জুলাই আন্দোলনে কেউ ‘মাস্টারমাইন্ড’ ছিল না: আসিফ মাহমুদ


জুলাই আন্দোলনে কেউ ‘মাস্টারমাইন্ড’ ছিল না: আসিফ মাহমুদ

জুলাই-আগস্টের আলোচিত ছাত্র আন্দোলনের পেছনে কেউ এককভাবে নেতৃত্ব দেয়নি বলে ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। তার ভাষ্য অনুযায়ী, আন্দোলনটি ছিল যৌথ সিদ্ধান্তে পরিচালিত এবং কোনো 'মাস্টারমাইন্ড' বা প্রধান উদ্যোক্তা সেখানে ছিলেন না।

বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ চলমান মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার শুনানিতে এই মন্তব্য করেন আসিফ। রাজধানীর চানখারপুলে ছয়জন নিহত হওয়ার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তাকে জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।

প্রথমেই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন শাহবাগ থানার সাবেক ওসি (অপারেশন) মো. আরশাদ হোসেনের আইনজীবী সাদ্দাম হোসেন অভি। জেরার একপর্যায়ে তিনি জানতে চান, আন্দোলনে কোনো নেতৃত্বদানকারী ব্যক্তি বা মাস্টারমাইন্ড ছিলেন কি না।

উত্তরে আসিফ মাহমুদ বলেন, “গত বছরের ৫ জুন কোটাপ্রথা পুনর্বহালের রায়ের পর আমরা ৫৮ জন সমন্বয়ক-সহসমন্বয়ক মিলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে আন্দোলন শুরু করি। এতে কোনো রাজনৈতিক দলের ইন্ধন ছিল না। আন্দোলনে প্রধানও কেউ ছিল না। সমন্বয়কদের সবার মর্যাদা সমান ছিল।”

আইনজীবী জানতে চান, তারা কীভাবে যোগাযোগ করতেন। উত্তরে তিনি বলেন, “যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে আমরা ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করেছি।”

এরপর যখন প্রশ্ন করা হয়, আন্দোলনকারীদের নামে কোনো মামলা হয়েছে কি না, তখন আসিফ জানান, “আমিসহ আমাদের অনেকের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা হয়েছে।”

একদফা কর্মসূচির পেছনে কোনো আন্তর্জাতিক প্রভাব বা বিদেশি শক্তির সম্পৃক্ততা ছিল কি না, জানতে চাইলে আসিফ স্পষ্ট করে বলেন, “একদফা কর্মসূচি ঘোষণার পেছনে কোনো বিদেশি ইন্ধন ছিল না। আমরা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ ছাড়া, আন্দোলনকারীরাই আন্দোলনের খরচের জন্য ফান্ড তৈরি করেছি।”

আসিফ মাহমুদের অবস্থান নিয়ে একটি প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, ৫ আগস্ট যেদিন পুলিশ গুলি চালায়, তিনি ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ২০০ মিটার দূরে ছিলেন। আইনজীবীর মন্তব্য ছিল, এত দূর থেকে গুলি ছোড়ার দৃশ্য দেখা সম্ভব নয়। জবাবে আসিফ বলেন, “এটা সত্য নয়।”

দুপুর ২টা ১৫ মিনিটের কিছু পর ট্রাইব্যুনালে পৌঁছান আসিফ মাহমুদ। ২টা ৫৫ মিনিটে এজলাসে প্রবেশ করেন তিনি, এরপর তার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।

এর আগে গত ৯ অক্টোবরও তিনি একই মামলায় দুপুর ২টায় ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়েছিলেন। সে দিন বিকেল ৫টা পর্যন্ত তার জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়, তবে তা শেষ না হওয়ায় প্রসিকিউশনের আবেদনে ১৬ অক্টোবর নতুন দিন ধার্য করেন আদালত।

আজ সাক্ষ্যগ্রহণের দ্বিতীয় দিনে বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল-১ এর তিন সদস্যের বেঞ্চের সামনে তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ আটজনের বিরুদ্ধে বাকি অংশের সাক্ষ্য প্রদান করেন। এরপর তার জেরা শুরু হয়।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×