গুম প্রতিরোধে শুধু আইনগত নয়, প্রয়োজন প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার: ড. আসিফ নজরুল
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৯:৩৬ পিএম, ২৫ অক্টোবর ২০২৫
গুমকে হত্যার চেয়েও নিকৃষ্ট অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, গুম প্রতিরোধে কেবল আইন সংশোধন নয়, বরং প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারও জরুরি।
শনিবার (২৫ অক্টোবর) রাজধানীর গুলশানের হোটেল আমারিতে আয়োজিত দিনব্যাপী এক কর্মশালার উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব মন্তব্য করেন। কর্মশালাটি আয়োজন করে গুম সংক্রান্ত কমিশন অফ ইনকোয়ারি, সহযোগিতায় ছিল ঢাকাস্থ জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, “অনেক প্রাণ ও ত্যাগের বিনিময়ে আমরা আজ একটি পরিবর্তিত পরিবেশে অবস্থান করছি। এই পরিবর্তন স্থায়ী করতে হলে গুমের বিচার নিশ্চিত করা অপরিহার্য।”
বিচারকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, “গুমের বিচার বাস্তবায়নে বিচারকদের সাহসী ও ন্যায্য ভূমিকা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা ও দৃঢ় অবস্থানই একদিন বাংলাদেশ থেকে গুমের সংস্কৃতি নির্মূল করবে।”
কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কমিশনের সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, “গুম প্রতিরোধে বিচার বিভাগ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও মানবাধিকার কাঠামোর মধ্যে সমন্বিত সহযোগিতা অপরিহার্য। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন, সাক্ষ্য-প্রমাণ বিশ্লেষণ এবং আধুনিক প্রযুক্তির যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে বিচার বিভাগ ও তদন্ত সংস্থার সক্ষমতা বৃদ্ধি গুমের বিচার নিশ্চিতের মূল চাবিকাঠি।”
কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী বলেন, “গুম-সংক্রান্ত মামলাগুলোর কার্যকর তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করতে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এখন সময়ের দাবি।”
তিনি আরও জানান, কমিশন ইতোমধ্যে বিদ্যমান আইনি কাঠামো পর্যালোচনা করে গুম সংক্রান্ত মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি, সাক্ষী সুরক্ষা এবং ভুক্তভোগী পরিবারের আইনি সহায়তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে আইন সংশোধনের প্রস্তাব প্রস্তুত করছে।
কর্মশালায় আরও বক্তব্য রাখেন আইন ও বিচার বিভাগের সচিব লিয়াকত আলী মোল্লা এবং জাতিসংঘের জ্যেষ্ঠ মানবাধিকার বিষয়ক উপদেষ্টা হুমা খান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন কমিশনের সদস্য ড. নাবিলা ইদ্রিস।
দেশের বিভিন্ন আদালত ও ট্রাইব্যুনালের প্রায় ৯০ জন বিচারক ও প্রশিক্ষণার্থী দিনব্যাপী এই কর্মশালায় অংশ নেন।