সরকারি কলেজে জামায়াতের কর্মশালা, অংশ নিলেন আ.লীগ নেতারাও

নেত্রকোনার দুর্গাপুরে একটি সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আয়োজনে নির্বাচনি প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে অংশগ্রহণ করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মীও; ঘটনা ঘিরে উঠেছে নানা প্রশ্ন।

শনিবার, ১৮ অক্টোবর দুপুরে দুর্গাপুর উপজেলার সুসং সরকারি কলেজ মিলনায়তনে এই কর্মশালার আয়োজন করে জামায়াতে ইসলামী দুর্গাপুর উপজেলা শাখা। কর্মশালায় দলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় ইউনিয়ন পর্যায়ের কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা, যা রাজনৈতিক মহলে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জামায়াত নেতারা মাঠপর্যায়ের কর্মীদের প্রস্তুত করতে এই কর্মশালার আয়োজন করেন। এতে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা জামায়াত আমির মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সাধারণ সম্পাদক কুতুব উদ্দিন। বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর নেত্রকোনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মাহবুবুর রহমান, নেত্রকোনা-১ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী অধ্যাপক আবুল হাসেম, পৌর শাখার সভাপতি মো. হাবিবুর রহমান এবং জেলা মানবসম্পদ উন্নয়ন বিভাগের সভাপতি জহির উদ্দিন।

কর্মশালার ভেন্যু নিয়ে দেখা দিয়েছে বিতর্ক। কারণ এটি একটি সরকারি কলেজ এবং সেখানে কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি আয়োজনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রতিষ্ঠানটির এক সিনিয়র শিক্ষক। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই শিক্ষক বলেন, “এটি একটি সরকারি কলেজ। শনিবার সরকারি বন্ধের দিনে, কলেজ মিলনায়তনে একটি রাজনৈতিক দলকে সভা করতে দেওয়ার অনুমতি প্রিন্সিপাল দিতে পারেন না। আমি একজন সিনিয়র শিক্ষক হিসেবে অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি শুনিনি।”

এদিকে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে জামায়াতের দুর্গাপুর শাখার সাধারণ সম্পাদক কুতুব উদ্দিন বলেন, “যারা আওয়ামী লীগ করে তারা কি সবাই খারাপ? আওয়ামী লীগ করতে গিয়ে যারা কোনো মূল্যায়ন পায়নি, যারা আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতা, যারা আওয়ামী লীগের আমলে কোনো অপর্কমের সঙ্গে জড়িত নয়, তারা যদি আমাদের ডাকে আসে, তাহলে তাদের নিয়ে তো প্রশিক্ষণ বা নির্বাচনি সভা করতেই পারি।”

কলেজ প্রিন্সিপালের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর বলেন, “ব্যস্ত আছি, এ নিয়ে পরে কথা বলবো।” এরপর একাধিকবার কল করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে দুর্গাপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজা আফসানা বলেন, “সরকারি কলেজ মিলনায়তনে রাজনৈতিক দলের কোনো প্রশিক্ষণ কর্মশালা হচ্ছে তা আমার জানা নাই। এটা সম্পূর্ণ কলেজ কর্তৃপক্ষের বিষয়। তবে আইন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটলে তা অবশ্যই উপজেলা প্রশাসন হস্তক্ষেপ করবে।”