বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে ভূমিকা রাখবে শ্রম সংস্কার বাস্তবায়ন: প্রধান উপদেষ্টা
- নিউজ ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৩:৪৫ পিএম, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) কনভেনশনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গুরুত্বপূর্ণ শ্রম আইন সংস্কার বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, এই সংস্কারগুলো বাংলাদেশে ব্যাপক বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে আয়োজিত এক নৈশভোজে এ কথা বলেন তিনি। সেখানে শ্রম আইন, শ্রমিক অধিকার ও চলমান সংস্কার প্রক্রিয়া নিয়ে উচ্চপর্যায়ের সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী তিনটি দলের ছয়জন রাজনীতিক, বাংলাদেশের কূটনীতিক, জাতিসংঘ কর্মকর্তা এবং আইএলও মহাপরিচালকসহ জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার শীর্ষ প্রতিনিধিরা অংশ নেন। সংলাপটি সঞ্চালনা করেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “এসব সংস্কার বাংলাদেশে ব্যাপক বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।” তিনি শ্রমখাত সংস্কারের মাধ্যমে দেশের ভবিষ্যৎ অর্থনীতি ও আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তির উন্নতির সম্ভাবনার ওপর জোর দেন।
আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরাও শ্রম সংস্কারের ব্যাপক তাৎপর্য এবং এর মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ ও বৈশ্বিক অবস্থানের ওপর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে মতামত দেন।
প্রধান উপদেষ্টার আনুষ্ঠানিক বক্তব্যের আগে তিনটি প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতাদের অনানুষ্ঠানিকভাবে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়। তারা শ্রম সংস্কার এবং তৈরি পোশাক শিল্পের গুরুত্বের বিষয়ে একমত প্রকাশ করেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তৈরি পোশাক খাতকে দেশের অর্থনীতির মূলভিত্তি হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, “ভবিষ্যতের যেকোনো সরকারকে অবশ্যই এ খাতের প্রবৃদ্ধি ও স্থায়িত্বকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।” তিনি একইসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের শ্রম সংস্কার প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন।
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের জানান, তাদের দলের অনেক সদস্য তৈরি পোশাক খাতে প্রত্যক্ষভাবে কাজ করেছেন, যা খাতটিকে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় আরও সক্ষম করে তুলতে সহায়ক অভিজ্ঞতা। তিনি জানান, নির্বাচিত হলে দলটি এসব সংস্কারকে আরও এগিয়ে নেবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবীর বলেন, বর্তমান শ্রম সংস্কার উদ্যোগ অব্যাহত রাখা উচিত এবং ভবিষ্যতে তা আরও সম্প্রসারিত হওয়া দরকার।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র নেতা ডা. তাসনিম জারা বলেন, রানা প্লাজা দুর্ঘটনা তার রাজনৈতিক যাত্রার একটি গুরুত্বপূর্ণ বাঁক ছিল। তখন তিনি মেডিকেল শিক্ষার্থী হিসেবে আহতদের সেবায় স্বেচ্ছাসেবক ছিলেন। তিনি অনিরাপদ শ্রমের মানবিক মূল্য এবং সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দেন।
সব নেতার বক্তব্যে একটি বিষয় স্পষ্ট; বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা জরুরি, যাতে কেবল ক্রেতারাই সব শর্ত নির্ধারণ করতে না পারে।
সমাপনী বক্তব্যে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তার সরকার অর্থবহ ও টেকসই শ্রম সংস্কার বাস্তবায়নে অটল রয়েছে।
সূত্র: বাসস