উদাসীনতার ভারে ভেঙে পড়ছে জাতিসংঘ: মহাসচিব আন্তোনিও


উদাসীনতার ভারে ভেঙে পড়ছে জাতিসংঘ: মহাসচিব আন্তোনিও

বিশ্বব্যাপী চলমান সংঘাত, বৈষম্য ও অনুচিত নীরবতার প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘ গভীর সংকটে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সংস্থার মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তার ভাষায়, ‘জাতিসংঘ আজ উদাসীনতার ভারে ভেঙে পড়ছে।’

মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনের উদ্বোধনী ভাষণে এই মন্তব্য করেন তিনি। একাধিক বৈশ্বিক সংকট ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি জাতিসংঘের বর্তমান অবস্থাকে "অবরুদ্ধ" বলে আখ্যা দেন।

মহাসচিব বলেন, “শান্তি ও অগ্রগতির স্তম্ভসমূহ আজ দায়মুক্তি, বৈষম্য ও উদাসীনতার ভারে ভেঙে পড়ছে। জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠাকালীন মূল্যবোধগুলো বর্তমানে আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় বেশি জরুরি, জটিল ও কঠিন পরীক্ষার মুখে রয়েছে।”

বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে চলমান যুদ্ধ ও সংকটের চিত্র তুলে ধরার সময় গাজার পরিস্থিতি আলাদাভাবে তুলে ধরেন গুতেরেস। তিনি বলেন, “গাজায় ভয়াবহতা প্রবেশ করছে তৃতীয় এক দানবীয় বছরে। এই বিপর্যয় এমন সব সিদ্ধান্তের ফল যা মানবিকতার মৌলিক নীতিকে অস্বীকার করে।”

তিনি উল্লেখ করেন, জাতিসংঘের মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময়কালে আর কোনো সংঘাতে তিনি এত ভয়াবহ ধ্বংস ও প্রাণহানির চিত্র দেখেননি।

এই প্রেক্ষাপটে গাজায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দায়ের করা গণহত্যা মামলায় আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) দেওয়া অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনা বাস্তবায়নের আহ্বান জানান গুতেরেস।

নিরাপত্তা পরিষদের কাঠামোগত দুর্বলতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন জাতিসংঘ প্রধান। তিনি বলেন, নিরাপত্তা পরিষদকে এখন আরও বেশি কার্যকর, স্বচ্ছ ও প্রতিনিধিত্বশীল হতে হবে। তার ভাষায়, “নিরাপত্তা পরিষদকে তার দায়িত্ব পালন করতে হবে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে এটি অত্যাবশ্যক।”

তিনি আন্তর্জাতিক মানবিক সাহায্য হ্রাসের কড়া সমালোচনা করে বলেন, এটি মানবতার জন্য ‘মৃত্যুদণ্ড’ এবং শিশুদের জন্য ‘ভবিষ্যৎ চুরি’।

সবশেষে গুতেরেস বলেন, জাতিসংঘের মূল দলিল বা সনদ ব্যর্থ হচ্ছে না, বরং ব্যর্থ হচ্ছে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতিশ্রুতি ও দায়িত্ব পালনের আন্তরিকতা। তার বক্তব্যে উঠে আসে একটি স্পষ্ট বার্তা: বিশ্ব যদি নীরবতা ও নিষ্ক্রিয়তায় বন্দি হয়ে থাকে, তবে জাতিসংঘের মৌলিক উদ্দেশ্যগুলো অস্তিত্ব সংকটে পড়বে।

সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×