যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঋণ ছাড়াল ৩৮ ট্রিলিয়ন ডলার
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ১২:৫২ পিএম, ২৩ অক্টোবর ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঋণ এখন ৩৮ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে, যা দেশের সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি ও রাজস্বের অভাবে তীব্র বৃদ্ধির কারণে ঘটে। মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২১ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৮ ট্রিলিয়ন ১৯ বিলিয়ন ৮১৩ মিলিয়ন ডলার।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন জানিয়েছে, এই ঋণের বোঝা দেশটির প্রত্যেক নাগরিকের জন্য গড়ে প্রায় ১ লাখ ১১ হাজার ডলার। ওয়াশিংটন ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান পিটার জি পিটারসন ফাউন্ডেশন উল্লেখ করেছে যে, এই ঋণের পরিমাণ চীন, ভারত, জাপান, জার্মানি এবং যুক্তরাজ্যের সম্মিলিত অর্থনীতির সমান। চলতি বছরের আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময়ে দেশের ঋণ ৩৭ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়ানোর পর মাত্র দুই মাসের বেশি সময়ে তা আবারও ১ ট্রিলিয়ন ডলার বেড়ে গেছে, যা ঋণের দ্রুত বৃদ্ধির ইঙ্গিত বহন করে।
পিটার জি পিটারসন ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী মাইকেল এ পিটারসন মন্তব্য করেছেন, "মার্কিন আইনপ্রণেতারা তাদের মৌলিক আর্থিক দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হচ্ছেন। এক ট্রিলিয়নের পর আরেক ট্রিলিয়ন ঋণ যোগ করে সংকটের পর সংকটে বাজেট তৈরি করা, এমন এক মহান জাতির জন্য একেবারেই উপযুক্ত নয়।" তিনি সংসদ সদস্যদের আরও দায়িত্বশীল বাজেট সংস্কারের আহ্বান জানান।
এর আগে, চলতি বছরের মে মাসে ক্রেডিট রেটিং সংস্থা মুডিজ যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি ঋণের রেটিং ‘ট্রিপল এ’ থেকে নামিয়ে ‘ডাবল এ ওয়ান’ করেছে। তারা উল্লেখ করেছে, ধারাবাহিক বড় বাজেট ঘাটতি এবং সুদের ব্যয় বৃদ্ধির প্রবণতা মোকাবেলা করতে না পারায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর আগে ফিচ এবং স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুওরস যথাক্রমে ২০১১ ও ২০২৩ সালে দেশের ক্রেডিট রেটিং কমিয়েছিল।
অর্থনীতিবিদদের মধ্যে মতবৈচিত্র্য থাকলেও তারা একমত যে যুক্তরাষ্ট্রের ঋণের বর্তমান গতি টেকসই নয়। ২০২৩ সালের পেন ওয়ারটন বাজেট মডেলের এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, দেশের ঋণ যদি মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২০০ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়, তাহলে আর্থিক বাজার তা সহ্য করতে পারবে না।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসনাল বাজেট অফিসের হিসাব অনুযায়ী, ২০৪৭ সালের মধ্যে দেশের ঋণ জিডিপির ২০০ শতাংশের কাছে পৌঁছাতে পারে। এ ব্যাপারে মূল কারণ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল অ্যাক্ট’-এর আওতায় প্রণীত বড় করছাড়কে চিহ্নিত করা হয়েছে।
সূত্র: আল জাজিরা