ইসরায়েলি সেনা সরতেই গাজা নগরীর নিয়ন্ত্রণ জোরদার করছে হামাস
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৪:৩০ পিএম, ১৫ অক্টোবর ২০২৫

গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী সরে যাওয়ার পর অঞ্চলটিতে নিজেদের কর্তৃত্ব আরও সুদৃঢ় করছে হামাস। সম্প্রতি সশস্ত্র এই গোষ্ঠী একাধিক অভিযানে নামে এবং বিরোধীদের সহায়তা করার অভিযোগে কয়েকজনকে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে।
গাজায় সংঘাত বন্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে শুক্রবার থেকে একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। এই চুক্তির আওতায় হামাস সোমবার ২০ জন জীবিত ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেয় এবং আরও চারজনের মরদেহ হস্তান্তর করে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, গাজা থেকে আরও চার বন্দির মরদেহ উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
মঙ্গলবার হামাসের পক্ষ থেকে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা যায়, চোখ বাঁধা অবস্থায় আটজন সন্দেহভাজনকে রাস্তায় হাঁটু গেড়ে বসিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়। হামাস তাদেরকে ‘বিরোধীদের সহযোগী ও অপরাধী’ হিসেবে উল্লেখ করেছে।
ইসরায়েলি সেনারা গাজা শহর থেকে সরে যাওয়ার পর হামাসের কালো মুখোশধারী সশস্ত্র পুলিশ সদস্যরা ফের রাস্তায় টহল দিতে শুরু করেছে। গোষ্ঠীটি দাবি করেছে, তারা গাজায় সক্রিয় অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠী এবং অপরাধী চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে, যাদের কেউ কেউ ইসরায়েলের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে।
ভিডিও ফুটেজের সময়কাল সোমবার সন্ধ্যা বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে ইঙ্গিত মেলে যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পরও গাজার ভেতরে হামাসের নিরাপত্তা ইউনিট এবং অন্যান্য ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠনের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ চলছে।
গাজার একটি নিরাপত্তা সূত্র বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছে, হামাসের নতুন একটি ইউনিট বর্তমানে মাঠপর্যায়ে তৎপর রয়েছে, যার মূল উদ্দেশ্য গাজায় আইন-শৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা। সম্প্রতি গঠিত এই ইউনিটের নাম ‘প্রতিরোধ বাহিনী’।
সূত্রটি আরও জানিয়েছে, "আমাদের বার্তা একেবারে পরিষ্কার। যারা অপরাধে জড়িত কিংবা নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি, গাজায় তাদের কোনো ঠাঁই নেই।"
এক প্রত্যক্ষদর্শী ইয়াহিয়া বলেন, "বিরোধীদের যারা সাহায্য করেছে, তাদের দমন করতে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে, যা এখনো থেমে নেই।"
অন্য এক স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ জানান, "মঙ্গলবার সকালে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে হামাস বাহিনী ও হিল্লেস পরিবারের সদস্যদের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ হয়েছে।" উল্লেখযোগ্য যে, হিল্লেস পরিবারটি রাজনৈতিকভাবে ফাতাহ পার্টির ঘনিষ্ঠ।
গাজার পূর্বাঞ্চলের শহর শুজাইয়াতেও লড়াই চলমান, যা কথিত ‘ইয়েলো লাইন’-এর সন্নিকটে অবস্থিত। এই লাইন অতিক্রম করে ইসরায়েলি বাহিনী এখনো সক্রিয় এবং গাজার প্রায় অর্ধেক অঞ্চল তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।