ধর্ষকের সঙ্গে ধর্ষণের শিকার নারীর বিয়ে বন্ধ চেয়ে হাইকোর্টে রিট
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৬:৫৪ পিএম, ২২ অক্টোবর ২০২৫

ধর্ষণের শিকার নারীকে তার অপরাধী স্বামীর সঙ্গে বিবাহিত করার ঘটনায় হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে।
বুধবার (২২ অক্টোবর) জনস্বার্থে সিরাজগঞ্জের বাসিন্দা অ্যাডভোকেট মো. রাকিবুল হাসান এ রিট দায়ের করেন। তিনি জানান, “বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি আসিফ হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে চলতি সপ্তাহে রিটটি শুনানি হতে পারে।”
রিটে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব, নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশের আইজি, কারা অধিদফতরের মহাপরিচালক ও সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে বিবাদী করা হয়েছে।
রিটে যুক্ত করা হয়েছে ধর্ষকের সঙ্গে ধর্ষণের শিকার নারীর বিয়ে সংক্রান্ত বিভিন্ন সংবাদপত্রের প্রতিবেদন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রধান ফটকে কারা কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে গায়ক মাইনুল আহসান নোবেলের সঙ্গে তার বিরুদ্ধে দায়ের করা ধর্ষণ মামলার বাদীর বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। বাদীর অভিযোগ, নোবেলের শিকার হয়েছেন তিনি, এবং মামলাটি বিচারাধীন ছিল।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, “আসামি নোবেলের পক্ষ থেকে আদালতে লিখিতভাবে বাদীকে বিয়ে করার অনুমতি চাওয়া হয়। পরবর্তীতে উভয় পক্ষের সম্মতিতে কারা কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয় ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে। সংবাদমাধ্যমে বিষয়টি ফলাও করা হয়, যেন এটি নোবেলের কোনও সাফল্যের খবর। সংবাদে নোবেলের ঝলমলে ছবি প্রকাশ করা হয়।”
রিটে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, “কারাগার ও আদালত প্রাঙ্গণে এর আগেও ধর্ষকের সঙ্গে ধর্ষণের শিকার নারী বা কন্যাশিশুর বিয়ে ঘটেছে। কতদিন এই ধরনের নজিরের সাক্ষী হতে হবে আমাদের?”
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, “বিয়ের মাধ্যমে গুরুতর অপরাধ যেমন ধর্ষণকে সামাজিক ও আইনগত বৈধতা দেওয়া হয়, ফলে অপরাধীরা সহজে পার পেয়ে যায়। কখনও সালিশ, কখনও জরিমানা, কখনও বিয়ে—অপরাধী বিভিন্নভাবে মুক্তি পায়। কারা কর্তৃপক্ষের আয়োজন করা কারাগারের গেটে বিয়ে অত্যন্ত নিন্দনীয়। ধর্ষণের অপরাধ বিয়ে দিয়ে কমানো যায় না; অপরাধের দায়িত্ব অপরিবর্তিত থাকে। আইন তার অবস্থান থেকে সরে আসতে পারে না।”