প্রাক্তন সিআইএ কর্মকর্তার দাবি
পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্রাগার যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দিয়েছিলেন পারভেজ মোশাররফ
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৬:২৩ পিএম, ২৫ অক্টোবর ২০২৫
প্রাক্তন সিআইএ কর্মকর্তা জন কিরিয়াকো এমন অভিযোগ তুলেছেন যে পাকিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রপতি পারভেজ মুশাররফ দেশের পারমাণবিক অস্ত্রাগারের নিয়ন্ত্রণ যুক্তরাষ্ট্রকে কার্যত হস্তান্তর করেন এবং বিনিময়ে ওয়াশিংটন তাঁকে কোটি কোটি ডলার প্রদান করেছিল। কিরিয়াকো—যিনি সিআইএতে ১৫ বছর কাজ করেছেন এবং পাকিস্তানে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে দায়িত্বও পালন করেছেন—এই মন্তব্য করেছেন একটি সাক্ষাৎকারে। খবরটি ইন্ডিয়া টুডে ও এএনআই প্রকাশ করেছে।
কিরিয়াকো যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতিকে সমালোচনা করে বলেন, ওয়াশিংটন শক্তিকে প্রাধান্য দিয়ে স্বৈরশাসকদের সঙ্গে আরামে কাজ করে, জনমত বা গণতান্ত্রিক আদর্শকে তেমন গুরুত্ব দেয় না। তিনি এএনআইকে বলেছেন, “মুশাররফ পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্রাগারের নিয়ন্ত্রণ যুক্তরাষ্ট্রকে হস্তান্তর করেছিলেন। ওয়াশিংটন একটি বিশাল সাহায্য প্যাকেজের মাধ্যমে ‘মূলত এগুলো কিনে নিয়েছিল।’”
তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, মুশাররফের শাসনকালে যুক্তরাষ্ট্রকে পাকিস্তানের নিরাপত্তা ও সামরিক অপারেশনে ব্যাপকভাবে অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হয়েছিল। কিরিয়াকো বলেন, “আমরা লাখ লাখ ডলার সামরিক ও অর্থনৈতিক সাহায্য দিয়েছিলাম এবং মুশাররফ আমাদের ইচ্ছামতো কাজ করতে দিতেন।”
তবে কিরিয়াকো দাবি করেন, মুশাররফ একদিকে প্রকাশ্যে যুক্তরাষ্ট্রকে সমর্থন করলেও গোপনে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী ও চরমপন্থী গোষ্ঠীকে ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাতে অনুমতি দিয়েছেন—এমন দ্বৈতকথার খেলা খেলেছেন।
কিরিয়াকো আরও দাবি করেন, সৌদি আরবের সরাসরি হস্তক্ষেপের কারণে যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানি পারমাণবিক বিজ্ঞানী আব্দুল কাদির খানকে হত্যার পরিকল্পনা স্থগিত রেখেছিল এবং সৌদি নেতৃত্ব খানকে রক্ষা করেছে। তার কথায়, “আমরা যদি ইসরায়েলি পন্থা অবলম্বন করতাম, তাহলে তাকে হত্যা করা হত; তাকে খুঁজে পাওয়া সহজ কাজ ছিল। কিন্তু সৌদিরা এসে বলল, ‘দয়া করে তাকে একা থাকতে দিন—আমরা খানকে পছন্দ করি, আমরা তার সঙ্গে কাজ করছি।’”
কিরিয়াকোর এসব দাবিই দক্ষিণ এশিয়ার পারমাণবিক কূটনীতি, মার্কিন-সৌদি-পাকিস্তান সম্পর্ক ও অঞ্চলীয় শক্তি ভারসাম্য নিয়ে নতুন প্রশ্ন উত্থাপন করেছে। যদিও তার ওপর নির্ভর করে উক্ত অভিযোগগুলি সাম্প্রতিক ও গুরুতর—তাই এগুলো সরকারিভাবে বা তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে যাচাই করা প্রয়োজন।