
কলকাতার হতাশাজনক অভিজ্ঞতা পেছনে ফেলে ‘জিওএটি ইন্ডিয়া ট্যুর’-এর পরবর্তী গন্তব্যে আনন্দ-উচ্ছ্বাসে ভাসলেন লিওনেল মেসি। কলকাতার অব্যবস্থাপনায় সফরটি ম্লান হলেও মুম্বাইয়ে এসে পুরো দৃশ্যপট বদলে যায়। ঐতিহাসিক ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে একই মঞ্চে দাঁড়ালেন দুই খেলার দুই মহাতারকা- ক্রিকেটের কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকার ও ফুটবলের জাদুকর মেসি। সেই মুহূর্তের সাক্ষী হতে গ্যালারিতে জড়ো হন হাজারো ক্রিকেট ও ফুটবলভক্ত, ভেসে আসে ‘মেসি, মেসি’ আর ‘শচীন, শচীন’ স্লোগান।
ভক্তদের কাছে এটি ছিল একেবারেই বিশেষ এক ‘সুপার সানডে’। ক্রিকেট না ফুটবল- কোন খেলা বেশি জনপ্রিয়, সেই বিতর্কও যেন মিলিয়ে যায় দুই বিশ্বআইকনকে একসঙ্গে দেখার পর। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে শচীন লিখেছেন, ‘বলতেই হবে, আজকের দিনটা ছিল ১০/১০ লিও মেসি’। অনুষ্ঠানে তিনি মেসিকে উপহার দেন ১০ নম্বর লেখা টিম ইন্ডিয়ার জার্সি, যে নম্বরটি মেসির নিজের জার্সিরও পরিচয়।
ভারতীয় ক্রিকেটের বহু ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী এই ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়াম। এখানেই ২০১১ সালের আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ জয় করে ভারত, এখানেই বিরাট কোহলির রেকর্ডগড়া ৫০তম ওয়ানডে সেঞ্চুরি। আর এই মাঠই শচীন টেন্ডুলকারের ঘরের মাঠ।
সেলিব্রেটি ফুটবল ম্যাচ শেষে আবারও ইতিহাসের পাতায় নাম লেখান দুই কিংবদন্তি। মঞ্চে ওঠেন মেসি, তার সতীর্থ লুইস সুয়ারেজ ও রদ্রিগো ডি পল। কিছুক্ষণ পর গ্যালারি থেকে ওঠে ‘শচীন, শচীন’ ধ্বনি। এরপর ডি পল ও সুয়ারেজের সঙ্গে হাত মিলিয়ে হাসিমুখে শচীন মেসিকে স্বাগত জানান। তিনি নিজের স্বাক্ষর করা ভারতীয় ক্রিকেট দলের জার্সি মেসিকে উপহার দেন। পরে মুখ্যমন্ত্রী, মেসি, ডি পল, সুয়ারেজ ও শচীন একসঙ্গে ছবি তোলেন। জবাবে মেসি শচীনকে একটি বিশ্বকাপ বল উপহার দেন।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর শচীন বলেন, “আমি এখানে কিছু অবিশ্বাস্য মুহূর্ত কাটিয়েছি, মুম্বাই স্বপ্নের শহর এবং এই ভেন্যুতে অনেক স্বপ্ন সত্যি হয়েছে। আপনাদের সমর্থন ছাড়া, আমরা ২০১১ সালে (ক্রিকেট বিশ্বকাপ জয়ে) সেই সোনালি মুহূর্তগুলো দেখতে পেতাম না। তাদের তিনজনকে (মেসি, সুয়ারেজ এবং পল) এখানে পাওয়া মুম্বাই এবং ভারতের জন্য একটি সোনালি মুহূর্ত। যখন লিওর কথা আসে, তখন কথা বলার জন্য এটি সঠিক প্ল্যাটফর্ম হবে না। তার সম্পর্কে কেউ কী বা বলতে পারে? তিনি সবকিছু অর্জন করেছেন; আমরা তার নিষ্ঠা এবং প্রতিশ্রুতির প্রশংসা করি। তার নম্রতা এবং তিনি যেমন, তার জন্য তাকে খুব ভালোবাসা হয়। আমাদের সকলের পক্ষ থেকে, আমি তার পরিবারকে সুস্বাস্থ্যের জন্য শুভকামনা জানাতে চাই। এখানে আসার জন্য ধন্যবাদ। আশা করি ভারতীয় ফুটবল সেই উচ্চতায় পৌঁছাবে যা আমরা আকাঙ্ক্ষা করি।”
শচীনের বক্তব্য শেষ হতেই আবারও গ্যালারিতে প্রতিধ্বনিত হয় দুই মহাতারকার নামে উচ্ছ্বাসভরা স্লোগান।