শেখ হাসিনা খালাস পাবেন, প্রত্যাশা আইনজীবীর


শেখ হাসিনা খালাস পাবেন, প্রত্যাশা আইনজীবীর

ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমন অভিযানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় খালাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার— এমন মন্তব্য করেছেন আসামিপক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন।

সোমবার (২০ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে দুপুরের বিরতিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এ সময় তিনি বলেন, “আমার তো প্রত্যাশা শেখ হাসিনা খালাস পাবেন। আমি মনে করি, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন নিরপরাধ ব্যক্তি। তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, সেগুলো সাক্ষ্যে প্রমাণিত হয়নি। আমার অভিমত, শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান খালাস পাবেন।”

ট্রাইব্যুনালে এই মামলার কার্যক্রম সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে। সোমবার আসামিপক্ষের রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার প্রসিকিউশন তাদের পঞ্চম দিনের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করে।

প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামীম জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। আইন অনুযায়ী প্রসিকিউশন যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের পর স্টেট ডিফেন্স আইনজীবীরা তাদের যুক্তি দেবেন। এরপর মামলাটি রায়ের অপেক্ষায় থাকবে।

এই মামলায় তিনজন আসামির মধ্যে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়েছেন।

তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার উপপরিচালক মো. জানে আলম খান, পরে দায়িত্ব নেন উপপরিচালক মো. আলমগীর। বিশেষ তদন্তকারী কর্মকর্তা তানভীর হাসান জোহা সহযোগিতা করেন। তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয় চলতি বছরের ১২ মে, আর ৩১ মে দাখিল করা হয় সম্পূরক অভিযোগ। ১ জুন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ উপস্থাপন করা হয় এবং ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন।

এর আগে ৮ অক্টোবর মামলার শেষ (৫৪তম) সাক্ষী হিসেবে তদন্ত কর্মকর্তা আলমগীরের জেরা শেষে যুক্তিতর্কের তারিখ ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল-১।

এই মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন গণঅভ্যুত্থানের প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবা ও স্বজনহারা পরিবারের সদস্যরা। এছাড়া ‘তারকা সাক্ষী’ হিসেবে সাক্ষ্য দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক ও জুলাই আন্দোলনের নেতা নাহিদ ইসলাম, এবং দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। মোট ৫৪ জন সাক্ষী এ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন।

প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি পরিচালনা করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এসএইচ তামীম। পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন। আর রাজসাক্ষী চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন জায়েদ বিন আমজাদ।

প্রসিকিউটর তামীমের ভাষায়, “রাষ্ট্র ও আসামি উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষ হলে মামলাটি রায়ের পর্যায়ে যাবে।”

মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলায় ১০ জুলাই আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হয়। ৩ আগস্ট থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়ে ৮ অক্টোবর শেষ হয়। মামলাটি বর্তমানে যুক্তিতর্কের শেষ ধাপে রয়েছে, যা শেষ হলে রায় ঘোষণার অপেক্ষায় থাকবে।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×