ট্রাম্পের সতর্ক বার্তা: হামাসকে অস্ত্র ছাড়তে হবে, না হলে শক্তি প্রয়োগ করা হবে


ট্রাম্পের সতর্ক বার্তা: হামাসকে অস্ত্র ছাড়তে হবে, না হলে শক্তি প্রয়োগ করা হবে

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, গাজা নিয়ন্ত্রণকারী ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাস যদি স্বেচ্ছায় অস্ত্র সমর্পণ না করে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র তাদের নিরস্ত্রিকরণে পদক্ষেপ নেবে এবং তা ভয়াবহ হতে পারে।

হোয়াইট হাউসে মঙ্গলবার সাংবাদিকদের কাছে ট্রাম্প বলেন, “আমি হামাসের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি। আমি তাদের জিজ্ঞেস করেছিলাম- ‘আপনারা অস্ত্র সমর্পণ করছেন, ঠিক?’ জবাবে তারা আমাকে বলেছে, ‘জ্বি স্যার, আমরা অস্ত্র সমর্পণ করছি।” তিনি পরে যোগ করেন যে হামাসের সঙ্গে তার সরাসরি আলাপ হয়নি। ট্রাম্প আহ্বায়ক স্টিভ উইটকফ ও নিজের জামাতা জ্যারেড কুশনারের মাধ্যমে এই আলোচনা করেছেন।

ট্রাম্প প্রশাসনের অনুমতিতে গত সপ্তাহে মিসরের পর্যটন শহর শারম আল শেখে স্টিভ উইটকফ ও জ্যারেড কুশনার হামাসের শীর্ষ নেতা ও মুখপাত্র খলিল আল হায়ার-এর সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

ট্রাম্প সাংবাদিকদের আরও বলেছেন, “আমরা তাদের বলেছি, আমরা চাই যে তারা অস্ত্র সমর্পণ করুক এবং তারা তা করবে। যদি তারা অস্ত্র সমর্পণ না করে, তাহলে আমরা তাদের নিরস্ত্র করব। সেক্ষেত্রে এটি ঘটবে দ্রুত এবং সম্ভবত ভয়াবহভাবে। অর্থাৎ, তাদের অস্ত্র সমর্পণ করতেই হবে।”

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের প্রায় ১ হাজার যোদ্ধা অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। ওই আক্রমণে প্রায় ১ হাজার ২০০ মানুষ নিহত হন এবং ২৫১ জনকে যোদ্ধারা গৃহবন্দী করে নেয়। ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর ইসরায়েলে ৭ অক্টোবরের সেসব হামলা ছিল দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী একটি নৃশংস ঘটনা।

জবাবী হিসেবে আইডিএফ (ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী) ৮ অক্টোবর থেকে গাজায় সামরিক অভিযান চালিয়ে হামলার জবাব দেয় এবং জিম্মিদের উদ্ধারে অভিযান চালায়। দুই বছরের নির্বিঘ্ন অভিযানে গাজায় ৬৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার মানুষ আহত হয়েছেন।

গত দুই বছর ধরে যুদ্ধবিরতি এবং সংঘর্ষ বিরতির বিভিন্ন প্রচেষ্টা হয়েছে, যার মধ্যে কয়েক দফা অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিও ছিল। তবে এসব বিরতি দীর্ঘস্থায়ী হয়নি এবং আইডিএফের সামরিক কার্যক্রম অব্যাহত ছিল।

এই অবস্থার মধ্যেই ২০২৫ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর ট্রাম্প গাজার জন্য ২০ দফার একটি নতুন যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা প্রস্তাব করেন। ইসরায়েল ও হামাস উভয় পক্ষ একই প্রস্তাবে সম্মত হওয়ার পর ২০২৫ সালের ১০ অক্টোবর থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। ওই ২০ দফার মধ্যে অন্যতম প্রধান ধারাটি ছিল হামাসের অস্ত্রসমর্পণ। আগেও এই আহ্বান বারবার জানানো হয়েছে, কিন্তু হামাস আগে তা প্রত্যাখ্যান করেছে। এ বার সরাসরি প্রত্যাখ্যান না করলেও এখন পর্যন্ত সংগঠনটি বিষয়টি নিয়ে স্পষ্ট কোনো বক্তব্য দেয়নি।

এক সাংবাদিক ট্রাম্পকে প্রশ্ন করেন, যদি হামাস স্বেচ্ছায় অস্ত্র ছাড়ে না, তাহলে ট্রাম্প প্রশাসন কী পদক্ষেপ নেবে। জবাবে ট্রাম্প বলেন, “আমি তা আপনাকে ব্যাখ্যা করতে বাধ্য নই…তবে এটুকু বলতে পারি, তারা জানে যে আমি কোনো খেলা খেলছি না।”

সূত্র: টাইমস অব ইসরায়েল

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×