তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে স্থায়ী সমাধান চান আপিল বিভাগ: প্রধান বিচারপতি


তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে স্থায়ী সমাধান চান আপিল বিভাগ: প্রধান বিচারপতি

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে ঘিরে চলমান বিতর্কের প্রেক্ষাপটে আপিল বিভাগের বিচারপতিরা বিষয়টির সাময়িক নয়, স্থায়ী ও কার্যকর সমাধান চান। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা এমনভাবে নির্ধারিত হতে হবে, যাতে তা বারবার সংকটে না পড়ে এবং দেশের গণতন্ত্রকে স্থায়ীভাবে শক্তিশালী করে।

বুধবার (২৭ আগস্ট) তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) শুনানির দ্বিতীয় দিনে প্রধান বিচারপতি এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে সুস্পষ্ট ও স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন, যাতে ভবিষ্যতে এটি নিয়ে সংকট সৃষ্টি না হয়। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে এটি যাতে সুদূরপ্রসারী প্রভাব রাখে, সেটিই করা হবে।”

তিনি প্রশ্ন তোলেন, “যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে দিই, এটি কবে থেকে কার্যকর হবে?”

সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এ শুনানি শুরু হয়। আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করছেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।

এর আগে মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) ছিল আবেদনের প্রথম দিনের শুনানি। এরও আগে, ২০২4 সালের ১১ ফেব্রুয়ারি জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ এ শুনানি মুলতবি করেন।

রায়ের পটভূমি:
সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংযোজন করে ত্রয়োদশ সংশোধনী ১৯৯৬ সালে জাতীয় সংসদে পাস হয়। এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে আইনজীবী এম. সলিম উল্লাহসহ তিনজন রিট করেন। হাইকোর্ট ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট রিট খারিজ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে বৈধ ঘোষণা করে।

পরবর্তীতে ২০০৫ সালে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়। ২০১১ সালের ১০ মে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করে। এর ভিত্তিতে ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী পাস হয় এবং ৩ জুলাই গেজেট প্রকাশিত হয়।

পুনর্বিবেচনার আবেদন:
২০১১ সালের রায়ের পুনর্বিবেচনার জন্য প্রথম আবেদন করেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচজন বিশিষ্ট ব্যক্তি - তোফায়েল আহমেদ, এম. হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভুঁইয়া এবং জাহরা রহমান।

পরে ১৬ অক্টোবর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং ২৩ অক্টোবর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার পৃথকভাবে আবেদন করেন। এছাড়া একই ধরনের একটি আবেদন করেন নওগাঁর রানীনগরের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেন।

বর্তমানে রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তিপর্যায়ের মোট চারটি রিভিউ আবেদন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×