২৫ বছরের জন্য ৮ জেলা স্টেডিয়াম বাফুফেকে বরাদ্দ
- খেলাধুলা ডেস্ক
- প্রকাশঃ ১১:৪৩ পিএম, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বাংলাদেশের ফুটবলের কাঠামোগত উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)। দেশের আটটি জেলা পর্যায়ের স্টেডিয়াম বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) অনুকূলে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২৫ বছরের জন্য।
এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বাফুফে আগামী দুই যুগের বেশি সময় ধরে এসব স্টেডিয়াম ফুটবল কার্যক্রমে ব্যবহার করতে পারবে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ক্রীড়া পরিচালক আমিমুল এহসান ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বরাবর পাঠানো এক চিঠিতে বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানান।
এর আগেই যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ঘোষণা দিয়েছিলেন, নীলফামারী স্টেডিয়ামকে ফুটবলের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হবে। সেই ঘোষণা অনুযায়ী, ৪ সেপ্টেম্বর এনএসসি বাফুফেকে আনুষ্ঠানিকভাবে নীলফামারী স্টেডিয়ামের ২৫ বছরের লিজ অনুমোদন দেয়।
পরবর্তীতে ৯ সেপ্টেম্বর আরও সাতটি জেলা স্টেডিয়াম একই মেয়াদের জন্য বাফুফের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এসবের মধ্যে রয়েছে গাজীপুরের শহীদ বরকত স্টেডিয়াম, ময়মনসিংহ জেলা স্টেডিয়াম, মুন্সিগঞ্জের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়াম, রাজশাহীর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়াম, নোয়াখালীর শহীদ ভুলু স্টেডিয়াম, কক্সবাজারের বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়াম এবং সিলেট জেলা স্টেডিয়াম।
তবে এই বরাদ্দের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে একাধিক শর্ত। স্টেডিয়ামগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ, বিদ্যুৎ বিল ও ভূমি কর ফেডারেশনকেই বহন করতে হবে। আয় ও ব্যয়ের হিসাব নিয়মিতভাবে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদকে জমা দিতে হবে। চুক্তি অনুযায়ী, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ যে কোনো সময় তিন মাসের নোটিশে এই লিজ বাতিল করতে পারবে।
বাফুফে এই দীর্ঘমেয়াদি লিজ চেয়েছিল মূলত ফিফা ও এএফসির অর্থায়ন পাওয়ার লক্ষ্যেই। আন্তর্জাতিক ফুটবল সংস্থা দুটি শুধুমাত্র এমন প্রকল্পেই অর্থায়ন করে, যেখানে স্থানীয় ফেডারেশনের কমপক্ষে ২৫ বছরের সরাসরি মালিকানা বা ব্যবহারের অধিকার থাকে। এ বিষয়ে বাফুফে জানায়, “ফিফা-এএফসি বাফুফের সরাসরি স্বত্ব বা অধিকার ২৫ বছর না হলে সেখানে অর্থায়ন করবে না।”
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ফুটবলের স্বার্থ এবং ভবিষ্যৎ উন্নয়নের দিক বিবেচনায় নিয়ে এই অনুরোধে সাড়া দেয়।
তবে বাফুফের পূর্ব অভিজ্ঞতা কিছুটা জটিল ছিল চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামকে ঘিরে। আগেও স্টেডিয়ামটি ২৫ বছরের জন্য তাদের বরাদ্দ দেওয়া হলেও, স্থানীয় ক্রীড়াবিদ ও সংগঠকদের প্রতিবাদের মুখে এখনো সেটি পুরোপুরি বুঝে নিতে পারেনি ফেডারেশন। ফলে, নতুনভাবে বরাদ্দ পাওয়া আটটি স্টেডিয়াম কবে নাগাদ বাফুফের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসবে, তা এখনো পরিষ্কার নয়।
উল্লেখ্য, জেলা পর্যায়ের এই স্টেডিয়ামগুলো কেবল ফুটবল নয়, হকি, কাবাডি, অ্যাথলেটিক্স, ভলিবল ও খো খো সহ বিভিন্ন খেলাধুলার জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ফুটবল এককভাবে এসব স্টেডিয়ামের অধিকার পেলে, অন্যান্য খেলাগুলোর জন্য জায়গা ও সময় সংকট দেখা দিতে পারে, এমন শঙ্কা প্রকাশ করেছেন জেলা ক্রীড়া সংগঠকরা।