এ কে আজাদের গাড়িবহরে হামলা
জেলার পর এবার মহানগর যুবদলের সভাপতি-সম্পাদককে শোকজ
- নিউজ ডেস্ক
- প্রকাশঃ ১১:৩২ এম, ২২ অক্টোবর ২০২৫

ফরিদপুরে সাবেক সংসদ সদস্য ও হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদের গাড়িবহরে হামলার ঘটনার রেশ এখন ছড়িয়ে পড়েছে মহানগর যুবদলে। জেলার সভাপতি ও সম্পাদকের পর এবার ফরিদপুর মহানগর যুবদলের সভাপতি এম এম ইউসুফ ও সাধারণ সম্পাদক আলী রেজোয়ান বিশ্বাসকেও কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়েছে যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটি।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১১টায় যুবদলের কেন্দ্রীয় সহ-দপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূঁইয়ার স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে এই শোকজ নোটিশ জারি করা হয়।
চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে, "আপনারা যথাক্রমে ফরিদপুর মহানগর যুবদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক দায়িত্বে থেকেও মহানগর যুবদলের কার্যক্রম পরিচালনায় শৈথিল্য প্রদর্শন করেছেন, যার ফলে সংগঠনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে; এ মর্মে যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির দৃষ্টিগোচর হয়েছে।"
এছাড়াও চিঠিতে তাদের উদ্দেশ্যে বলা হয়, সংগঠনের শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, সে বিষয়ে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না এবং সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম নয়নের সামনে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দিতে হবে।
এ নিয়ে দলের ভেতরে উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে। মহানগর যুবদলের সভাপতি এম এম ইউসুফ বলেন, "আমাদের নামে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করা হয়েছে কিনা, তা আমি জানি না। তবে কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-দপ্তর সম্পাদক মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আমাকে ফোন করে জানিয়েছেন, আগামীকাল বিকেল ৪টার মধ্যে ঢাকায় যুবদলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গিয়ে কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে দেখা করতে হবে।"
এর আগে, একই ঘটনায় জেলা যুবদলের সভাপতি ও সম্পাদককেও শোকজ করা হয়।
রোববার (১৯ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ফরিদপুর সদর উপজেলার পরমান্দপুর বাজারে গণসংযোগের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন এ কে আজাদ। ঠিক সে সময় যুবদলের একটি মিছিল সেখানে গিয়ে উত্তেজনা তৈরি করে। মিছিলটি নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন সদর উপজেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক লুৎফর রহমান এবং কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি নান্নু মোল্লা। তারা এ কে আজাদকে ‘আওয়ামী লীগের দোসর’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন এবং ‘অ্যাকশন, অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ বলে হুমকির সুরে চিৎকার করেন। মিছিলকারীদের একজনের হাতে নায়াব ইউসুফের একটি পোস্টার দেখা যায়, যিনি ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী এবং কেন্দ্রীয় মহিলা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা আজাদের গাড়িবহরের পেছনের দুটি গাড়িতে আখ ছুড়ে মারে এবং কাচ ভাঙচুর করে।
ঘটনার পরদিন দুপুরে এ কে আজাদ সাংবাদিকদের বলেন, “সংবাদ সম্মেলনে তিনি (নায়াব ইউসুফ) মিথ্যাচার করেছেন। মূলত আমার জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে তিনি এসব করছেন। আমি কোনো রকম প্রতিহিংসার রাজনীতি করি না এটা ফরিদপুরবাসী ভালো করেই জানেন।”
এর আগে মঙ্গলবার নায়াব ইউসুফ ফরিদপুর প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় থাকা সন্ত্রাসীরা এ কে আজাদের সফরসঙ্গী হিসেবে পরমান্দপুরে গিয়ে যুবদল নেতাকর্মীদের ওপর আক্রমণ চালায়। তার ভাষায়, “যুবলীগ, ছাত্রলীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা পরমান্দপুরে উপস্থিত হয়ে আপত্তিকর ভাষা ও স্লোগান দিয়ে আমাদের (যুবদলের) নেতাকর্মীদের ওপর চড়াও হয়। গত দুদিন যাবৎ আমাদের নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ভয়ভীতি সৃষ্টি করছে।”