বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ হলেন আকতার হোসেন
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৮:০১ পিএম, ১৪ জুলাই ২০২৫
বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন প্রধান অর্থনীতিবিদ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও গবেষক ড. মোহাম্মদ আক্তার হোসেন। তাকে দুই বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক এ পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র এবং নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন।
এর আগে এ দায়িত্ব পালন করছিলেন ডেপুটি গভর্নর ড. হাবিবুর রহমান। দীর্ঘ সময় পর বাংলাদেশ ব্যাংকে পূর্ণাঙ্গ প্রধান অর্থনীতিবিদের পদ পূরণ হলো।
প্রধান অর্থনীতিবিদ হিসেবে ড. আক্তার হোসেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ও পরিচালনা পর্ষদকে সামষ্টিক অর্থনীতি, মুদ্রানীতি ও ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতা বিষয়ে নীতিগত পরামর্শ দেবেন এবং গবেষণা কার্যক্রমের নেতৃত্ব দেবেন।
ড. আখন্দ মোহাম্মদ আক্তার হোসেন দেশের একজন স্বনামধন্য অর্থনীতিবিদ ও শিক্ষক। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন এবং উভয় পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন। পরে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসহ এমএ এবং লা ট্রোব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। তার গবেষণার বিষয় ছিল বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক মডেলিং, যা পরবর্তীতে গ্রন্থাকারে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে প্রকাশিত হয়।
প্রায় তিন দশক অস্ট্রেলিয়ার নিউক্যাসেল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন তিনি এবং ২০২০ সালে সেখান থেকে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে অবসর নেন। ২০২৪ সালে তিনি ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন।
এর পাশাপাশি তিনি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলে (IMF) আন্তর্জাতিক অর্থনীতিবিদ হিসেবে কাজ করেছেন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকে বিশ্বব্যাংকের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে প্রশিক্ষক ও গবেষক হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন তিনি।
ড. হোসেনের প্রকাশিত গবেষণাপত্রের সংখ্যা ৮৭টিরও বেশি এবং তিনি ২৭টি যৌথ গ্রন্থ অধ্যায়ে অবদান রেখেছেন। তার গবেষণার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে মুদ্রানীতি, কেন্দ্রীয় ব্যাংকিং ও আঞ্চলিক অর্থনৈতিক নীতি।
ব্যক্তিগত জীবনে তিনি চার সন্তানের জনক এবং সমাজ ও অর্থনীতিতে একটি ন্যায়ভিত্তিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অবস্থানকে সমর্থন করেন। রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ থেকেও তিনি দরিদ্রবান্ধব নীতিতে সহানুভূতিশীল।
নতুন প্রধান অর্থনীতিবিদ হিসেবে তার নিয়োগ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক নীতিতে গবেষণা-নির্ভর ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন দৃষ্টিভঙ্গি আনবে বলে আশা করা হচ্ছে।