনীতে ১৩৭ জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৩৪৯ জন, লক্ষ্মীপুরে ৩২৭ জন, কিশোরগঞ্জে ২৮৮ জন, গাজীপুরে ২৪১ জন, গোপালগঞ্জে ২৫৪ জন, টাঙ্গাইলে ৫৯৭ জন, ঢাকায় ৩০৯ জন, নরসিংদীতে ২৬০ জন, নারায়ণগঞ্জে ১৮৪ জন, ফরিদপুরে ২২৭ জন, মাদারীপুরে ২০৮ জন, মানিকগঞ্জে ৩০১ জন, মুন্সীগঞ্জে ২২২ জন, রাজবাড়ী ১০৪ জন, শরীয়তপুরে ১৯৯ জন উত্তীর্ণ হন। এরপর ১৯ নভেম্বর ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের ২১ জেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগপত্র প্রদানের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন হাইকোর্ট। কোটা পদ্ধতি অনুসরণ করে তাদের নিয়োগ দেওয়ায় আদালত এ আদেশ দেন। পাশাপাশি আদালত রুল জারি করেন।

দুর্নীতির মামলায় খালাস পেলেন মাহমুদুর রহমান

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা দুর্নীতির মামলায় তিন বছরের কারাদণ্ড থেকে খালাস পেয়েছেন ‘দৈনিক আমার দেশ’ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। সোমবার (৩ মার্চ) হাইকোর্ট এ আদেশ দেন। সম্পদের হিসাব বিবরণী জমা না দেওয়ায় ২০১৫ সালের আগস্টে তার বিরুদ্ধে এ মামলা করে দুদক।

মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আ.লীগের রাজনীতি করবো না, আদালতকে কামাল মজুমদার

কারাগারে পড়ার জন্য ডিজিটাল কোরআন শরীফ চেয়েছেন সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী ও মোহনা টেলিভিশনের চেয়ারম্যান কামাল আহমেদ মজুমদার। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন কেন্দ্রিক কাফরুল থানার এক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর শুনানিতে আদালতের কাছে এ আর্জি জানান সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী। এছাড়া চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধও চেয়েছেন তিনি। সোমবার (৩ মার্চ) সকালে তাকে অন্যান্য আসামিদের সঙ্গে আদালতে হাজির করা হয়। এসময় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। তখন বিচারক এ মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন। শুনানির এক পর্যায়ে কামাল আহমেদ মজুমদার কথা বলার জন্য হাত তোলেন। পরে বিচারক তাকে কথা বলার অনুমতি দেন। এসময় কামাল আহমেদ মজুমদার আদালতকে বলেন, ‘আমার ৭৬ বছর বয়স। আমার চোখে সমস্যা। ৭০ শতাংশ নষ্ট হয়ে গেছে। আমার পরিবার সম্পর্কে কোনো খোঁজ-খবর নিতে পারছি না। আমি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের রাজনীতি করবো না। রাজনীতি থেকে ইস্তফা দিলাম। আমি আওয়ামী লীগের কোনো পদে নেই। এখন থেকে প্রাথমিক সদস্য পদ থেকেও পদত্যাগ করলাম।’ ‘কারাগারে ডায়াবেটিসের চেক করার জন্য ডিজিটাল কোনো যন্ত্র বা ওষুধ দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি পবিত্র কোরআন শরীফও দেওয়া হয়নি। একের পর এক মামলা দেওয়া হচ্ছে। একের পর এক নির্যাতন করা হচ্ছে। এই বয়সে আমার ওপর জুলুম চালানো হচ্ছে। আল্লাহকে ডাক দেওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই। এজন্য আমি আপনার কাছে অনুরোধ করছি, ডায়াবেটিসের ওষুধ, ডায়াবেটিস মাপার ডিজিটাল যন্ত্র এবং ডিজিটাল কোরআন শরীফ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক।’ —এসব কথা বলতে গিয়ে এক পর্যায়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন কামাল মজুমদার। এসময় বিচারক বলেন, আপনার সবগুলো দাবি আইনজীবীর মাধ্যমে আবেদন করুন। এরপর বিচারক তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন। মামলার সূত্রে জানা যায়, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ জুলাই বিকেলে রাজধানীর কাফরুল থানাধীন বিআরটিএ অফিসের পেছনের রাস্তায় গুলিবিদ্ধ হন আতিকুল ইসলাম। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় গত ২৩ ডিসেম্বর ব্যবসায়ী আহসান হাবীব রাজধানীর কাফরুল থানায় একটা হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় কামাল মজুমদার ১০ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে খালাসের রায় আপিল বিভাগে বহাল

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে খালাস দিয়ে হাই কোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে দুদকের করা আপিল খারিজ করে দিয়েছে আপিল বিভাগ। বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বেঞ্চ সোমবার (৩ মার্চ) এ রায় দেয়। আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আসিফ হোসাইন। খালেদা জিয়ার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল, বদরুদ্দোজা বাদল, মাকসুদ উল্লাহ ও কায়সার কামাল। বদরুদ্দোজা বাদল বলেন, “দুদকের আপিল খালাস করে দিয়েছে আপিল বিভাগ। ফলে হাই কোর্ট খালাস দিয়ে যে রায় দিয়েছিল তা বহাল থাকল।” আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ছয় বছর আগে জজ আদালত এ মামলার রায়ে খালেদা জিয়াকে সাত বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছিল। ওই রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার আপিল মঞ্জুর করে গত ২৭ নভেম্বর বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাই কোর্ট বেঞ্চ খালেদা জিয়াকে খালাস দেয়। পরে এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে যায়। দুদকও পৃথক একটি আবেদন করে। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে। ওই বছরের অক্টোবরে হাই কোর্টে আপিল শুনানি শেষে সাজা বেড়ে হয় ১০ বছর। আর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর সাত বছরের সাজা হয় খালেদা জিয়ার। পরের বছর ৩০ এপ্রিল খালেদা জিয়ার করা আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে হাই কোর্ট। কিন্তু তখন আর শুনানি হয়নি। দুই মামলায় দণ্ডিত সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী ২০২০ সাল থেকে সরকারের নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্তি পান। এর পর থেকে ছয় মাস পরপর সেই সাময়িক মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছিল। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মুক্ত হয়ে তিনি বর্তমানে যুক্তরাজ্যে রয়েছেন। গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরদিন ৬ অগাস্ট রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে খালেদা জিয়ার দণ্ড মওকুফ করেন। সে সময় বঙ্গভবনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেও বলা হয়, তিন বাহিনী প্রধান, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের বৈঠকের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, “সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দণ্ড মওকুফপূর্বক মুক্তির বিষয়ে আইন ও বিচার বিভাগ, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মতামতের আলোকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে মহামান্য রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট হাই কোর্ট বিভাগের ক্রিমিনাল আপিল নং-১৬৭৬/১৮ (বিশেষ আদালত নং-৫, ঢাকা এর বিশেষ মামলা নং ১৭/২০১৭ থেকে উদ্ভূত) এবং বিশেষ আদালত নং-৫, ঢাকা এর বিশেষ মামলা নং-১৮/২০১৭ এ প্রদত্ত দণ্ডাদেশ মওকুফপূর্বক নির্দেশক্রমে মুক্তি প্রদান করা হল।” সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, কোনো আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের দেওয়া যে কোনো দণ্ডের ‘মার্জনা, বিলম্বন ও বিরাম’ মঞ্জুর করার এবং যে কোনো দণ্ড ‘মওকুফ, স্থগিত বা হ্রাস’ করার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির থাকবে। কিন্তু আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি কারো দণ্ড (সেনটেন্স) বাতিল করলেও তিনি যে আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন (কনভিকশন), সেই রায় বাতিল হয় না। আর আদালত দোষী সাব্যস্ত করলে মুক্তির পর পাঁচ বছর পার না হলে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ নেই। সে কারণে রাষ্ট্রপতি দণ্ড মওকুফ করার পরও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালাস চেয়ে নভেম্বরের শুরুতে হাই কোর্টে আপিল শুনানির উদ্যোগ নেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। আইনজীবী কায়সার কামাল সে সময় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “রাষ্ট্রপতি দণ্ড মওকুফ করলেও খালেদা জিয়া চান আদালতের মাধ্যমে তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে আসবেন। তাই আমরা চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা দ্রুত শুনানির জন্য হাই কোর্টে আবেদন করেছি।” আর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলাতেও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, তার ছেলে তারেক রহমানসহ সবাই খালাস পেয়েছেন। গত ১৫ জানুয়ারি দেওয়া রায়ে বলা হয়, এ মামলায় আসামিদের কারো ‘অপরাধ পাওয়া যায়নি’।

খালেদা জিয়াকে খালাসের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি সোমবার

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে ৭ বছরের দণ্ড থেকে খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ও দুর্নীতি দমনের (দুদক )আপিলের শুনানির জন্য কাল সোমবার (৩ মার্চ )দিন ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ। দুদকের আইনজীবীর আবেদনের প্রেক্ষিতে রোববার (২ মার্চ) বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আসিফ হোসাইন। খালেদা জিয়ার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন, অ্যাডভোকেট মাকসুদ উল্লাহ। এর আগে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে ৭ বছরের দণ্ড থেকে খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদক। এদিন আপিলের শুনানির জন্য ২ মার্চ ধার্য করেন আপিল বিভাগ। রোববার বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এই আদেশ দেন। আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আসিফ হোসাইন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক। খালেদা জিয়ার পক্ষে ছিলেন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও অ্যাডভোকেট মাকসুদ উল্লাহ। গত ২৭ নভেম্বর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে ৭ বছরের দণ্ড থেকে খালাস দেন হাইকোর্ট। সাজার বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার আপিল মঞ্জুর করে বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল,ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন, অ্যাডভোকেট ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া, অ্যাডভোকেট মাকসুদ উল্লাহ, অ্যাডভোকেট আজমল হোসেন খোকন, ব্যারিস্টার সানজিদ সিদ্দিকী। দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আসিফ হোসাইন। গত ২০ নভেম্বর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি শুরু হয়। গত ৩ নভেম্বর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল শুনানির জন্য পেপারবুক নিজ খরচে তৈরির অনুমতি দেন হাইকোর্ট। খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। পরে আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘খালেদা জিয়া কোনো অনুকম্পা চান না। তিনি আইনীভাবে মামলা নিষ্পত্তি করতে চান। এ কারণে আমরা জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার সাজার রায়ের বিরুদ্ধে দ্রুত আপিল শুনানি করতে চাই। আপিল শুনানির জন্য আদালত আমাদের নিজ খরচ পেপারবুক প্রস্তুত করার অনুমতি দিয়েছেন।’ ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একই সঙ্গে অন্য তিন আসামিকেও সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত। খালেদা জিয়াসহ প্রত্যেককে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছিল। এ ছাড়া ট্রাস্টের নামে কেনা কাকরাইলে ৪২ কাঠা জমি বাজেয়াপ্ত করে তা রাষ্ট্রের অনুকূলে নেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়। পরে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন খালেদা জিয়া।

স্ত্রী-মাসহ সাঈদ খোকনের ৯০ কোটি টাকার বিনিয়োগ অবরুদ্ধ, জব্দ বাড়ি

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও ঢাকা-৬ আসনের সাবেক এমপি সাঈদ খোকন, তার স্ত্রী ফারহানা সাঈদ ও মা শাহানা হানিফের নামে থাকা তিনটি পারপিচ্যুয়াল বন্ড হিসাবের লেনদেন অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এসব পারপিচ্যুয়াল বন্ডে মোট ৯০ কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে। বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারী) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন গালিব দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। একইসঙ্গে সাঈদ খোকনের নামে থাকা গুলশানে একটি ১৪ তলা বাড়ি ও বনানীতে থাকা দুটি বাড়ি জব্দের আদেশ দিয়েছেন। এছাড়া সাঈদ খোকনের মা শাহানা হানিফের নামে বারিধারায় থাকা জমি ও বাড়ি জব্দ করা হয়েছে। দুদকের উপপরিচালক মাসুদুর রহমান এ আবেদন করেন। পরে আদালত আবেদনটি মঞ্জুর করেন। আবেদনে বলা হয়, অভিযোগ সংশ্লিষ্ট শাহানা হানিফ, মোহাম্মদ সাঈদ খোকন ও জাবেদ আহমেদ, ফাতেমা খাতুনের নামে পরিচালিত ব্যাংক হিসাবগুলোতে অস্বাভাবিক লেনদেনের অভিযোগসহ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনসহ অন্যান্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানাবিধ দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। মোহাম্মদ সাঈদ খোকন তার পদের অপব্যবহার করে ও রাজনৈতিক পরিচয়ের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে ও বিদেশে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছেন মর্মে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। অনুসন্ধানের এ পর্যায়ে অভিযোগসংশ্লিষ্ট সাঈদ খোকন, ফারহানা সাঈদ ও শাহানা হানিফের নামে সিটি ব্রোকারেজ লিমিটেডে পরিচালিত তিনটি হিসাবের মাধ্যমে সিটি ব্যাংক পিএলসির পাপিচ্যুয়াল বন্ডে মোট ৯০ কোটি টাকার বিনিয়োগ জরুরি ভিত্তিতে অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন। এর আগে গত ১০ ফেব্রুয়ারি সাঈদ খোকন ও তার পরিবারের ৭৯ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দেন আদালত।

মৃত স্বামীর ঋণের দায়ে স্ত্রী কারাগারে: ফরিদপুরের দুই বিচারককে তলব

মৃত স্বামীর ঋণের দায়ে তিন এতিম শিশু সন্তানের মাকে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় ফরিদপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এম এ সাঈদ ও অর্থঋণ আদালতের বিচারক এ কে এম রফিকুল হাসানকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি ব্র্যাক ব্যাংক ফরিদপুরের বোয়ালমারী শাখার ব্যবস্থাপককেও তলব করা হয়েছে। আগামী ৬ মার্চ তাদের সশরীরে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি কাজী ওয়ালিউল ইসলাম সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন। এছাড়া একই আদেশে পপি খাতুনকেও অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল জামিউল হক ফয়সাল সাংবাদিকদের আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। গত ২৭ জানুয়ারি একটি গণমাধ্যমে ‘মৃত স্বামীর ঋণের দায়ে স্ত্রী কারাগারে, মামলার আসামি এতিম তিন শিশু সন্তান ঘুরছে দ্বারে দ্বারে’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ফরিদপুরের বোয়ালমারী পৌর সদরের পোল্ট্রি মুরগি ব্যবসায়ী মৃত আমিন শেখ ও পপি খাতুন দম্পতির তিন শিশু সন্তান আইরিন (১০), আহমাদুল্লাহ (৫) ও জানাতুন নাঈমা (৪)। নাবলক এতিম তিন শিশু বাবার ঋণের দায়ে ব্র্যাক ব্যাংকের দায়ের করা অর্থ ঋণের মামলার আসামি। মা পপি খাতুন জেলে যাওয়ার পর থেকেই একই মামলার আসামি তিনটি এতিম শিশু সারাক্ষণ শঙ্কা ও আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে, কখন জানি তাদেরও পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। ২৬ জানুয়ারি বিকেলে পৌরসদরের অডিটোরিয়াম এলাকায় এ বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ওই প্রতিবেদন সংযুক্ত করে আজ পপি খাতুনের জামিন চাওয়া হলে হাইকোর্ট শুনানি শেষে তা মঞ্জুর করেন।

চটপটির দোকান দেখিয়ে ব্যবসায়ীর ২৩৪ কোটি টাকা ঋণ : দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

চটপটির দোকান দেখিয়ে ২৩৪ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী নাজমী নওরোজের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। আদালত সূত্রে জানা গেছে, দুদকের উপপরিচালক আফরোজা হক খান এ আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত আবেদনটি মঞ্জুর করেন। আবেদনে বলা হয়েছে, অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান সাইফুল আলম (এস আলম গ্রুপ) ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে চটপটির দোকানে ২৩৪ কোটি টাকা ঋণ প্রদানের অভিযোগ অনুসন্ধানপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য চার সদস্য বিশিষ্ট একটি অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়েছে। তদন্তে জানা যায়, অভিযোগ সংশ্লিষ্ট নাজিমী নওরোজ বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। তিনি বিদেশে পালিয়ে গেলে অনুসন্ধান কাজ ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তার বিদেশ গমন রহিত করা একান্ত প্রয়োজন। এর আগে, গত ১৫ জানুয়ারি দুদক জানায়, চট্টগ্রামে নওরোজ এন্টারপ্রাইজের একটি চটপটির দোকান ও দুটি রেস্তোরাঁর বিপরীতে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ২৩৪ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ প্রদানে অনিয়মের অভিযোগে নওরোজ এন্টারপ্রাইজের মালিক নাজমি নওরোজ ও ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

শামীম ওসমান ও তাঁর পরিবারের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, স্ত্রী সালমা ওসমান, ছেলে ইমতিনান ওসমান এবং মেয়ে লাবিবা জোহা অঙ্গনার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আদালত। মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেনের (গালিব) আদালত দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলার অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক রেজাউল করিম দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়, শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে সিন্ডিকেট করে টেন্ডার বাণিজ্য, বিভিন্ন খাতে বেপরোয়ারা চাঁদাবাজি, পরিবহণ ও জুট ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কমিশন গ্রহণ, দলীয় পদ ও মনোনয়ন বাণিজ্য, জমি দখল, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প হতে সরকারি অর্থ আত্মসাতপূর্বক বিদেশে অর্থ পাচার করে কানাডা-যুক্তরাষ্ট্রে বাড়ি ক্রয় ও দুবাইয়ে ব্যবসা পরিচালনাসহ নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে শত শত কোটি টাকা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানাধীন রয়েছে। অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা দেশ ছেড়ে বিদেশে পলায়ন করতে পারেন মর্মে অনুসন্ধানকালে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়। তারা বিদেশে পালিয়ে গেলে অনুসন্ধান কাজ ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা একান্ত প্রয়োজন।

নাঈমুল ইসলাম খান ও পরিবারের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান, তার স্ত্রী নাসিমা খান মন্টি, তিন মেয়ে লাবিবা নাঈম খান, যুলিকা নাঈম খান এবং আদিভা নাঈম খানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেনের (গালিব) আদালত দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। মামলার অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক আফরোজা হক খান এ আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়, নাঈমুল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে ভিন্ন কোনও উৎস অর্থাৎ ঘুষ বা অবৈধ উপায়ে অর্থ অর্জনপূর্বক ওই অর্থের উৎস আড়াল করার জন্য তার নামীয়, তার স্ত্রী ও তার তিন মেয়ের নামীয় ১৬৩টি ব্যাংক হিসাবে ৩৮৬ কোটি টাকা জমা, ৩৭৯ কোটি টাকা উত্তোলন ও বর্তমানে ৮ কোটি ৭৬ লাখ টাকা স্থিতি থাকাসহ অবৈধ অর্থ ব্যাংকিং চ্যানেলে আনয়ন করে মানিলন্ডারিং করারসহ নিজ ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য দুই সদস্যবিশিষ্ট টিম গঠন করা হয়। অনুসন্ধানকালে গোপনসূত্রে জানা যায়, অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। তারা বিদেশে পালিয়ে গেলে অনুসন্ধান কাজ ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য তাদের বিদেশ গমন রহিত করা একান্ত প্রয়োজন।

সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের ১৪০ কোটি টাকা অবরুদ্ধের আদেশ

সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ২৭টি ব্যাংক হিসাবের ১৪০ কোটি ১৭ লাখ ৮ হাজার ৫০ টাকা অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। দুদকের আবেদনে বলা হয়েছে, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অসাধু উপায়ে নিজ ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নামে ১২ জানুয়ারি ২০২৪ সাল হতে ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪ সাল পর্যন্ত জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ ১৪৬ কোটি ১৯ লাখ ৭০ হাজার ৯৬ টাকা টাকার সম্পদের মালিকানা অর্জনপূর্বক দখলে রাখা এবং ২৯টি ব্যাংক হিসাবে ৩৪৯ কোটি ১৫ লাখ ২১ হাজার ৫৮২ টাকা জমা ও ৩১৬ কোটি ৪৮ লাখ ৮১ হাজার ৬০৮ টাকা উত্তোলনের মাধ্যমে সন্দেহজনক লেনদেন করে মানিলন্ডারিংয়ে সম্পৃক্ত অপরাধ "দুর্নীতি ও ঘুষ" সংঘটনের মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্থ বা সম্পত্তির অবৈধ উৎস গোপন বা আড়াল করার উদ্দেশ্যে উহার রূপান্তর, স্থানান্তর ও হস্তান্তর করার দায়ে আলোচ্য মামলা দায়ের করা হয়। তিনি অবৈধ পন্থায় অর্জিত সম্পদ অন্যত্র বিক্রয় বা হস্তান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত করার প্রচেষ্টায় রয়েছেন। এ কারণে তার নিজ ও স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের নামীয় নিম্নবর্ণিত ২৭টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন। তার ব্যাংক হিসাবগুলো অবরুদ্ধ (Freeze) করা না গেলে বিচারকালে তা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা সম্ভব হবে না। এতে রাষ্ট্রের অপূরণীয় ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ব্যারিস্টার সুমনকে জামিন দেননি হাইকোর্ট

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানীর মিরপুর থানায় দায়ের করা মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের জামিন আবেদন উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে ব্যারিস্টার সুমনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার লিটন আহমেদ। এর আগে, গত ১ জানুয়ারি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে রাজধানীর মিরপুর থানার দুই হত্যাচেষ্টা ও খিলগাঁও থানার এক হত্যা মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন আদালত। ঢাকার অষ্টম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শিহাবুল ইসলাম এ আদেশ দেন। মিরপুর থানার মামলা সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ জুলাই যুবদল নেতা ও মিরপুরের বাঙালিয়ানা ভোজের বাবুর্চি হৃদয় মিয়া জুমার নামাজ আদায় করে মিরপুর-১০ নম্বরে সমাবেশে যান। সেখানে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা হামলা, ককটেল বোমা নিক্ষেপ করে ও গুলিও চালান। এতে গুলিবিদ্ধ হন হৃদয়। তিনি হবিগঞ্জের মাধবপুর ১০ নম্বর ছাতিয়াইন ইউনিয়ন যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি। এ ঘটনায় তিনি ২৩ সেপ্টেম্বর মিরপুর মডেল থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা করেন। মিরপুর থানার অপর মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ জুলাই মিরপুর-১০ নম্বর মোড়ে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করছিলেন আদহাম বিন আমিন। এ সময় পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা গুলিবর্ষণ করলে তার দুই হাঁটুতে গুলি লাগে। এ ঘটনায় গত ২২ অক্টোবর তার ভাই আকিবুন নূর হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন। অন্যদিকে খিলগাঁও থানার হত্যা মামলার সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ১৯ জুলাই বিকেল ৩টার দিকে খিলগাঁও থানাধীন বনশ্রী এলাকায় পায়ে গুলিবিদ্ধ হন মিজানুর রহমান। পরে তাকে পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ওই দিন বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় নিহতের বাবা মো. কামাল হোসেন গত ২ সেপ্টেম্বর খিলগাঁও থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

২০০৭ সালে চাকরিচ্যুত ৮৫ নির্বাচন কর্মকর্তাকে পুনর্বহালের নির্দেশ

২০০৭ সালে চাকরিচ্যুত ৮৫ জন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে চাকরি ফেরত দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। রায়ে চাকরিতে বহাল করে তাদের সব সুযোগ-সুবিধা দিতে বলা হয়েছে। এদের মধ্যে যেই তিন কর্মকর্তা মারা গেছেন মামলা চলাবস্থায় তাদের পরিবারকেও সুযোগ সুবিধা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ এ রায় দেন। এর আগে গত ২০ ফেব্রুয়ারি পৃথক আবেদনের শুনানি শেষে চাকরিচ্যুত ৮৫ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে পুনর্বহাল করা হবে কিনা, সে বিষয়ে রায়ের জন্য আজকের দিন ধার্য করেন আদালত। আদালতে আপিলকারী পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন এবং প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালের রায় (রিভিউ) পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী ও মো. রুহুল কুদ্দুস। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক এবং নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান ভূঁইয়া। মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে ৩২৭ জনকে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে অস্থায়ীভাবে নির্বাচিত করা হয়। চার দলীয় বিএনপি–জামায়াত জোট সরকারের আমলে এই নিয়োগ নিয়ে তখন বিতর্ক দেখা দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৭ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে ৩২৭ জনের মূল্যায়ন পরীক্ষা নেওয়া হয়। তাদের মধ্যে ৮৫ জনকে ওই বছরের ৩ সেপ্টেম্বর চাকরিচ্যুত করা হয়। এর বিরুদ্ধে চাকরিচ্যুত প্রার্থীরা মামলা করলে ২০০৯ সালের ২৩ মার্চ তা খারিজ করে রায় দেন প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল। এর বিরুদ্ধে তারা আপিল করেন। এই আপিল মঞ্জুর করে প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনাল ২০১০ সালের ১২ এপ্রিল আপিল মঞ্জুর করে চাকরিতে পুনর্বহালের পক্ষে রায় দেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ পৃথক চারটি লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করা হয়। এরপর ২০১০ সালের ২৯ এপ্রিল আপিল বিভাগের চোম্বার বিচারপতির আদালত প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করেন। পাশাপাশি বিষয়টি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। এর ধারাবাহিকতায় ২০১১ সালে সরকারপক্ষ পৃথক আপিল করে। ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর পুনর্বহাল করতে প্রায় এক যুগ আগে প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালের দেওয়া সিদ্ধান্ত বাতিল করেন আপিল বিভাগ। ফলে তাদের চাকরিতে ফেরত আটকে যায়। পরে ২০২৩ সালে আপিল বিভাগের রায় রিভিউ চেয়ে তারা আবেদন করেন। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল রিভিউ আবেদনের শুনানি শেষে রায়ের দিন ধার্য করেন আপিল বিভাগ।