ভারতে সফরে গিয়ে পাকিস্তানকে শান্তির পথে চলার আহ্বান আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর


ভারতে সফরে গিয়ে পাকিস্তানকে শান্তির পথে চলার আহ্বান আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

ভারত সফরের মঞ্চ থেকে পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদ দমনে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি। তিনি বলেন, শান্তির পথে চলতে হলে অন্য দেশগুলোকেও আফগানিস্তানের মতো জঙ্গি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কঠোর হতে হবে।

প্রথমবারের মতো ভারতে এসে এনডিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বৃহস্পতিবার এসব কথা বলেন তালেবান সরকারের এই মুখপাত্র। তাঁর ভাষায়, আফগানিস্তান এখন সন্ত্রাসমুক্ত।

মুত্তাকি বলেন, “গত চার বছরে আমরা আফগানিস্তান থেকে সব সন্ত্রাসীকে নির্মূল করেছি। তাদের এখন এক ইঞ্চি জমিও দখলে নেই। ২০২১ সালে যার বিরুদ্ধে আমরা অভিযান চালিয়েছিলাম, সেই আফগানিস্তান এখন সম্পূর্ণ বদলে গেছে।”

তিনি আরও জানান, পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বা ও জইশ-ই-মোহাম্মদ আগে আফগানিস্তানে সক্রিয় থাকলেও বর্তমানে তাদের কোনো অস্তিত্ব দেশটিতে নেই।

সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের উদ্দেশে স্পষ্ট বার্তা দিয়ে মুত্তাকি বলেন, “অন্য দেশগুলোকেও আফগানিস্তানের মতো এমন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে, যদি তারা শান্তি চায়।”

এ সফরেই ভারত ও আফগানিস্তানের মধ্যে দীর্ঘদিন পর পূর্ণাঙ্গ কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, কাবুলে এখনকার টেকনিক্যাল মিশনকে পূর্ণ দূতাবাসে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে, এবং আফগানিস্তানের উন্নয়ন নিয়ে ভারত গভীরভাবে আগ্রহী।

সম্প্রতি কাবুলে সংঘটিত বিস্ফোরণের প্রসঙ্গ তুলে পাকিস্তানকেই দায়ী করেন আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, “সীমান্তের কাছে দূরবর্তী এলাকায় একটি হামলা হয়েছে। আমরা মনে করি এটি পাকিস্তানের কাজ, যা ভুল। সমস্যা এভাবে সমাধান হয় না। আফগানিস্তান এখন ৪০ বছর পর শান্তি ও উন্নয়নের পথে। কেউ যেন এতে সমস্যা সৃষ্টি না করে।”

তিনি সতর্ক করে আরও বলেন, “যারা আফগানদের সাহস পরীক্ষা করতে চায়, তারা সোভিয়েত ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর পরিণতি দেখে নিক। আফগানিস্তানের সঙ্গে খেলা ভালো কিছু বয়ে আনবে না।”

আফগানিস্তান ইসলামাবাদের সঙ্গে একটি ভারসাম্যপূর্ণ ও সম্মানজনক সম্পর্ক গড়তে চায় বলেও জানান মুত্তাকি। তার ভাষায়, সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য উভয় পক্ষের সমান উদ্যোগ প্রয়োজন।

ভারত-আফগান সম্পর্ক নিয়ে আশাবাদী মুত্তাকি ভারতের মানবিক সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, “আফগানিস্তান ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞ। ভারতকে আমরা ঘনিষ্ঠ বন্ধু মনে করি। পারস্পরিক সম্মান, বাণিজ্য ও জনগণের সম্পর্কের ভিত্তিতে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে চাই।”

তিনি আরও বলেন, “ভারত ও আফগানিস্তানের উচিত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যৌথ আলোচনা করা। বাণিজ্য বাড়ছে, তাই সব বাণিজ্য রুট খোলা থাকা জরুরি। রুট বন্ধ হলে দুই দেশের বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়।”

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×