ভেনেজুয়েলায় স্থল সামরিক অভিযান চালাতে পারে যুক্তরাষ্ট্র
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ১২:২৯ পিএম, ১৭ অক্টোবর ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ভেনেজুয়েলায় সরাসরি স্থল সামরিক অভিযান চালানোর সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে। চলমান উত্তেজনার মধ্যেই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একাধিকবার প্রকাশ্যে জানিয়েছেন, তিনি দেশটির বিরুদ্ধে গোপন অভিযানের জন্য সিআইএকে সবুজ সংকেত দিয়েছেন।
ট্রাম্পের অভিযোগ, ভেনেজুয়েলা মাদক পাচারের একটি বড় উৎস এবং সমুদ্রপথে বিপুল পরিমাণ মাদক যুক্তরাষ্ট্রে পাচার হচ্ছে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে ওয়াশিংটন গত সপ্তাহে ভেনেজুয়েলার উপকূলীয় একটি নৌযানে হামলা চালায়। এ ঘটনায় প্রাণ হারান ছয় জন। এ নিয়ে দেশটির বিরুদ্ধে মার্কিন অভিযানে মোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়াল ২৭।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্পষ্ট জানান, তার প্রশাসন এখন ভেনেজুয়েলার অভ্যন্তরে স্থল অভিযানের বিষয়েও চিন্তাভাবনা করছে। সাম্প্রতিক সময়ে ক্যারিবিয়ান সাগরে মার্কিন সামরিক তৎপরতা এবং ভেনেজুয়েলার ওপর একের পর এক হামলার ফলে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে পৌঁছেছে।
বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্পকে সরাসরি প্রশ্ন করা হয়, কেন তিনি ভেনেজুয়েলায় সিআইএ পাঠানোর অনুমতি দিয়েছেন। জবাবে তিনি বলেন, “দুটি কারণ আছে। প্রথমত, তারা (ভেনেজুয়েলা) তাদের জেলখানার বন্দিদের যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়েছে। দ্বিতীয়ত, ভেনেজুয়েলা মাদক পাচারের বড় উত্স।” তিনি আরও বলেন, “ভেনেজুয়েলা থেকে প্রচুর পরিমাণে মাদক যুক্তরাষ্ট্রে আসে, বিশেষত সমুদ্রপথে। আমরা সমুদ্রপথে তা বন্ধ করছি, এবার স্থলপথেও থামাব।”
ট্রাম্পের এই বক্তব্য ওয়াশিংটনের তরফে ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে আরও বড় পরিসরের অভিযান চালানোর সম্ভাবনাকে উসকে দিয়েছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে দুই দেশই ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে সামরিক প্রস্তুতি জোরদার করেছে, যার ফলে সশস্ত্র সংঘর্ষের শঙ্কা আরও বেড়েছে।
ট্রাম্পের ঘোষণার পর ভেনেজুয়েলার সরকার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে মাদুরো প্রশাসন জানায়, “যুক্তরাষ্ট্রের এসব পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘ সনদের সরাসরি লঙ্ঘন। এর লক্ষ্য ভেনেজুয়েলায় শাসন পরিবর্তনের বৈধতা তৈরি করা এবং দেশের প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর নিয়ন্ত্রণ নেওয়া।”
একজন সাংবাদিক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে প্রশ্ন করেন, সিআইএ কি নিকোলাস মাদুরোকে অপসারণের অনুমতি পেয়েছে? উত্তরে ট্রাম্প বলেন, “আমি এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে পারি না। এটা আমাকে করার মতো প্রশ্ন নয়, যদিও প্রশ্নটা অযৌক্তিক নয়, তবে আমার পক্ষে এমন কিছু বলা অযৌক্তিক হবে।”
সাক্ষাৎকারের শেষ দিকে ট্রাম্প বলেন, “আমি শুধু এটুকু বলব, ভেনেজুয়েলা এখন চরম চাপ অনুভব করছে।”
উল্লেখ্য, চলতি বছরের শুরু থেকে ট্রাম্প প্রশাসন ল্যাটিন আমেরিকায় ‘ওয়ার অন টেরর’ নীতির নতুন রূপ বাস্তবায়নের ঘোষণা দেয়। এতে মাদক ও অপরাধ দমনের নামে সামরিক অভিযান জোরদার করার কথাও বলা হয়। তবে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপের প্রকৃত উদ্দেশ্য হলো ভেনেজুয়েলায় শাসন পরিবর্তন, যা আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করতে পারে।