ঘণ্টায় প্রায় শতাধিক উল্কাবৃষ্টি, বাংলাদেশ থেকেও দেখা যাবে


ঘণ্টায় প্রায় শতাধিক উল্কাবৃষ্টি, বাংলাদেশ থেকেও দেখা যাবে

আকাশপ্রেমীদের জন্য আসছে বছরের অন্যতম প্রতীক্ষিত মহাজাগতিক চমক—পার্সাইড উল্কাবৃষ্টি। প্রতি বছরের মতো এবারও আগস্টের আকাশে দেখা মিলবে এই নজরকাড়া উল্কাপাতের, যেখানে প্রতি ঘণ্টায় দেখা যেতে পারে ৫০ থেকে ১০০টি উল্কা। বাংলাদেশ থেকেও স্পষ্টভাবে উপভোগ করা যাবে এই দৃশ্য।

চলতি বছর পার্সাইড উল্কাবৃষ্টি শুরু হয়েছে ১৭ জুলাই থেকে এবং চলবে ২৪ আগস্ট পর্যন্ত। তবে সবচেয়ে বেশি উল্কা দেখা যাবে ১২ ও ১৩ আগস্ট রাতে, যখন পৃথিবী পাড়ি দেবে ধূমকেতু ১০৯পি/সুইফট-টাটলের ফেলে যাওয়া ধূলিকণা ও বরফের স্তরের ভেতর দিয়ে। এই ধূমকেতুটি প্রতি ১৩৩ বছরে একবার সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে, এবং সর্বশেষ পৃথিবীর পাশ দিয়ে গিয়েছিল ১৯৯২ সালে।

পার্সাইড উল্কাবৃষ্টি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ছুটে আসা ধূলিকণাগুলো জ্বলে ওঠার কারণেই সৃষ্টি হয়। আকাশে এগুলো আগুনের রেখার মতো ভেসে ওঠে, যাকে বলা হয় ‘মিটিওর’। এর মধ্যেও বড় ও অত্যন্ত উজ্জ্বল যেগুলো, সেগুলোকে বলা হয় ‘ফায়ারবল’।

এই মহাজাগতিক প্রদর্শনী যদিও প্রতি বছরই ঘটে, তবে চাঁদের অবস্থান এর দৃশ্যমানতাকে প্রভাবিত করতে পারে। গত বছর ছিল অমাবস্যার মতো অন্ধকার রাত, ফলে উল্কাগুলোর ঝলক আরও বেশি চোখে পড়েছিল। এবছর চাঁদের আলো থাকবে প্রায় ৮৪ শতাংশ পূর্ণতায়, যা অপেক্ষাকৃত কম উজ্জ্বল উল্কাগুলো আড়াল করতে পারে। তবে পার্সাইডের উল্কাগুলো এতটাই উজ্জ্বল যে চাঁদের আলোয়ও বেশিরভাগই দেখা যাবে।

এই উল্কাবৃষ্টি রাতের আকাশে দৃশ্যমান হবে পার্সিয়াস নক্ষত্রমণ্ডলের দিক থেকে ছুটে আসা উল্কার ঝাঁক হিসেবে, যা থেকেই এর নাম এসেছে—পার্সাইড।

উল্কাবৃষ্টি উপভোগের জন্য সবচেয়ে ভালো সময় ১২ আগস্ট রাত ১০টা থেকে শুরু করে ভোররাত পর্যন্ত, যখন চাঁদ ক্রমে নিচে নেমে আসবে এবং উল্কাগুলো আরও পরিষ্কারভাবে দেখা যাবে। শহরের কৃত্রিম আলোর বাইরে, খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করলে অভিজ্ঞতাটি হবে আরও উপভোগ্য। অন্তত ১৫–২০ মিনিট অন্ধকারে তাকিয়ে থাকলে চোখ অভ্যস্ত হয়ে উঠবে এবং উল্কাগুলোর ঝলক আরও স্পষ্ট ধরা দেবে।

এই চোখ ধাঁধানো মুহূর্তগুলো অনেকের স্মৃতিতে রয়ে যায় চিরকাল। আর যারা এখনও এমন অভিজ্ঞতা পাননি, তাদের জন্য এটাই হতে পারে এক অভূতপূর্ব মহাজাগতিক রাত।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×