নিউইয়র্কে ইতিহাস গড়া জোহরান মামদানি ‘বাংলাদেশি আন্টিদের’ ধন্যবাদ জানালেন


February 4 2025/Deshkal-June-25-2025-website.jpg

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়ে ইতিহাস গড়েছেন তরুণ রাজনীতিক জোহরান মামদানি। ৩৩ বছর বয়সী এই প্রার্থী নির্বাচিত হলে হবেন নিউইয়র্ক শহরের সবচেয়ে কম বয়সী মেয়র এবং প্রথম মুসলিম ব্যক্তি যিনি এই পদে আসীন হবেন। এখনো ৪ নভেম্বরের নির্বাচনের জন্য সময় বাকি থাকলেও এরই মধ্যে তিনি ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন।

বামপন্থি রাজনীতিতে বিশ্বাসী জোহরান তার রাজনৈতিক এজেন্ডা ও কর্মসূচির মাধ্যমে নিউইয়র্কের দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। স্বল্পমূল্যের সরকারি মুদিদোকান, দুই লাখ নতুন ভাড়ানিয়ন্ত্রিত অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণ, আগামী চার বছর অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া না বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি, শিশুদের জন্য বিনা খরচে ডে-কেয়ার এবং গণপরিবহন ব্যবস্থায় বিনা ভাড়ার বাস চালু করার পরিকল্পনা তার প্রচারে ব্যাপক জনপ্রিয়তা এনে দিয়েছে।
 
এই নির্বাচনী যাত্রায় বাংলাদেশি অভিবাসী কমিউনিটির অবদান বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন জোহরান। প্রার্থী হওয়ার পর ২৪ জুন মধ্যরাতে সমর্থকদের উদ্দেশ্যে দেওয়া এক আবেগঘন ভাষণে তিনি ঘরে ঘরে গিয়ে প্রচার চালানো বাংলাদেশি নারীদের উদ্দেশে কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, 'বাংলাদেশি আন্টিরা আমার হয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে যে শ্রম দিয়েছেন, তাতে আমি গভীরভাবে কৃতজ্ঞ।'


নিউইয়র্কের একমাত্র বাংলাদেশি কাউন্সিলর শাহানা হানিফও এই প্রচারণায় পাশে ছিলেন জোহরানের। সম্প্রতি বাংলায় প্রচারিত একটি ভিডিও বার্তায় তিনি ও শাহানা অভিবাসী কমিউনিটির কাছে ভোট চেয়েছেন। ২৪ জুন অনুষ্ঠিত বাছাইপর্বে শাহানা নিজেও ডেমোক্রেটিক পার্টির কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে পুনরায় মনোনয়ন পেয়েছেন।

এই নির্বাচনী প্রতিযোগিতায় জোহরানের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কৃতিত্ব হলো সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমোর মতো শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বীকে হারিয়ে প্রার্থিতা নিশ্চিত করা। তার এই সাফল্য মার্কিন রাজনীতিতে তরুণ, অভিবাসী ও মুসলিম প্রার্থীদের জন্য একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

জোহরান মামদানির আরেকটি ব্যতিক্রমী দিক হলো, তার ব্যক্তিগত জীবন ও রাজনৈতিক ভাবমূর্তিতে সাধারণ মানুষের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ তৈরির সক্ষমতা। তিনি ধনী নন, রাজনীতির ঘরোয়া পরিবেশেও নতুন। এ কারণেই তার ক্যাম্পেইনে নীতিনির্ধারণের পাশাপাশি সামাজিক সহানুভূতি ও অন্তর্ভুক্তির বার্তা গুরুত্ব পেয়েছে।

জোহরান মামদানি শুধু একজন প্রার্থী নন, তিনি নিউইয়র্কের বহুজাতিক, বহু-ভাষিক এবং বহু-সংস্কৃতির প্রতিনিধি। বাংলাদেশিসহ দক্ষিণ এশীয় অভিবাসীরা তার প্রতি যে সমর্থন দেখাচ্ছেন, তা প্রমাণ করে, রাজনীতির শক্তি কখনো কখনো একতার মধ্যে নিহিত থাকে। পাঁচ মাস পরের নির্বাচনের ফলাফল যাই হোক, ইতোমধ্যেই জোহরান নিজের মতো করে একটি ইতিহাস তৈরি করে ফেলেছেন।

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×