শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে নাহিদ ইসলামের অবশিষ্ট সাক্ষ্যগ্রহণ আজ


শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে নাহিদ ইসলামের অবশিষ্ট সাক্ষ্যগ্রহণ আজ

আলোচিত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় আজ জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের অবশিষ্ট সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে এই মামলায় সাক্ষ্য দিচ্ছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে এই সাক্ষ্যগ্রহণের কার্যক্রম শুরু হবে।

সূত্র জানায়, দিনের শুরুতেই নিজের বাকি বক্তব্য পেশ করবেন নাহিদ ইসলাম। এরপর তাকে জেরা করবেন আসামিপক্ষের রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন।

এর আগে, ১৭ সেপ্টেম্বর বিকেল ৩টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত তার সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তবে তা শেষ না হওয়ায় বিচারকাজ একদিনের জন্য স্থগিত করা হয়।

এদিকে, একইদিন সকাল ১০টা ৪৫ মিনিট থেকে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শুরু হয়। দ্বিতীয় দিনের মতো দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন স্টেট ডিফেন্সের আইনজীবী। মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে ১৮তম দিনে, এ পর্যন্ত ৪৭ জন সাক্ষী তাদের বক্তব্য দিয়েছেন।

১৫ থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত টানা তিন দিন মাহমুদুর রহমানের সাক্ষ্য ও জেরা সম্পন্ন হয়। চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, নাহিদ ইসলামের সাক্ষ্য শেষে এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ পর্ব সমাপ্ত ঘোষণা করা হবে।

উল্লেখযোগ্যভাবে, মামলার ৩৬ নম্বর সাক্ষী হিসেবে ২ সেপ্টেম্বর আদালতে হাজির হন মামলার অন্যতম আসামি, বর্তমানে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। তার জেরা শেষ হয় ৪ সেপ্টেম্বর। তিনি আদালতে স্বীকার করেন, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের নির্দেশে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে, এমন দাবি করে তিনি ক্ষমাও চান। সেইসঙ্গে তিনি একাধিক অজানা তথ্য ট্রাইব্যুনালের সামনে তুলে ধরেন।

১ সেপ্টেম্বরের দশম দিনের শুনানিতে মোট ছয়জন সাক্ষ্য দেন, যাদের মধ্যে চিকিৎসক, সাংবাদিক ও প্রত্যক্ষদর্শী রয়েছেন।

বিভিন্ন সাক্ষ্যের জবানবন্দিতে উঠে এসেছে গত বছরের জুলাই ও আগস্টে দেশজুড়ে ঘটে যাওয়া গণহত্যার ভয়াবহ বিবরণ। শহীদ পরিবারের সদস্য ও প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীরা এই ঘটনায় শেখ হাসিনা, কামালসহ সংশ্লিষ্টদের দায়ী করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

গত ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনা, কামাল এবং মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করার নির্দেশ দেন। প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে।

মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্রের মোট দৈর্ঘ্য ৮,৭৪৭ পৃষ্ঠা। এর মধ্যে তথ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করা হয়েছে ২,০১৮ পৃষ্ঠায়, জব্দতালিকা ও অন্যান্য দলিল ৪,০০৫ পৃষ্ঠার, এবং শহীদদের তালিকা ও বিবরণ রয়েছে ২,৭২৪ পৃষ্ঠায়। মামলায় মোট ৮১ জন সাক্ষী তালিকাভুক্ত আছেন। ১২ মে তদন্ত সংস্থা এই প্রতিবেদন জমা দেয় চিফ প্রসিকিউটরের কাছে।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×