পুলিশ কর্মকর্তার ঘরে পাওয়া গেল বিছানাভর্তি নগদ টাকা, সোনার গহনা ও দামি গাড়ি


পুলিশ কর্মকর্তার ঘরে পাওয়া গেল বিছানাভর্তি নগদ টাকা, সোনার গহনা ও দামি গাড়ি

ভারতের পাঞ্জাব পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হরচরণ সিং ভাল্লারের বাসায় অভিযান চালিয়ে পাওয়া গেলো বিছানাভর্তি নগদ অর্থ, বিলাসবহুল গাড়ি, সোনার অলংকার ও বিদেশি মদ। দুর্নীতির অভিযোগে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই তাকে গ্রেপ্তার করেছে।

বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর, রোপার রেঞ্জের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল (ডিআইজি) ভাল্লারকে চণ্ডীগড়ের মোহালি এলাকা থেকে আটক করে সিবিআই। তার বিরুদ্ধে ঘুষ দাবি ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে তদন্ত শুরু হয়েছে।

সিবিআই জানায়, ভাল্লার একজন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে মামলা নিষ্পত্তির শর্তে অর্থ দাবি করেছিলেন। অভিযোগে বলা হয়, তিনি কৃষ্ণা নামের একজন মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে আকাশ বাট্টা নামের ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা দাবি করেন। বাট্টা পাঁচ দিন আগে সিবিআইয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে জানান, তাকে একটি ভুয়া ব্যবসায়িক মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দিয়ে ভাল্লার ৮ লাখ রুপি ও নিয়মিত মাসিক ঘুষ চেয়েছিলেন।

তদন্তে উঠে এসেছে, ঘুষের অর্থ কৃষ্ণার মাধ্যমে ডিআইজি ভাল্লারের কাছে পৌঁছানোর পরিকল্পনা ছিল। ফোনালাপে কৃষ্ণাকে বলতে শোনা যায়, “আগস্টের টাকা আসেনি, সেপ্টেম্বরের টাকাও আসেনি।” এই তথ্যের ভিত্তিতে চণ্ডীগড়ের সেক্টর-২১ এলাকায় ফাঁদ পেতে কৃষ্ণাকে ৮ লাখ রুপি গ্রহণের সময় হাতেনাতে ধরে ফেলে সিবিআই।

এরপর কৃষ্ণার সঙ্গে ফোনে কথা বলে ভাল্লার দুজনকে নিজের অফিসে ডেকে পাঠান। সেখান থেকেই সিবিআই কর্মকর্তারা তাকে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তারের পর ভাল্লারের মোহালি, রোপার ও চণ্ডীগড়ের বাড়িগুলোতে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে উদ্ধার হয় প্রায় ৫ কোটি রুপি নগদ অর্থ, ১.৫ কেজি স্বর্ণালঙ্কার, মার্সিডিজ ও অডি ব্র্যান্ডের দুটি গাড়ি, ২২টি বিলাসবহুল হাতঘড়ি, বিভিন্ন স্থাবর সম্পত্তির দলিল, লকারের চাবি ও ৪০ লিটার বিদেশি মদ। এছাড়াও বাড়িতে পাওয়া যায় ডাবল ব্যারেল বন্দুক, পিস্তল, রিভলবার, এয়ারগানসহ বিপুল পরিমাণ অস্ত্র। কৃষ্ণার বাড়ি থেকেও ২১ লাখ রুপি উদ্ধার করা হয়।

সিবিআই জানিয়েছে, শুক্রবার দুই আসামিকে আদালতে তোলা হবে। তদন্তকারীরা এখন যাচাই করছেন এই সম্পদের উৎস এবং এর সঙ্গে কোনো মানি লন্ডারিংয়ের সংযোগ রয়েছে কিনা।

২০০৯ সালের ব্যাচের আইপিএস কর্মকর্তা হরচরণ সিং ভাল্লার পাটিয়ালা রেঞ্জে ডিআইজি, ভিজিল্যান্স ব্যুরোর জয়েন্ট ডিরেক্টরসহ বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপার (এসএসপি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ২০২১ সালে বিক্রম সিং মজিঠিয়ার বিরুদ্ধে আলোচিত মাদক মামলার তদন্তকারী এসআইটি দলের প্রধান ছিলেন এবং রাজ্য সরকারের ‘মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ কার্যক্রমের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিলেন।

২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে তিনি রোপার রেঞ্জের ডিআইজি পদে যোগদান করেন। হরচরণ সিং ভাল্লার পাঞ্জাব পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক এম এস ভাল্লারের ছেলে।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×