রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দশ ঘণ্টা অবরুদ্ধ কর্মকর্তারা, ‘অসুস্থ’ পড়লেন কয়েকজন


December 2024/Rajshahi Univer.jpg

পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) প্রশাসন ভবনের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়ায় দশ ঘণ্টা ধরে ভেতরে অবরুদ্ধ দুইজন উপ উপচার্যসহ শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী। এরমধ্যে ২০ জনের বেশি নারী রয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাতটার দিকে অবরুদ্ধরা রড দিয়ে তালা ভাঙার চেষ্টা করলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বাধা দেয়। এতে তর্কবিতর্ক, হট্টগোল শুরু হয়। দুই পক্ষের বিরোধে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে ক্যাম্পাসে।

অবরুদ্ধ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকায় খাবার না খাওয়ায় কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তারা অবরুদ্ধ অবস্থার পরিত্রাণ চান।

রাবির জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক প্রফেসর মো. আখতার হোসেন মজুমদার বলেন, ‘দুই উপ-উপাচার্য, প্রক্টর, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, ট্রেজারারসহ শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী আমরা ভেতরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে আছি। এদের মধ্যে ২০-৩০ জন নারী আছেন। প্রশাসনিক ভবনের গেটে তালা দেওয়ায় কাউকে বের হতে দেওয়া হচ্ছে না। বের হতে না দেওয়ায় দুপুরের খাবারও কেউ খেতে পায় নি। আমাদের ভেতরের ডায়াবেটিস, প্রেশারের রোগীও আছে। তারা আন্দোলন করছে অথচ তাদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতেই আমরা কোটা চার শতাংশ থেকে কমিয়ে এক শতাংশে নিয়ে এসেছি। শিক্ষক কর্মকর্তাদের জন্য কোন পোষ্য কোটা রাখা হয়নি। শুধুমাত্র সহায়ক কর্মচারীদের জন্য পোষ্য কোটা এক শতাংশ রাখা হয়েছে তাও মানবিক কারণে। সেখানে তাদের এ ধরনের আন্দোলন কতটা যৌক্তিক?’

এ দিকে, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, তালা ঝুলানোর আগে প্রশাসনিক ভবন থেকে সবাইকে বের হয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়েছিল। সেসময় তারা গুরুত্ব দেননি। এ কারণে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত গেট খোলার সুযোগ নেয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাবি শাখার অন্যতম সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, ‘পোষ্য কোটা বাতিল না করা পর্যন্ত কাউকে ভেতর থেকে বের হতে দেওয়া হবে না। শুরুতেই তাদের আহ্বান করেছিলাম প্রশাসন ভবনের ভেতরে না থাকতে। কিন্ত তারা তা শোনেন নি।’

‘সম্পূর্ণ কোটা বাতিল করা না হলে প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলানোর পাশাপাশি আগামী রোববার (৫ জানুয়ারি) থেকে পুরো ক্যাম্পাস অচল করে দেওয়া  হবে। যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বাইরে আছেন, তিনি চাইলে আলাপ আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য এখন ভেতরে ঢুকতে পারবেন। কিন্তু পোষ্য কোটা বাতিল না করে বের হতে পারবেন না।’

এর আগে পূর্ব নির্ধারিত ঘোষণা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সকাল পৌনে দশটায় প্রশাসন ভবনের সামনে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। নয়টা ৫০ মিনিটে মাইকে ঘোষণা দিয়ে সবাইকে বের হয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান। এরপর তারা দশটা বাজার সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসন ভবনের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন।

আন্দোলনকারীদের ভাষ্য, পোষ্য কোটাসহ তিন দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনের গেট বন্ধ থাকবে। আগামী রোববার পর্যন্ত ক্লাস পরীক্ষা বন্ধের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তারা। 

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, সংকট নিরসনে কাজ করছেন তারা।

গতকাল বুধবার (১ জানুয়ারি) পোষ্য কোটা ৪ থেকে কমিয়ে ১ শতাংশ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখান করে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×