গাজায় চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগে হামাসকে ‘মেরে ফেলার’ হুমকি ট্রাম্পের
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ১১:০৯ এম, ১৭ অক্টোবর ২০২৫

গাজায় সংঘর্ষ ও চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগকে কেন্দ্র করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার হামাসের ওপর কঠোর শাসনের হুমকি দিয়েছেন, যদি ইসরায়েলি সহযোগীরা গাজায় অভিযান চালিয়ে যায় তাহলে হামাসকে লক্ষ্য করে আক্রমণের অনুমোদন দেওয়া হবে বলেও ইঙ্গিত দেন তিনি।
আল জাজিরার শুক্রবার, ১৭ অক্টোবরের প্রতিবেদনে এই কথা জানানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রাম্প লিখেছেন, 'যদি হামাস গাজায় মানুষ হত্যা চালিয়ে যায়, যা চুক্তির অংশ ছিল না, তাহলে তাদের মেরে ফেলার ছাড়া আমাদের সামনে আর কোনো উপায় থাকবে না। বিষয়টি প্রতি মনোযোগ দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ!'
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন যে, এই হামলায় যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি অংশ নেবে না। ট্রাম্প বলেন, 'এটা আমরা করব না। আমাদের সেটা করারও প্রয়োজন হবে না। এমন লোক আছে, খুব কাছেই আছে, যারা গিয়ে কাজটা সহজেই করে ফেলবে, আমাদের তত্ত্বাবধানে'। যদিও তিনি কোনো দেশের নাম বলেননি, তার কথায় ইঙ্গিত ছিল ইসরায়েলের দিকে।
ট্রাম্পের এই কড়া হুঁশিয়ারি তার আগের বক্তব্যের থেকে ভিন্ন রূপ নেয়। সপ্তাহের শুরুতে তিনি গাজায় গ্যাং দমন অভিযান নিয়ে তেমন আপত্তি প্রকাশ করেননি। গত মঙ্গলবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি তিনি বলেছিলেন, 'ওরা কয়েকটা ভয়ংকর গ্যাং নির্মূল করেছে, খুবই খারাপ লোক ছিল তারা। তাদের মেরে ফেলেছে, আর সত্যি বলতে, এতে আমি তেমন বিরক্ত হইনি। এটা ঠিক আছে।' সাম্প্রতিককালে গাজায় হামাস ও স্থানীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে অনেক হতাহতের কথা বলা হয়েছে। এসব গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে মানবিক সহায়তা লুটপাট এবং ইসরায়েলের সঙ্গে যোগসাজশ করার অভিযোগ রয়েছে।
রোববার যে সংঘর্ষ হয়েছে, তার পর গাজার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘোষণা করে যে, রক্তক্ষয়ীর সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নয় এমন গ্যাং সদস্যদের সাধারণ ক্ষমা করা হবে। উল্লেখ্য, গত জুনে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা স্বীকার করেছিলেন যে, তারা গাজায় কিছু গ্যাংকে অস্থিতিশীলতার উদ্দেশ্যে অস্ত্র জোগিয়েছে, যার মধ্যে ইসলামিক স্টেট বা আইএসআইএস-ঘনিষ্ঠ গোষ্ঠীও ছিল। রোববার ইসরায়েল-সম্পৃক্ত একটি গ্যাংয়ের বন্দুকধারীরা গাজার পরিচিত ফিলিস্তিনি সাংবাদিক সালেহ আলজাফারাওয়িকে গুলি করে হত্যা করেছে বলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
এদিকে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস হামাসের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং অভিযোগ করে বলেন যে, হামাস সন্দেহভাজন ইসরায়েলি সহযোগীদের হত্যা করেছে, যা 'ভয়াবহ অপরাধ'। আব্বাসের দপ্তর এক বিবৃতিতে জানায়, 'এটি মানবাধিকারের স্পষ্ট লঙ্ঘন এবং আইনের শাসনের নীতির ওপর গুরুতর আঘাত।'
ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি কেবল গ্যাং ঘটনার সীমাবদ্ধ নয়। তার মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী, হামাসকে নিরস্ত্র হতে হবে এবং গাজার প্রশাসনে তাদের ভূমিকা বন্ধ করতে হবে। হামাস এসব শর্ত আনুষ্ঠানিকভাবে মানার বিষয়ে কি সম্মতি দিয়েছে তা স্পষ্ট নয়। বৃহস্পতিবার ট্রাম্প আবার সতর্ক করে বলেন, যদি হামাস স্বেচ্ছায় অস্ত্র না ফেলে দেয় তাহলে জোর করে তা করা হবে। তার ভাষ্যে, 'তারা নিরস্ত্র হবে। আর যদি তা না করে, তাহলে আমরাই তাদের নিরস্ত্র করব, খুব দ্রুত, হয়তো সহিংসভাবেই।'
সূত্র: আল জাজিরা