সাবেক সমন্বয়ক সাকিব গ্রেফতার
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৮:৩৭ পিএম, ২১ অক্টোবর ২০২৫

বগুড়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক জেলা সদস্য সচিব সাকিব খান (২২)কে গ্রেফতার করেছে ঢাকার শাহবাগ থানা পুলিশ। সোমবার রাতে বগুড়া শহরের নারুলী এলাকায় তার বাড়ি থেকে তাকে আটক করা হয়।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সাকিব খানকে সিএমএম আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শাহবাগ থানার পুলিশ ও মামলার এজাহার অনুযায়ী, সাকিব খান শহরের নারুলী এলাকার ফরহাদ খানের ছেলে। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে অভিযোগ অনুযায়ী একজন পুলিশ সুপারের পদায়নের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী খোদা বকস চৌধুরীর কাছে সুপারিশ করার জন্য তিনি উৎকোচ দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।
এছাড়া, অজ্ঞাতনামা কয়েকজন ব্যক্তি বিভিন্ন মোবাইল নম্বর থেকে নিজেদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব পরিচয় দিয়ে খোদা বকস চৌধুরী ও তার পিএসের নাম ব্যবহার করে পুলিশ সদস্য ও বিসিএস অফিসারদের কাছ থেকে টাকা চাওয়ার চেষ্টা করেছেন। বিভিন্ন পদায়ন ও নিয়োগ সংক্রান্ত তদবিরও করা হয়েছে। প্রযুক্তিগত তথ্য বিশ্লেষণে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।
প্রতারক চক্রের সদস্যরা পরস্পরের সঙ্গে যোগসাজশ করে প্রতারণার উদ্দেশ্যে ভুয়া পরিচয় ধারণ করেছেন এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের কাছে অর্থ ও সুবিধা চেয়েছেন। এটি সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ-২০০৫ এর ২২/২৭ ধারার অন্তর্ভুক্ত অপরাধ।
শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শহীদুল আলম ২০ অক্টোবর রাত সোয়া ৮টার দিকে সাকিব খানসহ অন্যান্য প্রতারকদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে রাত ৩টার দিকে শাহবাগ থানা পুলিশের একটি টিম বগুড়ার নারুলী এলাকা থেকে সাকিবকে গ্রেফতার করে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বগুড়া জেলা শাখার সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রাব্বি হাসান মন্ডল জানান, ২০২৪ সালের জুলাই থেকে সাকিব খান বগুড়ার শিক্ষার্থীদের নেতৃত্ব দিয়েছেন। পরে তাকে জেলা কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছিল। পরে ওই কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নেতাকর্মীরা জানান, আন্দোলনের শুরুতে সাকিব ও অন্য এক নেতা কেন্দ্রীয় নেতাদের জন্য উপহার হিসেবে বগুড়া শহরের এশিয়া সুইটমিট থেকে বিভিন্ন সামগ্রী ও অর্থ গ্রহণ করেছিলেন। পরে ছাত্ররা তাদের আটক করে এবং প্রতিষ্ঠানটিতে অর্থ প্রদান করতে বাধ্য করেছিল। যদিও সাকিব ও নিতু সংবাদ সম্মেলনে এটি অস্বীকার করেছেন।
বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আতোয়ার রহমান বলেন, সাইবার আইনের মামলা দায়েরের পর শাহবাগ থানা পুলিশ জেলা পুলিশকে বিষয়টি জানিয়েছে। এ ছাড়া তাদের কাছে অন্য কোনো তথ্য নেই।
একই দিন বিকেলে সাকিবের গ্রেফতারের প্রতিবাদে বগুড়ার সাতমাথায় সাধারণ ছাত্র ও স্থানীয়রা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন। তারা সাইবার সুরক্ষা আইন বাতিল ও সাকিবের মুক্তি দাবি করেন এবং না মানলে বৃহত্তর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন।