ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৭৪ রানে হারিয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ
- খেলাধুলা ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৮:৫০ পিএম, ১৮ অক্টোবর ২০২৫

আফগানিস্তানের বিপক্ষে শেষ সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর বাংলাদেশ দলের আত্মবিশ্বাসে ছিল স্পষ্ট চিড়। অনুশীলনের সময়ও মেলেনি বেশি। সেই ধাক্কা সামলেই ঘরের মাঠে দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়াল টাইগাররা। মিরপুরে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৭৪ রানে হারিয়ে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে ১-০তে এগিয়ে গেল মেহেদি হাসান মিরাজের নেতৃত্বাধীন দল।
টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ গুটিয়ে যায় ২০৭ রানে, ৪৯.৪ ওভারে। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫১ রান করেন তাওহিদ হৃদয়। অভিষিক্ত মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনের ব্যাট থেকে আসে ৪৬ রান। জবাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৩৩ রানে অলআউট হয়ে যায় ৩৯তম ওভারে।
জয়ের নায়ক রিশাদ হোসেন। এই লেগস্পিনার একাই তুলে নেন ৬ উইকেট, যা তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং। ওয়ানডেতে কোনো বাংলাদেশি স্পিনারের এটিই এখন সেরা বোলিং ফিগার।
ব্যাট হাতে প্রথম ইনিংসের শুরুটা আশাব্যঞ্জকই ছিল বাংলাদেশের। প্রথম ওভারে ৭ রান তোলা হলেও দ্বিতীয় ওভারে সাজঘরে ফেরেন ওপেনার সাইফ হাসান, যার ব্যাট থেকে আসে মাত্র ৩ রান। তৃতীয় ওভারে বিদায় নেন আরেক ওপেনার সৌম্য সরকার। তার সংগ্রহ ৬ বলে ৪ রান।
দুই ওপেনার দ্রুত ফিরে গেলেও তাওহিদ হৃদয় ও নাজমুল হোসেন শান্ত দলকে টেনে তোলেন। তৃতীয় উইকেটে তারা গড়েন ৭১ রানের জুটি। শান্ত ৩২ রানে আউট হলে সেই জুটি ভেঙে যায়। তবে হৃদয় তার ফিফটি পূর্ণ করেন ৮৭ বল খেলে। ধীরগতির হলেও উইকেটের পরিস্থিতিতে তার ইনিংসটি ছিল কার্যকর। শেষ পর্যন্ত ৯০ বলে করেন ৫১ রান।
হৃদয়ের বিদায়ের পর হাল ধরেন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। অভিষেক ম্যাচেই দারুণ আত্মবিশ্বাস দেখান এই উইকেটকিপার ব্যাটার। ৭৬ বলে ৪৬ রান করে তিনি আউট হন ইনিংসের ৪৬তম ওভারে, রোস্টন চেইজের বলে। অঙ্কনের বিদায়ের পর ২০০ রান ছোঁয়া নিয়েও তৈরি হয় শঙ্কা। সেই সময় ঝড় তুলেন রিশাদ হোসেন। এক চার ও দুই ছক্কায় ১৩ বলে ২৬ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন তিনি, যা দলের রান দুই শতকের ঘরে নিয়ে যেতে সহায়তা করে।
স্বল্প লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালোই করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। উদ্বোধনী জুটিতে তারা তোলে ৫১ রান। কিন্তু ২৭ রান করা আলিক আথানজেকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে প্রথম আঘাত হানেন রিশাদ হোসেন। এরপরেই ধস নামে সফরকারী ব্যাটিং লাইনআপে।
তিনে নামা কেসি কার্টি ৩০ বলে ৯ রান করে স্লিপে ক্যাচ দেন সাইফ হাসানের হাতে, রিশাদের বলে। নিজের পরের ওভারেই রিশাদ ফেরান আরও দুই ব্যাটারকে। ব্যান্ডন কিং ৬০ বলে ৪৪ রান করে উইকেটকিপার সোহানকে ক্যাচ দেন। এরপরই শারেফান রাদারফোর্ড ফিরে যান শূন্য রানে, তিনিও সোহানের গ্লাভসবন্দি হন।
২৪তম ওভারে রোস্টন চেজকে ফিরিয়ে নিজের পঞ্চম উইকেট পূর্ণ করেন রিশাদ। চেজ করেন ৬ রান। ৯২ রানের মাথায় পাঁচ উইকেট হারানো ক্যারিবিয়ানরা এরপর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি।
৩৯তম ওভারে নিজের শেষ স্পেলে আবার আক্রমণে এসে জেডন সিলসকে মিরাজের ক্যাচে পরিণত করে ছয় উইকেট পূর্ণ করেন রিশাদ। এই পারফরম্যান্স এখন তার ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং এবং একই সঙ্গে বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসে ডানহাতি স্পিনারদের মধ্যে প্রথম ফাইফার।
রিশাদের এই দুর্দান্ত অলরাউন্ড অবদানেই প্রথম ম্যাচে দারুণভাবে এগিয়ে গেল টাইগাররা। সিরিজের পরবর্তী ম্যাচে তার কাছ থেকে আরও এমন পারফরম্যান্সের আশায় থাকবে বাংলাদেশ।