যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী পাপিয়া ও স্বামী সুমনের ৪২ মাসের কারাদণ্ড
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৮:২০ পিএম, ১৪ আগস্ট ২০২৫

প্রায় ৬ কোটি ২৪ লাখ টাকা অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমান সুমনকে ৪২ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে প্রতিজনকে ৫ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে; অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক মোহাম্মদ আবু তাহের এ রায় ঘোষণা করেন। আদালতে জামিনে থাকা দম্পতি উপস্থিত ছিলেন। রায়ের পরপরই বিচারক তাদের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
বিচারক রায়ে উল্লেখ করেন, “রাষ্ট্রপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ নিঃসন্দেহে প্রমাণ করতে পেরেছে।”
এর আগে, রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষ যুক্তি উপস্থাপন সম্পন্ন করে এবং আদালত মামলার অভিযোগকারীসহ ২২ জন রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীর বক্তব্য রেকর্ড করে।
মামলা চলতি বছরের নয় মাস পূর্বে, ২০২০ সালের ৪ আগস্ট, দুদক ঢাকার সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ দায়ের করে। মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১২ অক্টোবর থেকে ২০২০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পাপিয়া ও তার স্বামী ওয়েস্টিন হোটেলের ২৫টি রুমে অবস্থান করে রুম-নাইট, রেস্তোরাঁর খাবার, মদ, স্পা, লন্ড্রি ও মিনি বার বাবদ মোট ৩ কোটি ২৩ লাখ ২৪ হাজার ৭৬১ টাকা ক্যাশে পরিশোধ করেন। এছাড়া, হোটেলে থাকা অবস্থায় প্রায় ৪০ লাখ টাকার শপিং করেন। তবে এ সমস্ত ব্যয়ের কোনো বৈধ উৎস দেখাতে পারেননি। দুদকের অনুসন্ধানে জানা যায়, তাদের মোট অবৈধ সম্পদের পরিমাণ ছয় কোটি ২৪ লাখ ১৮ হাজার টাকার কাছাকাছি।
অনুসন্ধানে আরও উঠে এসেছে, ২০১৫ সালের এপ্রিল থেকে ২০২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত বাসা ভাড়া বাবদ ৩০ লাখ টাকা, গাড়ি ব্যবসায় বিনিয়োগ এক কোটি টাকা, নরসিংদীতে কেএমসি কার ওয়াশ সলিউশনে বিনিয়োগ ২০ লাখ টাকা এবং বিভিন্ন ব্যাংকে তাদের নামে জমাকৃত ৩০ লাখ ৫২ হাজার ৯৫৮ টাকার বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি।
২০২০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি, র্যাবের একটি দল পাপিয়া, তার স্বামী সুমন ও ২ সহযোগীকে দেশত্যাগের চেষ্টা করার সময় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ৭টি পাসপোর্ট, ২ লাখ ১২ হাজার ২৭০ টাকা, ২৫ হাজার ৬০০ টাকার জাল নোট, ১১ হাজার ৪৮১ মার্কিন ডলার, ৪২০ শ্রীলঙ্কান রুপি, ৩০১ ভারতীয় রুপি ও দুটি ডেবিট কার্ড।
এর আগে চলতি বছরের ২৫ মে ৩ কোটি ২৩ লাখ টাকা পাচারের মামলায় পাপিয়াকে চার বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়াও, ২০২০ সালের ১২ অক্টোবর অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অভিযোগে এই দম্পতিকে ২০ বছরের কারাদণ্ডের সাজা প্রদান করা হয়।