সংযুক্ত ৫ ইসলামি ব্যাংকের নাম ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক’
- নিউজ ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৩:১৪ পিএম, ২৩ অক্টোবর ২০২৫

বাংলাদেশের ব্যাংক খাতে বড় ধরনের পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে একীভূত হতে চলা পাঁচ বেসরকারি ইসলামি ব্যাংকের নতুন নাম নির্ধারিত হয়েছে ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক’। এই নামেই গঠিত হবে নতুন ব্যাংকটি, যার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর সম্পদ ও দায় একত্রিত করে নতুন প্রতিষ্ঠানের অধীনে স্থানান্তর করা হবে।
অর্থ মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে এই প্রক্রিয়া শুরু করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে নতুন ব্যাংকের মালিক হবে অর্থ বিভাগের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত একটি সরকারি সংস্থা। সূত্র জানায়, প্রথমে ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক’ নামে ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণ করা হবে। এরপর যৌথ মূলধনী কোম্পানিজ ও ফার্মস বিভাগ থেকে নিবন্ধন নেওয়া হবে এবং সর্বশেষ বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ব্যাংকিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করা হবে।
আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে অস্বচ্ছ ঋণ বিতরণ ও আর্থিক অনিয়মের কারণে দুর্বল হয়ে পড়া পাঁচ ইসলামি ব্যাংককে একীভূত করার এই উদ্যোগ ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয় ও উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন পেয়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলো হলো ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক এবং এক্সিম ব্যাংক। দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংকগুলো আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে এবং দৈনন্দিন কার্যক্রম চালাতে হিমশিম খাচ্ছে। এই সংকট মোকাবিলায় তাদের সম্পদ ও দায় একত্র করে একটি শক্তিশালী ইসলামি ব্যাংক গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন ব্যাংকের নাম প্রস্তাব করেছিল ‘ইউনাইটেড ইসলামী ব্যাংক’। পরবর্তীতে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে বিকল্প হিসেবে প্রস্তাব করা হয় ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক’ নামটি। শেষ পর্যন্ত এই নামই অনুমোদন পেয়েছে বলে জানা গেছে।
সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, নতুন ব্যাংক প্রতিষ্ঠায় ন্যূনতম ৫০০ কোটি টাকার মূলধন প্রয়োজন হলেও প্রস্তাবিত প্রতিষ্ঠানের পরিশোধিত মূলধন হবে প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা এবং অনুমোদিত মূলধন ৪০ হাজার কোটি টাকা। মূলধনের পরিমাণের দিক থেকে এটি হবে দেশের সবচেয়ে বড় ব্যাংক। সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হবে ২০ হাজার কোটি টাকা, যার মধ্যে ১০ হাজার কোটি টাকা নগদ ও বাকি অংশ সুকুক বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে সংগ্রহ করা হবে। বাকি ১৫ হাজার কোটি টাকা আসবে আমানত সুরক্ষা তহবিল এবং করপোরেট আমানতকারীদের অংশীদারিত্ব থেকে।
তবে এই বিপুল মূলধনের বড় অংশই ব্যবহার করা হবে আগের ব্যাংকগুলোর আমানতকারীদের পাওনা পরিশোধে। দুই লাখ টাকা পর্যন্ত আমানতের অর্থ পরিশোধ করা হবে আমানত সুরক্ষা তহবিল থেকে, আর এর বেশি পরিমাণ আমানত ধাপে ধাপে ফেরত দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক আশা করছে, সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাংক খাতে আমানত প্রবাহ বাড়ার ইতিবাচক প্রবণতা নতুন ব্যাংকের কার্যক্রমে সহায়ক হবে। সরকারি মালিকানাধীন এই নতুন ব্যাংকের প্রতি জনগণের আস্থা বৃদ্ধি পেলে আমানতের প্রবাহ আরও বাড়বে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ধারণা। পাশাপাশি প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স সংগ্রহে উৎসাহ দিতে ব্যাংকটি বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণের পরিকল্পনাও করছে।