দিনাজপুরে শেখ হাসিনাসহ ৫১৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা


দিনাজপুরে শেখ হাসিনাসহ ৫১৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা

দিনাজপুরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১১৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় ৪০০ জনের বিরুদ্ধে নাশকতার মামলা করা হয়েছে।

মামলাটি সোমবার (২১ অক্টোবর) দায়ের করেন মো. হায়াত আলী নামে এক ব্যক্তি, যিনি নিজেকে জুলাইযোদ্ধা হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। দিনাজপুর সদর উপজেলার উত্তর শিবপুর গ্রামের বাসিন্দা হায়াত আলী অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি করেন। পরদিন মঙ্গলবার আদালত পুলিশ পরিদর্শক মো. আমিনুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

আদালতের বিচারক মো. সামিউল ইসলাম মামলার অভিযোগের তদন্তভার দিয়েছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)-কে। আগামী ২৩ ডিসেম্বরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মামলার এজাহারে ১১৮ জনের নাম স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, দিনাজপুর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও তৎকালীন হুইপ ইকবালুর রহিম, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমদাদ সরকার, সাধারণ সম্পাদক মো. মমিনুল ইসলাম, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ শাহ আলম, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন, শশরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মোকছেদ আলী রানা, শহর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নওশাদ ইকবাল কলিংস, সহসভাপতি জিয়াউর রহমান নওশাদ, দিনাজপুর পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র তৈয়ব আলী দুলাল এবং পরিবহন শ্রমিক নেতা শেখ বাদশা। এছাড়া আরও ৪০০ জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকেও মামলায় আসামি করা হয়েছে।

হায়াত আলীর অভিযোগ, ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট দিনাজপুর শহরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় তিনি ও অন্যান্য জুলাইযোদ্ধারা আন্দোলনে অংশ নেন। তারা সদর হাসপাতাল মোড় থেকে শুরু করে তৎকালীন হুইপ ইকবালুর রহিমের বাড়ি ও আদালত এলাকায় শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল করেন।

তাঁর ভাষ্যে, “আসামিরা দেশি অস্ত্র-শস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। চারপাশ রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। ইট-পাটকেল, গুলি চালায়। বহু মানুষ আহত হয়, অনেকে গুলিবিদ্ধ হন।”

তিনি দাবি করেন, হামলায় গুরুতর আহত অবস্থায় আন্দোলনকারীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের অবহেলা করেন। ফলে অনেকেই বাধ্য হয়ে বাইরে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হন।

আহতদের মধ্যে ছিলেন রানীগঞ্জ এহিয়া হোসেন কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী রবিউল ইসলাম রাহুল, যিনি পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। হায়াত আলী নিজেও আহত হন এবং ২ থেকে ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। এরপর তিনি দীর্ঘ সময় বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হন।

তিনি জানান, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাকে জুলাইযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।

মামলার তদন্তের বিষয়ে কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, “বিচারক সিআইডিকে তদন্ত করে ২৩ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।”

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×