এখন মন খারাপ হয় না পলকের, লড়তে চান ভোটে
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৩:২৬ পিএম, ০৮ অক্টোবর ২০২৫

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গ্রেপ্তার হয়ে প্রায় এক বছর ধরে কারাগারে রয়েছেন সাবেক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। শুরুতে কারাবন্দি জীবনে মানিয়ে নিতে কষ্ট হলেও এখন তিনি মানসিকভাবে দৃঢ় বলে জানিয়েছেন। এমনকি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার আগ্রহও প্রকাশ করেছেন তিনি।
বুধবার (৮ অক্টোবর) সকালে ঢাকার আদালত প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পলক বলেন, “সব কিছুরই শেষ আছে।” এ সময় এক সাংবাদিক জানতে চান, তিনি কি আগামী নির্বাচনে অংশ নেবেন? উত্তরে পলক মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানান এবং আবারও বলেন, “সব কিছুরই শেষ আছে।”
সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কারাগার থেকে আদালতে আনা হয় বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, ঢাকা উত্তর সিটির সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম, সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী ও গাজী গ্রুপের চেয়ারম্যান গোলাম দস্তগীর গাজী এবং জুনাইদ আহমেদ পলককে। হাজতখানায় কিছুক্ষণ রাখার পর সকাল ১০টা ৫৫ মিনিটে পুলিশি কড়া নিরাপত্তায় তাদের প্রত্যেককে হেলমেট ও বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরিয়ে আদালতে তোলা হয়।
এজলাসে উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে পলক জানান, “আমি ভালো আছি। মানসিকভাবে শক্ত আছি। মনে থেকে উজ্জীবিত রয়েছি। আগে মন খারাপ থাকলেও এখন আর মন খারাপ হয় না। নিজেকে মানিয়ে নিয়েছি।” তিনি আরও অনুরোধ করেন, তার এই বার্তাটি যেন পরিবারের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়।
এ সময় কাঠগড়ায় সাবেক মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী সামনের দিকে গালে হাত রেখে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তার পাশেই ছিলেন পলক, রাশেদ খান মেনন ও আতিকুল ইসলাম। তারা নিজেদের আইনজীবীদের সঙ্গে মামলার বিষয়ে কথা বলছিলেন।
সকাল ১১টা ৮ মিনিটে বিচারক এজলাসে ওঠেন। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বনানী থানার উপপরিদর্শক মো. ইয়াছির আরাফাত তাদের বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনের সময় মো. শাহজাহান নামে এক ব্যক্তিকে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম সাদেকুর রহমান তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরে আসামিদের আবারও হেলমেট ও বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরিয়ে হাজতখানায় নেওয়া হয়।
পলকের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম (সাইফ) বলেন, “তিনি এখন শারীরিক ও মানসিকভাবে ভালো আছেন। এই খবর তার পরিবারকে জানাতে বলেছেন।” তবে তিনি অভিযোগ করেন, পলক কারাগারে যেসব সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার কথা, সেগুলো পাচ্ছেন না। কয়েকদিন আগে কারাগারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আওয়ামী লীগের এক নেতার মৃত্যুতে তিনি শঙ্কিত ছিলেন, তবে এখন মানসিকভাবে নিজেকে প্রস্তুত করেছেন ও মানিয়ে নিয়েছেন।
মামলার এজাহার অনুযায়ী, গত বছরের ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় বনানী থানাধীন মহাখালী ফ্লাইওভারের নিচে এক শান্তিপূর্ণ মিছিলে অংশ নেন কারখানার কর্মী মো. শাহজাহান। ওই সময় আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। গুলিতে শাহজাহান বুকে ও পেটে আহত হন এবং চারদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। পরে গত ১৮ ডিসেম্বর নিহতের মা সাজেদা বনানী থানায় ৯৭ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।