শেখ হাসিনা সেনাবাহিনীকে উসকে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন: চিফ প্রসিকিউটর
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৬:০০ পিএম, ২৩ অক্টোবর ২০২৫

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর বেঞ্চে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কড়া অভিযোগ উপস্থাপন করেছেন। তিনি বলেন, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেনাবাহিনীকে উসকে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন এবং রাষ্ট্রের বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। বৃহস্পতিবার ট্রাইব্যুনালে মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়।
শেখ হাসিনা ছাড়াও এই মামলার অপর দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং পুলিশের প্রাক্তন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন; এদের মধ্যে মামুন নিজেই দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষীর (অ্যাপ্রুভার) ভূমিকা গ্রহণ করেছেন।
চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম আদালতে অপরাধীদের অনুশোচনা-শুন্য আচরণ তুলে ধরে বলেন, “যারা এখানে আসামি হয়েছেন, তাদের (শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান) মধ্যে কোনো অনুশোচনা নেই। এত বড় অপরাধ করেছেন, দুনিয়ার সবাই জানে এই অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, তিনিও জানেন; কিন্তু কখনোই তার মধ্যে কোনো ধরনের অনুশোচনা পরিলক্ষিত হয়নি। উল্টো তিনি যারা তার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন, সাক্ষ্য দিচ্ছেন, তাদের হত্যা করার হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। তাদের বাড়িঘর ধ্বংস করে দেওয়ার কথা বলছেন। তাদের লাশগুলো বঙ্গোপসাগরে ফেলে দেওয়ার কথা বলছেন।”
তিনি আরও বলেন, “সর্বশেষে তিনি (শেখ হাসিনা) রাষ্ট্রের বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে গন্ডগোল লাগানোর চেষ্টা করেছেন। তিনি সেনাবাহিনীকে উসকে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। সেনাবাহিনীকে বলার চেষ্টা করেছেন, তোমাদের অফিসারদের বিচার হয়, তোমরা কেন রুখে দাঁড়াচ্ছ না? রাষ্ট্রের মধ্যে একটা সিভিল ওয়ার (গৃহযুদ্ধ) লাগানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী সেই পাতা ফাঁদে পা দেয়নি। বাংলাদেশের জনগণ সেই পাতা ফাঁদে পা দেয়নি। যারা পারপিট্রেটর (অপরাধী) ছিল, তাদের বিচারের মুখোমুখি করার জন্য তাদের অঙ্গীকারের প্রতি দৃঢ় আছেন। আদালতে তাদের নিয়ে এসেছেন। বিচারের প্রক্রিয়া স্মুথলি সামনে পরিচালিত হচ্ছে। বাংলাদেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কোনো উসকানিতে কেউ পা দেয়নি।”
চিফ প্রসিকিউটর আরও আঘাত করেও বলেন, “এ রকম নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞ, পুরো প্রজন্মকে হত্যা করে ফেলার চেষ্টা, ৩৫ হাজার মানুষকে আহত করা, অঙ্গহানি করা, এরপরও সামান্যতম রিমোর্স (অনুশোচনা) না থাকা। এখানে শিশু ছিল, নারী ছিল, মজুর ছিল, ছাত্ররা ছিল, তাদের হত্যা করতে তার বুক কাঁপেনি। এখন পর্যন্ত তার মধ্যে কোনো অনুশোচনা নেই। সুতরাং সর্বোচ্চ শাস্তিটা তার অবশ্যই প্রাপ্য।”
দিনশেষে সূত্রটি জানায়, এদিন ট্রাইব্যুনালে মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন সমাপ্ত হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট পক্ষদের পক্ষে পরবর্তী আইনগত প্রক্রিয়া শুরু হবে।