মেজর সাদিকের স্ত্রী সুমাইয়া জাফরিন ৫ দিনের রিমান্ডে


মেজর সাদিকের স্ত্রী সুমাইয়া জাফরিন ৫ দিনের রিমান্ডে

গোপন প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্টদের গেরিলা প্রশিক্ষণ দেয়ার অভিযোগে আলোচনায় আসা মেজর সাদিকের স্ত্রী সুমাইয়া জাফরিনকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। রাজধানীর ভাটারা থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলায় বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সেফাতুল্লাহ এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সুমাইয়াকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন পাবলিক প্রসিকিউটর। অন্যদিকে, আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জামিন ও রিমান্ড বাতিলের আবেদন জানান। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে পাঁচ দিনের রিমান্ড আদেশ দেন।

বুধবার (৬ আগস্ট) রাতে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) সুমাইয়াকে আটক করে প্রথমে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নেয়। পরে ভাটারা থানার মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ শাখার উপপুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, “রাজধানীর কে বি কনভেনশন হলের ঘটনায় সম্পৃক্ততার অভিযোগে সুমাইয়া জাফরিন নামে এক নারীকে ডিবি হেফাজতে নেওয়া হয়।”

তদন্তে জানা যায়, গত ৮ জুলাই রাজধানীর কনভেনশন সেন্টারে এক গোপন বৈঠকের আয়োজন করা হয়। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে রাজনীতিতে পুনরায় সক্রিয় করার পটভূমি তৈরি করতে “নৈরাজ্য সৃষ্টির” পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সেখানে এই বৈঠক হয়। দিনভর আয়োজনে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের প্রায় ৪০০ ক্যাডারকে গেরিলা প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

ঘটনার প্রায় তিন সপ্তাহ পর বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। সেন্টারটি ভাড়া ও আয়োজনের পেছনে ভূমিকা রাখায় গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ নেত্রী শামীমা নাসরিন শম্পা, বরগুনার যুবলীগ নেতা সোহেল রানা এবং মেহেরপুর জেলা যুবলীগ আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান রিটনকে ১২ জুলাই গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

পরবর্তীতে আরও কয়েকজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে উঠে আসে এই পরিকল্পনার মূল সংগঠক হিসেবে মেজর সাদেকুল হকের নাম। তদন্তে জানা যায়, তার স্ত্রী সুমাইয়া জাফরিনও এই পরিকল্পনায় সম্পৃক্ত ছিলেন। শুরুতে তাকে পুলিশের সহকারী সুপার (এএসপি) হিসেবে পরিচয় দেওয়া হলেও পুলিশ সদর দপ্তর পরে নিশ্চিত করে, সুমাইয়া জাফরিন নামে কোনো নারী কর্মকর্তা বাংলাদেশ পুলিশে নেই।

বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনায় সেনাবাহিনী মেজর সাদেকুল হককে হেফাজতে নেয় এবং একটি তদন্ত আদালত গঠন করে। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, “প্রাথমিক তদন্তে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। তদন্ত শেষে যথাযথ প্রক্রিয়ায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×