১৬ নভেম্বর থেকে প্রবাসীদের জন্য উন্মুক্ত হবে নির্বাচনী অ্যাপ: ইসি সানাউল্লাহ
- নিউজ ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০১:৫৫ পিএম, ২২ অক্টোবর ২০২৫

বাংলাদেশের বাইরে থাকা ভোটারদের জন্য নতুন দিগন্ত খুলতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। ১৬ নভেম্বর থেকে প্রবাসীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে বিশেষ নির্বাচনী অ্যাপ, যার মাধ্যমে তারা রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন ভোট দেওয়ার জন্য। এই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে থাকবে ব্যালটও, যেখানে ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ বোতাম চেপে তারা জানাতে পারবেন ভোট দিতে চান কি না।
বুধবার, ২২ অক্টোবর, রাজধানীতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) নির্বাচন-সংক্রান্ত প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মোহাম্মদ সানাউল্লাহ। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়।
তিনি বলেন, “১৬ নভেম্বর থেকে প্রবাসী ভোটারদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে অ্যাপ। যার মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ভোট দেয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। সেখানে থাকবে ব্যালট। যেটাতে রাখা হবে ভোট দিতে চান কিনা। হ্যাঁ অথবা না এর বিধান।”
এ সময় তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, এবারের জাতীয় নির্বাচন হবে দেশের ইতিহাসে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী ঘটনা। এজন্য সময় থাকতেই প্রস্তুতি সম্পন্ন করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন একই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে কড়া বার্তা দেন। তিনি বলেন, নির্বাচনের সময় কোনো চাপের কাছে মাথা নত করবেন না, আমরাও করব না।
“নির্বাচন কমিশনও কোনো চাপের কাছে মাথা নত করবে না, আইন অনুযায়ী নির্দেশনা দেবে কমিশন। বেআইনি কোনো নির্দেশনা কমিশন দেবে না,” বলেন সিইসি।
তিনি দেশের বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, আইনের প্রতি শ্রদ্ধার অভাবেই এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এর উত্তরণে আইন মেনে চলা ছাড়া বিকল্প নেই।
তিনি আরও বলেন, “ভোট বাক্স দখলের পর মাঠে গেলে হবে না, আগে থেকে ব্যবস্থা নিতে হবে। যাতে সুষ্ঠু ভোট হয়।” তিনি প্রশাসনের কর্মকর্তাদের যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার প্রস্তুতি রাখার আহ্বান জানান।
এদিকে আরেক নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার ঘোষণা দেন, নির্বাচনে সঠিক দায়িত্ব পালন করলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পুরস্কৃত করা হবে। তার মতে, ৫ আগস্টের পর থেকে মাঠ প্রশাসনে যে অস্থিরতা ছিল তা কেটে গেছে, এখন আর ভয় পাওয়ার কিছু নেই।
তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, ইউএনও বা অন্য কেউ উদ্দেশ্যমূলকভাবে কাজ করলে তাকে ছাড় দেওয়া হবে না।
“উদ্দেশ্যমূলকভাবে কোনো কাজ করলে পার পাওয়া যাবে না,” বলেন তিনি। একইসঙ্গে কর্মকর্তাদের জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, “হিম্মতের সাথে কাজ করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার প্রয়োজনে ওয়ার্ড থেকে ইউনিয়ন পর্যন্ত যেতে হবে। ব্যালেন্স করতে গিয়ে ভুল হতে পারে কিন্তু পক্ষপাতিত্ব করা যাবে না। মোবাইল কোর্ট আয়নার মতো স্বচ্ছ হতে হবে।”
নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদের বক্তব্যে উঠে আসে ভোট নিয়ে জনমনে বিরাজমান অসন্তোষের প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, “রাতের ভোট কে করেছে? নির্বাচন কমিশন কি গিয়ে ব্যালট মেরেছে?” মাঠ প্রশাসনকে উদ্দেশ করে প্রশ্ন ছুড়ে দেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, “কি তাজ্জব কথা, রাতের বেলা ভোট হয়ে যায়। এই নির্বাচন যদি ভালো করতে না পারে ইসি তবে সারা বিশ্বে নিন্দিত জাতি হিসেবে বিবেচিত হবে।”
তিনি জোর দিয়ে বলেন, একটি ভালো নির্বাচন ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প নেই। দেশের সুনাম রক্ষায় প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে সঠিক নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।
এদিকে আরেক কমিশনার তাহমিদা আহমদ অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস বা উত্তেজনার বিরুদ্ধে সতর্ক করে বলেন, “আগের ভোটের প্রশিক্ষণ ভুলে গিয়ে এবারের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করুন। আগের নির্বাচন সবাই মিলে নষ্ট করেছি।”